লন্ডনে আফটারনুন টি, মানে বিকেলের চা সেবন৷ অথচ খাচ্ছেন ফরাসি চকোলেট কেক, রীতিমতো পাটিসেরি-তে বসে৷ ব্যাপারটা কি বলুন তো? প্যারিসে এসে পড়লেন নাকি?
বিজ্ঞাপন
ফরাসি পাটিসেরি – মানে কেক বা প্যাস্ট্রির দোকান৷ চায়ের দোকানও বটে৷ কেননা এই পাটিসেরি-টি লন্ডনে৷ চা-কেক খেতে হয় ‘বুটিক উইলিয়াম কার্লি' বা উইলিয়াম কার্লির দোকানের বার-এ বসে৷ কার্লি স্বয়ং স্কটল্যান্ডের লোক৷ ব্রিটেন ও ফ্রান্সের একাধিক নামি-দামি রেস্টুরেন্টে কাজ করেছেন, কেক ও চকোলেট তৈরি করেছেন৷ ২০০৯ সালে তিনি লন্ডনে তাঁর নিজের দোকান খোলেন৷ কার্লি বলেন, ‘‘লোকের চোখের সামনে কাজ করতে আমার ভালো লাগে – যেমন সুশি বার-এ করা হয়৷ লোকে দেখতে পান, কীভাবে তাদের খাবার তৈরি করা হচ্ছে৷ আমি যা করছি, মানুষজনকে তা দেখানোটা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ টেবিলে বসে থাকলে, আপনি সেটা দেখতে পাবেন না৷ আমরা চাই আর একটু খোলামেলা, মুক্ত জায়গা৷''
জার্মানদের কেক প্রীতি
জন্মদিনের উৎসবে কেক খাওয়ার প্রচলন প্রায় সব দেশেই রয়েছে৷ কিন্তু জার্মানিতে শুধু জন্মদিন নয়, কেক খাওয়া হয় নানা উৎসবে এবং নানাভাবে৷ চলুন তারই কিছু নমুনা দেখা যাক এই ছবিঘরে৷
ছবি: Fotolia/allari
হরেক রকমের কেক
কত স্বাদ আর কত ধরণের কেক যে রয়েছে জার্মানিতে, তার হিসেব নেই৷ সাধারণ খাবারের দোকানে পাওয়া যায় সাধারণ কেক৷ তবে শুধু কেকের জন্য আলাদা বিশেষ দোকানও আছে জার্মানিতে৷ ছবিতে যেমন দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/I. Wanner
জন্মদিনের কেক
জন্মদিনে কেক খাওয়ার হয় সব দেশেই৷ কাজেই এ আর নতুন কিছু নয়৷ তবে জার্মানিতে জন্মদিনের উৎসবে বিশেষ করে জার্মানরা অনেকেই বাড়িতে কেক তৈরি করেন৷ জার্মানরা শুধু কেক খেতেই ভালোবাসেন না, নিজেরা ঘরে কেক তৈরি করতেও ভালোবাসেন৷ ঘরে তৈরি কেকের স্বাদই আলাদা!
ছবি: Fotolia/allari
বিয়েতে বিশেষ কেক
বিয়ে মানেই বিশেষ দিনের বিশেষ অনুষ্ঠান, তাই এ দিনটির জন্যও চাই বিশেষ ধরণের কেক৷ বেশিরভাগ বিয়ের কেকের ওপরে সাজানো থাকে ক্রিমের তৈরি পুতুল বর-বধু৷
ছবি: Fotolia/jörn buchheim
বিভিন্ন ঋতুর কেক
জার্মানদের কাছে বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি কেক বেশ প্রিয়, বিশেষ করে বড়দের কাছে৷ বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি কেক খেতে খুব মজা৷ স্ট্রবেরি আর আপেলের তৈরি কেকের কথা এখানে না বললেই নয়!
