হিন্দুধর্মের জাতিভেদ প্রথা দলিত সম্প্রদায়ের কাছে এক দুঃস্বপ্ন৷ জাতপাত নিয়ে দলিতদের ওপর কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের নির্যাতন যেন ক্রমশই মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ভারতে৷ এর থেকে মুক্তি পেতে দলিত শ্রেণি দলে দলে গ্রহণ করছে বৌদ্ধধর্ম৷
বিজ্ঞাপন
ভারতে ৮৫ লাখেরও বেশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বা৷ তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ধর্মান্তরিত দলিত শ্রেণির৷ এর পেছনে একটাই প্রধান কারণ – জাতপাতের ভিত্তিতে নিম্নবর্গের দলিত সম্প্রদায়ের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের অত্যাচার এবং সামাজিক বৈষম্য৷ এটা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কিছুদিন আগে গুজরাটের উনাতেই দলিত পরিবারসহ প্রায় ৪০০ জন নিজেদের আত্মসম্মান রক্ষায় বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছেন৷ উনাও দলিতদের পেশা ছিল মরা গবাদি পশুর ছাল ছাড়িয়ে তা বিক্রি করা৷ বিজেপি-আরএসএস জমানায় অতি সক্রিয় তথাকথিত গোরক্ষকরা তাঁদের কয়েকজনকে উনা শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে গাড়ির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে৷ এই ঘটনাকে গোটা দেশ ধিক্কার জানিয়েছে৷ পুলিশের কাছে অভিযোগ করে ফল হয়নি৷ রাজ্যের বিজেপি সরকারও তাঁদের অভিযোগের প্রতিকারে গা করেনি৷
পূজন সেন
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ডক্টর পূজন সেন ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে এই লোকগুলোর জীবিকা ওটাই৷ ওরা বাঁচবে কীভাবে? ওদের সামনে বিকল্প জীবিকাও তো আর নেই৷ এটা বোঝার মতো পরিবেশ আমাদের দেশে নেই৷ বর্তমান সরকারের আমলে এই ধরনের ঘটনা হয়ত বেড়েছে, কিন্তু সব রাজনৈতিক দলেই এটা কম-বেশি ছিল এবং আছে৷ সব দলই এ জন্য দায়ী৷ এদের আলাদা করবেন কীভাবে? এত গেল দলিতদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা৷ গত সোমবার কোলকাতার দমদম মেট্রো স্টেশনে যা ঘটলো তা অচিন্তনীয়৷ একজন তরুণ-তরুণী পরস্পরকে আলিঙ্গন করে দাঁড়িয়েছিল৷ সেটা দেখে পাবলিকের হাতে তারা কি মারটাই না খেল, যাকে বলে গণপিটুনি৷ যারা মারলো তারা তথাকথিত শিক্ষিত, চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত ও মধ্যবয়স্ক৷ এবার ভেবে দেখুন, কী ধরনের ‘মাইন্ড সেট' থাকলে তারা এই কাজটা করতে পারে৷ এরা তো দলিত নয়৷ তাহলে এদের আলাদা করবেন কীভাবে?''
