যুক্তরাজ্য এই তথ্য দিয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া পরিচালিত একটি শহরে হামলা চালানোর অভিযোগ।
বিজ্ঞাপন
রোববার যুক্তরাজ্যের সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বেলারুশে প্রায় এক হাজার ভাগনার সেনা আছে বলে তারা জানতে পেরেছে। রাশিয়ার এই অসরকারি সেনা আগেই বেলারুশে গেছিল।
২০২৩ সালের জুন মাসে আট হাজার ভাগনার সেনা বেলারুশে আসে। তাদের নেতা সে সময় রাশিয়ার সেনার ভিতরে বিদ্রোহ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। যুক্তরাজ্যের আশঙ্কা, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো এই সেনাকে নিজের মতো করে ব্যবহার করছেন। ভাগনার সেনা বেলারুশের সেনাকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি, সীমান্তরক্ষী বাহিনীতেও ভাগনার সেনাকে ঢোকানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এক সময় ইউক্রেন যুদ্ধে এই বিতর্কিত ভাগনার সেনাকে রাশিয়া ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে রাশিয়াকে সুবিধা করে দিয়েছে এই সেনা। কিন্তু শেষপর্যন্ত একসময় পুটিনঘনিষ্ঠ ভাগনার প্রধান সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বসেন। দেশের সেনাবাহিনীর ভিতর বিদ্রোহ তৈরির চেষ্টা করেন তিনি। পরে বেলারুশে এসে আশ্রয় নেন তিনি।
রুশ-অধিকৃত ইউক্রেনে শিশুদের শিক্ষার লড়াই
ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করে অবৈধভাবে রাশিয়ায় সংযুক্ত করার পর অনেক শিক্ষককে রুশ ভাষায় কাজ করতে এবং মস্কো-অনুমোদিত পাঠ্যক্রম অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
ছবি: Alexander Reka/Tass/IMAGO
ভূখণ্ড দখলের পর ভবিষ্যৎ দখলের লড়াই
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল - ঝাপোরিজঝিয়া, খেরসন, দোনেৎসক এবং লুহানস্ক রাশিয়াতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভূখণ্ড দখলের পর সেখানকার জনগণের, বিশেষ করে শিশুদের রুশিকরণের দিকে নজর দিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।
ছবি: Yuri Kadobnov/AFP/Getty Images
ইউক্রেন যুদ্ধকে বৈধতা দিয়ে পাঠ্যবই
ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত এলাকায় অভিভাবক ও শিক্ষকেরা মস্কোর আরোপ করা নতুন শিক্ষানীতি না মানলে ভয়ভীতি ও হুমকির সম্মুখীন হন। রুশ ভাষায় পাঠ্যক্রমে ইউক্রেন যুদ্ধের ন্যায্যতা প্রমাণ করে নতুন ইতিহাসের বইও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে রুশ ভাষায় কথা বলে। ২০১৪ সালের ইউরোময়দান আন্দোলনের পর কিয়েভ আইন পাস করে স্কুল, টেলিভিশন এবং সরকারি খাতের কর্মীদের মধ্যে ইউক্রেনীয় ভাষার ব্যাপক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে। ইউক্রেন সরকারের বিরুদ্ধে রুশভাষী সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছিল মস্কো। এবার একইভাবে দখল করা পূর্ব ইউক্রেনে পালটা বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে রাশিয়া।
ছবি: Gaelle Girbes/Getty Images
শিক্ষা যখন প্রোপাগান্ডা মেশিন
২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাশিয়ার বিরুদ্ধে "শিক্ষাকে শিশুদের প্ররোচিত করার জন্য একটি প্রচার যন্ত্রে পরিণত করার" অভিযোগ করেছে। অনুসারে, মস্কো বর্তমানে ২০১৪ সালে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপসহ ইউক্রেনের ১৮ শতাংশেরও কম এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিশুদের জন্য প্রায় ৯১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল অধিকৃত এলাকায়।
ছবি: Genya Savilov/AFP/Getty Images
শিক্ষাবিদদের 'গেরিলা' কৌশল
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় ভাষায় পড়াশোনা চালু রাখতে রুশ হুমকি উপেক্ষা করেই ঝুঁকি নিচ্ছেন কিছু শিক্ষক, ছাত্র এবং অভিভাবক। বাগানে গর্ত খুঁড়ে বা অন্য কোথাও লুকিয়ে রাখছেন ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন। স্কুল গ্রন্থাগারিকেরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে তারা সরবরাহ করছেন ইউক্রেনীয় বই। রুশ সামরিকবাহিনী প্রায়ই বিভিন্ন গ্রামে নির্বিচারে তল্লাশি চালায় বলেও জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
ছবি: Alexander Reka/Tass/IMAGO
5 ছবি1 | 5
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযোগ
এদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। লিসিচান্সক শহরটি এখন মস্কোর অধীনে। রাশিয়ার অভিযোগ, সেখানে একটি বেকারিতে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮। সপ্তাহান্তে ওই বেকারিতে রুটি কিনতে মানুষ ভিড় জমাতেন বলে দাবিরাশিয়ার। তা জেনেই ইউক্রেন সেখানে সপ্তাহান্তে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক মঞ্চকে এর জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।
রাশিয়া জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকে আছেন। রোববার ১০ জনকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ২০২২ সালে লড়াই শুরু হওয়ার পরেই ইউক্রেনের এই শহরটি দখল করে রাশিয়া। ইউক্রেনের দাবি, এখন সেখানে দশ ভাগের এক ভাগ মানুষ বসবাস করেন।