অ্যামেরিকায় নিরস্ত্র জেকব ব্লেকের ওপর পুলিশের গুলির প্রতিবাদে কেনোশায় বিক্ষোভ, ভাঙচুর, আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটল। অন্যদিকে ব্লেকের যা অবস্থা তাতে তিনি আর হাঁটতে পারবেন কি না সন্দেহ।
বিজ্ঞাপন
পুলিশের অত্যাচারে কয়েক মাস আগে দমবন্ধ হয়ে মারা গেছিলেন ফ্লয়েড। আর পুলিশের সাতটি গুলি খাওয়ার পর জেকব ব্লেকের অবস্থাও ভালো নয়। ব্লেক পরিবারের আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি সম্ভবত আর কখনো হাঁটতে পারবেন না।
এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গের ওপর অ্যামেরিকার পুলিশের এই বর্ণবাদী হামলার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে কেনোশা। বিক্ষোভ অ্যামেরিকার অন্য শহরেও। তবে কেনোশার প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ থাকেনি। বেশ কিছু জায়গায় তা সহিংস হয়ে ওঠে। গোটা বারো সরকারি ভবনে আগুন ধরানো হয়। ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রচুর দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে।
গভর্নর টনি এভার্স জরুরি অবস্থা জারি করে বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছেন। ন্যাশনাল গার্ডের সংখ্যাও দ্বিগুণ করা হয়েছে। এভার্স বলেছেন, ''আমরা কিছুতেই এই বর্ণবাদ ও অন্যায় বরদাস্ত করতে পারি না। কিন্তু একইসঙ্গে এই ধ্বংস ও ক্ষতির পথও সমর্থন করতে পারি না।''
আফ্রো-অ্যামেরিকান যে ব্যক্তিদের কথা অবশ্যই জানা উচিত
যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের হাতে কৃষ্ণাঙ্গদের বিদ্বেষ ও নির্যাতনের ইতিহাস বহু পুরনো৷ এখানে কয়েকজন আফ্রো-অ্যামেরিকান ব্যক্তির কথা তুলে ধরা হলো, যাদের নাম গত তিনশ বছরের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে৷
ছবি: picture-alliance/Everett Collection
ক্রিসপাস অ্যাটাকস (১৭২৩-১৭৭০)
তাঁর জীবদ্দশায় যুক্তরাষ্ট্র বলে কোনো দেশ ছিল না৷ ১৭৭০ সালের ৫ মার্চ ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যে পাঁচ বেসামরিক মানুষ নিহত হন তিনি তাদের একজন৷ এটি ‘বস্টন হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত৷ অ্যামেরিকান বিপ্লবে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ শহিদ হিসেবে সমাদৃত৷ তার বাবা আফ্রিকান এবং মা ভারতীয়৷ তিনি একজন পলাতক ক্রীতদাস ছিলেন৷
ছবি: Gemeinfrei
বেনজামিন ব্যানেকার (১৭৩১-১৮০৬)
এই গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিদ প্রথম আফ্রো-অ্যামেরিকান বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত৷ তিনি মৃত্যুদণ্ড প্রথা বিলুপ্ত করার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনের সমালোচক ছিলেন, যিনি শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের মানসিকতাকে নিকৃষ্ট ভাবতেন৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/Highsmith
ফিলিস হুইটলে (১৭৫৩-১৭৮৪)
আফ্রিকায় জন্ম নেয়া এই নারীকে মাত্র সাত বছর বয়সে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হয়েছিল৷ তিনি তার মালিকের কাছে লেখাপড়া শিখেছিলেন৷ ১৩ বছর বয়সে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় এবং ১৭৭৩ সালে তিনি প্রথম আফ্রো-অ্যামেরিকান হিসেবে কবিতা সংকলন বের করেন৷ জর্জ ওয়াশিংটন তার কবিতার প্রশংসা করে বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media
জেমস ফোর্টেন (১৭৬৬-১৮৪২)
সমুদ্র দেখা এবং জাহাজের পাল তৈরিতে প্রশিক্ষণ নেয়ার শখ ছিলো ফিলাডেলফিয়ার জেমস ফোর্টেনের৷ ১৭৯৮ সালে পাল তৈরির যে কারখানায় তিনি শিক্ষানবিশ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন, তা কিনে নেন এবং ধনী হয়ে ওঠেন৷ ক্রীতদাস বহনকারী কোনো জাহাজে তিনি পাল বিক্রি করতেন না৷ যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গদের নাগরিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তার অর্থ-সম্পদকে কাজে লাগিয়েছিলেন৷ সর্বকালের সেরা একশ আফ্রো-অ্যামেরিকানের তালিকায় তার নাম আছে৷
ছবি: public domain
সোজার্নার ট্রুথ (১৭৯৭-১৮৮৩)
