বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বড় ধরণের সংকট কাল পার করছে৷ পাহাড়সম খোলাপি ঋণ এবং নগদ টাকার সংকটে ব্যাংকগুলো সমস্যায় আছে৷ একটি নতুন ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে, সংকটে আছে আরো কয়েকটি ব্যাংক৷
বিজ্ঞাপন
ব্যাংকের ওপর আস্থাহীনতা আর সুদের হার কম হওয়ায় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তুলে নিচ্ছে৷ রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ায় নতুন ব্যাংকগুলোও সফল হচ্ছে না, যার বড় উদাহরণ ফার্মার্স ব্যাংক৷ ব্যাংকটি এখন দেউলিয়া প্রায়৷ গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পরছে না তারা৷
বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতেই বেশি৷ সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর, জানা গেছে জনতা ব্যাংকের এক গ্রাহককে সর্বোচ্চ ঋণ দেয়ার কেলেঙ্কারির কথা৷ দৈনিক প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, সেই গ্রাহক হল এননটেক্স গ্রুপ৷ ছয় বছরে এই গ্রাহককে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধা দেয়া হয়েছে৷ আইন অনুযায়ী, মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে৷ জনতা ব্যাংকের মোট মূলধন ২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা৷ এক গ্রাহক ৭৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারেন না৷
‘ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা লুটপাট হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবে’
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে এখন পুঞ্জিভূত খেলাপি ঋণের পরিমান প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা৷ গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা৷ খেলাপি ঋণের ৩৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের৷ এছাড়া ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা৷ বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই হাজার ৩২১ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর পাঁচ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা৷
ঋণ অবলোপন
অবলোপন করা ৪৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ যোগ করলে ব্যাংকিং খাতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা৷ ঋণ অবলোপন হল পাঁচ বছরের পুরনো খেলাপি ঋণ, যা আদায় হচ্ছে না; তার বিপরীতে একটি মামলা ও শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিত বা প্রভিশন রেখে মূল খাতা থেকে বাদ দেয়া৷
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এখন নগদ টাকার সংকটে পড়েছে৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির শনিবার অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বলেন ‘‘একটি বেসরকারি ব্যাংক খারাপ অবস্থায় পড়ে গেছে৷ বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টাকা তুলে ফেলছে৷ একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷ শেয়ারবাজারের আতঙ্ক ব্যাংকে ছড়িয়ে পড়ছে৷ এ ব্যাপারে আমি মাননীয় অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি৷''
‘ব্যাংকগুলো তার সামর্থ্যের বাইরে অনেক বেশি ঋণ দিয়েছে এবং তা ফেরত আসছে না’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ওই অনুষ্ঠানে বলেছেন,‘‘আমদানি যে হারে বাড়ছে, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় সে হারে আসছে না৷ ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ বেড়েছে, দাম বেড়ে গেছে৷ প্রয়োজন মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ১৫০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে৷ এর মাধ্যমে বাজার থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে গেছে৷’’
দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘সরকারি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তিনটি ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা তুলে সরকারি ব্যাংকে জমা করেছে৷ হঠাৎ করে বড় অঙ্কের টাকা তুলে ফেলায় কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে ব্যাংক তিনটি৷'
এই পরিস্থিতিতি ব্যাংকের আমানতের সুদের হার বাড়তে শুরু করেছে৷ গ্রাহকদের কাছ থেকে নগদ টাকা পেতেই বেসরকারি ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে বেশি সুদ দিতে শুরু করছে৷ ব্যাংক আমানতের সুদহার ২ থেকে ৪ শতাংশ বেড়ে এখন দুই ডিজিটে পৌঁছেছে৷ তবে অর্থমন্ত্রী অগ্রণী ব্যাংকের অনুষ্ঠানেই দাবি করেছেন,‘‘ব্যাংকিং খাতে কোনো তারল্য সংকট নেই৷ কাজেই আগ্রাসী হয়ে চড়া সুদে আমানত না নেওয়ার জন্য আমি ব্যাংকারদের অনুরোধ করছি৷''
‘ব্যাংকগুলো তাদের আমানত বাড়াতে সুদের হার বাড়াচ্ছে, এটা নিয়ে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের(সিপিডি) অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলম মোয়াজ্জেম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ব্যাংকগুলো তার সামর্থ্যের বাইরে অনেক বেশি ঋণ দিয়েছে এবং তা ফেরত আসছে না৷ আবার পুঁজিবাজার যখন চাঙ্গা হয়েছিল তখন ব্যাংকের টাকা সেখানে গেছে৷ আর নতুন মুদ্রানীতিতে অ্যাডভান্স ডিপোসিট রেশিও প্রভাব ফেলেছে৷ একই সঙ্গে আমদানি বেড়েছে এবং টাকার তুলনায় ডলারের তেজি অবস্থা এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে৷ ব্যাংক থেকে টাকা চলে গেছে৷ তবে এই তারল্য সংকট সাময়িক৷''
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা মীর্জা আজিজলু ইসলাম বলেন, ‘‘ফার্মার্স ব্যাংক একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে৷ আরো কিছু ব্যাংক সমস্যায় আছে৷ তবে আমি মনে করি ব্যাংকের সার্বিক তারল্য ঠিক আছে৷ অতি তারল্য কমে গেছে৷ আর ব্যাংকগুলো এখন তাদের আমনত বাড়াতে সুদের হার বাড়াচ্ছে৷ এটা নিয়ে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে৷''
আপনি কি আপনার ব্যাংকের প্রতি সন্তুষ্ট?
ব্যাংকিং খাতে একের পর এক স্ক্যান্ডাল খদ্দেরের সঙ্গে ব্যাংকের সম্পর্কে ফাটল ধরাচ্ছে৷ সেই ফাটল ঠেকাতে ব্যাংকগুলো উদ্যোগও নিচ্ছে৷ সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে জার্মানিতে ব্যাংকের সঙ্গে খদ্দেরদের সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আপনি কি আপনার ব্যাংককে বিশ্বাস করতে পারেন?
বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও জার্মানরা দৃশ্যত ব্যাংকের প্রতি আস্থা বজায় রেখেছেন৷ যদিও কেউ কেউ এটাকে তাদের সরলতা বলতে পারেন, এর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং (ইওয়াই)-এর জরিপে অংশ নেয়াদের অর্ধেক জানিয়েছেন, তারা তাদের ব্যাংককে বিশ্বাস করেন৷ আয়ারল্যান্ডে এমন মানুষ মাত্র ২১ শতাংশ৷
ছবি: Daniel Roland/AFP/Getty Images
টাকা আর তথ্য কি নিরাপদে আছে?
ছাপ্পান্ন শতাংশ জার্মান মনে করেন, তাদের টাকা এবং ব্যক্তিগত তথ্য ব্যাংকে নিরাপদেই আছে৷ তবে এক তৃতীয়াংশ ব্যাংকের বিভিন্ন ফি এবং খরচের বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব আছে বলে মনে করেন৷
ছবি: Michael Bocchieri/Getty Images
কথা বলা দরকার?
বিশ্বব্যাপী এবং অবশ্যই জার্মানিতে অধিকাংশ মানুষই আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে আলাপ করতে ব্যাংকে যেতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন৷ চুয়াত্তর শতাংশ জার্মান মনে করেন, ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় গিয়ে কথা বলাই ভালো৷ বিশ্বব্যাপী এই হার ৭৫ শতাংশ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্মার্টফোন কি এখনো নিরাপদ নয়?
জার্মানিতে ইওয়াই’র জরিপে অংশ নেয়াদের ৭৪ শতাংশ গত বারো মাসে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে অনলাইন ব্যাংকিং করেছেন৷ তবে স্মার্টফোন ব্যাবহার করে একই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং করেছেন মাত্র ২৮ শতাংশ মানুষ৷ তবে সুইডেনে এই হার ৫৯ শতাংশ৷
ছবি: Fotolia/thongsee
অনলাইন সেবা কি সন্তোষজনক?