যে দেশগুলোতে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতিবছর যেসব দেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে আছে তার তালিকা প্রকাশ করে৷ ছবিঘরে ২০১৫ সালের জুলাইতে প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদনের তথ্য থাকছে৷
ছবি: DW
প্রথম: সিরিয়া
সুন্নিপ্রধান দেশ সিরিয়ায় শিয়া, বিশেষ করে আলাউইট সম্প্রদায়ের লোকজন সহ খ্রিষ্টান, কুর্দ, ফিলিস্তিনি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা হুমকির মুখে রয়েছে৷ আইএস, হিজবুল্লাহ ছাড়াও সিরিয়ার শাসকপন্থি গ্রুপ সাবিহা এ সব হুমকির অন্যতম কারণ৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’ হুমকি বলতে গণহত্যা, রাজনৈতিক হত্যা ও সহিংস দমননীতি বুঝিয়েছে৷
ছবি: Reuters/SANA
দ্বিতীয়: সোমালিয়া
সরকারের সঙ্গে আল-শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীর সংঘাত এখনও চলছে৷ আর এর শিকার হচ্ছে বান্টু (বেশিরভাগ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী) ও বেনাদিরি (বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মাবলম্বী) গোষ্ঠীর মানুষজন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Warsame
তৃতীয়: সুদান
দেশটির দারফুর অঞ্চলে বসবাসকারী নন-আরব মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর খার্তুম সরকারের নিপীড়নের অভিযোগে দু’টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ২০০৩ সালে সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ সেটি এখনও চলছে৷ ফলে দারফুরে বসবাসকারী ফুর, জাঘাওয়া, মাসালিট সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষদের জীবন সংকটে রয়েছে৷
ছবি: GetttyImages/AFP/C. Lomodon
চতুর্থ: আফগানিস্তান
বিদেশি সৈন্য চলে যাবার পর সেখানে আবারও তালেবানের শক্তি বেড়েছে৷ ফলে হাজারা, পশতুন, তাজিক, উজবেক, তুর্কমেন, বেলুচি সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষের উপর নির্যাতনের আশঙ্কা বাড়ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Aref Karimi
পঞ্চম: ইরাক
দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত৷ তারপরও সেখানে শিয়া গোষ্ঠীর লোকজনের জীবন বিপদমুক্ত নয়৷ সংকটে রয়েছে সুন্নি, কুর্দ, তুর্কমেন, খ্রিষ্টান, ইয়াজিদি, শাবাক, বাহাই, ফিলিস্তনি সহ অন্যান্যদের জীবনও৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
ষষ্ঠ: ডিআর কঙ্গো
স্থানীয় মায়ি-মায়ি মিলিশিয়া, উগান্ডা ও রুয়ান্ডার বিদ্রোহী এবং কাতাঙ্গান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কারণে মানুষের প্রাণ যাওয়া অব্যাহত আছে৷ ফলে সংকটে আছে হেমা, লেন্ডু, হুতু, লুবা, লুন্ডা, টুটসি, বাটওয়া সহ আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর জনগণ৷
বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের হামলায় সংকটে রয়েছে ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকজন৷ এছাড়া কচিন, কারেনি, কারেন, মন, রাখাইন, শান, চিন এবং ওয়া জাতির জনগণও ভালো নেই সেখানে৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশ, ভারতের অবস্থান
‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’-এর তালিকায় বাংলাদেশ ৪১তম আর ভারত ৫৪তম অবস্থানে আছে৷ বাংলাদেশে আহমদিয়া, হিন্দু সহ অন্য ধর্মাবলম্বীরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী উপজাতির লোকেদের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ আর ভারতে আসামিজ, বোড়ো, নাগা, ত্রিপুরা সহ অন্যান্য উপজাতি এবং কাশ্মিরী, শিখ, মুসলিম ও দলিতরা হুমকির মুখে আছে৷ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: DW
9 ছবি1 | 9
