প্রথমবারের মতো নারীদের বক্সিং টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে সৌদি আরবে৷ এই নারীরা তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷

এই জিমটির অবস্থান রাজধানী রিয়াদে ৷ নারীদের বক্সিং টুর্নামেন্ট আয়োজনে বেজায় খুশি ক্লাবটির মালিক বান্দার আলেসাওয়ি৷ তার এই জিম থেকেই সাতজন অংশ নিয়েছেন টুর্নামেন্টে৷

সৌদি মেয়েরা যে আগে বক্সিং করতেন না, তা নয়৷ সারাহ আলশাহরানি নামের এক বক্সার জানান, তিনি চার বছর ধরে বক্সিং করেন৷ জিমের সুযোগ না থাকায় আগে প্রস্তুতিতে পাঞ্চিং ব্যাগের কাজ চালাতেন বালির বস্তায়৷

ফাইট ক্লাবটি চালু হওয়ার পর অনেক মেয়েই বক্সিং শিখতে ও প্রশিক্ষণ নিতে যায় সেখানে৷ সেখানে আছে বিদেশি কোচ, রিং, সরঞ্জামসহ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনী প্রায় সব সুবিধাই৷

সৌদি বক্সিং ফেডারেশনে নিবন্ধিত অর্ধশত নারী বক্সার আছেন৷ সারাহ আলশাহরানি বলেন, সৌদি মেয়েরা যে শক্তিমত্তায় কম যান না সেটিই প্রমাণ করে দেখাতে চান তারা৷

এ বছরই প্রথমবারের মতো নারীদের জন্য জাতীয় পর্যায়ের বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করেছে সৌদি আরবের বক্সিং ফেডারেশন৷

সৌদি বক্সার ডোনা মোহাম্মদ আল-ঘামদি ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেন৷ তার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর স্বপ্ন এখন এই বক্সারদের৷

শুধু বক্সিং নয়, সৌদি মেয়েরা চলতি বছর প্রথমবারের মতো জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্টেও অংশ নিয়েছে৷ রিয়াদ, জেদ্দাহ ও দাম্মাম শহরে গত মাসে ১৬টি দল এই প্রতিযোগিতায় লড়েছে৷ জাতীয় নারী ফুটবল দল গড়ে তুলতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে জার্মান কোচ মনিকা স্টাবকে৷

গত ২৬ ডিসেম্বরের নির্দেশনা অনুযায়ী, আফগানিস্তানের নারীরা ৭২ কিলোমিটারের (৪৫ মাইল) চেয়ে বেশি দূরে একা যেতে পারবেন না৷ যেতে হলে সঙ্গে কোনো পুরুষকে রাখতে হবে৷তালেবান মিনিস্ট্রি ফর প্রোপাগেশন অফ ভার্চু অ্যান্ড দ্য প্রিভেনশনস অফ ভাইস এক নির্দেশনায় কোনো চালক যাতে কখনো একা দূরে যেতে আগ্রহী নারীকে গাড়িতে না তোলেন সেই কথাও বলা হয়েছে৷

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, তালেবান মিনিস্ট্রি ফর প্রোপাগেশন অফ ভার্চু অ্যান্ড দ্য প্রিভেনশনস অফ ভাইস-এর নির্দেশনায় গৃহ নির্যাতনের স্বীকার হলেও নারীদের স্বামীর সংসার ছেড়ে না যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে৷

টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে নারীদের চেহারা দেখানোও সীমিত করেছে তালেবান৷ এই নির্দেশের ফলে কোনো নারী আর টিভি শো, নাটক বা চলচ্চিত্রে অংশ নিতে পারেন না৷ বিশেষ ক্ষেত্রে অংশ নিলেও নারীকে অবশ্যই হিজাব পরতে হয়৷এক প্রতিবেদনে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর অনেক নারীই মিডিয়া ছেড়েছেন৷ (ফাইল ফটো)

২০০১ সালে নারীদের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় খুলেছিল তখনকার সরকার৷২০২১ সালে ক্ষমতায় এসে সেই মন্ত্ণালয় বন্ধ করেছে তালেবান৷ ওপরের ছবিতে কাবুলের এক বেকারির সামনে দরিদ্র নারীদের মধ্যে রুটি বিতরণের দৃশ্য৷ রুটি দিচ্ছেন এক সাধারণ নাগরিক৷

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) অক্টোবরের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আফগানিস্তানে প্রাইমারির ওপরে মেয়েদের প্রায় সব স্কুলই বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান৷ এর ফলে মেয়েদের উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ কমে গেল৷

গত আগস্টে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারের দখল নিয়েই সেখানকার বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে নারীদের বের করে দেয় তালেবান৷পরে অন্যান্য শহরেও নারীদের কর্মস্থল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে তারা৷ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তালেবানের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, তারা মনে করেন, আফগান নারীদের পুরুষদের সঙ্গে বসে কাজ করা উচিত নয়৷

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তালেবানের শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষকে আলাদা বসতে হবে এবং সবাইকে ‘ইসলামি পোশাক’ পরতে হবে৷