1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটেনে উপনির্বাচনে ইউকিপ-এর জয়

গ্রেহেম লুকাস/এসবি২১ নভেম্বর ২০১৪

ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় বার উপনির্বাচনে জয়লাভ করলো৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে তাদের সাফল্যের পর ব্রিটেনে ইউরোপ-বিরোধিতা আরও জোরালো হয়েছে বলে মনে করেন গ্রেহেম লুকাস৷

Großbritannien Nachwahlen UKIP-Kandidat Mark Reckless gewinnt Jubel Nigel Farage
ছবি: Reuters/S. Plunkett

ইউকিপ-এর জয় ব্রিটেন ও ইউরোপের ইতিহাসের সন্ধিক্ষণ রচনা করেছে৷ এ নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই বললে চলে৷ কারণ এর ফলে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল৷ বিদেশি ও ইইউ-বিরোধী এই দলটির প্রতি ভোটারদের সমর্থনের পেছনে দু'টি কারণ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ প্রথমত, পূর্ব ইউরোপ থেকে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করার জোরালো ডাক দিচ্ছে ইউকিপ৷ ইইউ-র অভ্যন্তরীণ বাজারের মধ্যে অবাধ বিচরণের অধিকার নিয়েই তারা প্রশ্ন তুলছে৷ দ্বিতীয়ত, ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রতিষ্ঠিত দলগুলি সম্পর্কেও অনীহা দেখা যাচ্ছে৷ রচেস্টার উপনির্বাচনে যা ঘটেছে, আগামী বছরের মে মাসে জাতীয় নির্বাচনে তার পুনরাবৃত্তি হলে দেশের দুটি প্রধান দলের কোনোটি সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না৷ এ নিয়ে তেমন সন্দেহ থাকতে পারে না৷ ইউকিপ-এর ইউরোপ-বিরোধিতার ঢেউয়ে রক্ষণশীল দল জিম্মি হয়ে পড়েছে৷ ইউকিপ-কে নকল করতে ও দলের মধ্যে দক্ষিণপন্থিদের সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২০১৭ সালে ইইউ-তে থাকার বিষয়ে একটি গণভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ তার উপর রক্ষণশীল দলে ক্যামেরন-এর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসন আরও দক্ষিণপন্থি অবস্থান নিয়েছেন৷ আগামী মে মাসে রক্ষণশীল দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে তিনি নেতৃত্বের দাবি করতে পারেন৷

লেবার পার্টির অবস্থাও ভালো নয়৷ গত এক দশকে ইউরোপ সম্পর্কে তাদের অবস্থান অস্পষ্ট থেকেছে৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী তাদের ক্ষমতায় আসতে হলে বামপন্থি ও ইউরোপপন্থি স্কটিশ ন্যাশানাল পার্টি-র সমর্থন লাগবে৷ এসএনপি অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে তারা স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে আবার গণভোট আয়োজন করতে চায়৷ লেবার পার্টিকে ইউরোপপন্থি লিবারাল ডেমোক্র্যাট দলেরও সাহায্য লাগবে৷ রচেস্টারের উপনির্বাচনে তাদের অবশ্য ভরাডুবি হয়েছে৷

এই প্রেক্ষাপটে দুটি সম্ভাব্য চিত্র উঠে আসছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এক গ্রেট ব্রিটেন অথবা ‘লিটল ইংল্যান্ড'৷ কারণ ততদিনে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যও ভেঙে পড়বে৷ দুটি মধ্যে একটি সম্ভাবনাও যদি বাস্তব রূপ নেয়, তাতে ইউরোপেরই বড় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে৷ তবে এটা মনে রাখতে হবে, এমন পরিস্থিতি এড়ানো এখনো সম্ভব৷ চরম দক্ষিণপন্থিদের সামলাতে ক্যামেরন বার বার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তিগুলি নিয়ে নতুন করে দরাদরি করতে চান৷ জার্মানির আঙ্গেলা ম্যার্কেল সহ ইউরোপের অনেক নেতা তাঁর এই জ্বালাময়ী কথাবার্তা ও হাবভাবের কারণে বিরক্ত হয়ে উঠছেন৷ ব্রিটেন বরং ইইউ ছেড়ে চলে যাক – এমন হতাশ মনোভাবই বেড়ে চলেছে৷ এটা বোঝা তেমন কঠিন নয়৷ তবে তা সত্ত্বেও সেটা হবে মস্ত এক ভুল৷

ইউরোপীয় নেতাদের উচিত, ব্রিটেনের আগামী সরকারের সঙ্গে ইউরোপে সংস্কারের বিষয়ে কথা বলা৷ কারণ ব্রিটেনের কিছু সমালোচনা সত্যি ন্যায্য৷ সেই বিষয়গুলির নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন৷ তাছাড়া সাম্প্রতিক ইউরোপীয় নির্বাচনে দেখা গেছে, যে শুধুমাত্র উত্তর পশ্চিম উপকূলের তর্কবাগীশ ব্রিটিশরাই অসন্তুষ্ট নন৷ ইউরোপের অনেক মানুষ মনে করেন, ইউরোপীয় স্তরে গণতান্ত্রিক কাঠামোর অভাব রয়েছে এবং ধীরে ধীরে অনেক ক্ষমতা ব্রাসেলস-এর হাতে চলে যাচ্ছে৷ তাছাড়া বেশ কিছু নীতির ক্ষেত্রে ইউরোপে ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে – যেমন অভিবাসন বা সামাজিক ভাতার লোভে পর্যটনের প্রবণতা৷ তা না করলে সামাজিক ভাতার কাঠামো এই চাপ সহ্য করতে পারবে না৷ অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতিযোগিতার পথের বাধাগুলিও দূর করতে হবে৷ তার চেয়েও বড় কাজ হবে ইইউ-র ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা৷

রচেস্টারের ঘটনা সম্ভব হয়েছে, কারণ আরও বেশি মানুষ মনে করছেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংস্কার একেবারেই সম্ভব নয়৷ ২০০৮ সাল থেকে ব্রিটেনের অর্থনীতির উন্নতির ফলে তারা মনে করছেন, যে ব্রিটেন একা থাকলে আরও ভালো ফল করবে৷ সেটাও একটা বড় ভুল৷ ‘ডেয়ার স্পিগেল' পত্রিকায় হিলারি মান্টেল সম্প্রতি লিখেছেন, ব্রিটিশরা তাদের দ্বীপের মানসিকতা, তীব্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ডুবে যাচ্ছে৷ জার্মানির ম্যার্কেল সহ ইউরোপীয় নেতাদের উচিত ইইউ-র সমালোচকদের উত্থাপিত বিষয়গুলি নিয়ে খোলামেলা কথা বলা, বিতর্ক চালানো এবং এমন উত্তর বার করা, যা ইউরোপের সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে৷ ব্রিটিশরাও যেন বুঝতে পারে, যে সফল ইউরোপীয় ইউনিয়ন আসলে তাদেরও স্বার্থে প্রয়োজনীয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