ইসাবেলা বোমফ্রি নামে ক্রীতদাস হিসেবে জন্ম৷ ১৮২৭ সালে সন্তানসহ পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হয়েছিল তাকে৷ দাসপ্রথার অবসান এবং নারী অধিকার নিয়ে আইনি লড়াই লড়েছেন, সেসময় তার নতুন নাম হয় সোজার্নার ট্রুথ৷ ১৮৫১ সালে বর্ণ ও লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে তার বিখ্যাত বক্তব্য ছিল ‘আমি কি নারী নই?’ তিনি যৌনাঙ্গচ্ছেদেরও বিরোধিতা করেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/Everett Collection
মারিয়া ডাব্লিউ স্টুয়ার্ট (১৮০৩-১৮৭৯)
মুক্ত মানুষ হিসেবে জন্ম৷ একাধারে সাংবাদিক, মৃত্যুদণ্ডবিলোপপন্থি, প্রভাষক এবং নারী অধিকার আইনজীবী৷ তিনিই প্রথম আফ্রো-অ্যামেরিকান, যিনি শ্বেতাঙ্গ-কৃষাঙ্গ নারী-পুরুষের সামনে বক্তব্য দিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, ‘‘গায়ের রং নারী-পুরুষ নির্ধারণ করে না, আত্মা যে নীতির দ্বারা গঠিত, তা নির্ধারণ করে৷’’
ছবি: Gemeinfrei
হ্যারিয়েট টাবম্যান (১৮২০-১৯১৩)
১৮৪৯ সালে মালিকের কাছ থেকে পালিয়ে যান ক্রীতদাস হ্যারিয়েট৷ ‘পাতাল রেলের কন্ডাকটার’ হিসেবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন৷ আসলে ক্রীতদাসদের মুক্ত করতে ‘সেফ হাউজ’ তৈরি করতেন তিনি৷ পরবর্তীতে দরিদ্র ক্রীতদাসদের সাহায্য করতেন তিনি৷ ক্রীতদাস ব্যবসায়ী সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের বদলে ২০ ডলারের নোটে টাবম্যানের ছবি ব্যবহার করা হবে৷
ছবি: Reuters/Library of Congress
বুকার টি ওয়াশিংটন (১৮৫৬-১৯১৫)
গৃহযুদ্ধ তাকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছিল৷ তিনি ছিলেন প্রভাবশালী শিক্ষক, লেখক এবং অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা৷ আফ্রিকান-অ্যামেরিকানদের শিক্ষার মাধ্যমে এবং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের মানোন্নয়নের পরামর্শ দিতেন তিনি৷ তিনিই প্রথম আফ্রো-অ্যামেরিকান যিনি ১৯০১ সালে কোনো প্রেসিডেন্টের সাথে খাবার খেয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/Everett Collection
আইডা বি ওয়েলস-বার্নেট (১৮৬২-১৯৩১)
গৃহযুদ্ধের আগে ক্রীতদাস ছিলেন বাবা-মা৷ তিনি একজন প্রভাবশালী সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা এবং ‘ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ কালার্ড পিপল’ বা এনএএসিপি-র সহ-প্রতিষ্ঠাতা৷
ছবি: Imago Images
জেমস ওয়েলডন জনসন (১৮৭১-১৯৩৮)
নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আফ্রো-অ্যামেরিকান অধ্যাপক, যিনি প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্টের অধীনে কূটনীতিক ছিলেন৷ তিনি এনএএসিপি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন৷ বর্ণবিদ্বেষ এবং কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন৷ তার লেখা কবিতা ‘লিফট এভরি ভয়েস অ্যান্ড সিং’ পরবর্তীতে ‘আফ্রো-অ্যামেরিকান জাতীয় সংগীতে রূপ নেয়৷
ছবি: picture-alliance/Everett Collection
ডাব্লিউ ই বি ডু বোইস (১৮৬৮-১৯৬৩)
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়া প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ, যিনি একাধারে এনএএসিপি’র প্রতিষ্ঠাতা, সাংবাদিক, ইতিহাসবিদ এবং নাগরিক অধিকার কর্মী৷ ১৮৯৫ সালে তিনি ওই ডিগ্রি পান৷ দাস-বাণিজ্যের উপর তিনি থিসিস লিখেছিলেন৷ মেধাবী শিক্ষার্থী হয়েও যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে যোগ দেননি৷ ১৯১৯ সালে প্যারিসে প্রথম ‘এক্সিবিট অফ অ্যামেরিকান নিগ্রোস’ প্রদর্শনীর আয়োজন করেন৷
ছবি: picture-alliance/Glasshouse Images
রোজা পার্কস (১৯১৩-২০০৫)
১৯৫৫ সালে একটি বাসে শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির জন্য নিজের আসন ছাড়তে রাজি না হওয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে৷ এই ঘটনা ‘মন্টগামরি বাস বয়কট’ আন্দোলনে রূপ নেয়৷ এর সূত্র ধরে মার্টিন লুথার কিং নাগরিক অধিকার আন্দোলনে সোচ্চার হন৷ ‘নাগরিক অধিকারের প্রথম নারী’ এবং ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের জননী’ হিসেবে অমর হয়ে আছেন তিনি৷
ছবি: picture alliance/Everett Collection
12 ছবি1 | 12
