স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ৷ এই বন্যা ১৯৮৮ সালের মহা প্লাবনকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে৷ এরই মধ্যে দেশের উত্তরের ২০ জেলায় বন্যায় ২০ জন মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে সরকার৷
বিজ্ঞাপন
ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসনে চৌধুরী মায়া সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘‘এখন পর্যন্ত দেশের ২০টি জেলার ৫৬টি উপজেলা বন্যা কবলিত৷ বন্যায় সারাদেশে মারা গেছেন ২০ জন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৬ লাখ মানুষ৷ এছাড়াও উত্তরাঞ্চলরে বন্যার পানি মধ্যাঞ্চল দিয়ে প্রবাহতি হয়ে সাগরে নেমে যাবে৷ ফলে ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আরও ৯টি জলোয় বন্যার আশঙ্কা আছে৷''
তবে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘১৯৮৮ সালরে চেয়ে বড় বন্যা হলেও মোকাবেলার প্রস্তুতি আছে সরকারের৷''
১৯৮৮ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যায় বাংলাদেশের প্রায় ৮২,০০০ বর্গ কিমি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা সমগ্র বাংলাদেশের ৬০ ভাগ এলকারও বেশি৷ ঐ বন্যায় রাজধানী ঢাকাও প্লাবিত হয়৷ সে সময় ঐ বন্যার স্থায়িত্ব ছিল ১৫ থেকে ২০ দিন৷
ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে৷ গত ১০ দিনে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকার বন্যা পরিস্থিতির ছবি থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
নিহত ২১ না ৪২?
উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি দেশের মধ্যাঞ্চলেও বন্যা দেখা দিয়েছে৷ মধ্য জুলাই থেকে বন্যায় দেশের ১৬ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, যাতে এ পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানালেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে মৃতের সংখ্যা ৪২ জন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
নদীগর্ভে বিলীন আট হাজার বাড়ি
সরকারি হিসাবে, এ পর্যন্ত বন্যায় ১৬ জেলার ৭২ উপজেলার ৩৭৮ ইউনিয়নের ছয় লাখ ৩৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ আর নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে ৮ হাজার ১৪০টি ঘরবাড়ি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি
ভয়েস অব অ্যামেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনও কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে, যাদের পুনর্বাসনে তৎপরতা বা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না৷ বানভাসি মানুষের অভিযোগ, সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল, পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
কুড়িগ্রাম প্লাবিত
কুড়িগ্রাম জেলায় শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে পড়ে নয়টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে৷ সেখানকার একজন বাসিন্দা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, চুরানব্বই সালের পর এমন বন্যা আর দেখেনননি তিনি৷ স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, কুড়িগ্রামের ছয় লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
স্কুল বন্ধ
ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রায় দুইশ স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১১৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যেটা ১৯৮৮ সালের বন্যায় ছিল ১২৫ সে.মি.৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটায়, সেখানকার বন্যার পানি নামতে শুরু করলে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NurPhoto/S. Ramany
6 ছবি1 | 6
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এবারের বন্যার কারণ বাংলাদেশের উজান থেকে আসা পানির ঢল এবং অতিরিক্তি বৃষ্টি৷ ত্রাণমন্ত্রী বলনে, ‘‘উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এ বছর স্মরণকালের মধ্যে মারাত্মক বন্যা হয়েছে৷ এছাড়া উজনের দশেগুলোতে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসাবে বাংলাদেশের ওপর তার প্রভাব তো পড়বেই৷''
বন্যা পূর্বাভাষ কেন্দ্র সোমবার জানায়, ‘‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদী বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে সর্বোচ্চ পানি সমতল অতিক্রম করবে এবং চিলমারি পয়েন্টে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করবে৷''
