ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচন ঘিরে এখন আলোচনায় ইউরোপের মূল্যাবোধের বিষয়টি৷ কিন্তু এর আসল অর্থ কী? ১০০ জন ইউরোপিয়ানের মধ্যে কতজন এই মূল্যবোধে বিশ্বাসী, কতজন নন? পুরো ইউরোপের কয়েক হাজার নাগরিকের উপর এ নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়েছে৷ তাতে উঠে এসেছে, ১০০ জনের মধ্যে ২৯ জনই বিশ্বাস করেন, নারীদের চেয়ে পুরুষেরা ভালো রাজনীতিবিদ৷

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বড় অংশই রাজনৈতিক সহিংসতা আর ঘুস আদান-প্রদানের বিরোধী৷ ইউরোপীয় মূল্যবোধ নিয়ে এই জরিপে ১৪ টি দেশের নাগরিকদের তথ্য এসেছে৷ এর মধ্যে আছেন অস্ট্রিয়া, বেলারুশ, ক্রোয়েশিয়া, চেক রিপাবলিক, জার্মানি, আইসল্যান্ড, পোল্যান্ড, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের অধিবাসীরা৷

জরিপে অংশ নেয়া অর্ধেকের বেশি মানুষ মনে করেন, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে সরকার নজরদারি ক্যামেরা বসাতে পারে৷ অর্ধেকের কাছাকাছি এর বিরোধী৷ তবে পোল্যান্ড, স্লোভেনিয় ও ক্রোয়েশিয়ার বেশিরভাগ মানুষ ভিডিও নজরদারির বিরোধী৷

১০০ জনের ৩৮ জন স্বর্গে বিশ্বাস করেন৷ এই ৩৮ জনের ৩৩ জন ধর্ম পালন করেন৷ বাকিরা নাস্তিক অথবা নিজেদের ধর্মানুরাগী মনে করেন না৷ ১০০ জনে ২৯ জন নরকে বিশ্বাস করেন৷

সমকামীরা বাবা-মায়ের ভূমিকায় কেমন হবেন তা নিয়ে মত পার্থক্য আছে দেশভেদে৷ আইসল্যান্ডে ১০০ জনের ৮৮ জন মনে করেন নারী-পুরুষ বাবা-মায়ের মতো সমকমীরা সন্তান পালন করতে সক্ষম৷ তবে রাশিয়ায় এমনটা মনে করেন ১০ ভাগ মাত্র৷ যদিও সমাজ বিজ্ঞানের গবেষণা বলছে সমকামী বাবা-মায়েরা সন্তান পালনে খারাপ নন৷

প্রতিবেশী হিসেবে খ্রীষ্টানে সমস্যা বোধ করেন স্বল্প সংখ্যক মানুষ৷ অন্যদিকে এক চতূর্থাংশের বেশি বলেছেন, তারা প্রতিবেশী হিসেবে অভিবাসীদের পছন্দ করেন না৷ একই কথা প্রযোজ্য মুসলিমদের জন্য৷ ১০০ জনে ২৫ জনই মুসলিম প্রতিবেশী অপছন্দ করেন৷ ইহুদিদের ক্ষেত্রে এই হার ১২ আর প্রতিবেশী হিসেবে খ্রীষ্টান অপছন্দ পাঁচ জনের৷

তথ্যগুলোর সবই উঠে এসেছে ‘ইউরোপিয়ান ভ্যালুস স্টাডি’ নামের একটি গবেষণা থেকে৷ এ গবেষণার মাধ্যমে ইউরোপীয়দের মূল্যবোধ, রাজনীতি, ধর্মসহ বিভিন্ন বিষয়ের ভাবনা নিয়ে প্রতি দশ বছরে কয়েকশ’ প্রশ্ন করা হয়৷ নতুন জরিপটি শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে৷ ১৬ টি দেশ থেকে এরই মধ্যে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে৷ সেখানে প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়েছেন ২০ হাজার নাগরিক৷ আরো ১০ টি দেশে মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে৷