আবেদনে ভুল করে ভুল তথ্য জুড়ে দেওয়ায় ভারতের এক নাগরিকের নাম বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য ঘোষণা করেছে সরকার৷
বিজ্ঞাপন
তথ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের জন্য ২০১৭ সালের ‘সেরা সম্পাদক' হিসেবে ভারতীয় নাগরিক মো. কালামের নাম ঘোষণা করে৷ এই পুরস্কার ঘোষণার পর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়৷
এরপর 'ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার প্রযোজক সানী সানোয়ার ও পরিবেশক জাহিদ হাসান অভি জানান, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আবেদনে ভুল করে কালামকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে৷ এজন্য ক্ষমা চেয়ে জুরি বোর্ডকে চিঠিও পাঠিয়েছেন তারা৷
চলতি বছর জাতীয় পুরস্কারের জন্য চলচ্চিত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ‘‘কেবল বাংলাদেশি নাগরিকগণ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবেন৷’’
অন্যরকম ১০ চলচ্চিত্র
বার্লিনে ১৮-২৬ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার ফিল্ম ফেস্টিভাল হয়েছে৷ এই উৎসবে প্রদর্শিত চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারিগুলোতে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানো হয়েছে কীভাবে সংঘাত ও অন্যায়কে মোকাবেলা করে বেঁচে থাকে মানুষ৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Britta Schoening
মেয়ের কাছে মায়ের চিঠি
বার্লিনের মানবাধিকার ফেস্টিভালে উদ্বোধনী ছবিটি ছিল মেয়ের কাছে এক মায়ের প্রেমের চিঠি নিয়ে৷ একজন সিরিয়ান নারী দেশটিতে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মধ্যে আলেপ্পোতে কীভাবে বিয়ে করে সামাকে জন্ম দেন তা তুলে ধরা হয়েছে এতে৷ এটি ইতোমধ্যে অনেকগুলো পুরষ্কার জিতেছে এবং ২০১৯ সালের কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সেরা ডকুমেন্টারির পুরষ্কারও পেয়েছে৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Waad al-Kateab/Edward Watts
যুদ্ধে ধর্ষণ নয়
দীর্ঘদিন ধরেই যুদ্ধের সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে৷ এই ছবিতে তিনজন আইনজীবী যুদ্ধের সময় যৌন সহিংসতার শিকারদের বিচার পাওয়ার জন্য লড়াই করেন৷ লেসলি থমাসের ডকুমেন্টারি কংগো, বসনিয়া, হার্জেগোভিনা এবং কলম্বিয়ায় দেখানো হয় যাতে সবাই এটা অনুসরণ করেন৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Leslie Martin
শিশুদের বোমা মারার প্রশিক্ষণ
তথাকথিত ইসলামিক রাষ্ট্র ইরাকের মোসুল আইএস ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দখলে রাকে৷ এই সময়ে পাঁচ লাখ অপ্রাপ্তবয়স্ক সেখানে বসবাস করত৷ ওই শিশুদের আত্মঘাতি বোমা মারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, প্রতিবেশিদের হত্যা করতে মগজ ধোলাই করা হয়েছিল৷ পরিচালক ফ্রান্সেসকা ম্যানোচি এবং আলেসিও রোমেনজি দেখিয়েছেন এখন কী ঘটছে৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Francesca Mannochi/Alessio Romenzi
কঙ্গোর মানবিক সংকট
আলোকচিত্র সাংবাদিক ড্যানিয়েল ম্যাকাবে এই ডকুমেন্টারিতে কংগোর মানবিক সংকটকে একজন সেনা কমান্ডার, একজন দর্জি এবং একজন খনিজ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে চিত্রিত করেছেন৷ এই ছবিতে দখানো হয়েছে, ১৯৬০ সালে স্বাধীন হওয়া এই দেশে কখনো শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়ায় সেখানকার জীবনযাপনটা আসলে কেমন৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Daniel McCabe
এক নারীর পুলিশে যোগ দেওয়ার গল্প
মা কারাগারে থাকায় পশ্চিম তীরে একটি শরণার্থী শিবিরে একাই বেড়ে ওঠে ওয়ালা, তার লক্ষ্য ছিল একজন ব্যতিক্রমী নারী হিসেবে ফিলিস্তিনি সুরক্ষা বাহিনীতে যোগ দেওয়া৷ এই নারী কীভাবে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন কানাডার চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টি গারল্যান্ড তা ডকুমেন্টারিতে দেখিয়েছেন৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Christy Garland
যেখানে অন্যন্য নভায়া
‘নোভায়া গাজেতা’ হলো ১৯৯০ সালে মিখাইল গর্বাচেভের নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র৷ এটি এখন রাশিয়ায় ক্রেমলিনের সমালোচনামূলক অনুসন্ধানী প্রকাশনা৷ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য এর সাংবাদিক ইউরি শেকেকোখিখিন, আনা পলিটকভস্কায়া এবং আনাস্তাসিয়া বাবুরোভাকে খুন করা হয়৷ পরিচালক আসকোল্ড কুরভ এদের কাজের জন্য দেশে যে এক ধরনের জরুরি অবস্থার প্রতিফলন রয়েছে তা তুলে ধরেছেন৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Askold Kurov
