1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্লগার শুভ’র ‘ইশকুল’ মিশন

৭ অক্টোবর ২০১০

শুভ’র ব্লগিং নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই৷ ডয়চে ভেলের সেরা বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী তিনি৷ নিত্যদিনের নানা বিষয় জায়গা পায় তাঁর ব্লগে৷ বিশেষ করে যেসব খবর গণমাধ্যমের নজর এড়িয়ে যায়, তাই নিয়ে শুভ’র যত লেখালেখি৷

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্কুলের এক শিক্ষার্থীছবি: Ali Mahmed

সেই শুভ বা আলী মাহমেদ হঠাতই তাঁর ব্লগে লিখতে শুরু করলেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে৷ যে শিশুদের কেউবা জন্মেছে মেথর পল্লীতে৷ কারো বা বেড়ে ওঠা অন্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে৷ এমন শিশুদের খবর কতজনই বা রাখে বলুন?

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ব্লগার

শুভ কিন্তু পড়ে আছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে নিয়েই৷ শুধু লিখেই দায় এড়াতে রাজি নন তিনি৷ বরং এসব শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার বড় স্বপ্নে বিভোর তিনি৷ একের পর খুলে চলেছেন স্কুল৷ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিদ্যালয়৷ নাম, ‘আমাদের ইশকুল'৷

শিক্ষা, খেলাধুলা - দুটোই চলে শুভ’র ‘ইশকুলে’ছবি: Ali Mahmed

হরিজন শিশুদের জন্য ‘ইশকুল'

‘আমাদের ইশকুল-১', অবস্থান আখাউড়া স্টেশনের কাছে মেথর পল্লীতে ৷ হরিজন বা মেথরদের বাচ্চাদের জন্য এই বিদ্যালয়৷ একটি ভাড়া করা ঘরে গত জুনে চালু হয় এটি৷ সাকুল্যে শিক্ষার্থী এখন ২৪ জন৷ এখানে প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত চলে লেখাপড়া সঙ্গে খেলাধুলা৷ শেখানোর জন্য নির্দিষ্ট কোন ধরাবাঁধা নিয়মকানুন নেই এই ‘ইশকুলে'৷ বরং নিয়মিত হাতের নখ কাঁটা থেকে শুরু করে কলা খাওয়া পর্যন্ত সবই শেখানো হয় এখানে৷ পাশাপাশি মূলধারার শিক্ষাতো রয়েছেই৷ শুভ জানান, আমরা মূলত শিশুদের বেসিক শিক্ষার দিকেই জোর দেই৷

অন্ধদের শিশুদের ‘ইশকুল'

শুভ তাঁর ব্লগে স্কুলগুলো সম্পর্কে চমৎকার সব পোস্ট করেছেন৷ এই যেমন, ‘আমাদের ইশকুল-২', যার অবস্থান আখাউড়ার আজমপুরে৷ অন্ধদের ছেলেমেয়েদের জন্য এই বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু জুলাই মাসে৷ প্রতিদিন বিকেলে দু'ঘণ্টা সেখানে শিক্ষা নেয় ২৯ জন৷ এটি সম্পর্কে শুভ লিখেছেন, এই স্কুলে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি৷ এখানে সুই-সুতার কাজ শেখার জন্য ফ্রেমসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে দেয়া হয়েছিল৷

টিনের চালায় গড়ে উঠেছে বিদ্যালয়ছবি: Ali Mahmed

পথ শিশুদের ‘ইশকুল'

পথ শিশুদের জন্যও শুভ গড়েছেন আলাদা স্কুল৷ অবস্থান আখাউড়া স্টেশনে৷ সেখানে শুভ'র নিয়মকানুনে শিক্ষা নিচ্ছে ৪০ শিক্ষার্থী৷ এই স্কুল সম্পর্কে তাঁর ব্লগ পোস্ট, ‘‘আমি কেবল অক্ষর শিক্ষা দেয়ার উপরই জোর দিচ্ছি না৷ আমি চাচ্ছি, আমার নিজের বাচ্চারা যা যা শিখবে এরাও তাই শিখবে৷ আমি জটিল কথা বুঝি না, সাফ কথা, আমার নিজের বাচ্চার পড়ার-জানার সুযোগ থাকলে এদের থাকবে না কেন?''

নবীন স্কুল

শুভ'র এই স্কুলগুলো একেবারেই নবীন৷ তাই, এখনো এগুলো আছে গোছানোর মধ্যে৷ তিন স্কুলে কাজ করে তিনজন শিক্ষক৷ পড়ানোর শুরুতে শপথ পাঠ করে শিশুরা৷ শুধু বই পড়া নয়, তারা অংশ নেয় নানা খেলাধুলাতেও৷ রয়েছে খাবারের ব্যবস্থা৷ কিন্তু তারপরও প্রশ্ন করতেই হলো, এসব শিশুর শিক্ষা ভবিষ্যৎ কী? মানে শুভ'র ‘ইশকুল' শেষে আনুষ্ঠানিক স্কুলে যাবার কোন ব্যবস্থা কি আছে? জবাবে শুভ, আমি চাচ্ছি একটা বাচ্চাকে গড়া তোলার জন্য বেসিক যে শিক্ষা দরকার, সেটা এরা আগে পাক৷

খুদে শিক্ষার্থীদের কিশোরী শিক্ষিকাছবি: Ali Mahmed

সব শিশুর শিক্ষা চাই

শুভ মনে করেন, বাংলাদেশের সব শিশুকেই শিক্ষার সুযোগ দেওয়া উচিত৷ আর সেই কাজটা করতে সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে৷ কেননা শিক্ষাইতো জাতির মেরুদণ্ড৷ শুভ'র কথায়, (সরকার) হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিচ্ছে, এসব অর্থ খরচ করা হচ্ছে৷ অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও হচ্ছে৷ কিন্তু এসব কাদের জন্য? শিক্ষা ব্যতীত চারপাশ অন্ধকার৷ অন্ধকারে থাকা এই মানুষগুলো গোটা জাতির বিকলাঙ্গ একটা অংশ হয়ে যাবে৷ তখন কি কাজে লাগবে এই ব্যয়?

বিনা খরচার পড়া

আলী মাহমেদ এর এই বিদ্যালয়গুলোতে শিশুরা বিনা খরচায় পড়তে পারে৷ সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য এরকম আরো স্কুল গড়তে চান তিনি৷ তিনি জানান, আমি নিজে যে স্বপ্নটা দেখি তা হচ্ছে, একজন রাখাল থেকে ডা. আতিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হতে পারলে, এরা পারবেনা কেন? হয়তো আমি থাকবোনা, কিন্তু আমার স্বপ্নটা থেকে যাবে৷

একজন ব্লগার আলী মাহমেদ স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের সব শিশুকে শিক্ষা দেবার৷ তাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার৷ তাঁর মত এমন উদ্যোগ কি অন্যদের মাঝেও দেখা যাবে?

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