1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুরু হলো ব্রেক্সিট আলোচনার দ্বিতীয় পর্ব

১৭ জুলাই ২০১৭

ব্রিটেন ধীরে ধীরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিত্যাগের দিকে এগোচ্ছে৷ কিন্তু ব্রেক্সিট সংক্রান্ত নানা ইস্যুতে কতোটা প্রগতি অর্জিত হয়েছে – অথবা হয়নি – তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেছেন ডয়চে ভেলের জেফারসন চেজ৷

Belgien Brüssel EU-Gipfel Premierministerin Theresa May
ছবি: Reuters/F. Lenoir

আপাতত কে কোথায়?

দ্বিতীয় পর্বের আলাপ-আলোচনা হবে মূলত ‘ডিভোর্স' বা ‘বিবাহবিচ্ছেদের' খরচপত্র নিয়ে৷ গত জুনে ব্রিটেন ও ইইউ-এর মধ্যে ব্রেক্সিট আলোচনার প্রথম পর্বে প্রধানত বৈঠকের সময়, পর্যায়ক্রম ইত্যাদি নির্দিষ্ট করা হয়েছিল: ২০১৭ সালের অক্টোবর অবধি প্রতি মাসে একবার করে বৈঠক বসবে – বাকি সময়টা ব্রেক্সিট সংক্রান্ত ধ্যানধারণা ও প্রস্তাব বিকাশের কাজে ব্যবহার করা হবে৷

মূল কথা হলো, ব্রেক্সিটের মূল খুঁটিনাটি নির্ধারিত হওয়ার আগে ইইউ-এর সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা হবে না – যা কিনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান৷ যুক্তরাজ্য সরকার ব্রিটেনের ইইউ পরিত্যাগ ও ইউরোপিয়ান কমন মার্কেট বা যৌথ বাজারের সঙ্গে ব্রিটেনের যোগাযোগের ব্যাপারে যুগপৎ আলাপ-আলোচনা চালাতে চেয়েছিলেন৷

দ্বিতীয় পর্বের আলাপ-আলোচনা শুরু হচ্ছে ১৭ই জুলাই৷ ব্রিটেনের পক্ষে মুখ্য মধ্যস্থ হলেন ডেভিড ডেভিস; ইইউ তরফে মুখ্য মধ্যস্থ হলেন মিশেল বার্নিয়ের৷

কী নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে?

সম্ভবত যে বিষয়টিতে আপোশে আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, সেই বিষয়টি নিয়ে: অর্থাৎ ব্রিটেনে বসবাসকারী ইইউ নাগরিক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকদের ভবিষ্যৎ মর্যাদা৷ প্রায় ৩০ লাখ ইইউ নাগরিক আপাতত ব্রিটেনে বাস করছেন; অপরদিকে ইইউ-তে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকদের সংখ্যা ১৫ লাখ৷

কিন্তু এখানেও ঐকমত্যের কোনো গ্যারান্টি নেই৷ ব্রেক্সিট আবাপ-আলোচনার প্রথম পর্বে ব্রিটেন বলেছিল যে, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে যারা ব্রিটেনে বসবাস করছেন, তেমন ইইউ নাগরিকদের ব্রিটেনে থাকতে দেওয়া হবে; এমনকি যারা তার চেয়ে কম সময় ব্রিটেনে পাকাপাকিভাবে বাস করছেন, তারাও থাকতে পারবেন – তবে উভয়  গোষ্ঠীকেই রেসিডেন্সির আবেদন করতে হবে; কতোদিন অবধি সেই আবেদন করা চলবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়নি৷

ইইউ ব্রিটেনের এই প্রস্তাবে বিশেষ উৎসাহ প্রদর্শন করেনি৷ বার্নিয়ের প্রস্তাবটিকে ভাসা-ভাসা ও অপর্যাপ্ত বলে অভিহিত করেছেন৷ ইউরোপের অধিকাংশ নেতা তাদের দেশবাসীদের জন্য এর চাইতে অনেক বেশি স্পষ্ট গ্যারান্টি চান; এছাড়া তারা চান যে, রেসিডেন্সি নিয়ে বিরোধের ক্ষেত্রে সেই সব মামলা ইউরোপীয় আদালত, অর্থাৎ ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস-এ যাবে, ব্রিটেনের কাছে যা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য৷

কোন বিষয়ে কোঁদলের সম্ভাবনা বেশি?

