মাত্র নয় সেকেন্ডের ভিডিও৷ রবিরার টুইটারে পোস্ট হওয়া ভিডিওটি বুধবার সকালের মধ্যে ৫৫ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে৷ কী আছে এই ভিডিওতে?
বিজ্ঞাপন
জ্যামাইকার এক রিসোর্টের সুইমিং পুলে ভিডিওটি ধারণ করা হয়৷ এতে দেখা যাচ্ছে, পুলের পাশে থাকা ওয়াটার স্লাইড থেকে এক কিশোর বের হয়ে পুরো পুল পার হয়ে ওপারে গিয়ে সুইমিং শার্ট পরছে৷ লেখাতে বোধ হয় বিষয়টা বোঝানো গেল না৷ তাই নীচের ভিডিওটি দেখুন৷
ভিডিওটি টুইটারে পোস্ট করেন মর্গান এভিক৷ভিডিওটির নীচে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমি এক ঘণ্টা ধরে ভিডিওটি দেখে বোঝার চেষ্টা করছি, সে কীভাবে এটি করল৷'' আরেকজন বিয়ন্সের চোখ পিটপিট করা একটি ‘গিফ' দিয়ে লিখেছেন, ‘‘পদার্থবিজ্ঞানে কী আছে৷''
এদিকে, অস্টিন নামে এক টুইটার ব্যবহারকারী একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, তিনি গতবছর ঐ রিসোর্টে গিয়েছিলেন৷ সেই সময় তিনি কয়েকজনকে এমন করতে দেখেছিলেন৷ তাদের মধ্যে ভাইরাল ভিডিওর এই ছেলেটিও আছে৷
এখন প্রিয় পাঠকদের কাছে জানতে চাই, ভিডিওটি কি সত্যি, নাকি কাটছাঁটের আশ্রয় নিয়ে এমনটি করা হয়েছে?
বরফজলে সাঁতার রাশিয়ায় অনেক দিনের প্রথা
তাপমাত্রা শূন্যের নীচে হওয়া সত্ত্বেও হাজার হাজার রুশি তাদের ‘আইস সুইমিং’ ক্লাবগুলিতে নিয়মিত বরফঠান্ডা জলে ঝাঁপ দেন৷ এর জন্য নাকি শুধু মানসিক প্রস্তুতি দরকার, বলেন তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Kryazhev
ঠান্ডার মজা
মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রাও সাইবেরিয়ার বরফ সাঁতারুদের ঠান্ডা করতে পারে না৷ বরফের উপর দিয়ে ছুটে তারা বরফ সাঁতারের মরশুমের সূচনা উদযাপন করেন৷
ছবি: Reuters/I. Naymushin
ছোটদের সাহস
দু’বছরের আলিসা আর তার সাত বছর বয়সের বোন লিজাকে ধীরে ধীরে বরফজলে স্নান করায় অভ্যস্ত হতে হবে৷ সাম্প্রতিক কয়েক বছরে রাজধানী মস্কোয় বরফ সাঁতারুদের সংখ্যা বেড়ে ৩০,০০০-এ দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: Reuters/I. Naymushin
বরফ ঠান্ডা জলে রিল্যাক্স করা!?!
নোভোসিবির্স্কের এই ভদ্রলোক যেন ঐ বরফ ঠান্ডা জলে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন৷ নয়ত ঐ জলে নামলে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে, অথবা নিউমোনিয়া হবে৷ কিন্তু অনুরাগীদের মতে বরফ সাঁতারে নাকি শরীর তাজা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Kryazhev
সিন্ধুঘোটক
রুশ বরফ সাঁতারুরা নিজেদের বলেন ‘মর্ঝি’ বা সিন্ধুঘোটক৷ ‘সিন্ধুঘোটক ক্লাবের’ সদস্যরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে বরফ ঠান্ডা পানিতে ঝাঁপ খান – কোনোরকম ডাইভিং সুট কিংবা অন্য কোনো ধরনের সুরক্ষা ছাড়া, শুধুমাত্র গ্রীষ্মের সুইমসুট পরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Kryazhev
‘যেন হাজারটা সুচ ফুটছে’
নোভোসিবির্স্কে বরফ সাঁতারুরা একটি জলের ট্যাংকে নামছেন৷ এক মহিলার ভাষায়: ‘‘যেন একসঙ্গে এক হাজারটা সুচ ফুটল!’’
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Kryazhev
খ্রিষ্টীয় এপিফানি পরব
রাশিয়ায় বরফ সাঁতারের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংস্করণটি হলো তথাকথিত বরফে ব্যাপটিজম: পুরু বরফে ক্রুশের আকারের গর্ত খোঁড়া হয়৷ রাশিয়ার সনাতনপন্থি খ্রিষ্টানরা এপিফানি পরব পালন করেন ১৯শে জানুয়ারি তারিখে৷ প্রথায় বলে, এদিন নাকি পানি পবিত্র হয়ে যায় ও সব পাপ ধুয়ে দিতে পারে৷
ছবি: Reuters
সোভিয়েত আমলের পরের প্রথা
১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লবের আগে রাশিয়ার খুব কম মানুষই বরফে সাঁতার কাটতেন৷ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কিন্তু বরফ সাঁতার খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ প্রসঙ্গত, কমিউনিস্ট শাসনের অন্তের পর রাশিয়ায় ধর্মীয় অনুভূতিও জোরদার হয়েছে – যদিও সনাতনপন্থি গির্জা সরকারিভাবে বরফ সাঁতার অনুমোদন করেনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Kryazhev
বিপজ্জনক সখ
অভিজ্ঞ ‘সিন্ধুঘোটক’ না হলে, বরফ সাঁতার সাধারণ মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে৷ পানিতে শরীরের তাপমাত্রা কমে বাতাসের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি তাড়াতাড়ি৷ কাজেই তিন মিনিটের বেশি সময় বরফ ঠান্ডা জলে কাটালে জ্ঞান হারানোর ভয় আছে৷