আফগানিস্তানে ভারতীয় দূতাবাস থেকে কর্মীদের সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে দেশে বসবাসকারী সাধারণ ভারতীয়দেরও দেশে ফেরানো হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় বায়ুসেনা বাহিনীর সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমান স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে বলে সেনা সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে। ওই বিমানেই ভারতীয় দূতাবাস কর্মী এবং আফগানিস্তানে বসবাসকারী সাধারণ ভারতীয়দের দেশের ফেরানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। তবে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় প্রশাসন এখনো পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি।
আফগানিস্তানে ভারতের একাধিক দূতাবাস এবং কনসুলেট রয়েছে। মাসখানেক আগেই ভারত অর্ধেকরও বেশি দূতাবাস কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছিল। এবার বাকিদেরও দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দূতাবাস কর্মী ছাড়াও আফগানিস্তানে ভালো সংখ্যায় ভারতীয় বসবাস করেন। বহু মানুষ কাজের সূত্রেও যান। মূলত বাণিজ্যিক কারণেই ভারতীয় সেখানে থাকেন। তাদেরকেও দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। তবে সরকারি ভাবে ভারত এ বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি।
আফগানিস্তানের দায়িত্ব অ্যামেরিকার নয়: বাইডেন
আফগানিস্তানের দায়িত্ব নিতে হবে আফগান নেতাদেরই। অ্যামেরিকা আর সাহায্য করতে পারবে না। জানিয়ে দিলেন জো বাইডেন।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
অগাস্টেই শেষ
আফগানিস্তান থেকে অগাস্টের মধ্যেই সমস্ত সেনা অ্যামেরিকায় ফিরে যাবে। হোয়াইট হাউসে জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
ছবি: John Moore/Getty Images
আফগানিস্তানকেই দায়িত্ব নিতে হবে
আফগানিস্তানের দায়িত্ব নিতে হবে সে দেশের নেতাদেরই। সমস্ত নেতার একসঙ্গে আলোচনা করে নতুন আফগানিস্তানের রূপরেখা তৈরি করতে হবে। এমনটাই মনে করেন বাইডেন।
ছবি: Andrew Harnik/Getty Images
তালেবান নিয়ে মতামত
বাইডেনের বক্তব্য, তিনি তালেবানকে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু কাবুলের সরকার এবং প্রশাসনকেই তার মোকাবিলা করতে হবে। মার্কিন সাহায্যে তৈরি কাবুলের সরকারের হাতে এখন সে ক্ষমতা আছে বলে তিনি মনে করেন।
ছবি: DW/M. Mojtaba
তালেবানই ভবিতব্য নয়
মার্কিন সেনা চলে গেলে তালেবান আফগানিস্তান দখল করবে, এমনটা অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করেন না বাইডেন।
ছবি: DW/Omid Deedar
কোনো দেশ আফগানিস্তানকে এক করতে পারেনি
বাইডেনের বক্তব্য, এর আগে কোনো দেশ দেশ আফগান নেতাদের এক করতে পারেনি। সকলকে একসঙ্গে বসিয়ে ঐক্যবদ্ধ আফগানিস্তান তৈরি করতে পারেনি।
ছবি: Saul Loeb/Getty Images/AFP
আর কত প্রাণ যাবে
বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি চান না, আর একটিও মার্কিন প্রাণ আফগানিস্তানে নষ্ট হোক। বহু মার্কিন পুরুষ এবং নারীর প্রাণ গিয়েছে আফগানিস্তানের যুদ্ধে। আর প্রাণ তিনি যেতে দেবেন না।
ছবি: Josh Smith/REUTERS
যুক্তরাজ্যের বক্তব্য
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে অধিকাংশ সেনা দেশে ফিরে এসেছে। বাকিরাও দ্রুত ফিরে আসবে।
ছবি: AFP/Getty Images
ইরান সীমান্তে তালেবান
এদিকে ইরান-আফগান সীমান্ত দখল করেছে তালেবান। আফগানিস্তানের সঙ্গে ইরানের বর্ডার এখন তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের ভিতর পঞ্চাশেরও বেশি অঞ্চল তারা দখল করেছে। ঘিরে ফেলেছে আঞ্চলিক রাজধানীগুলি।
ছবি: PPI/Zuma/picture alliance
রাশিয়ার আশ্বাস
রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে তালেবান প্রতিনিধিদের কথা হয়েছে। তালেবান আশ্বস্ত করেছে, দেশের ভিতর বিদেশি দূতাবাসগুলি যাতে সুরক্ষিত থাকে, তারা তা দেখবে। আফগান রীতি এবং ইসলামিক নীতি মেনে তারা মানবাধিকার রক্ষা করবে।
ছবি: Adek Berry/Getty Images/AFP
9 ছবি1 | 9
গত সপ্তাহের শেষের দিকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে ভারত ব্যবস্থা নেবে। তবে তখনো কাবুল থেকে অন্তত ১৫০ কিলোমিটার দূরে ছিল তালেবান বাহিনী। গত কয়েকদিনে দ্রুত পরিস্থিতির বদল হয়েছে। শনি এবং রোববার প্রথমে জালালাবাদ এবং পরে কাবুল দখল করে তালেবান। এরপরেই দ্রুত কাবুল থেকে মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের ফেরাতে শুরু করে অ্যামেরিকা। যুক্তরাজ্য, জার্মানি সকলেই দেশের কর্মীদের দেশে ফেরাতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতও দেশের নাগরিকদের সেখানে রাখতে চাইছে না বলে প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর বিমান কখন উদ্ধারের কাজ শুরু করবে, সে বিষয়ে প্রশাসনের সূত্র নির্দিষ্ট কোনো খবর দিতে পারেননি।
সরকারি সূত্র আরো একটি বিষয় জানিয়েছেন। আফগানিস্তান নিয়ে বিশ্বমঞ্চ কী সিদ্ধান্ত নেয়, অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলি তালেবানের ক্ষমতা কোন চোখে দেখে, সে দিকেও নজর রেখেছে ভারত। তালেবান আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কী হবে, তা নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বিশ্ব রাজনীতি এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, ভারত তা পর্যবেক্ষণ করছে।