ইউসিএল ইস্টম্যান ডেন্টাল ইনস্টিটিউটের একটি জরিপ থেকে জানা গেছে যে, ব্রিটেনের প্রায় ৪০ শতাংশ পেশাদারি ফুটবলারের দাঁতের অবস্থা শোচনীয়৷ জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিন-এ৷
বিজ্ঞাপন
পেশাদারি ফুটবলারদের অর্থাভাব না থাকা সত্ত্বেও দৃশ্যত তারা পারতপক্ষে দাঁতের ডাক্তারের ছায়া মাড়াননা৷ নয়তো তাদের দাঁতের অবস্থা সমবয়সিদের চেয়ে এতো খারাপ হবে কী করে?
একদল ডেন্টিস্ট এবং ডাক্তার ইংল্যান্ড ও ওয়েলস-এর আটটি ক্লাবের ১৮৭ জন প্লেয়ারকে পরীক্ষা করে দেখেন৷ তাদের মধ্যে পাঁচটি ক্লাব ছিল প্রিমিয়ার লিগের: হাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, সাদাম্পটন, সোয়ানসি সিটি ও ওয়েস্ট হ্যাম৷ দুটি ক্লাব ছিল সেকেন্ড ডিভিশনের এবং আরো একটি লিগ ওয়ান থেকে৷ প্লেয়ারদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে, গড়ে ২৪ বছর৷ প্রতিটি ক্লাবের ফুটবল দলের অন্তত ৯০ শতাংশ প্লেয়ারকে পরীক্ষা করা হয়৷
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিন
জানেন কি দাঁতের কারণে মাথাব্যথা বা কোমরব্যথা পর্যন্ত হতে পারে? কিংবা মুখের ভেতরের শুষ্কতার সাথে হজমের সম্পর্ক রয়েছে? দাঁত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য থাকছে এই ছবিঘরে৷
ছবি: Fotolia/draw05
অতিরিক্ত সংবেদনশীল দাঁত
মজার একটি আইসক্রিমে কামড় দিলে দাঁত কেমন শিড়শিড় করে ওঠে কিংবা গরম কফি বা চায়ের কাপে চুমুক দিলেও প্রায় একই অবস্থা হয়৷ অথবা দাঁত ব্রাশ করা সময় রক্ত বের হয়ে থাকে অনেকের৷ এরকম অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা খাবার, আবার অনেক সময় দাঁত ব্রাশ অসুস্থ দাঁতের অবস্থা বুঝিয়ে দেয়৷ এমন অনুভূতির সাথে বহু মানুষ পরিচিত হলেও এর আসল কারণ হয়ত অনেকেরই জানা নেই৷
ছবি: Fotolia/djma
দাঁতের শেকড়
এরকম অসুস্থ দাঁত ঠান্ডা, গরম বা যে কোনো ধরণের চাপ একেবারেই সহ্য করতে পারে না৷ এ সব চাপ দাঁতের মূলে, অর্থাৎ স্নায়ু ও শেকড়ের মাধ্যমেই মস্তিস্কে যায়৷
ছবি: luna/Fotolia.com
ব্যথার জন্যও দায়ী অসুস্থ দাঁত
ব্যথার জন্যও দায়ী অসুস্থ দাঁত‘‘ দাঁত বা দাঁতের মাংশপেশিতে ব্যথা, রাতে ঘুমের ভেতর শব্দ করে দাঁত ঘষা, চোয়ালের জয়েন্টগুলোয় সমস্যার কারণে মাথাব্যথা, টিনিটাস, মাথাঘোরা, ঘাড়ব্যথা, কোমরব্যথা ইত্যাদি রোগ হতে পারে৷ তাছাড়া চোয়ালের পেশির নার্ভের সাথে আছে মেরুদণ্ডেরও সম্পর্ক৷ এমনকি ‘‘শুধু একটিমাত্র অসুস্থ দাঁতের কারণে পুরো শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে’’, বলেন কোলন শহরের দন্ত বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়োখেন শ্মিড৷
ছবি: Fotolia/twystydigi
বিশেষ নিয়মে দাঁত মাজুন
