বেলআউটের বৈধতা বিতর্ক
১১ জুন ২০১৩ইউরো এলাকার সংকট সামাল দিতে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা করেছিল, প্রয়োজনে বন্ড কিনে বাজারকে শান্ত করা হবে৷ এই কর্মসূচির পোশাকি নাম ‘আউটরাইট মনিটারি ট্রানজাকশনস' বা ওএমটি৷ এই আশ্বাসের ফলে বাজার শান্ত হয়েছে বটে, কিন্তু এমন এক সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিতর্কও কম হচ্ছে না৷ বিষয়টি এখন জার্মানির সাংবিধানিক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ অভিযোগ উঠেছে, সরকারি ঋণ পরিশোধ করতে ইসিবি ইচ্ছামতো টাকা ছাপার পথ খুলে দিচ্ছে৷ জার্মান করদাতাদের অর্থে এমন কাজ করা যায় কি না, সেটাই হলো প্রশ্ন৷ এই অবস্থায় ইসিবি-র প্রধান মারিও দ্রাগি বলেছেন, এক্তিয়ারের মধ্যে থেকেই তিনি এই ঘোষণা করেছেন৷ একমাত্র ইউরো ‘ফেল' করলে তবেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে, কোনো রাষ্ট্র বা সরকারকে উদ্ধার করার জন্য নয়৷
এমন সব প্রশ্ন উঠলে ইউরো এলাকার সংকট সামলাতে সমস্যা দেখা দিতে পারে, সন্দেহ নেই৷ এর আগেও জাতীয় স্তরে আদালতে এমন সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে৷ জার্মানিতেই আরেকটি মামলা চলছে ইউরোপীয় উদ্ধার তহবিল ইএসএম নিয়ে৷ জরুরি ভিত্তিতে বেলআউট-এর এই তহবিলে জার্মানি আদৌ অর্থ দিতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ সমালোচকদের যুক্তি, জার্মান করদাতাদের নামে এমন ঝুঁকি নেবার অধিকার কোনো সরকারের থাকতে পারে না৷ জার্মান আদালতের এই দুটি সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে পুঁজিবাজার৷ ইউরো এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি যদি ইউরো সংকট সামলাতে অর্থ দিতে না পারে, তার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে৷
এদিকে ইউরোপীয় কমিশন, ইসিবি ও আইএমএফ সম্মিলিতভাবে সংকটগ্রস্ত দেশগুলিকে সহায়তার যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তাকে ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে৷ আয়ারল্যান্ড, গ্রিস, পর্তুগাল ও সাইপ্রাসকে সহায়তার ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গাফিলতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে৷ রাষ্ট্র ও পুঁজিবাজারের ক্ষতি করে ঋণের ভার কমানোর বিতর্কিত পথ নিয়ে তাদের ভাবনা মোটেই ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না৷ পারস্পরিক আস্থার অভাবেরও সমালোচনা করা হচ্ছে৷
সপ্তাহের শুরুতে বিভিন্ন কারণে পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ একদিকে চীনের রপ্তানি বাণিজ্যে ঘাটতির খবর পাওয়া যাচ্ছে, অন্যদিকে ‘স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুয়রস' অ্যামেরিকার রেটিং বাড়িয়ে দিয়েছে৷ ইউরোপে ফ্রান্সের অর্থনীতির অবস্থার সামান্য উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে৷
এসবি / জেডএইচ (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)