ব্রিটেনে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন পেলেন ৯০ বছরের দাদি
৮ ডিসেম্বর ২০২০
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বায়োনটেক-ফাইজার ভ্যাকসিন দিতে শুরু করেছে ব্রিটেন৷ সেই সুবাদে ৯১তম জন্মদিনের আগে নতুন জীবন পেলেন মার্গারেট কিনান৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার থেকে বায়োনটেক-ফাইজার ভ্যাকসিন দিতে শুরু করেছে ব্রিটেন৷ প্রথম ধাপে দেয়া হবে আট লাখ ডোজ৷ তবে এই পর্যায়ে সবাই পাবেন না৷ আগে পাবেন বয়স যাদের ৮০-র বেশি, কিংবা যারা এতদিন করোনার বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামনের কাতার থেকে লড়েছেন৷
সুতরাং করোনায় জীবনাবসানের আশঙ্কা থেকে মুক্তি মিলবে অনেকের৷ নিজের ৯১তম জন্মদিনের এক সপ্তাহ আগে সবার আগে সেই মুক্তির আস্বাদটা পেলেন মার্গারেট কিনান৷ ভোর ছয়টা ৩১ মিনিটে তাকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজটা দেয়ার পর থেকে খুব খুশি তিনি৷ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল কভেন্ট্রিতে টিকা নেয়ার পর আগেভাগে সেরা জন্মদিনের উপহার পাওয়ার আনন্দ যেন টোল পড়েছে শতভাঁজের গালে, ‘‘প্রথম ব্যক্তি হিসেবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেয়ে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান আর সুবিধাভোগী মনে হচ্ছে৷ অনেকদিন পর নতুন বছরে আমার বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবো ভেবে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে৷ মনে হচ্ছে যেন একটু আগেই জন্মদিনের সেরা উপহারটা পেয়ে গেলাম৷’’
ব্রিটেনের বেশির ভাগ মানুষ ভ্যাকসিন পাবেন আগামী বছর৷ এ কথা মনে রেখে ইতিমধ্যে সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিইও সাইমন স্টিভেন্স৷
এসিবি/কেএম (এপি, এএফপি)
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
করোনা ভাইরাসের টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বায়োনটেকের প্রতিষ্ঠাতা তুরস্ক বংশোদ্ভূত এক দম্পতি৷ ছবিঘরে জানুন বিস্তারিত৷
ছবি: Stefan F. Sämmer/imago images
২০০৮ সালে শুরু
জার্মান শহর মাইনৎসে ১২ বছর আগে বায়োনটেকের পথচলা শুরু হয়৷ এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ উগুর জাহিন এবং তাঁর স্ত্রী ইমিউনোলজিস্ট উজলেম টুরেচি৷
ছবি: BioNTech SE 2020, all rights reserved
তুরস্ক বংশোদ্ভূত
তারা দুইজনই তুরস্ক বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক৷ এই দম্পতির তৈরি বায়োনটেকে এখন কাজ করে ১৫শ’ কর্মী৷ ৫৫ বছর বয়সি জাহিনের জন্ম তুরস্কে৷ বাবা-মা’র সঙ্গে একসময় জার্মানিতে চলে আসেন তিনি৷ মেডিসিন এবং গণিত নিয়ে পড়ালেখা করেন কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ে৷
ছবি: Stefan F. Sämmer/imago images
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই
জাহিন কোলোন এবং হামবুর্গে দীর্ঘদিন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন৷ এরপর জারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন৷ ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একজন চিকিৎসক ও গবেষক হিসেবে সেখানে কাজ করেন৷ মলিকিউলার মেডিসিন এবং ইমিউনোলজি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন৷ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাপারে তিনি সবসময় আগ্রহী ছিলেন আর এ কারণেই ২০০৮ সালে বায়োনটেক প্রতিষ্ঠা করেন৷ ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য এখানে মনোনিবেশ করেন তিনি৷
৫৩ বছর বয়সি টুরেচির জন্ম জার্মানিতে৷ কিন্তু তাঁর বাবা-মা তুর্কি৷ হামবুর্গে পড়ালেখা করে, সেখানেই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি৷ ইমিউনোলজিস্ট টুরেচি ক্যান্সার রোগীদের থেরাপি দিয়ে থাকেন৷
ছবি: BioNTech SE 2020, all rights reserved
ভ্যাকসিন তৈরির সিদ্ধান্ত
২০০০ সালের জানুয়ারিতে জাহিন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন৷ তখনই তাঁর আশঙ্কা হয় এটি মহামারি রূপ নেবে৷ সেসময়ই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷
ছবি: BioNTech SE 2020, all rights reserved
করোনা প্রতিরোধে ভূমিকা
বায়োনটেকের প্রধান নির্বাহী উগুর জাহিন জানিয়েছেন, এই টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্তত এক বছর স্থায়ী হবে৷ যৌথ বিবৃতিতে ফাইজারের চেয়ারম্যান ও তিনি জানিয়েছেন, ‘‘টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে এটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে পারে৷’’