দাঁতকে সুস্থ রাখতে নিয়মিতভাবে দাঁত মাজা ছাড়াও, দাঁতের ফাঁকগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করার ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে৷ দাঁতের মধ্যকার ফাঁক পরিষ্কার করার জন্য রয়েছে বিশেষ ধরণের ছোট ছোট ব্রাশ, ‘ডেন্টাল ফ্লস’ ইত্যাদি৷ প্রতিদিন সকাল ও রাতে কমপক্ষে দু’মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করবেন৷ অবশ্য ভালো হয় যদি ফ্লোরাইড সম্বলিত টুথপেস্ট ব্যবহার করা যায়৷
ছবি: Ramona Heim - Fotolia
বিশেষ যত্ন
এ সব ক্ষেত্রে নরম টুথ ব্রাশ এবং খুব অল্প চাপ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে৷ সম্ভব হলে ইলেক্ট্রিক ব্রাশ ব্যবহার করা যেতে পারে, কারণ এই ব্রাশ প্রয়োজন অনুযায়ী চাপ দিয়ে থাকে৷ সংবেদনশীল দাঁতের জন্য তৈরি বিশেষ টুথপেস্ট ব্যবহার করলেই ভালো৷ তাছাড়া দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে এ সমস্যার আসল কারণ জেনে নেয়া উচিত৷
ছবি: Robyn Beck/AFP/Getty Images
দাঁতের মাড়ির ‘ইনফেকশন’
প্রথমদিকে শুধু একটি দাঁতে ব্যথা, তারপর একটু রক্ত পরা বা সামান্য ফুলে যাওয়া, অথবা দাঁত মাজার সময় খানিকটা ব্যথা – এগুলোকে মোটেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না৷ অথচ এগুলিই মাড়িতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধার প্রাথমিক লক্ষণ, যা পরে মারাত্বক আকার নেয় এবং দাঁতের অস্থির ক্ষয়রোগে পরিণত হয়৷ জার্মানিতে যাঁরা দাঁতের মাড়ির ইনফেকশনে ভোগেন, তাঁদের ৮০ শতাংশরই বয়েস ৩৫ বছরের বেশি৷
ছোটবেলা থেকেই দাঁতের যত্ন
মাড়ি নরম হয়ে গেলে আর দাঁতকে ধরে রাখার কোনো ‘সাপোর্ট’ থাকে না৷ ফলে ধীরে ধীরে দাঁত পড়ে যেতে থাকে৷ শুধু তাই নয়, দাঁতের ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ দাঁতের স্বাস্থ্যের মূল কথা – দাঁত খুব ভালো করে পরিষ্কার রাখা৷ তবে ভালো হয় ডাক্তারকে দেখিয়ে সব নিয়মকানুন জেনে সেভাবে দাঁতের যত্ন নেওয়া৷ আর তা অবশ্যই একেবারে ছোটবেলা থেকে!
ছবি: picture-alliance/dpa
বেশি করে পানি পান করুন
দিনে কম পক্ষে দুই লিটার পানি খান, কারণ পানি মুখের ভেতরটা ভেজা রাখে, ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে ফেলে এবং খাবারের শেষ টুকরোগুলোকে পেটের ভেতরে নিয়ে যায়৷ বেশি করে পানি এবং চিনি ছাড়া চা পান করুন৷ কারণ চিনি যুক্ত চা ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে৷ তাছাড়া ঘন ঘন জলপান মুখের ভেতর এবং পেট পরিষ্কার রেখে হজমেও সাহায্য করে৷
ছবি: Fotolia/photo 5000
দন্তবন্ধনী
অল্পবয়সি ছেলে-মেয়েদের দাঁত এলোমেলোভাবে বেড়ে উঠলে বা ক্ষয়ে গেলে, স্বাস্থ্য ও সোন্দর্য্য রক্ষায় ডাক্তাররা ‘ফিলিং’ করেন অথবা দাঁতে তাঁরের ‘ব্রেস’ বা বন্ধনী দিয়ে থাকেন৷ এটা কমপক্ষে একবছর নিয়ম করে, অর্থাৎ সব সময় পরে থাকতে হয়৷ তবে আজকাল বয়স্কদের মুখেও বন্ধনী দেখা যায়৷ কারণ কার, কতদিন, কী ধরনের বন্ধনী প্রয়োজন – তার উত্তর একমাত্র দিতে পারবেন দাঁতের ডাক্তারই৷
ছবি: Fotolia/draw05