তিনি বলেন, ‘‘এক সমাজবিদের লেখা থেকে জানা যায়, ‘নন-মেটিরিয়াল কালচার' গড়ে ওঠে খুব ধীরে ধীরে৷ যেমন মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি৷ কিন্তু ‘মেটিরিয়াল কালচার' গড়ে ওঠে দ্রুত৷ ইউরোপ, অ্যামেরিকায় কোনো জিনিস উদ্ভাবিত হলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা গ্রহণ করে নিতে পারি৷ আজও একবিংশ শতাব্দীতে দেখি, তরুণ বা বৃদ্ধেরা সমলিঙ্গের বিয়ে মেনে নিতে পারে না৷ এটা একটা ‘মেন্টাল ব্লক'৷ আরও একটা বই পড়ছিলাম, তার ‘থিম' হলো, মার্কস এবং যিশুখ্রিষ্টকে সরিয়ে দিলে ‘ভ্যালু-বেস' আর কিছু থাকে না৷ আসলে ধর্ম বা মূল্যবোধ যার যেখানে ক্ষমতা আছে সে সেখানে সেভাবে প্রয়োগ করে৷''
ভারতে দলিতদের ওপর লাঞ্ছনা ও অপমান আকছারই ঘটছে নিত্যদিন৷ গত ২৯শে এপ্রিল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরিপ্রার্থীদের মেডিক্যাল টেস্টের সময় দলিতদের বুকে দলিত শব্দটি সেঁটে দিয়ে তাঁদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়৷ রাজস্থানে দলিতদের বিয়েতে বর ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে গেলে, পথে শ-খানেক হিন্দু তাকে ঘোড়া থেকে নামিয়ে পায়ে হেঁটে যেতে বাধ্য করে৷ ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাবার প্রথা উত্তর ভারতে নাকি স্রেফ অভিজাত শ্রেণিরই আছে৷
অপমান ও নিগ্রহের হাত থেকে মুক্তির পথ হিসেবে গত ২০১৫ সালে প্রায় পাঁচ লাখ দলিত হিন্দু নাগপুরে এক গণ অনুষ্ঠানে একযোগে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নেন৷ তার আগে ২০০৭ সালে প্রায় লাখখানেক দলিত ও উপজাতি হিন্দু ধর্মান্তরিত হয়ে বৌদ্ধ হন৷ গত সপ্তাহে ভারতের সংবিধান রচয়িতা ডক্টর বি.আর আম্বেদকারের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে আত্মঘাতি দলিত গবেষক ছাত্র রোহিত ভেমুলার মা এবং ভাই বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন৷ উল্লেখ্য, রোহিত হায়দ্রাবাদের এক হোস্টেলে থেকে পিএইচডি করছিলেন৷ হোস্টেলের অন্যান্য উচ্চবর্গের হিন্দু সহপাঠিদের অপমানজনক ব্যবহার এবং লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহত্যা করেন তিনি৷ তবুও রোহিতের পরিবার ন্যায়বিচার পাননি৷ ধর্মান্তরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আম্বেদকরের পৌত্র৷ ৭০ বছর আগে ১৯৫৬ সালে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নেন বি.আর আম্মেদকর৷ এইসব ঘটনায় কংগ্রেস জাতপাত নিয়ে শুচিবায়ুগ্রস্ত বিজেপি ও মৌলবাদী হিন্দু সংগঠন সংঘ পরিবারের সমালোচনা করে বলেছে, এটা ভারতীয় সংবিধানের ওপর হামলা৷ দলিতদের গলায় কখনও কলসি ঝোলানো হয়, কখনও ঝাড়ু বাঁধা হয়, কখনও দলিত মহিলাদের মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয় না, কখনও গ্রামের কুঁয়ো থেকে জল নিতে দেওয়া হয় না৷ উচ্চবর্গের হিন্দুত্ববাদীদের মানসিকতাই এর জন্য দায়ী৷ দলিতদের এই ক্ষত সহজে মেটার নয়, মন্তব্য করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব৷
প্রশ্ন যেটা উঠেছে, সেটা হলো জাতপাতের ভেদাভেদ ভারতীয় সমাজে পুরানো ব্যাধি সন্দেহ নেই৷ কিন্তু তা থেকে মুক্তি পেতে দলিতরা শুধু বৌদ্ধধর্মই কেন বেছে নিচ্ছেন, ইসলাম বা খ্রিষ্টান ধর্ম নয় কেন? হিন্দুদের অনেকের ধারণা, বৌদ্ধধর্ম আসলে হিন্দুধর্মেরই অঙ্গ৷ খ্রিষ্টান বা ইসলাম ধর্ম বাইরে থেকে এসেছে৷ খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করে দলিতরা দেখেছে সেখানেও উঁচু-নীচু ভেদ আছে৷ সমানাধিকার নেই৷ দলিত খ্রিষ্টানরা উচ্চবর্গের খ্রিষ্টানদের সমাধিভূমিতে নিজ সম্প্রদায়ের মানুষকে কবর দিতে পারেন না৷ ভারতীয় মুসলিম ক্ষেত্রেও একই কথা৷ সেখানেও উঁচু-নীচু ভেদাভেদ আছে৷
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
প্রাচীন স্থাপনা ও অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাসনালয় ধ্বংস করে চলেছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস৷ মসজিদের ওপরও হামলা হয়েছে৷ উপমহাদেশে হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ইতিহাসও দীর্ঘ৷ ধর্মের নামে এমন ধ্বংসের ‘খেলা’ থামবে কবে?