ব্লেক যে ভালো নেই এবং তাঁর পক্ষাঘাত হয়েছে এই খবর জানার পর বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা আরো বেড়েছে। হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, একটা গুলি তাঁর মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে, অন্য গুলি পেটে লেগেছে। ফলে তাঁর লিভার, অন্ত্র ও পেটের অভ্যন্তরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর হাতেও গুলি লেগেছে। অ্যাটর্নি বেন ক্রাম্প বলেছেন, ব্লেক যদি আবার হাঁটতে পারেন, তা হলে তা অবিশ্বাস্য ঘটনা হবে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে দেখা যাচ্ছে, নিরস্ত্র ব্লেককে পুলিশ একাধিকবার গুলি করে। ব্লেক তখন গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন। গাড়িতে তখন তাঁর তিন ছেলে ছিল।
এই ঘটনার পরই প্রথমে কেনোশা, তারপর লস এঞ্জেলেস, নিউ ইয়র্ক, মিনেপোলিসে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। কার্ফু অগ্রাহ্য করে লোকে রাস্তায় নামেন। কেনোশায় গত দুই দিন ধরে যেখানে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত হচ্ছেন, সেখানে লোহার বেড়া লাগানো হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, প্রতিবাদ চলবে। তাঁদের প্রথম দাবি, ওই দুই পুলিশকে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। আর কালো মানুষদের ওপর অন্যায় বন্ধ করতে হবে।
তবে ব্লেকের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সকলে যেন শান্তি বজায় রাখেন। জেকব ব্লেকের মা জুলিয়া জ্যাকসনের আবেদন, ''আমি আজ যখন শহরের ভিতরে গেছি, তখন ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখেছি। জেকব যদি জানতে পারে, তাঁর ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে এরকম তাণ্ডব হয়েছে, তা হলে সে আদৌ খুশি হবে না। আমি সকলকে বলব, আত্মসমীক্ষা করুন। চেষ্টা করুন জেকব যাতে ন্যায় পায়। আমি প্রার্থনা করছি, জেকব যাতে ভালো হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে দেশের ক্ষতও যেন ভালো হয়ে যায়।'' ব্লেকের পরিবার গভর্নর এভার্স ও পুলিশ প্রধানের সঙ্গে দেখা করে অবিলম্বে দুই পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। পরিবারের আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি শীঘ্রই ওই দুই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছেন।
‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ এর অজানা কিছু কথা
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট দিনটি অ্যামেরিকার ইতিহাসে অমর হয়ে আছে৷ সেদিন ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ খ্যাত একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, যিনি অ্যামেরিকায় আফ্রিকান-অ্যামেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা৷
ছবি: AP
লক্ষ্য বর্ণবাদের অবসান
এই সেই বিখ্যাত ছবি৷ ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিংকন মেমোরিয়ালে প্রায় আড়াই লক্ষ সমর্থকের উদ্দেশ্যে ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ খ্যাত ভাষণ দিয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ণবাদ দূর করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নাগরিক অধিকার আন্দোলন
বর্ণবাদ অবসানের লক্ষ্যে ‘সিভিল রাইটস মুভমেন্ট’ বা নাগরিক অধিকার আন্দোলন শুরু করেছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ তারই অংশ হিসেবে ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট আয়োজিত ‘মার্চ অন ওয়াশিংটন’ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি৷ ছবিতে সামনের সারিতে বাম থেকে দ্বিতীয়তে দেখা যাচ্ছে তাঁকে৷
ছবি: Hulton Archive/Getty Images
যেভাবে আন্দোলনের শুরু
ছবির এই নারীর নাম রোজা পার্কস৷ বাস চালকের নির্দেশের পরও বাসের পেছনে বসতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ তার প্রতিবাদেই শুরু হয়েছিল নাগরিক অধিকার আন্দোলন - যাঁর অন্যতম নেতা ছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ মার্কিন কংগ্রেস পরবর্তীতে রোজা পার্কসকে ‘দ্য ফার্স্ট মিনিস্টার অফ সিভিল রাইটস’ উপাধি দিয়েছিল৷