ইইউ ব্রিটেনকে যে ‘ডিভোর্সের বিল' পেশ করতে চায়, সেটাই সম্ভবত সবচেয়ে কণ্টকিত বিষয়৷ ইইউ-এর ‘অ্যাসেটস', অর্থাৎ ধনসম্পত্তির যে অংশ ব্রিটেনের প্রাপ্য, তা বাদ দিয়ে ইইউ-এর প্রতি ব্রিটেনের বাদবাকি দীর্ঘমেয়াদি দায়িত্ব – যেমন কর্মচারীদের পেনশন ইত্যাদি – দাঁড়াবে ২৫ থেকে ৭৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে৷ এছাড়া থাকবে খরচ-খরচার নানা খুঁটিনাটি: যেমন ইইউ-এর জন্য ওষুধপত্র অনুমোদন করে ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি, যাদের অফিস লন্ডনে৷ প্রতিষ্ঠানটিকে ইইউ-এর কোনো শহরে নিয়ে আসার খরচ ধরা হচ্ছে আধ বিলিয়ন ইউরোর কিছু বেশি – এ তো শুধু একটিমাত্র দৃষ্টান্ত৷ স্বভাবতই ব্রিটেন ‘বিবাহবিচ্ছেদের' জন্য কানাকড়ি না দিতে হলেই খুশি৷

দু'পক্ষের মন-মেজাজ?

ব্রিটেনের প্রস্তুতি কাঁচা ও তারা যে কী চায়, তাও স্পষ্ট নয় – এই হল ইউরোপীয়দের মনোভাব৷ জুন মাসের নির্বাচনে টেরেসা মে-র ভরাডুবির ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে: ইউরোপীয় নেতৃবর্গ ‘বিশৃঙ্খলা', ‘নেতৃত্বের অভাব' ও পরিস্থিতি পুরোপুরি ব্রিটিশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকার কথা বলেছেন৷

অন্যদিকেও সন্দেহের ছায়া: লন্ডনের ব্রেক্সিট প্রতিনিধি জেরেমি ব্রাউন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, ফ্রান্স অর্থব্যবসায়ের কেন্দ্র হিসেবে লন্ডনের গুরুত্ব কমানোর চেষ্টা করছে৷

বার্নিয়ের ব্রেক্সিট আলাপ-আলোচনার যে সময়সূচি পেশ করেছেন, সে অনুযায়ী এ বছরের মধ্যে ব্রেক্সিট আলাপ-আলোচনা শেষ হবে – অর্থাৎ ইইউ-এর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন সম্পর্ক নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য (অক্টোবর ২০১৮ অবধি) আট মাস বাকি থাকবে; ব্রিটেন ও ইইউ-এর তরফ থেকে ব্রেক্সিট চুক্তির অনুমোদনের জন্য আরো পাঁচ মাস৷ ২০১৯ সালের ২৯শে মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট সম্পন্ন হতে হবে৷

প্রায় সব বিশেষজ্ঞই মনে করেন যে, তা সম্ভব হবে না৷ তবে ব্রিটেন সহ ইইউ-এর ২৮টি দেশ চাইলে আলাপ-আলোচনার মেয়াদ বাড়াতে পারে৷ আরো বড় কথা, ব্রিটেন তার মন বদলালে তথাকথিত ‘৫০ নং সূত্রটি' উল্টে দেওয়াতেও কোনো বাধা নেই – অন্তত লিসবন চুক্তিতে নেই৷ তবে এক্ষেত্রেও বাকি ২৭টি ইইউ সদস্যদেশের সম্মতির প্রয়োজন পড়বে৷

জেফারসন চেজ/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