বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনে হামলার পর বেলজিয়ামে এখন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে৷ অভিবাসন-বিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
হামলায় হতাহতদের প্রতি সম্মান জানাতে রবিবার ব্রাসেলসে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন৷ তবে তাদের অনুষ্ঠানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রায় শ'চারেক অভিবাসন-বিরোধী৷ সেই সময় তাঁরা মুসলিম-বিরোধী স্লোগানও দেন৷ এক পর্যায়ে তাদের থামাতে পুলিশকে সংঘর্ষে জড়াতে হয়৷
এদিকে, মঙ্গলবারের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রাসেলস ক্রাইসিস সেন্টার৷ নিহতদের মধ্যে তিনজন হামলাকারী রয়েছে৷ এখন পর্যন্ত পুলিশ ২৮ জনের পরিচয় জানতে পেরেছে৷ এর মধ্যে ১৫ জন বিমানবন্দরে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন৷ ১৫ জনের মধ্যে ছয়জন বেলজিয়াম আর নয়জন বিদেশি নাগরিক৷
মেট্রো স্টেশনে হামলায় নিহত ১৩ জনের মধ্যে ১০ জন বেলজিয়াম আর বাকিরা বিদেশি নাগরিক৷ বিদেশিদের মধ্যে ব্রিটেন, ইটালি, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক৷
সন্ত্রাসীদের ধরতে বেলজিয়ামের পুলিশ রবিবার ব্রাসেলস সহ আরও দু'টি শহরে ১৩টি অভিযান চালিয়েছে৷ এই সময় নয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ এর মধ্যে চারজনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়৷
ফ্রান্সে হামলার পরিকল্পনা!
নেদারল্যান্ডসের পুলিশ রবিবার অভিযান চালিয়ে ৩২ বছরের এক ফরাসি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে৷ সে ফ্রান্সে হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে জানিয়েছে নেদারল্যান্ডসের পুলিশ৷ ফ্রান্সের অনুরোধে এই গ্রেপ্তার বলেও জানিয়েছে তারা৷
বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে গ্রেপ্তার হওয়া রেডা ক্রিকেটের সঙ্গে মিলে ফরাসি ঐ নাগরিক (নেদারল্যান্ডসে গ্রেপ্তার হওয়া) ফ্রান্সে হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে এএফপিকে জানিয়েছে ফ্রান্স পুলিশের একটি সূত্র৷
ইউরোপ জুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা
ব্রাসেলসে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার পর ইউরোপ জুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা৷ বিশেষ করে বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন, সীমান্ত এবং বিভিন্ন শহরের রাস্তায় পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Golovkin
‘যুদ্ধে ইউরোপ’
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিলেন, ইউরোপ এখন ‘যুদ্ধে আছে’৷ ব্রাসেলসের ঘটনার পর ইউরোপীয় নেতারা জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন এবং সর্বত্র নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়েছেন৷ তাদের সঙ্গে রয়েছেন বোমা বিশেষজ্ঞ, প্রশিক্ষিত কুকুর এবং সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
সব বড় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে
লন্ডন, প্রাগ, অ্যামস্টারডাম, ভিয়েনাসহ ইউরোপের সব বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ লন্ডনের প্রধান বিমানবন্দর, হিথ্রোতে, পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে৷ পাশাপাশি, লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরেও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Rain
ডাচ পুলিশের সতর্ক অবস্থান
নেদারল্যান্ডসের অ্যামস্টারডাম বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দিচ্ছে ডাচ মিলিটারি পুলিশ৷ ব্রাসেলস বিমানবন্দরে হামলার পরপরই সেখানকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়৷ ব্রাসেলসে মঙ্গলবার একাধিক বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন নিহত এবং প্রায় দুই শত মানুষ আহত হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/epa/E. Elzinga
ব্রিটেনে সতর্কতা
লন্ডনের বিমানবন্দরে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/J. Mansfield
ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে বাড়তি পুলিশ
জার্মান কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়িয়েছে৷ বিশেষ করে বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন আর বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবুর্গ সীমান্তে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে৷ তবে পুলিশের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি চোখে পড়েছে জার্মানির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে৷ শহরটির ট্রেন স্টেশনেও পুলিশ অবস্থান নিয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Stache
রেল যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ
বেলজিয়ামে হামলার পর জার্মানির জাতীয় ট্রেন ব্যবস্থা, ডয়চে বান, ব্রাসেলসের সঙ্গে তাদের উচ্চগতির ট্রেন সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়৷ ব্রাসেলসের বদলে জার্মানির সীমান্তের শহর আখেনে ট্রেনগুলো থামানো হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. A. Gekiere
প্যারিসে আবারো উচ্চ সতর্কর্তা
প্যারিসে গত নভেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় অনেকে প্রাণ হারান৷ মঙ্গলবার ব্রাসেলসে হামলার পরপরই তাই সেখানকার নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হয়৷ প্যারিসের মূল বিমানবন্দর এবং সংশ্লিষ্ট ট্রেন স্টেশন দু’টিতে নিরাপত্তা বাহিনীর পুরো দল নিয়োগ করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/epa/E. Laurent
রাশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুর্নমূল্যায়ন
রাশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মাক্সিম সকোলভ জানিয়েছেন, ব্রাসেলসের ঘটনার পর সেদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পুর্নমূল্যায়ন করা হবে৷ যদিও রাশিয়া আগে থেকেই বেশ সতর্ক৷