1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পিঁপড়ার আচরণ নকল করার পরিবহণ প্রণালী

৮ জুন ২০২১

যানজটের কারণে প্রতি বছর কত সময় ও অর্থের অপচয় হয়, তা সত্যি অবিশ্বাস্য৷ ভবিষ্যতে পিঁপড়ার অনুকরণে পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তবে মানুষকেও আচরণ বদলাতে হবে৷

Weltzeit | Traffic Jam in Lagos, Nigeria
ছবি: Adeyinka Yusuf/AA/picture alliance

জার্মানির সবচেয়ে বড় শহর বার্লিনে মানুষের গন্তব্যে পৌঁছতে কত সময় লাগে? পরিবহণ বিশেষজ্ঞ প্রফেসার পেটার ভাগনার বলেন, ‘‘আমার মতে, টমটমের মতো ন্যাভিগেশন সিস্টেম এমন পরিসংখ্যান প্রস্তুত করেছে৷ সেই তথ্য অনুযায়ী বার্লিন শহরে প্রতিদিন কাজে পৌঁছতে প্রায় ৩০ শতাংশ সময় লাগে৷''

শুনতে বেশি মনে হয় না৷ কারণ বিশ্বের অন্য অনেক শহরে গন্তব্যে পৌঁছতে আরও অনেক বেশি সময় লাগে৷ এ ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটা৷ সারা বছরের গড় হিসেব অনুযায়ী মানুষ প্রায় ২৩০ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকে, অর্থাৎ, প্রায় দশ দিন! ফলে মানুষ প্রায়ই মেজাজ হারায়৷ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের বেঙ্গালুরু শহর৷ ২০১৯ সালে সেখানে মানুষ প্রায় ২৪৩ ঘণ্টা যানজটে আটকে ছিল৷ তবে এ ক্ষেত্রে ফিলিপাইন্সের ম্যানিলা শহর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন৷ ২০১৯ সালে সেখানে মানুষ ২৫৭ ঘণ্টা যানজটের মধ্যে কাটিয়েছে৷

যানজট এড়াতে পিঁপড়াবিদ্যা

04:29

This browser does not support the video element.

রাজপথে অপর্যাপ্ত জায়গায় অতিরিক্ত সংখ্যার স্বার্থপর চালকের সমাগম হলে এমনটা হবেই৷ অথচ পিঁপড়াদের হাইওয়েও দেখতে বেশ ঘিঞ্জি লাগে৷ এই প্রাণী কীভাবে যানজট এড়িয়ে সচল থাকে? বার্লিনের অ্যান্টস্টোর দোকানের মালিক মার্টিন সেবাস্টা বলেন, ‘‘পিপড়া শরীরের পেছনে গন্ধযুক্ত গ্রন্থি থেকে গন্ধ বার করে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে৷ সেই গন্ধের মিশ্রণের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করে৷ যেমন বিপদ বা খাবার দেখলে খবর রটে যায়৷''

যানজট বিশেষজ্ঞ মিশায়েল শ্রেকেনব্যার্গ মানুষ ও পিঁপড়ার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, ‘‘পিঁপড়া সমাজের জন্য কাজ করে৷ তারা ‘সিস্টেম অপ্টিমাম' চায়৷ কাজের স্বার্থে এমন প্রবাহ সৃষ্টি করতে চায়, যা কোনো পিঁপড়ে এককভাবে থামাতে না পারে৷ পিঁপড়ার কাছ থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি৷ তবে আমার মতে, মানুষকে পিঁপড়ার মতো আচরণ শেখানো সম্ভব নয়৷''

পিঁপড়া সত্যি সমাজবদ্ধ জীব৷ এই প্রাণী পরিবেশ অনুযায়ী নিজেদের মানিয়ে নেয়৷ মানুষ হিসেবে আমরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ না করে বরং পরস্পরের বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ি৷ ফলে শুধু সময় নয়, বিশাল অংকের অর্থেরও অপচয় ঘটে৷ এর উদাহরণ তুলে ধরে মিশায়েল শ্রেকেনব্যার্গ বলেন, ‘‘ধরা যাক, একটি ট্রাফিক জ্যামের ভেতরে গাড়ির গতি ঘণ্টায় দশ কিলোমিটার৷ দুই লেনের হাইওয়েতে দশ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে তিন ঘণ্টা আটকে থাকতে হলো৷ অথবা চার কিলোমিটার জ্যামে দুটি লেনে তিন ঘণ্টা থমকে গেলাম৷ গতিবেগ আশির বদলে ঘণ্টায় মাত্র দশ কিলোমিটার সম্ভব হলো৷ এবার অংক করলে দেখা যাবে, সব চালকের সময় নষ্ট হবার পাশাপাশি ৫০,০০০ থেকে এক লাখ ইউরো লোকসান হলো৷ গোটা জার্মানির জন্য অংক করে দেখেছি, যে বছরে ৬,০০০ থেকে ১০,০০০ কোটি ইউরো নষ্ট হতে পারে৷ জ্যামে আটকে থাকলে গড়ে ৮,০০০ কোটি ইউরো নষ্ট হয়৷ অতএব শুধু সময়ই নষ্ট হয় না৷''

প্রশ্ন হলো, পিঁপড়ার কাছ থেকে আমরা কী নকল করতে পারি? মিশায়েল শ্রেকেনব্যার্গ মনে করেন, ‘‘ভবিষ্যতে স্বয়ংক্রিয় প্রণালী পিঁপড়ার আচরণ নকল করতে পারবে৷ সেটাই আশার আলো দেখাচ্ছে৷ তখন আজকের তুলনায় পরিবহণ ব্যবস্থার ধারণ ক্ষমতা আরও অনেক বেড়ে যাবে৷''

পিঁপড়ার ক্ষমতা অনুকরণ করে সম্ভবত অদূর ভবিষ্যতে প্রযুক্তি আমাদের আরও ভালোভাবে পরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আমাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করবে৷ তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের মনোভাবের উপরেও সবকিছু নির্ভর করবে৷ গাড়ি চালানোর সময়ে সংকীর্ণ স্বার্থের বদলে সহযোগিতাকে আরো বেশি প্রাধান্য দিতে হবে৷ যেমন পারিপার্শ্বিক অনুযায়ী গতি নির্ধারণ করলে আচমকা ব্রেক কষতে হবে না৷ একমাত্র এভাবেই ভবিষ্যতে অনেক সময় ও অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে৷

মার্ক ফ্রিডরিশ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