বেতন বোনাসের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
২৭ মার্চ ২০২৫
শ্রম ভবনের সামনে থেকে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী জানান, শ্রম ভবনের সামনে কয়েকশ পোশাক শ্রমিক অবস্থান নিয়েছেন৷ তাদের বেশিরভাগই নারী৷ অনেকেই হাতে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করছেন৷
এ সময় শ্রমিকদের বিভিন্ন স্লোগান দেয়ার কথাও লিখেছে দ্য ডেইলি স্টার৷
এদিকে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার প্রথম আলো বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভারসহ কয়েকটি জেলার অন্তত ৪৩ তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ও ভাতা পরিশোধ নিয়ে সমস্যা রয়েছে৷
প্রথম আলো লিখেছে, ‘‘সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পের সব কারখানা শ্রমিকের ঈদ বোনাস দেয়নি৷ চলতি মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধেও পিছিয়ে আছে অনেক কারখানা৷ এর বাইরে বন্ধ থাকা কয়েকটি কারখানার বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ নিয়ে আগে থেকেই সমস্যা চলছে৷''
‘‘ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নির্বিঘ্ন করতে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি৷ চলতি সপ্তাহে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান, সড়ক অবরোধ ও বিজিএমইএ ভবন অবরুদ্ধ করার মতো ঘটনা ঘটে৷ এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ না করায় গত মঙ্গলবার বন্ধ থাকা ১২টি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার৷ এগুলো হলো রোর ফ্যাশন, স্টাইলক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান্স, ডার্ড গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান, মাহমুদ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান, টিএনজেড গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান৷ এর মধ্যে শুধু স্টাইলক্রাফট চালু রয়েছে,'' লিখেছে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার৷
শ্রমিকনেতা বাবুল আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘সরকারের আগে থেকে কঠোর হওয়া উচিত ছিল৷ তাহলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা জটিল হতো না৷ বর্তমানে কারখানার মালিকের সম্পত্তি বিক্রি বা বন্ধক কিংবা বিজিএমইএ বা বিকেএমইএর তহবিল থেকে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা প্রয়োজন৷ সেটি সম্ভব না হলে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের যেভাবে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই সমস্যাযুক্ত কারখানার শ্রমিকদের পাওনা মেটানো উচিত৷''
ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি) ডিজিটাল মানচিত্র অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা আছে ৩ হাজার ৫৫৫টি৷ এর মধ্যে বিজিএমইএর সদস্য সচল কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ১০৭৷ গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৪৪টি (৯২ শতাংশ) কারখানা শ্রমিকের ঈদ বোনাস দিয়েছে৷ আর মার্চ মাসের অর্ধেক বেতন দিয়েছে ৭৬১টি (৩৬ শতাংশ) কারখানা৷ এখন পর্যন্ত ১৬টি কারখানা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেয়নি৷
অন্যদিকে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সচল সদস্য কারখানা ৬১৩টি৷ তার মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কারখানা ঈদ বোনাস দিয়েছে৷ চলতি মাসের অর্ধেক বেতন প্রায় ৫০ শতাংশ কারখানা দিয়েছে৷ এখনো ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেয়নি দুটি কারখানা৷
বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘২-৩টি কারখানা ছাড়া সমস্যা নেই৷ সেগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে৷ অধিকাংশ কারখানাই বৃহস্পতিবার (আজ) শ্রমিকদের পাওনা দিয়ে ঈদের ছুটি দেবে বলে জানান তিনি৷''
এআই/এসিবি (দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো)