ব্লগার হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক, আপত্তিজনক উল্লেখ করে খুনিদের বিচার দাবি করেছেন ‘নিউ এজ’ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির৷ পাশাপাশি তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করায় সরকারের সমালোচনা করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে৷ সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে৷ এ সব সমালোচনা এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন একের পর এক ব্লগারকে জবাই করা হচ্ছে দেশটিতে৷ পাশাপাশি সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপরও হামলা হচ্ছে, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি৷
ডয়চে ভেলেকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইংরেজি দৈনিক ‘নিউ এজ' পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির জানিয়েছেন, কীভাবে বাংলাদেশ সরকার বাকস্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করছে, এবং কিভাবে উগ্রপন্থিরা আবারো বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিচ্ছে৷
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শিকার যারা
চলতি বছর ইসলামপন্থিরা একের পর এক হামলা চালিয়ে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন৷ চলুন জানা যাক ২০১৫ সালের কবে, কারা হামলার শিকার হয়েছেন...৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্লগার খুন
একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুন হন ব্লগার এবং লেখক অভিজিৎ রায়৷ কমপক্ষে দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ এসময় তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হন৷ বাংলাদেশি মার্কিন এই দুই নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’৷ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
বাড়ির সামনে খুন
ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যা করা হয় ঢাকায়, গত ৩০ মার্চ৷ তিন দুর্বৃত্ত মাংস কাটার চাপাতি দিতে তাঁকে কোপায়৷ সেসেময় কয়েকজন হিজরে সন্দেহভাজন দুই খুনিকে ধরে ফেলে, তৃতীয়জন পালিয়ে যায়৷ আটকরা জানায়, তারা মাদ্রাসার ছাত্র ছিল এবং বাবুকে হত্যার নির্দেশ পেয়েছিল৷ কে বা কারা এই হত্যার নির্দেশ দিয়েছে জানা যায়নি৷ বাবু ফেসবুকে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে লিখতেন৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সিলেটে আক্রান্ত মুক্তমনা ব্লগার
শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ গত ১২ মে সিলেটে নিজের বাসার কাছে খুন হন নাস্তিক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস৷ ভারত উপমহাদেশের আল-কায়েদা, যাদের সঙ্গে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’-এর সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ দাস ডয়চে ভেলের দ্য বব্স জয়ী মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/EPA/Str
বাড়ির মধ্যে জবাই
ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি নিলয় নীল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন, হত্যা করা হয় ঢাকায় তাঁর বাড়ির মধ্যে৷ একদল যুবক বাড়ি ভাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ৮ আগস্ট তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ নিজের উপর হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন নিলয়৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে সহায়তা করেনি৷ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে, তবে তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
জগিংয়ের সময় গুলিতে খুন বিদেশি
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে জগিং করার সময় ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় খুন হন ইটালীয় এনজিও কর্মী সিজার তাবেলা৷ তাঁকে পেছন থেকে পরপর তিনবার গুলি করে দুর্বৃত্তরা৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে জিহাদিদের অনলাইন কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা একটি সংস্থা৷ তবে বাংলাদেশে সরকার এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে ‘এক বড় ভাইয়ের’ তাঁকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/ A.M. Ahad)
রংপুরে নিহত এক জাপানি
গত ৩ অক্টোবর রংপুরে খুন হন জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও৷ মুখোশধারী খুনিরা তাঁকে গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়৷ ইসলামিক স্টেট এই হত্যাকাণ্ডেরও দায় স্বীকার করেছে, তবে সরকার তা অস্বীকার করেছে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না যে তাঁর দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির উপস্থিতি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হোসনি দালানে বিস্ফোরণ, নিহত ১
গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হোসনি দালানে শিয়া মুসলমানদের আশুরার প্রস্তুতির সময় বিস্ফোরণে এক কিশোর নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন৷ বাংলাদেশে এর আগে কখনো শিয়াদের উপর এরকম হামলায় হয়নি৷ এই হামলারও দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট, তবে সরকার সে দাবি নাকোচ করে দিয়ে হামলাকারীরা সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি-র সদস্য৷ সন্দেহভাজনদের একজন ইতোমধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Zaman
ঢাকায় প্রকাশক খুন
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’টি স্থানে কাছাকাছি সময়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়৷ এতে খুন হন এক ‘সেক্যুলার’ প্রকাশক এবং গুরুতর আহত হন আরেক প্রকাশক ও দুই ব্লগার৷ নিহত প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের সঙ্গে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসার-আল-ইসলাম’ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
প্রার্থনারত শিয়াদের গুলি, নিহত ১
গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশের বগুড়ায় অবস্থিত একটি শিয়া মসজিদের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনারতদের উপর গুলি চালায় কমপক্ষে পাঁচ দুর্বৃত্ত৷ এতে মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত হন এবং অপর তিন ব্যক্তি আহত হন৷ তথকথিত ইসলামিক স্টেট-এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করা স্থানীয় একটি গোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
9 ছবি1 | 9
ডিডাব্লিউ: বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা ‘সংকুচিত' হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত টোমাস প্রিনৎস৷ আপনারও কি মনে হয় বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বাকস্বাধীনতার কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে?