9 ছবি1 | 9
প্লেয়ারদের তিন-চতুর্থাংশ বলেছেন যে, তারা গত এক বছরের মধ্যে ডেন্টিস্টের কাছে গিয়েছেন, যদিও পরীক্ষা করে যা দেখা গিয়েছে, তার সঙ্গে এই বক্তব্য ঠিক মেলে না৷ অনেকে নাকি দাঁতব্যথা সত্ত্বেও ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে উঠতে পারেননি৷ কিন্তু সেটা কি ভয়ে, না বাহাদুরি দেখানোর জন্যে, নাকি সময় নেই বলে – জরিপে সেটা ধরা পড়েনি৷ মোট কথা, জরিপের সময় ছ'জনের মধ্যে একজন বলেছেন যে, তাঁর মুখে কিংবা দাঁতে ব্যথা আছে; চারজনের মধ্যে একজন বলেছেন, বেশি ঠাণ্ডা বা গরম কিছু খেলে তাদের দাঁত কনকন করে৷
জরিপের ডেন্টিস্ট ও ডাক্তাররা নাকি একাধিক প্লেয়ার দেখেছেন, যাদের দাঁত ক্ষয়ে স্নায়ু অবধি পৌঁছে গেছে এবং চোয়ালের ইনফেকশন সৃষ্টি করেছে৷ ৩৭ শতাংশের বাস্তবিক দাঁত ক্ষয়ে যাচ্ছে, ৫০ শতাংশের দাঁত অম্লের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত৷ প্রতি দশজন প্লেয়ারের মধ্যে আটজনের মাড়ির রোগ আছে৷ ৭৫ শতাংশের মুখের অর্ধেকই রোগগ্রস্ত৷ প্রতি বিশজনের মধ্যে একজনের মাড়ির দশা এমন, যে তা ঠিক করার আর কোনো উপায় নেই৷
সবচেয়ে বড় কথা: প্লেয়ারদের সাত শতাংশ বলেছেন যে, দাঁতের রোগ তাদের খেলা কিংবা ট্রেনিং-এর ওপরেও প্রভাব ফেলছে৷ আরো মজার কথা: অধিকাংশ ক্লাবের নিজেদের স্টাফের জন্য কোনো দাঁতের ডাক্তার নেই৷
শীর্ষ আয়ের ১০ খেলোয়াড়
উচ্চ বেতন, স্পন্সরশিপ আর পরিধেয় বিক্রি – এই করেই অনেক টাকা আয় করেন ক্রীড়াবিদরা৷ ফোর্বস ম্যাগাজিন সম্প্রতি অর্থ আয়ের দিকে দিয়ে শীর্ষ খেলোয়াড়দের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে৷ এতে আপনার প্রিয় তারকা স্থান পেয়েছে কিনা দেখে নিন৷
ছবি: Getty Images/Afp/John Gurzinski
অপরাজিত মেওয়েদার
মার্কিন বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদার জুনিয়রকে এখনও কেউ হারাতে পারেনি৷ তাইতো ৪৭ বার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়ে প্রতিবারই জয় নিয়ে ফিরেছেন মেওয়েদার৷ তিনি যে গত বছর ১০৫ মিলিয়ন ডলার আয় করবেন তাতে আর অবাক হওয়ার কি আছে! ফোর্বসের তালিকায় স্বভাবতই তাঁর নাম সবার ওপরে৷
ছবি: Getty Images/Afp/John Gurzinski
যেমন খেলা তেমন ফ্যাশন
খেলার মাঠে যেমন তিনি জাদু দেখিয়ে থাকেন, মাঠের বাইরেও যেন তিনি ফ্যাশনের রাজা৷ তাইতো নিজের নামেই রয়েছে একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড৷ সবমিলিয়ে আয়টাও তাই অনেক – প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার৷ ফলে সবচেয়ে বেশি অর্থ আয় করা ফুটবলারও তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শুধু বলই নয় নিজের বাস্কেটে পুরেছেন অর্থও
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন, এনবিএ-র চারবারের ‘সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড়’ ২৯ বছর বয়সি লেবরন জেমস৷ গত বছর তাঁর আয় ছিল ৭২.৩ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Getty Images
