ফিফার এথিক্স কমিটি ফিফা প্রেসিডেন্ট ইয়োসেফ এস ব্লাটার ও উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনিকে ফুটবল থেকে আট বছরের জন্য ‘সাসপেন্ড' করেছে৷ এই নিষেধাজ্ঞা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক, উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে৷
ছবি: Getty Images/M. Rose
বিজ্ঞাপন
ব্লাটার-এর আগমনের দৃশ্যটা প্রায় ভাইরাল হতে চলেছে! বিশেষ করে তাঁর মুখে বোধহয় কেটে যাওয়ার কারণে একটি লিউকোপ্লাস্ট প্লাস্টার, যা ডয়চে ভেলে স্পোর্ট-কে টুইট করতে অনুপ্রাণিত করেছে: ‘ব্লাটারের শ্রীমুখ, #ফিফাগেটের ভিতর দিয়ে'৷
তার ভিডিও নিয়েও বক্র মন্তব্যের কোনো অভাব নেই৷ অলিভার কে টুইট করেছেন: ‘ব্লাটার যেমন সম্মানজনক প্রস্থানের পরিকল্পনা করেছিলেন, ঠিক তেমনটা হলো না'৷
ব্লাটার এবং প্লাতিনি উভয়েই আপিল করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷ তাই নেড জিলিক-এর টুইটারে প্রতিক্রিয়া: ‘এই একটি বার নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিলের ব্যবস্থা না থাকলেই বোধহয় ভালো হতো'৷
#
দুই ফুটবল কর্মকর্তা ফিফার নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন বিশ লাখ সুইশ ফ্রাঙ্ক (প্রায় বিশ লাখ মার্কিন ডলার) পরিমাণের, ‘‘ফিফার প্রতি বিশ্বস্ততা ভঙ্গকারী'' একটি পেমেন্টের জন্য৷ ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল অবধি প্লাতিনি ব্লাটারের উপদেষ্ট ছিলেন৷ তখন নাকি দু'জনের মধ্যে বিনা লেখাপড়ায় ‘জেন্টলম্যানস এগ্রিমেন্ট' হয়েছিল যে, প্লাতিনিকে এই পরিমাণ পারিশ্রমিক দেওয়া হবে – অবশ্যই ফিফার তহবিল থেকে৷ প্লাতিনি শেষমেষ যখন সেই পেমেন্ট পেলেন, তখন সালটা ২০১১ এবং ব্লাটার ফিফা প্রেসিডেন্ট পদে কাতারের মোহামেদ বিন হাম্মাম-এর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি৷
#ব্লাটিনি এথিক্স কমিটির এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন, বলে মনে করা হচ্ছিল৷ এবার জানা গেছে ব্লাটার লসান-এর কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্ট বা কাস-এর কাছে আপিল করবেন৷
ব্লাটার থাকতে ফিফার যত কেলেঙ্কারি
গত ১৭ বছর ধরে ফিফার নেতৃত্বে আছেন সেপ ব্লাটার৷ তার এই মেয়াদকালে ফিফা বেশ কয়েকবার কেলেঙ্কারির মুখে পড়েছে৷ এখানে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হলো৷
ছবি: Reuters/A. Wiegmann
১৯৯৭: বিশ্বকাপ বিপণন চুক্তি থেকে ঘুস
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগেই এক ঘুস কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সেপ ব্লাটার৷ তাঁর আগের প্রেসিডেন্ট জোয়াও আভেলাঞ্জ এবং তাঁর সাবেক জামাতা রিকার্ডো টেশেরার সঙ্গে বিশ্বকাপের বিপণন সত্ত্ব সংক্রান্ত এক ঘুস কেলেঙ্কারিতে ব্লাটারের নামও এসেছিল৷ সেসময় ফিফার মহাসচিব ছিলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯৯৮: আফ্রিকার প্রতিনিধিদের ঘুস
ফ্রান্সের বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেপ ব্লাটার৷ অভিযোগ আছে, সেসময় প্যারিস হোটেলে অবস্থানরত আফ্রিকার প্রত্যেক প্রতিনিধিকে পঞ্চাশ হাজার মার্কিন ডলার করে ঘুস দেয়া হয়েছিল৷ ব্লাটার অবশ্য এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন৷
ছবি: AP
২০০৬: টিকিট বিক্রির দায়িত্বে ভাইস প্রেসিডেন্ট
২০০৬ সালে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার সুযোগ পায় ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো৷ সেদেশের জ্যাক ওয়ার্নার তখন ফিফার ভাইস প্রেসিডেন্ট৷ তার পরিবারের সদস্যরা সেবার সেদেশে টিকিট বিক্রির সুযোগ পায় এবং নয় লাখ মার্কিন ডলারের মতো কমিশন থেকে আয় করে, যা আসলে অনুচিত৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Acosta
২০১০: রাশিয়া এবং কাতারে বিশ্বকাপ
২০১৮ এবং ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পর্যায়ক্রমে রাশিয়া এবং কাতারকে দেয়া হয়৷ কিন্তু এই ঘোষণার আগেই ফিফার দুই কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়৷ রাশিয়া এবং কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ দেয়া নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে৷
ছবি: Reuters/A. Wiegmann
২০১১: ব্লাটারের প্রতিদ্বন্দ্বীর পদত্যাগ
সেবছর ফিফার প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ব্লাটারের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হন কাতারের মোহাম্মেদ বিন হাম্মাম৷ কিন্তু ভোটাভুটির আগেই ক্যারাবিয়ানরা হাম্মামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনেন৷ ফলে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন হাম্মাম৷
ছবি: Saeed Khan/AFP/Getty Images
২০১৪: টিকিট বিক্রিতে দুর্নীতি
ব্রাজিলে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বিশ্বকাপের টিকিট বিতরনে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় আর্জেন্টিনার ফিফা কর্মকর্তা জুলিও গ্রোডোনার বিপক্ষে৷ ২০১৪ সালের ৩০ জুলাই মারা যান তিনি৷
ছবি: Juan Mabromata/AFP/Getty Images
২০১৫: ব্যাপক ধরপাকড়
দুর্নীতির অভিযোগে ২৬ মে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৯ ফিফা কর্মকর্তাসহ ১৪ জন৷ ফিফা সভাপতি নির্বাচনের ঠিক আগে গ্রেপ্তার হলেন তাঁরা৷ এ কেলেঙ্কারির পর ফিফার বর্তমান প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি উঠলেও সে দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/epa
7 ছবি1 | 7
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)
ব্লাটার ও প্লাতিনিকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত কি আপনি সমর্থন করেন?জানান নীচের ঘরে৷