নুরুল কবির: বাংলাদেশে সাধারণভাবে সংবিধানের ভিত্তিতে বাকস্বাধীনতা পুরোপুরি কখনোই ছিল না৷ তবে সাম্প্রতিককালে অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি, যাঁরা সরকারের রাজনৈতিক, দার্শনিক লাইনের বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলেন, কিংবা ভাবেন, তাঁদের বাকস্বাধীনতা খর্ব করার নানা ধরনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ আয়োজন সরকারের তরফ থেকে চলছে৷ এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে একটা ভয়ের সংস্কৃতি নানানভাবে জেঁকে বসেছে৷ তার কারণে এক ধরনের ‘সেল্ফসেন্সরশিপও' অন্তত মিডিয়ার কোনো কোনো ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ সেকারণে যে অভিযোগ উঠছে, সেটা ভিত্তিহীন নয়৷
প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ যে চাপের কথা বলছেন, সেটার ধরন আসলে কেমন?
যদি আমি নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলি, যেমন বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে একসময় আমাকে নিয়মিত ডাকা হতো নানান রাজনৈতিক, সামাজিক ইস্যুতে কথা বলার জন্য৷ কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমাকে ডাকা হয় না৷ আমি যখন ঘটনার কী জানবার চেষ্টা করেছি, তখন জানতে পেরেছি, টেলিভিশন কর্তৃপক্ষগুলোকে নানানভাবে সরকারের এজেন্সির লোকজন এবং সরকারের সাথে যুক্ত কিছু তরুণ তুর্কী, যারা নানানভাবে সরকারের সুবিধাভোগী, তারা মিলে এক ধরনের হুমকিধামকি দিয়ে রেখেছেন৷ তাদের পরিষ্কারভাবে একটা লিস্ট দেয়া হয়েছে যে, এদেরকে তারা কথাবার্তা বলার জন্য ডাকতে পারবেন না৷ যেহেতু এই কোম্পানিগুলোকে নানান ব্যবসায়িক কারণে সরকারের কথা মানতে হয়, ফলে তারা অন্যায় হলেও এই হুমকিধামকি এবং উপদেশ মানতে বাধ্য হচ্ছে৷ যেকারেণ আমিসহ বেশ কিছু লোক যাঁরা টেলিভিশনে কথা বলতে নিমন্ত্রণ পেতেন, তাঁরা সেই নিমন্ত্রণ পাচ্ছেন না৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ‘রেসোলিউশন' যেহেতু কোনো রাষ্ট্রের জন্যই বাধ্যবাধকতামূলক নয়, সেহেতু প্রায়োগিক অর্থে সেটা খুব একটা কার্যকর হবে না৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক পরিসরে যখন এরকম একটা ‘রেসোলিউশন' হয়, তার একটি নৈতিক চাপ যে কোনো সরকারের উপরই জারি থাকতে বাধ্য৷
আরেকটি বাস্তব সত্য হচ্ছে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যে সরকার প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, সেই সরকারের জনপ্রিয়তা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে৷ প্রাথমিকভাবে এই সরকারের কোনো রাজনৈতিক ন্যযতা ছিল না এই কারণে যে, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় আসেনি৷ এমনকি সরকার ক্ষমতায় আসতে যে ১৫০ এর অধিক সিট লাগে, সেই সংখ্যক সিটেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি৷ ফলে তার একটি রাজনৈতিক ন্যযতার আকাল রয়েছে৷ অন্যদিকে, তারা যে অন্যায়, অবিচার সমাজের উপর চাপিয়ে রেখেছে, সেটার কারণে তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে৷
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন অ্যাপ বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ বলা হচ্ছে, নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেসব বন্ধ রাখা হচ্ছে৷ আবার কেউ কেউ বলছেন, মুক্তভাবে মত প্রকাশের পথ বন্ধে এরকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে৷ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
আমার ব্যক্তিগত ধারণা, ফেসবুক বা এ ধরনের সামাজিক মাধ্যমগুলো সাধারণ মানুষ যে মত প্রদান করেন তার শতকরা নব্বইভাগেই সরকারের প্রতি সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়৷ একটা স্বৈরতান্ত্রিক সরকার কখনোই এটা সহ্য করতে পারে না৷ সেকারণেই তারা এটা প্রধানত বন্ধ করেছিল৷ তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টিও আছে৷ তবে সেটা ফেসবুক বন্ধ করে নয়, সমাধান করতে হবে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে৷
বাংলাদেশে চলতি বছর চারজন ব্লগার, একজন প্রকাশকসহ একাধিক শিয়া মুসলমান, পীরের মুরিদ, বাউল ফকির হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ অনেক হত্যার ধরন একই৷ ধারাবাহিক এ সব হত্যাকাণ্ডের প্রভাব গণমাধ্যমের উপরও কি পড়ছে?