লিওনেল মেসি
চারবারের বর্ষসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি৷ মাঠে কে সেরা মেসি না রোনাল্ডো – এই প্রশ্ন করা গেলেও ফ্যাশন জগতে সেটা করা যাবে না৷ কারণ সেখানে রোনাল্ডোর কাছে মেসি যেন একেবারেই শিশু৷ এ কারণেই বোধ হয় বাৎসরিক আয়টা রোনাল্ডোরই বেশি৷ সিআর সেভেনের যেখানে ৮০ মিলিয়ন, মেসির সেখানে ৬৪.৭ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Getty Images
বিজ্ঞাপনে মেসির সঙ্গী ব্রায়ান্ট
যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল আইকন কোবে ব্রায়ান্টকে অনেকেই হয়ত চিনে থাকবেন একটি বিজ্ঞাপনে মেসির সঙ্গী হিসেবে৷ পাঁচবারের এনবিএ চ্যাম্পিয়নের বয়সটা ৩৬ হলেও এখনও আয় করে যাচ্ছেন দেদারসে৷ গতবছর তাঁর আয় হয়েছিল ৬১.৫ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: dapd
বিলিওনিয়ার গলফার
হয়ত তিনি ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে নেই তবুও গলফারদের মধ্যে এখনও সবচেয়ে বেশি আয় করছেন টাইগার উডস৷ কারণ তিনি টাইগার উডস! খেলার চেয়ে স্পন্সরশিপ থেকেই এখনও অনেক অর্থ পাচ্ছেন তিনি৷ উডসই প্রথম ক্রীড়াবিদ যিনি ক্যারিয়ারে ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেছেন৷
ছবি: Reuters
উডসের মতোই অবস্থা ফেদেরারের
একসময় ছিলেন টেনিসের রাজা৷ কিন্তু জোকোভিচ আর নাদালের কাছে শীর্ষস্থান হারালেও আয় টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে এখনও সেরা রজার ফেদেরার৷ গেল বছরে তাঁর আয় ছিল ৫৬.২ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Salvatore Di Nolfi
ফিল মিকেলসন
টাইগার উডসের জগতের মানুষ মিকেলসন ক্যারিয়ারে ৫০টিরও বেশি প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছে৷ ৪৪ বছর বয়সি মিকেলসনের আয় ছিল ৫৩.২ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Reuters
ইনজুরিও দমিয়ে রাখতে পারেনি নাদালকে
রাফায়েল নাদালের হিংস্রতা হয়ত তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের পছন্দ নয়৷ কিন্তু তাতে কী! এই হিংস্র মনোভাবের কারণেই নাদালকে পছন্দ করেন তাঁর অনেক ভক্ত৷ স্প্যানিশ এই টেনিস খেলোয়াড়ের গতবারের আয় ছিল ৪৪.৪ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অ্যামেরিকান ফুটবলের প্রতিনিধি
শীর্ষ আয়ের খেলোয়াড়ের তালিকায় অ্যামেরিকান ফুটবলার মাট রায়ানই একমাত্র প্রতিনিধি৷ গতবছরই তিনি একটি নতুন চুক্তি সই করেন৷ ফলে তাঁর আয় দাঁড়ায় ৪৩.৮ মিলিয়ন ডলারে৷
ছবি: Imago
শীর্ষ নারী শারাপোভা
ফোর্বসের তালিকাটা ১০০ জনের৷ এর মধ্যে প্রথম ৩৩ জনই পুরুষ৷ নারী নামের দেখা পাওয়া যাবে ৩৪-এ গিয়ে৷ তিনি মারিয়া শারাপোভা৷ খেলা, স্পন্সর আর ক্যান্ডি কোম্পানি ‘সুগারপোভা’ – সব মিলিয়ে ভালই আয় করছেন তিনি৷