আমাদের উপমহাদেশে স্তন ক্যানসারের বিষয়ে মেয়েরা ততটা সচেতন না, যতটা সচেতন ব্রা কেনার ব্যাপারে৷ আর এই ব্রা এবং স্তন দু'টো নিয়েই মেয়েদের বিপত্তি৷ এই ভিডিওতে সেটাই তুলে ধরেছেন এক কমেডিয়ান৷
বিজ্ঞাপন
ভারতের ‘স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান' অদিতি মিত্তাল খুব মজা করেই স্তন ক্যানসারের সচেতনতার কথা তুলে ধরেছেন৷ আর এই ভিডিওটি ইউটিউবে গত এক সপ্তাহে দেখা হয়েছে ১৩ লাখ ৪০ হাজার বার৷ অদিতি তুলে ধরেছেন স্তন নিয়ে এত আগ্রহ এবং গোপনীয়তা কেন? তিনি বলছেন, উপমহাদেশে সেফটিপিন ব্যবসা এত ভালো কারণ মেয়েরা নানা ভাবে তাদের স্তন ঢাকতে ব্যস্ত৷
সেই সঙ্গে ব্রা কিনতে গিয়ে দোকানে কী ধরনের বিব্রতকর অবস্থায় তাদের পড়তে হয় সেসব কথাও তুলে ধরেছেন তিনি৷ বলছেন, ছেলেরা ওষুধের দোকানে কনডোম কিনতে গিয়ে যতটা লজ্জা ও বিব্রত বোধ করে, মেয়েরা করে ব্রা কিনতে গিয়ে৷ বর্তমানে বিভিন্ন শপিং মলে বড় বড় ব্যান্ডের ব্রা-এর দোকান হয়েছে, যেখানে নারীরাই বিক্রেতা৷ কিন্তু সমস্যা হলো সেখানে দাম অনেক বেশি৷ তবে সবশেষে তিনি বলতে চেয়েছেন, মেয়েদের স্তনের ভেতরে কি হচ্ছে সেটা জানাটা জরুরি৷ আর তা জানতে হলে প্রতি ছ'মাসে নিজের স্তন নিজেকেই স্পর্শ করে পরীক্ষা করতে হবে৷ এভাবেই স্তন ক্যানসার সচেতনতার বিষয়টি তুলে ধরেছেন তিনি৷
বক্ষবন্ধনীর ইতিহাস
ব্রা বা বক্ষবন্ধনীর শত বছর পূর্তির খবরটা রোমাঞ্চকর থেকে রাজনৈতিক, সব কিছুই হতে পারে৷ নারীত্ব থেকে নারীবাদ, যৌনতা থেকে পুরুষ-শাসিত সভ্যতা, সবকিছুর প্রতীক হতে পারে এই ছোট্ট, অথচ মহিলাদের কাছে প্রায় অপরিহার্য এই পরিধেয়টি৷
ছবি: picture alliance/PA Archive/Press Association
একটি অপরিহার্য বস্ত্র
প্রতিদিন সারা বিশ্বের কোটি কোটি মহিলা যে অন্তর্বাসটি পরিধান করে থাকেন, ইংরিজিতে যার নাম ব্রাসিয়ের কিংবা ব্রা, সেই বক্ষবন্ধনীর পেটেন্ট নথিভুক্ত করা হয় আজ থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে, ১২ই ফেব্রুয়ারি ১৯১৪ তারিখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দেড় হাজার ডলার মূল্যের একটি পেটেন্ট!
ব্রাসিয়েরের স্রষ্টা মেরি ফেল্পস জেকব একশো বছর আগে ব্রা-এর পেটেন্ট নথিভুক্ত করেন: তখন তাঁর বয়স ২৩ বছর৷ পরে মাত্র দেড় হাজার ডলার মূল্যে সেই পেটেন্ট আবার বেচেও দিয়েছিলেন মেরি৷
ছবি: imago/United Archives
প্রথম আধুনিক বক্ষবন্ধনীর জন্মমুহূর্তে
সে আমলে মহিলারা পোশাকের তলায় যে বস্তুটি ধারণ করতেন, তাকে বলা হতো ‘কর্সেট’৷ সেটা ছিল এক ধরনের বর্ম, তিমি মাছের হাড় দিয়ে তৈরি হুপ যুক্ত৷ কাজেই মেরির সৃষ্টি ছিল সে তুলনায় নারী মুক্তির সমতুল৷ ছবিতে জার্মান মহিলারা ১৯১২ সালে জার্মানিতে মহিলাদের ভোট দেবার অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন৷
ছবি: picture-alliance/akg
বক্ষবন্ধনী, নাকি শুধুই বন্ধন?
ষাটের দশকে নারীমুক্তি আন্দোলন যখন চরমে, তখন আবার ইউরোপ-অ্যামেরিকায় ঐ মহিলারাই তাঁদের ব্রা পুড়িয়ে পুরুষ-শাসিত সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান৷ ছবিতে ২৩ বছর বয়সি ডায়ান ম্যাথিউস ১৯৭২ সালে লন্ডনে ব্রা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷
ছবি: picture alliance/PA Archive/Press Association
বক্ষবন্ধনী আবার প্রতিবাদের প্রতীক হতে পারে
দেশ, সংস্কৃতি ও কাল একটি প্রতীকের অর্থ ও তাৎপর্য নির্ধারণ করে৷ মিশরের সাম্প্রতিক আন্দোলনে নীল রঙের ব্রা পরে আন্দোলনে নেমেছিলেন মহিলারা৷
ছবি: Reuters
অকল্পনীয় সম্পদ
ব্রা চিরকালই পরিধেয় বস্ত্র ও প্রতীক: নারী ও পুরুষের যৌনতা তার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়৷ অপরদিকে সেই ব্রা-কেই আবার নারীবাদীদের কোপে পড়তে হয়৷ পুঁজিবাদের আমলে মহিলাদের অন্তর্বাস নির্মাতা মার্কিন কোম্পানি ভিক্টোরিয়া’স সিক্রেট-এর এই মণি-মাণিক্য-খচিত ফ্লোরাল ফ্যান্টাসি ব্রা-টির দাম ২৫ লাখ ডলার৷
ছবি: Reuters
বক্ষবন্ধনী যেমন আন্তর্জাতিক, তেমনই দেশজ
পরিবেশ সচেতনতা থেকে দেশজ সংস্কৃতির ছোঁয়া লেগেছে শিশলের তৈরি এই ভারতীয় ব্রা-টিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নারীবাদ ও নারীদেহ
নারীমুক্তি ও নারীস্বাধীনতা আন্দোলনের সমাপ্তি ব্রা-তে কিংবা ব্রা পোড়ানোতেই নয়৷ নারীদেহই এখন সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধের প্রতীক, যেমন ইউক্রেনের ‘ফেমেন’ গোষ্ঠীর আন্দোলনে৷ ছবিতে আন্দোলনকারীরা প্যারিসের রাজপথে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