1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্ল্যাক নাইট জঙ্গিরা সন্ত্রাস বাড়াচ্ছে পাকিস্তানে

১৩ অক্টোবর ২০১১

ব্ল্যাক নাইট গ্রুপ৷ পাকিস্তানি তালেবান জঙ্গিদের এই কুখ্যাত গোষ্ঠী এখন বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের মাধ্যমে জঙ্গিবাদকে পুষ্ট করতে অর্থ সংগ্রহ করে চলেছে৷ ক্রমশ তারা দুর্ধর্ষ হয়ে উঠছে, বিশেষ করে পাকিস্তানে৷

Taliban dementieren angeblich Gespräche mit afghanischer Regierung A picture made available on 09 October 2008 shows Taliban spokesman Zabiullah Mujahid (R) talking with a journalist in the mountains of Afghanistan volatile Helmand province, a hotbed of Taliban militants, 07 October 2008. The Taliban spokesman said that the ongoing mediation of Saudi Arabia for resolving the conflicts between Taliban and Afghan governments is being done without the consent of Taliban's supreme leader Mullah Omar and they will not support the talks until 70,000 international forces withdraw from the country. Following two years of strategic stalemate in the military fronts, and mounting public opinion pressure in western countries which have soldiers in Afghanistan, to end the war, Afghan and western officials have joined a chorus to call for peace with militants. EPA/STRINGER +++(c) dpa - Report+++
ফাইল ছবিছবি: dpa

গত জুন মাসের একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক৷ আফগানিস্তান পাকিস্তান সীমান্তের ডেরা ইসমাইল খান এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে একদল ব্যাঙ্ক ডাকাত একটি ব্যাঙ্ক লুঠ করে৷ ব্যাঙ্কে ডাকাতি করতে গিয়ে তারা বেশ কয়েকজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে, তারপর লুঠের অর্থ নিয়ে তারা যখন গাড়িতে একটি সেতু পেরিয়ে আফগানিস্তানে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তখনই পুলিশের চ্যালেঞ্জ৷ পুলিশের সঙ্গে লড়াইতে তালেবান জঙ্গিদের সকলেই মারা পড়ে৷ লুঠের টাকাও ফিরে যায় ব্যাঙ্কে৷

ঘটনা এখানেই শেষ নয়৷ দশদিনের মধ্যে সেই ডেরা ইসমাইল এলাকার একটি পুলিশ চৌকিতে একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী জোড়া মানববোমা পাঠায় তালেবান৷ কারণ অবশ্যই সেই ব্যাঙ্ক ডাকাতদের হত্যার বদলা৷ বিস্ফোরণে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িটি বিদ্ধস্ত হয়৷ নিহত হন নয়জন পুলিশ অফিসার৷

এভাবেই কাজ করছে ব্ল্যাক নাইট গ্রুপ৷ হাকিমুল্লা মেসুদ আর ওয়ালিউর রেহমান মেসুদের নেতৃত্বে এই জঙ্গিগোষ্ঠীর কাজ হল বিশেষ করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ব্যাঙ্ক ডাকাতি, অপহরণ, তোলাবাজি, এসবের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা৷ কারণ, বিশ্বজুড়ে হাওয়ালা এবং অন্যান্যভাবে অবৈধ উপায়ে অর্থ এদেশ থেকে ওদেশে পাঠাবার রাস্তা ক্রমশ বন্ধ হয়ে এসেছে নানান আইনি কারণে৷ কিন্তু জঙ্গিবাদকে চালাতে গেলে বা নিত্যনতুন অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র হাতে রাখতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন৷ সেই অর্থ উপায়ের সহজ রাস্তা হল এইসব অপরাধমূলক কাজকর্ম৷ যে কাজে এই আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের তালেবান জঙ্গিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্ল্যাক নাইট জঙ্গিরা বেশ দড় হয়ে উঠেছে৷

দড় যে তারা হয়ে উঠেছে, ব্ল্যাক নাইটের সাম্প্রতিক কিছু কাজকর্মের খতিয়ান দেখলেই তা বেশ বোঝা যাবে৷ পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ আমীর রানা সংবাদসংস্থা এপিকে এই জঙ্গিদের কার্যকলাপ প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে বলছেন, অপহরণ থেকেই এই ব্ল্যাক নাইট বিপুল অর্থ উপার্জন করে চলেছে৷ সচরাচর যাঁকে অপহরণ করা হচ্ছে, তাঁর দাম বুঝে দেড় লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ ডলার পর্যন্ত মুক্তিপণ দাবি করে এই জঙ্গিরা৷ যেমন, গত জুলাই মাসে এক সুইস দম্পতিকে তারা অপহরণ করে নিয়ে গেছে পাকিস্তান থেকে৷ তাঁদের ভাগ্যে কী আছে এখনও অজানা৷ এরকম আরও কিছু পণবন্দি তাদের ডেরায় অপেক্ষায় রয়েছে৷ কয়েকজনকে মুক্তি দিয়ে বিপুল অর্থ তারা মুক্তিপণ হিসেবে উপার্জন করেছে৷ লাহোরের প্রাদেশিক গভর্নরের পুত্র শাহবাজ তাসিরকে তারা অপহরণ করে নিয়ে যায় কিন্তু মুক্তিপণের অর্থ সময়মত না দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করে৷

আমীর রানা আরও জানাচ্ছেন, পাকিস্তানের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারের ওপর যে সাধারণ মানুষের তেমন আস্থা নেই, তা বুঝে গেছে ব্ল্যাক নাইট৷ পাকিস্তানের ধনী সম্প্রদায় অপহরণের জন্য তাই তাদের সহজ টার্গেট৷ এছাড়া ব্যাঙ্ক লুঠ তো রয়েছেই৷ শুধুমাত্র করাচি শহরে এ বছরে এ পর্যন্ত চারটি ব্যাঙ্কে ডাকাতি হয়েছে, যার মোট পরিমাণ ২.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ পুলিশের সন্দেহ, এই কাজগুলি সবই তালেবানের৷

তালেবান নিজেরাও জানাচ্ছে এই খবরের সত্যতা৷ পাকিস্তানি তালেবানের নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জঙ্গি সংবাদসংস্থা এপি'র কাছে জানায়, পাকিস্তানে বা আফগানিস্তানে মুসলমান ব্যতীত যে সমস্ত অন্য ধর্মের মানুষজন আসেন, সচরাচর তাদের অপহরণ করার জন্য টার্গেট করা হয়৷ আর ব্যাঙ্ক লুঠের যুক্তি আরও স্পষ্ট৷ ইসলাম ধর্মে সুদ নেওয়া বা সুদ দেওয়া দুই-ই অপরাধ৷ আর ব্যাঙ্ক ঠিক সেই কাজটিই করে৷ সুতরাং ব্যাঙ্ক লুঠ৷

ব্ল্যাক নাইট গোষ্ঠী এভাবেই ক্রমশ আরও বিভীষিকা তৈরি করে চলেছে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