1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধের দাবি

আরাফাতুল ইসলাম২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে অবস্থানরত আন্দোলনকারী ব্লগারদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক, অপপ্রচার চলছে৷ কোন কোন মহল দাবি করছে, ‘নাস্তিক ব্লগারদের’ এই আন্দোলন মূলত ধর্মের বিরুদ্ধে৷ আসলে কি তাই?

Feb. 6, 2013 - Dhaka, Bangladesh - Dhaka, Bangladesh- A Top shoots at Shahbag area during the protest against Mollah Vardict. Bangladeshi bloggers and online activist network and people from all walks of life are continuing their sit-in at Shahbagh intersection in the capital for the second consecutive day on Wednesday 06 February,2013. They protest and demand the awarding of life sentence to Quader Mollah and to demand capital punishment to the notorious war criminal.
Dhaka Demonstrationenছবি: picture alliance/ZUMA Press

ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কথা বলা হয়েছে তিনজন বাংলা ব্লগারের সঙ্গে, যারা শাহবাগের আন্দোলনের সঙ্গে শুরু থেকেই রয়েছেন৷

শাহবাগের আন্দোলনকারীদের মূল দাবি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে কিছু মহল৷ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ব্লগার সম্পর্কে নেতিবাচক বিভিন্ন কথা ইন্টারনেটে প্রকাশ করে শাহবাগের মূল দাবিকে আড়াল করার চেষ্টাও করা হচ্ছে৷ এসবের প্রেক্ষিতে গত উনিশে ফেব্রুয়ারি গণজাগরণ মঞ্চ থেকে একটি ঘোষণা প্রদান করেন ব্লগারস অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার৷ তিনি জানান, ‘‘মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বয়কট করার দাবির বাইরে গণজাগরণ মঞ্চের অন্য কোনো দাবি নেই৷''

ইমরানের মন্তব্য

গণজাগরণ মঞ্চ থেকে এই ঘোষণার পর ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে ইমরান এইচ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কিসের ভিত্তিতে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলা হচ্ছে? ইমরান বলেন, ‘‘যেহেতু জামায়াত-শিবির এবং যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে৷ একজনের ফাঁসির রায় হয়েছে, আরেকজনের বিচার প্রক্রিয়াধীন আছে৷ আমরা চাচ্ছি, যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে এই দলটিকে (জামায়াত-শিবির) নিষিদ্ধ করা হোক৷''

উল্লেখ্য, গত পাঁচই ফেব্রুয়ারি এই ব্লগারস অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্কের ডাকেই সমাবেশ শুরু হয়েছিল শাহবাগে৷ সেদিন যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রদান করা হয়৷ কিন্তু সাধারণ জনতা মোল্লার জন্য যাবজ্জীবন শাস্তি যথেষ্ট মনে করেনি৷ তাই শাহবাগে অবস্থান শুরু করে সবাই৷ সেই অবস্থান কর্মসূচি এখন চলছে৷

আরিফ জেবতিকের মন্তব্য

শাহবাগের এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন ব্লগার আরিফ জেবতিক৷ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধ, যুদ্ধাপরাধ৷ ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের এখন বক্তব্য নেই৷ আমরা সবাই যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে রাস্তায়৷''

এখানে বলা প্রয়োজন, গত ১০ই ফেব্রুয়ারি শাহবাগের আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে তাদের ছয় দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করে৷ এতে তৃতীয় দাবিটি ছিল, ‘‘জামায়াত-শিবিরসহ ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ ও গৃহযুদ্ধের হুমকি দাতা জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা৷'' (দৈনিক জনকণ্ঠ, ১১ ফেব্রুয়ারি)

গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি ব্লগারস অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্কের ডাকে সমাবেশ শুরু হয়েছিল শাহবাগেছবি: picture-alliance/dpa

আরিফ জেবতিক বলেন, এই দাবিটি লেখার সময় শব্দ চয়নে কারিগরি ভুল ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘শব্দ চয়নে কারিগরি ভুল ছিল৷ এটা ‘ধর্মের নামে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি...' এভাবে হওয়ার কথা ছিল৷''

ডয়চে ভেলের সেরা বাংলা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতার বিজয়ী এই ব্লগার বলেন, ‘‘শাহবাগের আন্দোলনের পেছনে কোন বড় নেতা নেই৷ এটার পেছনে অনেক মানুষ, অনেক তরুণ রয়েছেন, তারা তাদের মতো আন্দোলন করছেন৷ প্রফেশনাল রাজনীতিবিদরা এটা করে না৷ ফলে অনেক ধরনের টেকনিক্যাল টার্ম ওরা বুঝতে পারছে না৷ কিন্তু আমাদের প্রতিপক্ষ অনেক বড় শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি৷''

আসিফ মহিউদ্দিনের মক্তব্য

শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন আরো অনেক ব্লগার৷ এদের একজন আসিফ মহিউদ্দীন৷ গত মাসে উত্তরায় দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি৷ কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এই ব্লগার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম রাজনীতির বিরোধী আমি৷ কিন্তু শাহবাগ আন্দোলনে আমাদের দাবি হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে৷ এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হিসেবে আমার দাবিও সেটাই৷''

ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতার একটি বিভাগে ‘ইউজার প্রাইজ' জয়ী আসিফ বলেন, ‘‘তাদের (জামায়াত-শিবির) বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মত বড় অপরাধের অভিযোগ আছে এবং কোন ব্যক্তিগত উদ্যোগে তারা যুদ্ধাপরাধ করেনি৷ তারা দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে যুদ্ধাপরাধ করেছে এবং গণধর্ষণ করেছে, গণহত্যা করেছে৷ এই কাজগুলো আমরা যদি সামনে নিয়ে আসি, তাহলেই তাদেরকে নিষিদ্ধ করা যায়৷''

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে লাখো জনতার ভিড়ছবি: REUTERS

উল্লেখ্য, গত পাঁচই ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জামায়াতের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়েছে৷ সম্প্রতি জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধন কর হয়েছে৷ ফলে বর্তমানে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দল হিসেবে জামায়াতকে বিচারের মুখোমুখি করার সুযোগ রয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