ভারতে ক্লিন্টন
৮ মে ২০১২আজ নতুন দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস.এম কৃষ্ণার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনের বৈঠকের পর, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন উভয় নেতা৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস.এম কৃষ্ণা ভারত-মার্কিন সম্পর্ক গভীরতর হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের দিক থেকে আরো সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার৷ যার মধ্যে আছে মুম্বই সন্ত্রাসীকাণ্ডের অভিযুক্তদের শাস্তিদান৷
এ প্রসঙ্গে আরো একধাপ এগিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি মুম্বই সন্ত্রাসী হামলার মূল চক্রী হাফিজ সাইদের নাম উল্লেখ করে বলেন, অভিযুক্তদের বিচারের কাঠগোড়ায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পাশে আছে৷ হাফিজের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ দিতে পারলে এক কোটি ডলার পুরস্কার দেবার কথাও বলেন তিনি৷
অসামরিক পরমাণু সহযোগিতা ইস্যুতে ভারতকে সমকক্ষ হবার সুযোগ দেয়া উচিত৷ পরমাণু দায়বদ্ধতা সংক্রান্ত জাতীয় আইনের কাঠামোর অধীনে মার্কিন পরমাণু সরঞ্জাম সরবরাহকারী কোম্পানিগুলির সরাসরি আলোচনা বাঞ্ছনীয় বলে মন্তব্য করেন এস.এম কৃষ্ণা৷ আর একে স্বাগত জানান হিলারি ক্লিন্টন৷
ইরান ইস্যুতে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে কৃষ্ণা সংলাপ ও আলোচনা মাধ্যমে ইরানের পরমাণু ইস্যুর শান্তিপূর্ণ মীমাংসার কথা বলেন৷ পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তির অন্তর্ভুক্ত দেশ হিসেবে ইরানের উচিত পরমাণু অস্ত্রশক্তি থেকে বিরত থাকার অঙ্গিকার পালন করা৷ প্রধানমন্ত্রী আরো স্পষ্ট করে হিলারি ক্লিন্টনকে গতকাল জানিয়ে দেন যে, পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধের পক্ষে রয়েছে ভারত৷ কিন্ত জ্বালানিশক্তি ভারতের জাতীয় স্বার্থ৷ উল্লেখ্য, ইরানের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আজ দিল্লিতে ভারতের বাণিজ্যকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা বাড়াবার বিষয়েও বৈঠক করেন৷
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, পরমাণু অস্ত্রশক্তি হিসেবে ইরানের আত্মপ্রকাশ রোধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা চালাতে হবে৷ চাপ সৃষ্টি করতে হবে ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে, যতদিন না শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছানো যাচ্ছে৷
আফগানিস্তানের স্থিতিশীল সরকার, নিরাপত্তা আর্থিক বিকাশ ভারতের কাম্য৷ ভারত তারজন্য যথাসাধ্য সাহায্য করছে৷ এছাড়া চীন, নিকট প্রতিবেশী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের আলোচনার কথাও বৈঠকে ওঠে৷
হিলারি ক্লিন্টন ভারতের সঙ্গে আর্থিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা দৃঢ়মূল হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷ ভারতের ‘পুবে তাকাও' নীতি সমর্থন করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার তথা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়া, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের ভিত মজবুত করতে এবং সেদেশের আর্থিক সংস্কারেও ভারত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