ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া: জাপান
২৫ মার্চ ২০২১
উত্তর কোরিয়া দুইটি ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বাইডেনের আমলে প্রথম এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল উত্তর কোরিয়া।
বিজ্ঞাপন
সমুদ্রে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এই খবর দিয়েছে। তবে তারা বিস্তারিত কিছু জানায়নি। কিন্তু জাপানের প্রধানমন্ত্রী সুগা বলেছেন, সি অফ জাপান যা ইস্ট কোরিয়া সি বলেও পরিচিত, সেখানে দুইটি ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে যা তারা করতে পারে না।
সুগা বলেছেন, এক বছর পর এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল উত্তর কোরিয়া। এর ফলে জাপান এবং ওই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী মাসে তার সফরের সময় তিনি বাইডেনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
উত্তর কোরিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার পরই দক্ষিণ কোরিয়া ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের বৈঠক ডেকেছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারে আলোচনা হবে।
সপ্তাহখানেক আগেই উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছিল। তবে তা ব্যালেস্টিক মিসাইল নয়, ছোট পাল্লার নন-ব্যালেস্টিক মিসাইল। তখন অবশ্য অ্যামেরিকা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কারণ, নন-ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষার উপর জাতিসংঘের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। বাইডেনও তখন বলেছিলেন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এবারের পরীক্ষা নিয়ে এই কথা বলা যাচ্ছে না।
উত্তর কোরিয়াকে কাবু করতে জাতিসংঘের কিছু ‘অস্ত্র’
পারমাণবিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার কোনো তোয়াক্কাই করছে না উত্তর কোরিয়া৷ দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে তাই জাতিসংঘেরও৷ দেখা যাক, কত রকমের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকা পড়েছে উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কয়লা এবং লোহার ওপর নিষেধাজ্ঞা
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে উত্তর কোরিয়ার ওপর সব ধরনের কয়লা, লোহা এবং লোহার আকরিক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ওপরের ছবিতে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন ড্যানডং শহরের লিয়াওনিং গ্রিনল্যান্ড এনার্জি কয়লাখনি৷ খনিটি অবশ্য চীনের৷
ছবি: Reuters/B. Goh
মুদ্রায় নিষেধাজ্ঞা
বিদেশে কোনো ব্যাংক খুলতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷ এমনকি জাতিসংঘের কোনো সদস্য দেশ যাতে পিয়ংইয়ংয়ের জন্য লাভজনক কোনো আর্থিক লেনদেন বা চুক্তিতে না যায়, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে জাতিসংঘ৷ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নাগরিক যদি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এমন কোনো ব্যবসায়িক যোগাযোগ স্থাপন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশটিকে অবশ্যই ওই নাগরিককে বহিষ্কার করতে হবে৷
ছবি: Mark Ralston/AFP/Getty Images
জাহাজ চলাচল
ছবির এই জাহাজটি উত্তর কোরিয়ার৷ ২০১৬ সালের মার্চে ফিলিপাইন্সে এটিকে থামানো হয়৷ উত্তর কোরিয়ার কোনো জাহাজে পণ্য পরিবহনও নিষিদ্ধ করেছে জাতিসংঘ৷ এমনকি পিয়ংইয়ংযে নিজেদের জাহাজে অন্য দেশের পতাকা লাগিয়ে কাজ চালাবে, সেই পথও বন্ধ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Dumaguing
আকাশেও নিষেধাজ্ঞা
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন্স ‘এয়ার কোরিও’ অবশ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়৷ এখনো তাদের বিমান রাশিয়া আর চীনে যাওয়া-আসা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap
জ্বালানিতেও...
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে জ্বালানি আমদানিতেও কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় উত্তর কোরিয়া৷ ফলে জনজীবনেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে৷ নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরে মাত্র ৪০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারে উত্তর কোরিয়া৷ তাই সে দেশের নাগরিকদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ডিজেল এবং কেরোসিন পেয়েই খুশি থাকতে হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Ralston
বিদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং স্থাবর সম্পত্তি
উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিকদের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ জার্মানিসহ এখনো হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস আছে, সেখানে উত্তর কোরীয় কূটনীতিকরা চাইলেও একটার বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না৷ দেশের বাইরে দূতাবাস ছাড়া আর কোনো কাজে ঘর ভাড়াও করতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: picture alliance/dpa/S.Schaubitzer
সামরিক প্রশিক্ষণ
কোনো দেশ উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বা আধা সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে না৷ এ বিষয়েও রয়েছে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কিম জং উনের মূর্তি
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আবক্ষ মূর্তি দেখতে বা পছন্দের কোনো জায়গায় রাখতে চান? তা জাতিসংঘের একেবারেই কাম্য নয়৷ তাই উত্তর কোরিয়ার ওপর যে কোনো ধরনের মূর্তি বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷
ছবি: picture alliance/dpa/robertharding
8 ছবি1 | 8
তবে নন-ব্যালেস্টিক মিসাইলের পরীক্ষার সময়টা ছিল উল্লেখযোগ্য। তখন অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ নৌ-মহড়া চলছিল। মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন সিওলে ছিলেন। ব্লিংকেন বারবার চীনকে অনুরোধ করছিলেন, উত্তর কোরিয়া যাতে পরমাণু অস্ত্র না বানায় তারা যেন সেটা নিশ্চিত করে।
অ্যামেরিকা এখন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণু বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে চায়। পিয়ংইয়ং বলছে, অ্যামেরিকা যদি তাদের প্রতি শত্রুতার মনোভাব না ছাড়ে, তাহলে তারা এ নিয়ে আলোচনা করতে চায় না। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আগে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।