অভিবাসী যাত্রা
ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে আসা অভিবাসী ভর্তি জাহাজ কোথাও নোঙর করতে পারছিল না৷ অস্ট্রিয়ান পরিচালক নাথালি বর্গার্স তার চলচ্চিত্রে ভয়ঙ্কর সেই যাত্রার দৃশ্যায়ন করেছেন৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Nathalie Borgers
মিথ্যে গল্পে বেড়ে ওঠা
১৯৮৮ সালে জন্ম নেওয়া সাংবাদিক ক্লারিস গারগার্ড নিজ দেশ লাইবেরিয়া পুনর্নির্মাণে অবদান রাখা তার আদর্শবাদী পিতার গল্প শুনে বেড়ে উঠেন৷ কিন্তু তিনি অনুসন্ধানে যখন জানতে পারেন তার পিতা স্বৈরশাসক চার্লস টেলর এবং তার যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তখন তার কাছে জটিল সেই সত্যটি প্রকাশ পায়৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Shamira Raphaëla/Clarice Gargard
প্রতিরোধের গল্প
জার্মান শব্দ ভিডারস্টান্ড এর অর্থ ‘প্রতিরোধ’ ছাড়াও নানাভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে৷ জার্মান চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রিটা শোওনিং বিভিন্ন দৃশ্যে সক্রিয় তিন তরুণীকে চিত্রিত করেছেন: এথেন্সের শরণার্থীদের সংহতি জানিয়ে তাদের সঙ্গে বাস করা একজন বামপন্থি, ভিয়েনায় একটি ডানপন্থি আন্দোলনের অনুসারী এবং বার্লিনে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা একজন মুসলিম কবিকে সেখানে দেখানো হয়েছে৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Britta Schoening
কী হচ্ছে ইকুয়েডরে
তেল সমৃদ্ধ দেশ ইকুয়েডরে তেলের মজুদের এক-তৃতীয়াংশ ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যানে, যখানে আদিবাসী উপজাতিদের আবাসস্থল৷ ২০০৭ সাল থেকে তথাকথিত ‘ইয়াসুনি উদ্যোগের’ লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিয়ে মাটিতে ওই তেল ছেড়ে দেওয়া৷ পোলিশ সাংবাদিক ইভা ইয়ার্ট বলছেন এরপর থেকে সেখানে কী ঘটছে৷
ছবি: Human Rights Film Festival Berlin/Ewa Ewart
10 ছবি1 | 10
২০১৭ সালের পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য ও চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, কালাম যে বিদেশি নাগরকি সেটা তাদের জানা না থাকায় এই ভুল হয়েছে৷
"আমরা কোনো বিদেশিকে পুরস্কার দেইনি৷ প্রযোজক তার পরিচয় গোপন করেছে৷ সে বলেছে, সে বাংলাদেশের নাগরিক৷ যেহেতু সে বাংলাদেশের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছে সেহেতু আমরা ধরে নিয়েছি সে বাংলাদেশের নাগরিক৷’’
কলকাতার বাসিন্দা কালাম বাংলাদেশের ‘ঢাকা অ্যাটাক' ছাড়াও ‘পোড়ামন ২’, ‘দহন’সহ বেশ চলচ্চিত্র সম্পাদনা করেছেন৷
'ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার পরিবেশক জাহিদ হাসান অভি জানান, আবদেন ভুল তথ্য দেওয়ায় ক্ষমা চেয়ে শুক্রবার দুপুরে জুরি বোর্ডর সদস্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি৷ চলচ্চিত্রটির অন্যান্য ভারতীয় কলাকুশলির ক্ষেত্রে তাদের জাতীয়তা ঠিকভাবে উল্লেখ করা হলেও কেবল সম্পাদনার ক্ষেত্রে অসাবধানতা বশত ভুলটি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি৷
জুরি বোর্ডর সদস্য ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডর ভাইস চেয়ারম্যান নিজামুল কবীর জানান, সোমবার জুরিবোর্ডের সদস্যদের নিয়ে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে৷
২০১৭ সালের ‘সেরা সম্পাদক’ হিসেবে কালামকে বাদ দিয়ে জুরিবোর্ড অন্য কাউকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়ার পর তথ্য মন্ত্রণালয় নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে তা ঘোষণা করবে৷
এসআই/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
ভয়ের সিনেমা দেখলে যা হয়
একটি ভালো হরর চলচ্চিত্র আপনার শরীরে বেশ প্রভাব ফেলতে পারে৷ কখনো কখনো আপনাকে জীবন নিয়ে আতঙ্কিতও করে ফেলতে পারে এসব সিনেমা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হরর মুভি: সাদা রক্তকণিকার জন্য ভালো
ভীতিকর সিনেমা আমাদের জন্য ভালোও হতে পারে৷ একটি পরীক্ষায় ৩২ জন পুরুষ ও নারী (২০-২৬ বয়সি) একটি ঘরে শান্তভাবে বসেছিলেন বা কেউ কেউ ‘দ্য টেক্সাস চেইনস ম্যাসাকার’ চলচ্চিত্রটি দেখেন৷ যারা ওই চলচ্চিত্র দেখেছেন তাদের শ্বেত রক্তকণিকাগুলো (ছবিতে দেখা যাচ্ছে) আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তুলে৷
ছবি: Picture-Alliance/Klett
আজ রাতে জিম ছাড়বেন?
লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার বিশ্ববিদ্যালয় অ্যামাজন ডটকমের লভইফিলমের সঙ্গে মিলে গবেষণা করে দেখায় যে, ‘দ্য শাইনিং’ দেখে ১৮৪ ক্যালরি, ‘জওস’ দেখে ১৬১ ক্যালরি, ‘দ্য এক্সোরিস্ট’ দেখে ১৫৮ ক্যালরি এবং ‘এলিয়েন’ দেখে ১৫২ ক্যালরি পোড়া যায়৷ তবে ‘দ্য টেক্সাস চেইনস’ ম্যাসাকার’ দেখলে মাত্র ১০৭ ক্যালরি পোড়ে৷
ছবি: imago
প্রশিক্ষণের একটি ফর্ম
আমরা হরর মুভিগুলোতে আকৃষ্ট হই, কারণ, এগুলো এক ধরনের অনুশীলনমূলক এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আমাদের চালিত করে৷ হরর গবেষক মাটিয়াস ক্লাসেন বলেন, এটি আচরণগত আবেগগুলোর বিকাশ করে, যা ঝুঁকিগুলো নিয়ে দ্রুত ও যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়ার জানান দেয়৷ উদাহরণস্বরূপ ‘দ্য শাইনিং’ দেখুন এবং আপনি আপনার দূরবর্তী হোটেলটিতে ভ্রমণের জন্য আরো ভালোভাবে প্রস্তুত হবেন৷
ছবি: Imago/Entertainment Pictures
আপনিও সাপ দেখেছেন
ভার্জিনিয়ার গবেষকরা আটটি বিভ্রান্তিমূলক চিত্রের মধ্যে প্রাকবিদ্যালয় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের একটিমাত্র চিত্র খুঁজে নিতে বলেছিলেন৷ শিশু ও বয়স্ক উভয়ই ফুল, ব্যাঙ বা শুঁয়োপোকার চেয়ে সাপকে অনেক বেশি দ্রুত শনাক্ত করেন৷
ছবি: imago
ভয়
ভয় এবং মনোভাব পরিবর্তনের অনুভুতিগুলো আমাদের রক্ষার জন্য৷ তবুও মানুষের বিবর্তন আধুনিক সভ্যতা ধরে রাখেনি৷ মাকড়সা, সাপ, উচ্চতা, বদ্ধস্থান নিয়ে আমরা ভয় পেলেও সত্যিকার অর্থে যা আমাদের হত্যা করতে পারে, তার সঙ্গে এগুলোর খুব কম মিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘পেশেন্ট এসএম’
সবাই ভয়াবহতায় আক্রান্ত হয় না৷ রোগী এসএম (ছবিতে নেই) অ্যামিগডালার ক্ষত ভোগ করেছেন৷ তিনি হরর ফিল্ম, ভুতুড়ে বাড়ি বা ভয়ঙ্কর প্রাণী দেখেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি৷ এসএম তিন মিনিটেরও বেশি সময় ধরে সাপটিকে ধরেছিলেন, সেটির চামড়া ঘষেছিলেন এবং সাপটির জিহ্বা স্পর্শ করেছিলেন৷
ছবি: ADRIAN DENNIS/AFP/Getty Images
ভয়ের গন্ধ
আপনি কি জানতেন কোনো হরর ফিল্ম দেখার পর আপনি অন্যরকম গন্ধ পান৷ ভিয়েনায় একদল সিনেমাপ্রেমীতে একটি ভয়ের ছবি (ক্যান্ডিম্যান) এবং একটি সাধারণ চলচ্চিত্র দেখানো হয়েছিল৷ যারা ভয়ের সিনেমা দেখেছিলেন তারা তাদের বগল থেকে ভয়ের ঘ্রাণ পান৷
ছবি: picture-alliance / KPA Honorar & Belege
পানিতে যাবেন না!
হরর ফিল্মগুলো দেখার পর তা আপনার মধ্যে একটি স্থায়ী ও নেতিবাচক ছাপ রেখে যেতে পারে৷ ফলে এসব সিনেমা দেখে সাঁতার কাটতে যাওয়া ঠিক নয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ভয়ের পরবর্তী সীমান্ত: হরর ভিডিও গেমস?
হরর ভিডিও গেমগুলোর প্রভাব খুব বেশি, আর এই ধরনটি বেশ নতুন৷ গবেষণায় দেখা যায়, ভিডিও গেমিংয়ের অভিজ্ঞতার তীব্রতা ঘুমকে ব্যাহত করে৷