বন্যা পূর্বাভাষ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘‘দেশের উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর অববাহিকারবন্যা পরিস্থিতি অবনতিশীল থাকবে৷ব্রহ্মপুত্র-যমুনার বাংলাদেশ অংশে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধির হার ৪৭ সেমি৷ ফলে নুনখাওয়া, চিলমারি, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি এবং সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে সোমবার সকাল ৯টায় বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে৷'' পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার ভিতরে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভারত অংশে সর্বোচ্চ ২৫ সেমি পানি বৃদ্ধি পেলেও, বাংলাদেশ অংশে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৪৫ সেমি পযন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে৷'
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ‘পানি ওঠায় পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নেত্রকোনায় সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে৷ নীলফামারীর সৈয়দপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী ও রংপুরের বদরগঞ্জে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷ মহাসড়কে পানি ওঠায় ঢাকা-দিনাজপুর সরাসরি পথে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে৷ এছাড়া লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে তিনটি পথে রেলযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে৷ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উত্তরাঞ্চলে তিন প্লাটুন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷ তাঁরা উদ্ধার ও বাঁধ রক্ষার কাজ করছেন৷'
‘১৫ তারিখের পরে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে’
বাংলা দৈনিক প্রথম আলোর খবরে আরো বলা হয়, ‘দ্য ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টসের (ইসিএমডব্লিউএফ) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে হিমালয়ের দক্ষিণাঞ্চলে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে৷ এতে করে ব্রহ্মপুত্রের ভারত ও বাংলাদেশ অংশে পানি বাড়বে৷'
এদিকে বন্যা কবলিত অনেক জেলার সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে৷ কুড়িগ্রামে ভেসে গেছে রেল সেতু৷ গত জুনের বন্যায় উত্তরের যেসব জেলা প্লাবিত হয়েছিল এবার সেই জেলা এরইমধ্যে আবারো বন্যার কবলে পড়েছে৷ আর যেসব এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধ আছে, সেই বাঁধের ভেতরে এখনো পানি না ঢুকলেও বাধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
সাধারণভাবে প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ২৬,০০০ বর্গ কিমি অঞ্চল, অর্থাৎ ১৮ শতাংশ ভূখণ্ড বন্যা কবলিত৷ ব্যাপকভাবে বন্যা হলে দেশের ৫৫ শতাংশের বেশি ভূখণ্ড বন্যার কবলে পড়ে৷ এবার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাতে কমপক্ষে ৭০ ভাগ একায় বন্যার কবলে পড়বে৷
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং নদী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্লোবাল ফ্লাড এওয়ারসেন সিস্টেম-এর (গ্লোফাস) তথ্য বিশ্লেষণ করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে৷ ১৫ তারিখের পরে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে৷ এই নদী দিয়ে এখন ২০ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হচ্ছে৷ আরো ৮-১০ দিন এই প্রবাহ থাকবে৷ কারণ পানি আসছে অসম-অরুণাচল থেকে৷ গঙ্গা বিপদসীমার নীচে থাকলেও নেপালে বৃষ্টির কারণে সেটাও বাড়ছে৷ গঙ্গা, যমুনা ও মেঘনার প্রবাহ যদি একসঙ্গে হয় তাহলে দেশের মধ্যাঞ্চলের জন্যও মহাবিপদ, যা ১৯৮৮ সালে হয়েছিল৷ এর সঙ্গে ২১ আগস্ট অমাবস্যা৷ আর যদি কোনোভাবে সাইক্লোন যুক্ত হয়, তাহলে আসলেই মহাবিপদ আছে সামনে৷
এদিকে বন্যা দুর্গতরা খাদ্য এবং পানীয় জলের সংকটে পড়েছেন৷ আছে আশ্রয়ের সংকটও৷ তবে ত্রাণমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘এরইমধ্যে দশ হাজার মেট্রিক টন চাল, তিন কোটি ১০ লাখ টাকা এবং ৬০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘যত বড় বন্যাই হোক মোকাবেলার প্রস্তুতি আমাদের আছে৷''
ঢাকায় জলাবদ্ধতার ১২ কারণ
দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার জলাবদ্ধতার চিত্র৷ ঘণ্টা প্রতি ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতেই এই শহরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তলিয়ে যায়৷ বর্ষায় পরিস্থিতি হয়ে ওঠে ভয়াবহ৷ ঢাকায় জলাবদ্ধতার বারো কারণ নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mamun