ছবি: Fotolia/M. Elflaco
গরম কেক
কেক গরম গরম খাওয়া হয় শুনলে কেমন যেন মনে হয়, তাই না? অথচ পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি কেক খেতে কিন্তু খুবই সুস্বাদু৷ অনেক সময় দুপুরেও এই কেক খাওয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিকেলে কফি আর কেক
বিকেলে চা আর বিস্কুট খাওয়া খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যেমন চায়ের সঙ্গে টা, তেমনই জার্মানিতেও বিকেলে কফি ও কেক খাওয়ার চল আছে৷ কফি আর কেক খাওয়ার দোকানগুলোকে এখানে ‘ক্যাফে’ বলা হয়, যা খুবই জনপ্রিয় জার্মানিতে৷
ছবি: picture-alliance/Bildagentur Huber
রবিবারের কেক
রবিবার, অর্থাৎ ছুটির দিন৷ জার্মানিতে এ দিনে সবই হয় একটু ভিন্ন ধরণের৷ অনেকে বাড়িতে কেক বানান৷ সে সময় মা বা নানি-দাদির সাথে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও সঙ্গী হয়৷ অনেকে আবার ঘটা করে শহরের নাম করা ‘ক্যাফে’-তে কফি আর কেক খেতে যান৷ বলা বাহুল্য, বিশেষ কিছু কেক শুধু রবিবারেই তৈরি করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Stockfood
কেক ডেজার্ট
ক্রিম, দই, সুজি – এ ধরনের উপাদান দিয়ে কিছু কেক তৈরি করা হয়, যেগুলো খাওয়া-দাওয়ার শেষে ‘ডেজার্ট’ হিসেবে খাওয়া হয়৷
ছবি: Koelnmesse
বিখ্যাত কেক
জার্মানির কিছু কিছু অঞ্চলের আলাদা কেক রয়েছে৷ বিশেষ করে ব্ল্যাকফরেস্ট অঞ্চলের বিখ্যাত এই কেকের কথা অনেকেই হয়তো জানেন৷
ছবি: Fotolia/don57
বাচ্চাদের কেক
ছোট ছোট এক ধরণের কেক বাচ্চারা খুবই পছন্দ করে৷ বাচ্চাদের জন্মদিন বা কোনো অনুষ্ঠানে বাচ্চারা গেলে, সেখানে বাচ্চাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে এ সব কেক কিনে অথবা বানিয়ে রাখেন অনেকেই৷
ছবি: Fotolia/CS
10 ছবি1 | 10
আমাদের জন্য চকোলেট কেক তৈরি করছেন কার্লি৷ সেজন্য লাগবে প্রচুর ডিম, চিনি আর চকোলেট৷ প্রথমে বেস-টা তৈরি করতে হবে, স্পঞ্জ ফিঙ্গার বিস্কুটের মতো করে৷ সেজন্য চিনি আর ডিমের সাদা অংশটা ফেটিয়ে নিতে হবে৷ এরপর ডিমের কুসুমটা যোগ করা হবে৷ সবশেষে গুঁড়ো চকোলেট৷ কেকের মাখা ময়দাটা এবার একটা ট্রে-তে বিছিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি বেক করা প্রয়োজন, যাতে ময়দা থেকে হাওয়া বেরিয়ে সেটা ধসে না যায়৷
দ্বিতীয় কাজ: ক্রেম ব্রুইয়ে বা সরপোড়া তৈরি করা৷ সেজন্য পাতলা ক্রিমে ভ্যানিলার শুঁটি ফেলে একবার ফুটে উঠতে দিতে হয়; তারপর প্লাস্টিক ফয়েল দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়, যাতে সুগন্ধটা বজায় থাকে৷ ডিমের কুসুম মিশিয়ে পরে গরম ক্রিমটা দিতে হয়৷ তারপর তালটা ওভেনে বেক করতে হয়৷ ছোট ছোট কেকগুলো ঠান্ডা হবার পর সেগুলো জমিয়ে ফেলা হয়৷
তৃতীয়: চকোলেটের মোড়ক৷ গলা চকোলেটের মধ্যে চকোলেটের চোকলা মেশালে বেশ কচমচে হয়৷ মাখা চকোলেট এবার প্লাস্টিক ফয়েলের ওপর বিছিয়ে দিতে হয়; তারপর ছাঁচে ফেলে, উনুনে না দিয়ে, ঘরের গরমেই শুকিয়ে নিতে হয়৷ সব ধরনের ছাঁচ ব্যবহার করা চলে৷ শেষ কাজ: কেকগুলোর জন্য মুস-ও-শোকোলা তৈরি করা৷ কিচেনে ফিরে এবার স্পঞ্জ ফিঙ্গার, মুস-ও-শোকোলা, জমানো ক্রিম ব্রুইয়ে আর রাম-এ ডোবানো কিশমিশ মিলিয়ে চকোলেট কেক তৈরি শেষ৷ শুধু খাওয়াটা বাকি৷
