ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে বিচার শুরু
২১ ডিসেম্বর ২০১৭
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-কে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাইমুর জাকারিয়া রহমানের বিচার শুরু হবে আগামী বছরের জুনে৷ বুধবার এ আদেশ দিয়েছে ব্রিটেনের একটি আদালত৷
বিজ্ঞাপন
নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখে টেরেসা মে-কে হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি অন্য একটি সন্ত্রাসী পরিকল্পনায় ২১ বছর বয়সি আকিব ইমরানকে সহযোগিতা করছিলেন৷ তিনি ইমরানকে একটি ভিডিও পাঠিয়েছিলেন, যেটাতে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর নির্দেশ ছিল৷ ইমরানের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসে মদদ দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে৷
বুধবার লন্ডনের ওল্ড বেইলি সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল কোর্টে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বেলমার্শ কারাগার থেকে যুক্ত করা হয় নাইমুর এবং ইমরানকে৷ সেখানে বিচারক বলেন, এই অভিযোগের উপর শুনানি আগামী ১৮ জুন শুরু হবে৷ ততদিন পর্যন্ত দু'জনকে কারাগারে থাকতে হবে৷ অন্যদিকে, অন্য একটি মামলায় আইএস-এর সমর্থক হাসনাইন রশিদকে প্রিন্স জর্জের স্কুলের যাবতীয় তথ্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ার করার অভিযোগের উপর শুনানি শুরু হবে আগামী বছরের ৩০শে এপ্রিল৷
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে নাইমুর জাকারিয়া রহমান নিজেকে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেন৷ নাইমুর জাকারিয়া উত্তর লন্ডনের বাসিন্দা৷ তিনি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটের নিরাপত্তা গেটে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন৷ এসময় ছুরি, পেপার স্প্রে এবং সুইসাইড ভেস্ট ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-কে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি৷ এছাড়া পিঠের ব্যাগের ভেতরেও বোমা ছিল, যার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অনেক মানুষ হত্যার পরিকল্পনা ছিল৷
নগরবাসীদের ভয় কিসে ও কেন?
শহরগুলি চুম্বকের মতো মানুষজনকে টানে৷ শহরে আছে অবকাঠামো, শিক্ষা, চাকুরি ও সামাজিক মেলামেশা....কিন্তু শহরগুলির আয়তন ও জনসংখ্যাই তাদের সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/Asianet Pakistan/R. Ali
সন্ত্রাসী আক্রমণ
ইউরোপ কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শহরবাসীদের সবচেয়ে বড় ভয় হল কোনো আচম্বিত ও অপ্রত্যাশিত সন্ত্রাসী আক্রমণ – অথচ কাবুল কিংবা আলেপ্পোর তুলনায় পশ্চিমে খুব কম মানুষই সন্ত্রাসের শিকার হন৷
ছবি: Reuters/S. Perez
জলবায়ু পরিবর্তন
পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ অনুযায়ী পশ্চিমে শহরবাসীদের কাছে দ্বিতীয় বৃহত্তম আশঙ্কার উৎস হলো জলবায়ু পরিবর্তন৷ বিশ্বের অধিকাংশ শহরই হয় সমুদ্রের উপকূলে, নয়ত নদীতীরে অবস্থিত (ছবিতে হিউস্টন); কাজেই সাগরের পানির উচ্চতা বাড়লে শহরগুলির বিপদ ঘটবে বৈকি৷ অপরদিকে তথাকথিত হটহাউস গ্যাসগুলির ৭৫ শতাংশ আসে শহরগুলি থেকে৷
ছবি: Reuters/J. Bachmann
আবহাওয়ার চরম...
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া যে চরমে উঠথে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ এ বছর ‘ইর্মা’ কিংবা ‘হার্ভে’-র মতো ঘূর্ণিঝড় বা (ছবিতে) মুম্বইতে বর্ষার প্লাবন – এ সবই লক্ষ লক্ষ মানুষের, বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকার বিপদ ঘটাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AA/I.Shaikh
প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে ফাঁদে
ভূমিকম্প বা সুনামির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শহরবাসীরা সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন, কেননা তাদের পালাবার পথ নেই৷ অপরদিকে অতি স্বল্পসময়ের মধ্যে হাসপাতাল, পথঘাট এবং সেতু, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ভেঙে পড়তে পারে৷
ছবি: Getty Images/Feng Li
সাইবার আক্রমণ
নগরসভ্যতায় আজ পানি কি বিদ্যুৎ সরবরাহ, পরিবহণ কিংবা হাসপাতাল – সবই চলে কম্পিউটারে৷ তাই এই সব কম্পিউটার প্রণালীর উপর হ্যাকারদের সাইবার আক্রমণের সম্ভাবনা নগরবাসীদের তৃতীয় বৃহত্তম আশঙ্কা – বলছে পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ৷
ছবি: Colourbox
যানজট ও পরিবহণে অচলাবস্থা
শহরে বাসস্থান থেকে কর্মস্থান, সব কিছু কাছে হওয়ার কথা৷ কিন্তু শহরের কেন্দ্রীয় এলাকাগুলিতে বাড়িভাড়া আকাশছোঁয়া হওয়ার ফলে বহু মানুষ অনিচ্ছাসত্ত্বেও ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জার’ হয়ে পড়েছেন, অনেক সময় নিজের গাড়িতে৷ জার্মানিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের ৬০ শতাংশই কাজে আসেন দূরদূরান্ত থেকে; কাজেই পথে যানজট, শহরে যানজট ও সেই পরিমাণে বায়ুদূষণ৷
অপরাধবৃত্তি
শহর-নগর অপরাধের কেন্দ্রস্থল: চোরডাকাতি, ধর্ষণ, সহিংসতা৷ বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহরগুলি হলো মধ্য ও দক্ষিণ অ্যামেরিকায়: ভেনেজুয়েলার কারাকাসে প্রতি এক লাখ বাসিন্দার অনুপাতে বছরে ১৩০ জন মানুষ খুন হন; মেক্সিকোর আকাপুলকোয় এই সংখ্যা হলো ১১৩; হন্ডুরাসের সান পেদ্রো সুলায় বছরে প্রতি এক লাখ মানুষ প্রতি খুন হন ১১২ জন মানুষ৷ একমাত্র যুদ্ধের এলাকায় এর চেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারান৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Felix
ধনি-দরিদ্র
বড় বড় শহরগুলিতে ধনি-দরিদ্রের ব্যবধান বিশেষ করে চোখে পড়ে: একদিকে বিপুল সম্পদ ও সেই পরিমাণে সম্ভোগ; অন্যদিকে বস্তি ও হাভেলা, অভাব-অনটন ও সহিংসতা৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO
তবুও মানুষ শহরের খোঁজে
লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু শহরে আসেন গ্রাসাচ্ছাদন, নিরাপত্তা ও সুন্দর জীবনের খোঁজে৷ (ছবিতে বার্লিনের) সরকারি কার্যালয়ে নাম লেখানোর জন্য ছেলে কোলে দাঁড়ানো উদ্বাস্তু মায়ের কাছে শহর, এমনকি বিদেশি শহরও ভয়ভীতি নয়, আশার প্রতীক, সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের প্রতীক৷