নতুন – এবং পুরনো – কোচ দুঙ্গা তাঁর সেলেসাও-কে নিয়ে মার্কিন মুলুকের মায়ামিতে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হচ্ছেন৷ ম্যাচটা একটি ফ্রেন্ডলি৷ কিন্তু ফুটবল বিশ্ব জানতে চাইবে: পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিরাময়ের পথে কিনা৷
দুঙ্গা যে এবারও সম্মার্জনী হাতে ‘ছি ছি কেত্তা জঞ্জাল' গান গেয়ে পুরনো পাপীদের সকলকে ঝেঁটিয়ে বাদ দিয়েছেন, এমন নয়৷ তাঁর প্রথম স্কোয়াডে বিপর্যয় পীড়িত বিশ্বকাপ দলের ১১ জন খেলোয়াড় আছেন – এমনকি দুই ডিফেন্ডার দাভিদ লুইস এবং মার্সেলো পর্যন্ত, যাদের অক্ষমতাই নাকি জার্মানির কাছে গো-হারানোর কারণ ছিল৷ ইনজুরি পীড়িত হুল্ক-এর বিকল্প হিসেবে দুঙ্গা ডাক দিয়েছেন রবিনিও-কে, যিনি বহু বছর ধরে ফর্ম ফিরে পাবার প্রচেষ্টায় লিপ্ত৷ তবে দুঙ্গা যে দুই ‘মন্থর' ফরোয়ার্ড জো এবং ফ্রেডকে বাদ দিয়েছেন, তা-তে সমালোচকরা খুশি, যেমন তারা খুশি আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডে ফিলিপে কুটিনিও, রিকার্ডো গুলার্ত, এভারটন রিবেইরো এবং দিয়েগো চারদেল্লিকে দেখে৷
নতুন বা পুরনো প্লেয়ারদের প্রতি দুঙ্গার প্রথম ও প্রাথমিক বার্তা হলো: অতীতকে ভুলে যাও; অতীত নিয়ে অযথা মাথা ঘামিও না৷ নিজের খেলা খেলো; দেখাও যে, তোমরা জাতীয় দলের খেলোয়াড় হবার যোগ্য৷ তবে জার্মানির বিরুদ্ধে পরাজয়ের স্মৃতি অত সহজে মাথা থেকে বার করা সম্ভব নয় – ডাউনটাউন মায়ামির বিলাসবহুল ‘ব্রিকেল কি' হোটেলে বসেই রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে এ কথা বলেছেন ব্রাজিলের মিডফিল্ডার অস্কার৷
মেসি-নেইমার সমানে সমান
রাশিয়া বিশ্বকাপেও সবাই তাঁদের দিকে তাকিয়ে৷ মেসি আর নেইমার৷ চলুন ২০১৪ বিশ্বকাপে তাদের কয়েকটি ম্যাজিক দেখে নিই ছবিঘরে৷
ছবি: Pedro Ugarte/AFP/Getty Images
শুরুতেই নেইমার
২০১৪ বিশ্বকাপে তারকার দ্যুতি কিন্তু প্রথমে নেইমারই দেখিয়েছেন৷ আসর শুরু হয়েছিল ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ দিয়ে৷ আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়লেও পরে নেইমারের গোলেই ম্যাচে ফিরেছিল ব্রাজিল৷ গোল করার পর নেইমারের উল্লাস৷
ছবি: Reuters
আবার নেইমার
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেদিন শুধু ব্রাজিলকে ম্যাচে ফেরাননি, আরেক গোল করে জয়ের দ্বারপ্রান্তেও নিয়ে গিয়েছিলেন নেইমার৷ গোলটি হয়েছিল পেনাল্টি থেকে৷ ছবিতে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক স্টিপে প্লেটিকোসাকে নেইমারের শট রোখার ব্যর্থ চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters
মেসির শুরু
বিশ্বকাপ ২০১০ শুধু হতাশাই দিয়েছিল লিওনেল মেসিকে৷ সে আসরে আর্জেন্টিনা তো প্রত্যাশা মতো খেলতে পারেইনি, মেসিও পাননি বলার মতো কোনো সাফল্য৷ মেসির মতো খেলোয়াড় সেবার একটা গোলও পাননি, ভাবা যায়! ২০১৪-তে কিন্তু গোলখরা কাটাতে বেশি সময় নেননি৷ রিও ডি জেনেরোয় নিজেদের প্রথম ম্যাচে বসনিয়াকে ২-১ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা৷ দু’গোলের মধ্যে একটি ছিল মেসির৷