ছবি: Reuters
মালিতে ধ্বংসলীলা
এক সময় মালির টিমবাকটু শহরের অন্য নাম ছিল ‘মরুদ্যানের মুক্তা’৷ সেই শহরের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেই চলেছে সেখানকার ইসলামি জঙ্গি সংগঠন৷ ২০১২ সালে শহরটিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুসলমানদের গড়া অনেক স্থাপত্য নিদর্শনও ধ্বংস করেছে তারা৷ সম্প্রতি শহরটিকে জঙ্গিদের কবল থেকে পুরোপুরি মুক্ত করার দাবি করেছে মালির সেনাবাহিনী৷
ছবি: Getty Images/AFP
সন্ত্রাসপ্রীতি এবং জ্ঞানভীতি
শুধু স্থাপনা বা গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনই নয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাণ্ডুলিপিও ধ্বংস করেছে জঙ্গিরা৷
ছবি: DW/P. Breu
তথাকথিত আইএস-এর হামলা
সিরিয়ার পালমিরা শহরের প্রায় ২,০০০ বছরের পুরনো স্থাপনাগুলোও রেহাই পায়নি৷ সে দেশে চলছে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর ধ্বংসযজ্ঞ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পালমিরার মন্দির ধ্বংস
এক সময় সিরিয়ার হোমস নগরীর এই স্থাপনাটিকে নিয়ে গর্ব করত সিরিয়া৷ এটি এক সময় ছিল মন্দির৷ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রাচীন এই উপসনালয় দেখে পর্যটকরা মুগ্ধ হতেন৷ আইএস-এর হামলায় স্থাপনাটি এখন ক্ষতবিক্ষত৷
ছবি: Reuters/Stringer
ধ্বংস যখন প্রচারণার হাতিয়ার
ধর্মীয় সম্প্রীতি, সাংস্কৃতিক সহাবস্থানকে হুমকির মুখে দাঁড় করানোর চেষ্টায় আইএস অক্লান্ত৷ নৃশংসতা, বর্বরতা ক্রমেই আইএস-এর প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে উঠছে৷ এভাবে পেট্রল ঢেলে স্থাপনা পোড়ালে সংবাদমাধ্যম লুফে নেয় খবর, খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে তথাকথিত জঙ্গিরাও পেয়ে যায় তাদের কাঙ্খিত প্রচার৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
আয়ের উৎস
সিরিয়া ও ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ শুধু ধ্বংসই করে না, অনেক সময় কদর বুঝে সেগুলো চোরাপথে চড়াদামে বিক্রিও করে আইএস৷ প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছ থেকেও অমূল্য সম্পদ কেড়ে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ আছে আইএস-এর বিরুদ্ধে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/IS/Internet
আফগানিস্তানে তালেবান বর্বরতা
আফগানিস্তানের এই বৌদ্ধ মন্দিরটিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের স্বীকৃতি দিয়েছিল ইউনেস্কো৷ ২০০১ সালে হামলা চালিয়ে এটি প্রায় ধ্বংস করে দেয় তালেবান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Ahmed
আফ্রিকায় হামলার শিকার মসজিদ
মসজিদও অনেকক্ষেত্রে তথাকথিত ধর্মীয় উন্মত্ততার শিকার৷ ২০১৫ সালে মুসলমানদের উপাসনালয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি হামলার খবর আসে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান থেকে৷ খ্রিষ্টান-মুসলিম দাঙ্গায় সেখানে অন্তত ৪১৭টি মসজিদ আংশিক অথবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলেও দাবি করা হয়৷
ছবি: ISSOUF SANOGO/AFP/Getty Images
গির্জায় হামলা
ইসলামি জঙ্গিরা আফ্রিকা অঞ্চলে গির্জাতেও প্রায়সময়ে হামলা চালায়৷ হামলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটে৷ ওপরের ছবিটিতে কেনিয়ার এক গির্জায় হামলার পরের দৃশ্য৷
ছবি: dapd
ভারতের ইতিহাসের কালো অধ্যায়
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের ইতিহাসের ‘কালো দিন’৷ ভারতের উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার বাবরি মসজিদে সেদিনই হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে হিন্দু মৌলবাদীরা৷ মুঘল সম্রাট বাবরের নামে গড়া সুপ্রাচীন এই মসজিদের ওপর হামলার ঘটনা ভারতের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
বাংলাদেশে প্রতিবছরই মন্দিরে হামলা
বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মূলত একাত্তরের মুক্তযুদ্ধের সময় থেকেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুরা হামলা, নির্যাতনের শিকার৷ তবে মন্দিরে মুর্তি ভাঙা, মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অসংখ্য ঘটনা ঘটে প্রতিবছর৷ বৌদ্ধ মন্দিরেও হামলা হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হামলার কারণ ধর্মীয় উগ্রতা৷ সারা বিশ্বে ধর্মের নামে ধর্মীয় উপাসনালয় বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ওপর হামলা থামবে কবে?