ব্রাজিলে অরণ্যের অধিকারের দাবিতে জনজাতিদের আন্দোলন
১১ এপ্রিল ২০২৫
নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় প্রতিবাদে নেমেছেন হাজার হাজার জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ।
একই সঙ্গে, আসন্ন কপ ৩০ সম্মেলনে জৈব জ্বালানির ব্যবহার কম করার প্রতিশ্রুতি আদায়েরও দাবি রেখেছেন এই প্রতিবাদীরা। আগামী নভেম্বরে ব্রাজিলের বেলেম শহরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
কেন এই প্রতিবাদ?
প্রতিবাদীদের দাবি, ২০২৩-এর আইন তাদের পৈত্রিক জমির অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এর ফলে চাষ এবং কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে জমি হারাচ্ছেন কোনো কোনো জনগোষ্ঠীর মানুষ।
এই বিবাদ দেশের সুপ্রিম কোর্ট অবধি গড়িয়েছে। জনজাতি এবং শক্তিশালী কৃষি ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমঝোতা সূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনজাতিদের সংগঠন নতুন আইনকে চ্যালেঞ্জ করে অভিযোগ করেছে জমির উপর তাদের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে।
প্রতিবাদ মিছিলে উত্তেজনা
এই সপ্তাহের শুরুতে অ্যামাজন এবং ওসিয়ানিয়া থেকে আগত হাজার হাজার জনজাতিভুক্ত মানুষ ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক টেরা লিভ্র বা মুক্ত জমি প্রতিবাদ মঞ্চে অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার এই জনজাতি সম্প্রদায়ের একাংশ কংগ্রেসের দিকে যেতে গেলে স্থানীয় সুরক্ষা বাহিনী তাদের উপর কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে এবং তার থেকে উত্তেজনা ছড়ায়।
ব্রাজিলের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে, জনজাতিদের একাংশ কংগ্রেসের ভিতরে প্রবেশ করতে চাইছিলেন। প্রতিবাদীরা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
নতুন করে তেল উত্তোলন এবং জৈব গ্যাসের ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য বৃহস্পতিবারই ১৮০টি জনজাতি গোষ্ঠী এবং সারা বিশ্বের জলবায়ু সংগঠনের প্রতিনিধিরা কপ সচিব আন্দ্রে কোরিয়া দো লাগোকে একটি চিঠি দেন।
জৈব গ্যাসের বদলে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার সহজতর করার জন্য এবং উষ্ণায়নের মাত্রাকে শিল্প-পূর্ববর্তী মাত্রা থেকে এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখারও আবেদন করা হয় ওই চিঠিতে।
ল্যাটিন অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদক দেশ ব্রাজিল। প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা অ্যামাজন নদীর মুখ থেকে ৫০০ কিমির মধ্যে তেলের জন্য ড্রিলিংয়ের অনুমতি দিতে চান।
প্রেসিডেন্ট বলসেনারোর শাসনকালে জনজাতির অধিকার এবং অরণ্য রক্ষা বিপন্ন হয়েছিল। ২০২২-এ ক্ষমতায় ফিরে লুলা সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
এসসি/জিএইচ(এপি, এএফপি, রয়টার্স)