ব্লগারদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, আপত্তিজনক৷ আমি মনে করি, ব্লগারদের তাদের নিজস্ব কথাবার্তা, ধর্মসংক্রান্ত বিষয়াদি লেখার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে, সেটার সঙ্গে আমরা একমত না হলেও৷ যখনই একটি সমাজের মধ্যে সাধারণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ উপেক্ষিত হয়, কিংবা অনুপস্থিত থাকে তখনই এ ধরনের চরমপন্থি কর্মকাণ্ড ঘটাবার সামাজিক, রাজনৈতিক সুযোগ তৈরি হয়৷ ফলে একদিন থেকে যেমন এ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা দরকার৷ দোষীদের বের করে শাস্তি দেয়া দরকার৷ তেমনি এ ধরনের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেকারণে সরকারের তরফ থেকে ভিন্নমতাবলম্বীদের মত প্রকাশের, রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবার অবাধ, গণতান্ত্রিক সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে৷
বাংলাদেশে কি সত্যিই ভয়ের সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে? আপনার মতামত জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
আধুনিক প্রযুক্তির কারণে মানুষের সুযোগ-সুবিধা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে তথ্য চুরির ঘটনা৷ ফোর্বস জানাচ্ছে কোন সাতটি উপায়ে আপনি খুব সহজেই ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষা করতে পারেন৷
ছবি: Fotolia/davidevison
পাসওয়ার্ড নিজের কাছে রাখুন
কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের পাসওয়ার্ড যেন কখনই এক না হয়৷ আর ব্যাংক কার্ড-এর সঙ্গে যেন এই পাসওয়ার্ডের মিল না থাকে৷ এছাড়া কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে কোনো পাসওয়ার্ড লিখে রাখবেন না৷ এর ফলে আপনার তথ্য চুরির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়৷ বাড়ির বাইরে গেলে এগুলি ‘লক’ করে যাবেন৷
ছবি: Sergey Nivens - Fotolia.com
নামে ‘গুগল অ্যালার্ট’ ব্যবহার করুন
এটা খুব সহজ পন্থা, আপনি যদি দেখতে চান ইন্টারনেটে আপনার সম্পর্কে সবাই কী বলছে৷ সোজা এই ঠিকানায় যান – http://www.google.com/alerts এবং আপনার নাম লিখুন৷ তারপর আপনার নামের বিভিন্ন ধরন লিখে, তার আগে ও পরে ‘কোটেশন মার্ক’ জুড়ে দিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
ব্যবহারের পর লক্ষ্য রাখা
আপনি যদি অন্য কারো কম্পিউটার বা ট্যাবলেট ব্যবহার করেন, তবে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন৷ আপনার পর যিনি সেটা ব্যবহার করবেন, তিনি যাতে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে না পারে – সেটা খেয়াল রাখুন৷ আপনি যদি এটা করতে ভুলে যান, তাহলে ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে৷
ছবি: AFP/Getty Images
ফোন, ই-মেল বা জিপ কোড ব্যবহার করতে না দেয়া
অচেনা কোনো মানুষ এই নম্বরগুলো জানতে চাইলে, আপনারা দেবেন না৷ দেখা যায় কোনো অফিস তাঁর কর্মীর কাছ থেকে এ সব তথ্য চাইলে, অনেকেই সেচ্ছ্বায় তা দিয়ে দেয়৷ বহু অফিস এ নিয়ে একটি প্রোফাইল তৈরি করে৷ আপনার কিন্তু এ সব তথ্য না দেয়ার অধিকার আছে৷ তাই আপনি যদি এতে স্বাচ্ছ্বন্দ্যবোধ না করেন, তবে দেবেন না৷
ছবি: picture-alliance/ZB
কার্ড নয় ক্যাশ
আপনি যদি চান আপনি যে পণ্যটি কিনছেন, সেই কোম্পানি আপনারা পরিচয় না জানুক, তবে নগদ অর্থে জিনিস কিনুন৷
ছবি: AP
ফেসবুকে নিরাপত্তার জন্য ‘ফ্রেন্ডস’ ব্যবহার করুন
ফেসবুকে সবসময় ‘সিকিউরিটি’ বা নিরাপত্তা পরীক্ষা করুন৷ পোস্ট করার পর লক্ষ্য রাখুন আপনি আপনার ছবি বা মন্তব্য ‘ফ্রেন্ডস’ করে রেখেছেন, নাকি ‘পাবলিক’ করেছেন৷ আপনি যদি ‘স্পেশ্যাল’ নির্বাচন করেন এবং ঠিক করে দেন কে কে আপনার পোস্ট দেখতে পাবে, তবে সেটা আপনার তথ্য নিরাপত্তার জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Bozoglu
‘হিস্ট্রি’ এবং ‘কুকিস’ মুছে ফেলুন
আপনি সবশেষ কবে এটা করেছেন? আপনি যদি নিশ্চিত না হন, ব্রাউজারে গিয়ে এটা পরিবর্তন করুন৷ ব্রাউজারের ‘প্রাইভেসি সেটিংস’-এ যান, সেখানে ‘নেভার রিমেমবার হিস্ট্রি’ নির্বাচন করুন৷ এর ফলে ইন্টারনেটে আপনাকে ‘ট্র্যাক’ করাটা হ্যাকারদের জন্য কঠিন হবে৷ এছাড়া আপনি ‘অ্যাড অন’-ও ব্যবহার করতে পারেন৷