1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্য

বয়লার পরিদর্শক নিয়োগে গড়িমসি

৪ জুলাই ২০১৭

শিল্প কারখানার বয়লার পরিদর্শনের অভাবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে৷ অথচ পরিদর্শক নিয়োগে কোনো উদ্যোগ নেই৷ দু'বছর আগে প্রক্রিয়া কিছুটা এগুলেও এখন থমকে আছে সেটি৷ অথচ দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে৷

Bangladesh | Explosion in Textilfabrik verursacht mindestens acht Tote
ছবি: Getty Images/AFP/F. Kaizer

সোমবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের মাল্টি ফ্যাবস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় বয়লার বিস্ফোরিত হয়৷ এতে ১৩ জন নিহত ও অর্ধশতেরও বেশি আহত হন৷ নিহত ব্যক্তিদের আটজনই ঘটনাস্থলেই মারা যান৷ পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেকজন৷

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-প্রধান বয়লার পরিদর্শক মো. জিয়াউল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ পরীক্ষামূলকভাবে বয়লারটি চালিয়েছিল৷ বয়লারের ভেতর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হবার কারণেই বিস্ফোরিত হয়েছে৷ এখন দেখতে হবে কী কারণে এই বাড়তি চাপ তৈরি হলো৷''

এর আগে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর আরেকটি কারখানা ট্যাম্পাকো ফয়লস লিমিটেডে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৩৮ জন নিহত এবং কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন৷

গণমাধ্যমের খবর, শিল্প কারখানায় প্রতি বছর গড়ে ১০ থেকে ১২টি বয়লার বিস্ফোরণসহ অন্যান্য দুর্ঘটনা ঘটছে, যে সংখ্যা পাঁচ বছর আগেও ছিল পাঁচ থেকে সাতটি৷ পরিদর্শনের অভাবে এসব দুর্ঘটনায় ঝুঁকি বাড়ছে৷ অথচ বাংলাদেশে বয়লারের আলাদা পরিদর্শন অধিদপ্তর থাকার পরও পরিদর্শক নিয়োগে গড়িমসি করা হচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, পরিদর্শকের সংখ্যা বাড়ানো তো দূরের কথা, দিন দিন বরং কমছে৷ যেমন, গেল বছর টাম্পাকো ফয়লস লিমিটেডে বিস্ফোরণের সময় পরিদর্শক ছিলেন ছ’জন৷ এখন এই সংখ্যা নেমে এসেছে পাঁচজনে৷ অথচ সারা দেশে বয়লারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার৷

‘দু’বছর ধরে চলছে প্রক্রিয়া, কিন্তু নিয়োগ হয়নি’

This browser does not support the audio element.

জিয়াউল হক বলেন, বছরে প্রতিটি কারখানা একবার পরিদর্শনের চেষ্টা করেন তাঁরা৷ কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়৷ ১৯৮০ সালে দেশে প্রায় একশ' বয়লার ছিল৷ ওই সময়ও ছিলেন পাঁচজন পরিদর্শক৷ তখন পরিদর্শকদের জন্য কাজটি সম্ভব ছিল৷ গেল চার দশকে দেশে শিল্প কারখানায় বয়লারের সংখ্যা প্রায় ৯০ গুণ বেড়েছে৷ এই পাঁচ পরিদর্শক দিয়ে হাজার হাজার কারখানার বয়লার পরিদর্শন সম্ভব নয়৷ গেল বছর ট্যাম্পাকোতে বিস্ফোরণের পর ডয়চে ভেলে প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, যদি বয়লারগুলো বছরে একবার পরীক্ষা করা হয়, তাহলে একজন ইন্সপেক্টরকে বছরের ৩৬৫ দিনে মোট ৯১৬টি বয়লার পরীক্ষা করতে হবে৷ মাসে পরিদর্শন করতে হবে ৫৫৮টি বয়লার৷ বয়লার ব্যবহারকারী শিল্প-কারখানাগুলো ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ছড়িয়ে আছে এবং এই হিসেব যখন করা হয়, তখন পরিদর্শকের সংখ্যা ছিল ৬ জন৷

জিয়াউল হক বলেন, ‘‘আমরা বছর দু'য়েক আগে ৩৩৫ জন জনবল নিয়োগের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে দিই৷ মন্ত্রণালয় পরিদর্শক ও অন্যান্য জনবল মিলিয়ে ২৩৫ জনের নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করে৷ কিন্তু এরপর থেকে প্রক্রিয়া সেই অবস্থাতেই আছে৷''

নিয়োগ না হওয়ায় যা হবার তাই হচ্ছে৷ যেহেতু সব কারখানায় যাওয়া সম্ভব হয় না, তাই কারখানা সচল রাখার স্বার্থে সময়মতো সার্টিফিকেট দেওয়া ছাড়া আর বেশি কিছু করা কঠিন হয়ে পড়ছে৷ তবে জিয়াউল হক দাবি বলেন, তাঁরা শুধু কারখানা পরিদর্শন ছাড়াও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে থাকেন৷ ‘‘আমরা বিভিন্ন ইপিজেডগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালাচ্ছি৷ তাদের সাথে বৈঠক করেছি৷'' বলছিলেন জিয়াউল হক৷

এখন প্রায় ৭০ ভাগ বয়লারই চলে প্রাকৃতিক গ্যাসে৷ শিল্প কারখানার বিদ্যুৎ ও অন্য উৎপাদনশীল খাতে মোট গ্যাসের প্রায় ৩৫ শতাংশই ব্যবহার করে তারা৷ কিন্তু পুরোনো ও অদক্ষ যন্ত্রপাতির কারণে প্রচুর গ্যাসেরও অপচয় হয় এবং দুর্ঘটনারও ঝুঁকি বাড়ে৷ এসব দেখার জন্য যেই পরিদর্শক, তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে বয়লার পরিদর্শন অধিদপ্তরের কাজ কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে৷ তাই মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে অচিরেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জট খোলা দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