ইউক্রেনের আকাশসীমায় বিধ্বস্ত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ১৭ বিমানের ব্ল্যাক বক্স এখন লন্ডনে৷ বিশেষজ্ঞরা সেটি থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য উদ্ধারে সক্ষম হবেন৷ এদিকে, মরদেহ যাচ্ছে নেদারল্যান্ডসে৷
ছবি: Reuters
বিজ্ঞাপন
আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরগামী এমএইচ১৭ বিমানটি বিধ্বস্ত হয় গত বৃহস্পতিবার৷ ধারণা করা হচ্ছে, ভূমি থেকে মিসাইল ছুড়ে বিমানটি ভূপাতিত করা হয়েছে৷ এতে বিমানে থাকা ২৯৮ আরোহীর সবাই মৃত্যুবরণ করেন৷
রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চল থেকে বিমানের অনেক আরোহীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ পাওয়া গেছে ব্ল্যাক বক্সও৷ বুধবার বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ব্ল্যাক বক্স লন্ডনের ‘এয়ার অ্যাক্সিডেন্টস ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চ (এএআইবি)-র কাছে পাঠানো হয়েছে৷
বিমান দুর্ঘটনা, না হত্যাকাণ্ড!
১৭ জুলাই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সীমান্তের কাছে বিধ্বস্ত হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-এর এমএইচ১৭ বিমানটি৷ এতে ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হন৷ ধারণা করা হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিমানটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters
নিহত সব আরোহী
১৭ জুলাই রুশ সীমান্তের কাছে একটি গ্রামে বিধ্বস্ত হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-এর এমএইচ১৭ বিমান৷ এতে ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হন৷
ছবি: imago/Xinhua
চলছে উদ্ধার কাজ
রুশপন্থিরা রবিবার থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে এক জায়গায় নিয়ে রাখা শুরু করে৷ ইউক্রেনের জরুরি বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে আরো ২১ আরোহীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ ফলে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫১’তে৷
ছবি: Reuters
তদন্তকারীদের প্রবেশ নিষেধ
আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থার কর্মীদের দুর্ঘটনাস্থলের শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত যেতে দেয়া হচ্ছে৷ সব স্থানে প্রবেশের অনুমতি তাঁরা পাচ্ছেন না৷
ছবি: imago/Itar-Tass
লাশবাহী ট্রেন
রুশপন্থিরা মৃতদেহগুলোকে আপাতত একটি ট্রেনে রেখেছে৷ ঐ ট্রেনের চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিতে আছে লাশগুলো৷
ছবি: Reuters
দেহাবশেষ
এখনো মৃতদেহ উদ্ধার চলছে৷ কিছু কিছু মৃতদেহ চেনার উপায় নেই৷ আছে কেবল দেহাবশেষ৷
ছবি: Reuters
দুপক্ষের অভিযোগ
ইউক্রেনের দাবি, তাদের দেশে থাকা রুশপন্থিরাই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত করেছে৷ তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, রাশিয়া এর সাথে জড়িত নয়৷
ছবি: imago/Itar-Tass
অভিযোগ ‘বুক’ এর দিকে
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘বুক’ নামে পরিচিত ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের প্রতিক্রিয়া এতই ভয়াবহ ছিল যে, যাত্রীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিমানটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়৷ ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূমি থেকে ৭২ হাজার ফুট উচ্চতার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম৷ আর মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটি উড়ছিল ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বেঁচে গেল এয়ার ইন্ডিয়া
মাত্র ৯০ সেকেন্ড৷ এই সময়টাই বাঁচিয়ে দিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানকে৷ পূর্ব ইউক্রেনে মিসাইল হামলায় বিধ্বস্ত মালয়েশিয়ার বিমানটির মতোই পরিণতি হতে পারতো দিল্লি থেকে বার্মিংহামগামী বিমানটির৷ মালয়েশিয়ার বিমানটি যখন বিধ্বস্ত হয় তখন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ছিল মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে৷
ছবি: picture alliance/dpa
শোকে স্তব্ধ নেদারল্যান্ডস
বিমানটিতে ১৫৭ জন যাত্রী ছিল নেদারল্যান্ডসের৷ তাই শোকে স্তব্ধ দেশটি৷
ছবি: Reuters
দেশে দেশে শোক
এছাড়া মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চলছে শোক৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
এএআইবি বিশেষজ্ঞরা এখন ব্ল্যাক বক্সে থাকা বিমানের পাইলটদের কথোপকথন উদ্ধারে সক্ষম হবেন, এমনটাই আশা করা হচ্ছে৷ বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময়কার পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে এই কথোপকথন থেকে৷ এসব তথ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডাচ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে পারেন ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা৷
এদিকে, উদ্ধারকৃত আরোহীদের মরদেহ ইউক্রেন থেকে নেদারল্যান্ডসে পাঠানো শুরু হয়েছে৷ তবে মরদেহের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে৷ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট বুধবার জানান, ঠিক কতজন যাত্রী এবং ক্রু-র মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না৷
অ্যাবট মনে করেন, এখনো অনেক মরদেহ ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে৷ ইউরোপের গ্রীষ্মের তাপে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে কিংবা পশুপাখি সেগুলোর ক্ষতি করছে৷
তবে মরদেহ উদ্ধারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ডাচ দলের প্রধান ইয়ান টুইনডার বলেন, লাশবাহী ট্রেনে কমপক্ষে ২০০ মরদেহ তোলা হয়েছিল৷ আর লাশবাহী ব্যাগগুলো পুনরায় পরীক্ষানিরীক্ষা করলে আরো দেহাবশেষের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে৷ ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের শহর ডনেৎস্ক থেকে ট্রেনে করে মরদেহ খারকিভ বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়৷
উল্লেখ্য, বিধ্বস্ত যাত্রীবাহী বিমানের আরোহীদের মধ্যে ১৯৩ জন ডাচ এবং ৩৭ জন অস্ট্রেলীয় নাগরিক ছিলেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চল দখলে রাখা রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভুল করে বিমানটি ভূপাতিত করেছে৷ এই ঘটনার পর রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি জোর পেয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন শীঘ্রই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে৷