অপরিকল্পিত নগরায়ন
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা মহানগরীতে এখন প্রায় দুই কোটি মানুষ বাস করছেন৷ এই শহরের বাড়িঘর, রাস্তাঘাটসহ নানা অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে, হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে৷ ফলে শহরের বেশিরভাগ এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা
ঢাকা শহরের অনেক এলাকাতেই এখনো ময়লা ফেলা হয় খোলা জায়গায়৷ এসব ময়লা আবর্জনা, বিশেষ করে কঠিন বর্জ্যের একটা অংশ সরাসরি ড্রেনে গিয়ে প্রবাহ বন্ধ করে দেয়৷ ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় রাস্তাঘাটে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বর্ষায় খোড়াখুড়ি
ঢাকা শহরের সড়কগুলোতে খোড়াখুড়ির মহোৎসব শুরু হয় বর্ষা মৌসুমের ঠিক আগে থেকে৷ পুরো বর্ষা মৌসুম ধরেই চলে এসব খোড়াখুড়ি৷ সামান্য বৃষ্টিতেই তাই জলাব্ধতার সৃষ্টি হয় শহরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
নদী ভরাট
ঢাকা শহরের চারপাশে অবস্থিত বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতালক্ষ্যা প্রভৃতি নদীগুলো ক্রমান্বয়ে ভরাট করে ফেলেছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা৷ আর তাই বিশাল জনসংখ্যার এ শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান পথ অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খাল দখল
ঢাকা নগরীর ৬৫টি খাল এক সময়ে এ মহানগরীর পানি নিষ্কাশনে বিশেষ ভূমিকা রাখত৷ কিন্তু রাজধানীর এই খালগুলো এখন খুঁজে পাওয়াও কঠিন৷ বেশিরভাগই চলে গেছে দখলদারদের হাতে৷ অনেকগুলো ভরাট করে ফেলা হয়েছে৷ যে দু’য়েকটি টিকে আছে সেগুলোও দখলে জর্জরিত৷
ছবি: DW/M. Mamun
জলাশয় ভরাট
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার প্রাকৃতিক জলাধারগুলো ভরাট করে আবাসান ব্যবস্থা গড়ে তোলায় বড় এই শহরের পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বুড়িগঙ্গা দূষণ আর দখল
ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদী দখল আর দূষণে জর্জরিত৷ দখলে এ নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্থ হয়েছে আর দূষণে নদীর তলদেশে নানান বর্জ্য্ জমে এর গভীরতা কমিয়েছে৷ ফলে পানির প্রবাহ বাড়লেই তা উপচে পড়ে৷
ছবি: Reuters/M. P Hossain
অপরিকল্পিত বক্স কালভার্ট
রাজধানীর জলাবদ্ধতা রোধে ঢাকা ওয়াসা বিভিন্ন সময়ে যেসব বক্স কালভার্ট নির্মাণ করেছে, তার বেশিরভাগই অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত৷ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তৈরি এসব বক্স কালভার্ট প্রয়োজনের তুলনায় সরু হওয়ায় বৃষ্টির পানি অপসারণে তেমন কাজে আসে না৷ অনেক ক্ষেত্রে এসব কালভার্টে অপচনশীল কঠিন বর্জ্য আটকে গিয়ে পানি নির্গমন পথও বন্ধ হয়ে যায়৷
ছবি: DW/M. Mamun
সমন্বয়হীন সংস্কার কাজ
ঢাকা শহরে সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর উন্নয়ন কাজে কোনো সমন্বয় না থাকায় সারা বছরই সড়ক খোড়াখুড়ি চলতেই থাকে৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ওয়াসা স্যুয়ারেজ নির্মাণের জন্য একটি সড়ক খোড়া হলো, সে কাজ শেষ হতে না হতেই আবার খোড়াখুড়ি শুরু করল গ্যাস কিংবা বিদ্যুৎ বিভাগ৷ ফলে সারা বছর সড়কগুলোতে এ ধরনের কাজ চলায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
পলিথিনের অবাধ ব্যবহার
ঢাকা শহরে চলছে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার৷ পলিথিন ব্যবহার না করার আইন থাকলেও তার সামান্যটুকুও মানা হয় না৷ ফলে দুই কোটি মানুষের এই শহরে প্রতিদিন যে বর্জ্য তৈরি হয় তার অধিকাংশজুড়েই থাকে পলিথিন৷ এসব পলিথিন পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বন্ধ করে দেয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
ড্রেনের ময়লা ড্রেনে
ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ড্রেন থেকে ময়লা তুলে সেগুলো দিনের পর দিন ড্রেনের পাশেই ফেলে রাখা হয়৷ ফলে বৃষ্টি হলেই সে ময়লার পুনরায় ঠিকানা হয় ড্রেন৷ সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা৷
ছবি: DW/M. Mamun
নতুন আতঙ্ক ফ্লাইওভার নির্মাণ
ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ ফ্লাই ওভার নির্মাণ কাজের দীর্ঘসূত্রিতা৷ ঢাকার মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের ফলে এ এলাকার রাস্তাঘাটের দিনের পর দিন যে ক্ষতি হয়েছে, তার কখনোই সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বিশাল এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা৷