মাত্র ২৬ শতাংশ জার্মান মনে করেন, বিভিন্ন ব্যাংকের ওয়েবসাইটগুলো ঠিক ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়৷ তারা এক্ষেত্রে ভ্রমণ এবং বিনোদন বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে ব্যাংকগুলোর শেখা উচিত বলে মনে করেন৷
ছবি: dpa
5 ছবি1 | 5
ব্যাংকের এই সংকট চলে আসছে অনেক দিন ধরেই৷ গত ১৮ জানুয়ারি সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম জাতীয় সংসদে বলেন, ‘‘২০১৭ সালে ব্যাংক খাত নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছে৷ ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২০ টিতে আর্থিক অবস্থা ছিল দৃশ্যমানভাবে খারাপ৷ অন্য ব্যাংকগুলোতেও কমবেশি সুশাসনের অভাব ছিল৷ খেলাপি ঋণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে৷ নামে-বেনামে ইচ্ছামতো ঋণ নেওয়া হয়েছে৷ ব্যাংকের পরিচালক, নির্বাহী, বড় কর্মকর্তারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷''
তিনি ঋণ খেলাপিদের নাম ঘোষণা করা, কুঋণ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘লুটপাটের পরেও সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা মূলধনের যোগান দিতে হচ্ছে৷ যে টাকা জনগণের করের টাকা, সাধারণ মানুষের ঘাম ঝরানো টাকা৷ নতুন ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি৷ তারপরও নতুন নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে৷''
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার খালেদ বলেন,‘‘২০১০ সাল থেকেই আমরা ব্যাংকিং খাতে লুটপাট দেখতে পাই৷ বেসিক ব্যাংকের মত একটি ব্যাংক খালি হয়ে গেল অথচ চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলো না৷ আসলে ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা লুটপাট হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবে৷ আর সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বেশি হয়েছে৷ এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের দেখার দায়িত্ব হলেও ব্যাংকিং আইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাত পা বেঁধে দেয়া হয়েছে৷ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো ক্ষমতা নেই৷ সুতরাং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া ব্যাংক লুটপাট বন্ধ করা যাবে না৷''
নতুন আরেকটি আইনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোতে পারিবারিক প্রভাব বাড়ানো হয়েছে৷ এখন একটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবারের সর্বোচ্চ চারজন সদস্য হতে পারবেন৷ এটা ব্যাংক খাতকে আরো ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘নতুন ব্যাংকগুলো অনুমোদনের ব্যাপারেও সক্ষমতা দেখা হয়নি৷ রাজনৈতিক বিবেচনা এবং পরিবারকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে৷ ফার্মার্স ব্যাংক তার উদাহরণ৷''
ডিজিটাল বাংলাদেশ ‘রূপকল্প ২০২১’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান সরকার ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করেছিল৷ ইতোমধ্যে জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে৷
ছবি: Munir Hasan
আওয়ামী লীগের ইশতেহার
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদ’-এর অংশ হিসেবে ‘২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর উদ্ভব৷ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এ ঘোষণা দেয়া হয়৷
ছবি: dapd
কম পরিশ্রমে, স্বল্প ব্যয়ে মানুষের দোরগোড়ায় সেবা
ডিজিটাল বাংলাদেশ হলো তথ্যপ্রযুক্তিসমৃদ্ধ বাংলাদেশ যেখানে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সকল সুবিধা ব্যবহার করে অল্প সময়ে, কম পরিশ্রমে, স্বল্প ব্যয়ে, মানুষের দোরগোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌঁছানোর নিশ্চয়তা দান৷
ছবি: D.net/Amirul Rajiv
কৃষিক্ষেত্রে সুবিধা
কৃষিক্ষেত্রেও লেগেছে তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া৷ সারাদেশে স্থাপিত প্রায় ২৪৫ কৃষি তথ্য যোগাযোগ কেন্দ্রে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কৃষি সেবা প্রদান করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
উন্নত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র
দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের কনীনিকার (আইরিশ) প্রতিচ্ছবি সংগ্রহ করে নিবন্ধিত নাগরিকদের ‘স্মার্ট’ জাতীয় পরিচয়পত্রের পরীক্ষামূলক বিতরণ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে৷ যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে বা যারা ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তারা এই ‘স্মার্ট’ এই পরিচয়পত্র পাবেন৷ (এখানে পুরানো পরিচয়পত্রের ছবি)
ছবি: DW/S. Kumar Day
মোবাইল ব্যাংকিং চালু
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সব ধরণের জরুরি সেবাই পাওয়া যায়৷ এ সবের মধ্যে রয়েছে – টাকা জমা, টাকা তোলা ও পাঠানো, বিভিন্ন ধরণের বিল প্রদান (বিদ্যুৎ বিল,গ্যাস বিল,পানি বিল ), কেনাকাটা করা, বেতন ভাতা প্রদান ও গ্রহণ, মোবাইল ফোন টপ আপ ইত্যাদি৷
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেবা
২০ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নির্মাণ ও ল্যাপটপসহ ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে৷ ডিজিটাল কন্টেন্ট শেয়ার করার জন্য ‘শিক্ষক বাতায়ন’ নামে একটি ওয়েবপোর্টাল চালু করেছে সরকার৷
ছবি: Munir Hasan
২২টি কর্মপন্থা
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ২২ কর্মপস্থা নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নে জোর দেয়া হচ্ছে৷ এগুলো হচ্ছে – সরকারি অফিস আদালতে ই-সেবা চালু করা, ই-গভর্নেন্স চালুর মাধ্যমে সরকারি কর্মকাণ্ডের গতি বাড়ানো, ভূমি রেকর্ড ডিজিটাইজেশন, সরকারি সেবাসমূহ ইউনিয়ন অফিস থেকেই প্রদানের ব্যবস্থা, তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি৷
ছবি: play.google.com
ঘরে বসে অর্থ উপার্জন
আইসিটি খাতে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গেই ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের ধারণা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে শুরু করেছে৷ বর্তমানে দেশে তরুণ ফ্রিল্যান্সার একটি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে৷ তথ্যমতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে৷ লাখো তরুণ বিভিন্ন পর্যায়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে নিজে সাবলম্বী হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.U. Zaman
ডট বাংলা ডোমেইন
ইন্টারনেট জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডোমেইন (ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম-আইডিএন) ডট বাংলা (.বাংলা) ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ ইন্টারনেটে একটি রাষ্ট্রের জাতীয় পরিচয়ের স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করে এই ডোমেইন৷
ছবি: Ministry of Women and Children Affairs
তথ্য আদান-প্রদান
দেশে বর্তমানে নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম রয়েছে৷ স্বল্প খরচে এ সব মাধ্যম ব্যবহার করে অনায়াসেই এক স্থান থেকে আরেক স্থানে তথ্য আদান প্রদান ও ভাবের বিনিময় হচ্ছে৷ ভিডিওতে কথা বলার জন্য রয়েছে একাধিক সফটওয়্যার৷ স্কাইপ, ইমো, ফেসবুক, গুগুল ছাড়াও যে কোনো মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থ্রি জি প্রযুক্তির সংযোজনের ফলে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সব ধরনের তথ্য ও ভাবের আদান প্রদান করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন, ড্রাইভিং লাইসেন্স
এখন আয়কর রিটার্ন ফরম অনলাইনে পূরণ করা যায়৷ অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রেলওয়ে ও বাস টিকেট
অনলাইনে অনেক সহজে টিকেট কাটা ও সিট বুকিং করা যায়৷ এসএমএস-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক যাত্রীদের জন্য তথ্যসেবা প্রদান করা হয়৷ এছাড়া বাসের টিকেট কাটা যায় অনলাইনেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
সব ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ
২০২০ সালের মধ্যে দেশের সকল ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করার প্রচেষ্টা আছে সরকারের৷ এছাড়া ২০১৮ সালের মধ্যে ব্রডব্যান্ডের সম্প্রসারণ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