ব্রিটিশ আফটারনুন টি মানে জমানো ক্রিম দিয়ে স্কোন্স আর ছোট ছোট কেক ও স্যান্ডউইচ৷ তার সাথে চা৷ পরিবেশটা যেন কোনো সম্ভ্রান্ত হোটেলের লাউঞ্জ৷ উইলিয়াম কার্লি আফটারনুন টি-র একটি বিকল্প সৃষ্টি করেছেন৷ তাঁর বার-এ সারাদিনই ফরাসি কেক পাওয়া যায়৷ কার্লি বললেন, ‘‘আমি যা করার চেষ্টা করছি – শুধু আমি একাই নই, যুক্তরাজ্যে আরো কয়েকজন আছেন – ব্যাপারটা বেশ নতুন, বলা চলতে পারে৷ আমরা ব্রিটেনের বাজারে ফরাসি কেক-চকোলেট চালু করার চেষ্টা করছি৷''
মস্তিষ্কের জন্য উপকারী ৭টি খাবার
প্রতিদিন হাজার চিন্তার সঠিক কাজটা করতে হয় মস্তিষ্ককে৷ তাই তার জন্য চাই প্রকৃত খাবার৷ কীভাবে আপনি আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ ও সক্রিয় রাখবেন – এখানে থাকছে তেমনি কিছু খাবারের তালিকা৷
ছবি: Fotolia/gaai
ডার্ক চকোলেট
প্রতিদিন এক টুকরো ডার্ক চকোলেট খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে৷ অল্প পরিমাণে ডার্ক চকোলেট খাওয়ার অভ্যাস স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে, বলছেন বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: picture alliance/dpa
আখরোট
আখরোটে অন্যান্য বাদামের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে৷ এটি মস্তিষ্ককে যে কোনো রোগ থেকে রক্ষা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টমেটো
টমেটো – সহজলভ্য এই সবজিটি মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, কারণ এতে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচায়৷ এছাড়া স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে টমেটো৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPHOTOs
স্যামন ও সামুদ্রিক মাছ
মানুষের মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশ চর্বি দিয়ে তৈরি৷ তাই এটিকে সক্রিয় রাখতে প্রয়োজন ফ্যাটি অ্যাসিড৷ সামুদ্রিক মাছ যেমন – স্যামন, টুনা ও অন্য সামুদ্রিক মাছ মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে বেশ উপকারী৷ কারণ এই খাবারগুলোতে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আলজইমার রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে৷
ছবি: picture-alliance/chromorange
গ্রিন টি
গবেষকরা বলছেন, গ্রিন টি মস্তিষ্কের সংযোগ ক্ষমতা বাড়ায়, সেই সাথে পারকিনসন্স ও স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে রক্ষা করে৷ চিনি ছাড়া দিনে তিন কাপ সবুজ চা আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভীষণ উপকারী৷
ছবি: Fotolia/gaai
ব্লু বেরি
বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা বাড়াতে ব্লু বেরির জুড়ি নেই৷ এতে আছে ফ্ল্যাভোনয়েডস৷ এছাড়া এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে৷ মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে এটি৷ পারকিনসনস আর আলজাইমার থেকেও রক্ষা করে ব্লু বেরি৷
পালংশাক
পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে, যা মস্তিষ্কের সংযোগ শক্তি বৃদ্ধি করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়৷ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টও রয়েছে, আছে ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ই ও ভিটামিন কে, যা ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে৷