পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল নেমেছে৷ তাদের বেশিরভাগই এসেছেন মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও আফগানিস্তান থেকে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিযোগ, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেলারুশে আসতে উৎসাহ জুগিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো৷ কারণ বেলারুশের মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সে দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইইউ৷ সেজন্য লুকাশেঙ্কো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপে পাঠাতে চাইছেন বলে অভিযোগ ইইউর৷

বেলারুশের প্রধান সমর্থক রাশিয়া৷ তাই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন লুকাশেঙ্কোকে দিয়ে ইউরোপ সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল নামিয়েছেন বলে মঙ্গলবার অভিযোগ করেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাটেওশ মোরাভিয়েৎস্কি৷ সংসদে তিনি বলেন, ‘‘লুকাশেঙ্কো যে ‘হামলা’ চালিয়েছেন তার মূল পরিকল্পনাকারী মস্কোতে আছেন, পরিকল্পক হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পুটিন৷’’

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিনকে ফোন করে সমস্যার সমাধান করতে বেলারুশের উপর চাপ দেয়ার আহ্বান জানান৷ তিনি সীমান্তে বিরাজমান পরিস্থিতিকে অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন৷

লুকাশেঙ্কো ‘বিবেকবর্জিতভাবে’ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পোল্যান্ড সীমান্তে পাঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে জার্মানি৷ বেলারুশের উপর নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ‘‘লুকাশেঙ্কোর বুঝতে হবে যে, তার হিসাব কাজ করছে না৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ব্ল্যাকমেইল করা যায় না৷’’

মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক ‘অ্যাডভেঞ্চারের’ কারণে মানুষ দেশ ছাড়ছে বলে অভিযোগ করেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ৷ তিনি বলেন, তুরস্ক থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যেন ইউরোপে ঢুকতে না পারে সেজন্য তুরস্ককে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপ৷ বেলারুশ কেন সেটা পাবে না সেই প্রশ্ন তোলেন লাভরভ৷

ইইউর কূটনীতিকরা এএফপি ও রয়টার্সকে জানিয়েছেন বেলারুশের উপর আরও নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ এবার বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩০ ব্যক্তি ও সংস্থা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে৷

পোল্যান্ড ও বেলারুশ জানিয়েছে, প্রায় তিন থেকে চার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী পোল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছে৷ তারা যেন সফল না হয় সেজন্য সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ হাজার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিওশ বোয়াশচাক৷

অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এখন যেখানে আছেন সেখানে তাপমাত্রা রাতে শূন্যের নীচে চলে যায়৷ এই অবস্থায় আগুন ধরিয়ে ঠাণ্ডার সঙ্গে লড়াইয়ের চেষ্টা করছেন তারা৷

বেলারুশের বর্ডার গার্ড জানিয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই কুর্দি৷ তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ বলে জানিয়েছে তারা৷ এছাড়া অনেক গর্ভবতী নারী ও নবজাতকও আছেন বলে জানানো হয়েছে৷