ছবি: AP
বাস বয়কটের দায়ে অভিযুক্ত
রোজা পার্কসের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বাস বয়কট আন্দোলন শুরু করেছিলেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ ১৯৫৬ সালের ২২ মার্চ তোলা ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে মার্টিন লুথার কিংকে স্বাগত জানাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী কোরেটা স্কট কিং৷ এটা আদালত ছাড়ার সময়কার ছবি৷ মন্টগোমারি শহরের বাসে চালু থাকা নিয়ম ভঙ্গের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল লুথার কিং এর বিরুদ্ধে৷ তবে তাঁর আপিলের পর বিচারক ৫০০ ডলারের জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছিলেন৷
ছবি: AP
কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভোটাধিকার
১৯৬৫ সালের ৩০ মার্চের এই ছবিতে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভোটাধিকারের দাবিতে ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে মার্টিন লুথার কিং ও তাঁর স্ত্রী সহ অন্যান্যদের৷
ছবি: William Lovelace/Express/Getty Images
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা
কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভোটাধিকারের দাবি নিয়ে ১৯৬৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে৷
ছবি: Hulton Archive/Getty Images
জন্ম
১৯২৯ সালের ১৫ই জানুয়ারি জর্জিয়ার অ্যাটলান্টায় জন্মগ্রহণ করেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ ১৯৫৫ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি৷ নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৫৷ নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ীদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ৷ ছবিটি ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ ভাষণের৷
ছবি: picture-alliance/akg
জার্মান মার্টিন লুথার
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এর নাম কিন্তু শুরুতে ছিল মাইকেল কিং৷ পরবর্তীতে তাঁর বাবা ষোড়শ শতকে যে জার্মান ক্যাথলিক যাজক প্রোটেস্টান্ট গির্জা প্রতিষ্ঠা করেন, সেই মার্টিন লুথারের নামে তাঁর ছেলে ও নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মার্টিন লুথার কিং৷
ছবি: Hulton Archive/Getty Images
মৃত্যু
১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল এক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ তাঁকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল জেমস আর্ল রে’কে (ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে)৷ ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রে একবার জেল থেকে পালিয়ে যাবার পর এফবিআই তাঁকে ধরতে এই পোস্টারটি ছাপিয়েছিল৷ তিনটি ছবিই রে’র৷
ছবি: picture-alliance/Everett Collection
9 ছবি1 | 9
সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, গুলির ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। এখনো পর্যন্ত কেন পুলিশ গুলি করল তা নিয়ে একটা কথাও বলা হয়নি। অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ব্লেকের বাবা অবশ্য বলেছেন, সরকারি তদন্তে তাঁর কোনো আস্থা নেই।
অন্যদিকে মূলত শ্বেতাঙ্গদের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ঠিক করেছে, তাঁরা সম্পত্তি রক্ষা করবে। এই গোষ্ঠীার নাম আর্মড সিটিজেনস টু প্রোটেক্ট লাইভস অ্যান্ড প্রপার্টি। তাঁরা জানিয়েছে, সরকারি ভবন রক্ষা করা হবে। ভাঙচুর করতে দেয়া হবে না। কোমরে হ্যান্ডগান এহং হাতে এআর ১৫ অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে কেভিন ম্যাথুসন জানিয়েছেন, তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে রক্ষা করবেন। কেউ কেউ বুঝতে পারেন না, সরকারি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে তার ভিতরে কেউ থাকলে তিনিও মারা যাবেন। অন্য ক্ষতি তো হবেই।
ফলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। ফ্লয়েডের পর ব্লেক নিয়ে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে অ্যামেরিকা।