1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেতারে উপস্থাপক কারাবন্দিরা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার জেলবন্দি আসামিদের জন্য চালু হল রেডিও স্টেশন৷ দমদম সংশোধনাগারে চালু হওয়া স্টেশনের উপস্থাপক এখানকার আবাসিকেরাই৷

Kalkutta  West Bengal  Gefängnis
ছবি: DW/P.Samanta

জেলকে এখন বলা হয় সংশোধনাগার৷ অর্থাৎ, সাজাপ্রাপ্ত বন্দি যাতে জেলে বাস করে নিজেদের চরিত্র সংশোধন করতে পারে, সেই লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়৷ এবার সংশোধনাগারে বন্দি মানুষদের জন্য চালু হল রেডিও স্টেশন৷ এর নাম দেয়া হয়েছে রেডিও দমদম৷ এই রেডিও সম্প্রচার সীমাবদ্ধ থাকবে শুধু দমদম জেলের মধ্যে৷ এই সংশোধনাগারের প্রায় চার হাজার বন্দির ঘুম ভাঙবে গানের সুরে৷ রোজ ১০ ঘণ্টার অনুষ্ঠান হবে৷ সকাল সাতটা থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান৷ চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত৷  উপস্থাপক বা রেডিও জকি বাইরে থেকে আনা হচ্ছে না৷ এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দমদম জেলের পাঁচ জন বন্দিকেই৷ নানা মামলার আসামি মনুয়া মজুমদার, জয়ন্ত সিংহ, তুহিন রায়, জিনিয়া নন্দী ও পীযূষ ঘোষ এই দায়িত্ব পালন করবে৷ তারাই নানা বিষয়ে কথা বলবে৷ রেডিও অনুষ্ঠানে সহ-আবাসিকদের গান শোনাবে৷ বিভিন্ন পর্বে আলাদা আলাদা অনুষ্ঠান উপস্থাপন করবে তারা৷ এজন্য এই পাঁচ বন্দিকে ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷

প্রথমে সংশোধনাগারের আবাসিকদের মধ্যে থেকে এমন দশজনকে বেছে নেওয়া হয় যারা অতীতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল৷ প্রশিক্ষণের পর চূড়ান্ত পাঁচজনকে বেছে নেওয়া হয়৷ তাদের শেখানো হয়েছে, কীভাবে কথা বলতে হবে, গান বাজাতে হবে৷ কোথা থেকে গান বাজবে? তার জন্য হাজার হাজার গানের ভাণ্ডার গড়ে তোলা হয়েছে৷ একটি সুইচ টিপলে গানের সুরে ভেসে যাবে কারাগার৷ সিনেমার গান যেমন বাজবে, তেমনই থাকবে ভক্তিমূলক সঙ্গীত৷ ভবিষ্যতে অনুরোধ গান শোনানো হবে৷ জোর দেওয়া হবে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে৷

কারাগারের বন্দিদের কাছে বেতার যন্ত্র থাকার কথা নয়৷ মোবাইলে এফএম শোনার সুযোগও নেই৷ তাহলে কীভাবে তারা অনুষ্ঠান শুনবে? বিষয়টি খোলসা করেছেন কারামন্ত্রী৷ রেডিও দমদমের সূচনায় কারাগারে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস৷ তিনি জানিয়েছেন, এই সংশোধনাগারের বিভিন্ন স্থানে মোট ১০০টি স্পিকার বসানো হয়েছে৷ তার মাধ্যমে বন্দিরা অনুষ্ঠান শুনতে পাবে৷

বি ডি শর্মা

This browser does not support the audio element.

অর্থাৎ, রেডিও দমদম শোনার জন্য ট্রানজিস্টর দরকার হবে না৷ ওই স্পিকারের মাধ্যমে বন্দিরা নিজেদের সেলে বসে গান শুনতে পারবেন৷ রেডিও জকি যেহেতু বন্দিরাই, তাই সংশোধনাগারের একটি ঘরকে স্টুডিও হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেখানে বসে অনুষ্ঠান উপস্থাপন করবে বন্দিরা৷ এই পুরো কাহিনীতে অন্য মাত্রা যুক্ত করেছে মনুয়া মজুমদার৷ খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা ভোগ করছে সে৷ প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামী অনুপমকে খুন করেছিল মনুয়া৷ নতুন ভূমিকায় সে খুশি৷ তার বক্তব্য, ভালো লাগছে নতুন কাজ করতে পেরে৷ আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি৷ আশা করি ঠিকভাবে অনুষ্ঠান উপস্থাপন করতে পারব৷

ভারতের অন্যান্য রাজ্যে আগেই এই ধরনের প্রয়াস নেওয়া হয়েছে৷ গত বছর আগ্রা, তামিলনাড়ু ও হায়দরাবাদের একাধিক কারাগারে অভ্যন্তরীণ রেডিও সম্প্রচার চালু হয়েছে৷ কারামন্ত্রী জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য কারাগারে ভবিষ্যতে নিজস্ব বেতার স্টেশন চালু করার ভাবনা রয়েছে৷ অভিনব এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যসরকারের কারাবিভাগের উপদেষ্টা বি ডি শর্মা৷ রেডিও দমদম-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন তিনি৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "জেলের আবহ সঙ্গীতময় হবে৷ কয়েদিদের জীবনে যে একঘেয়েমি থাকে, সেটা কমবে৷ তাদের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ও মানসিক উন্নতিতে সহায়ক হবে৷ এটা পরীক্ষামূলক সম্প্রচার৷ ইতিবাচক ফল মিললে অন্যান্য জেলেও আশা করি চালু হবে৷” তবে অনুষ্ঠানের সময়সীমা নিয়ে অন্য বক্তব্য রয়েছে প্রাক্তন এই কারাগার কর্তার৷ তাঁর মতে, "জেলের মধ্যে অন্য কর্মসূচিও থাকে৷ পড়াশোনা, খেলাধুলো, চাষবাস রয়েছে৷ এর জন্য সময় রাখতে হবে৷ তাই রেডিওর সম্প্রচার যদি অবসর সময়ে হয়, সেটাই ভালো৷ তাহলে অন্যান্য কর্মসূচিও থাকবে, গানও থাকবে৷”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