ছবি: Reuters
ত্রাণকর্তা মেসি
দ্বিতীয় ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিল ইরান৷ সহজ জয়ই ছিল প্রত্যাশিত৷ কিন্তু ইরান কোমর বেঁধে নামে গোল না খাওয়ার লড়াইয়ে৷ মেসি ছিলেন বলে রক্ষা৷ তাঁর একমাত্র গোলেই সেদিন জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা৷ মেসির শট থেকে বল যাচ্ছে জালে, আপ্রাণ চেষ্টা করেও কিছু করতে করতে পারলেন না গোলরক্ষক আলী রেজা হাঘিঘি, শেষ রক্ষা হলো না ইরানের৷
ছবি: Reuters
নেইমার-নির্ভর ব্রাজিল
মেসি ছাড়া আর্জেন্টিনা প্রায় অচল – এটা এখন প্রায় প্রতিষ্ঠিত সত্য৷ ব্রাজিল দলে নেইমারের গুরুত্বও এখন এরকম৷ মেক্সিকোর বিপক্ষে নেইমার গোল পাননি৷ ব্রাজিলকে সেই ম্যাচ ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে৷ গ্রুপ পর্বে পাঁচ বারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের শেষ ম্যাচটি ছিল ক্যামেরুনের বিপক্ষে৷ এ ম্যাচেও নেইমারের গোলেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা৷
ছবি: Reuters
আবার জোড়া গোল
ক্রোয়েশিয়ার মতো ক্যামেরুনের বিপক্ষেও এক গোল করে সন্তুষ্ট থাকেননি নেইমার৷ এ ম্যাচেও জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা৷ কোচ স্কলারি অবশ্য নকআউট পর্বের কথা ভেবে দলের সেরা তারকাকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেননি৷ দু’গোল করার পরই তুলে নেন নেইমারকে৷
ছবি: AFP/Getty Images
মেসি মানেই গোল
‘এফ’ গ্রুপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচে মেসির গোলেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা৷ তারপরও থামেননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মেসি-ম্যাজিক
আর্জেন্টিনাকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল নাইজেরিয়া৷ ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরের মিনিটেই মুসার গোলে সমতা ফেরায় তারা৷ তারপর আবার মেসি-ম্যাজিক৷ ফ্রি-কিক থেকে গোল করে আবার আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন এই ফুটবলার৷ ছবিতে মেসির ফ্রি কিক নেয়ার দৃশ্য, বাঁক খেয়ে বল যাচ্ছে গোল পোস্টের দিকে৷
ছবি: Pedro Ugarte/AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
অপরদিকে বিপক্ষ হিসেবে কলম্বিয়াও ঠিক ফেলনা নয়৷ স্ট্রাইকার রাদামেল ফালকাও, যিনি ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ মিস করেন, তিনি এবার দলে ফিরেছেন – মাত্র গত সোমবার মোনাকো থেকে ম্যানইউ-তে ট্রান্সফার নেবার পর৷ আর ফালকাও যার জুটি হবেন, তিনি হলেন কলম্বিয়া তথা (হালে) রেয়াল মাদ্রিদের রাইজিং স্টার খামেস রদ্রিগেজ: ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা৷ মায়ামির সানলাইফ স্টেডিয়ামে তাঁকে দেখতেই ভিড় করে আসবেন শত শত কলম্বিয়ান ভক্ত৷
ওদিকে ফুটবল দুনিয়া দেখবে: ব্রাজিল নিরাময়ের পথে কত দূর...