1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেবদাসী প্রথা কী এবং কেন?

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৩ জানুয়ারি ২০১৬

নিষিদ্ধ হবার পরও ভারতীয় মন্দিরগুলোয় দেবদাসী প্রথা কেন বন্ধ হয়নি – কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তার জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ ওদিকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে নতুন করে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারগুলির কাছেও৷ কিন্তু...

Bangalore Devdasis Demonstration
ছবি: DW/M. Krishnan

World in Progress: India's Devdasis

This browser does not support the audio element.

শত শত বছর ধরে ভারতীয় মন্দিরগুলোতে চলে আসছে দেবদাসী নামে এই ধর্মীয় প্রথা৷ আসলে এ প্রথা ধর্মের তকমা দিয়ে পুরুষপ্রধান সমাজে নারীকে যৌন শোষণ করার আর একটি প্রক্রিয়া মাত্র৷

মেয়ে যেভাবে মন্দির-গণিকা হয়ে যায়

গরিব ঘরের নীচু জাতের মা-বাবা তাদের কুমারী মেয়েকে ঋতুমতী হবার আগেই নিয়ে যায় মন্দিরে৷ প্রথমে কুমারী মেয়েদের নিলাম করা হয়৷ তারপর মন্দিরের প্রধান পুরোহিত উৎসর্গ করার নামে বিগ্রহের সঙ্গে কুমারী মেয়েদের তথাকথিত বিয়ে দিয়ে দেন৷ বিয়ের পর গরিব ঘরের সেই মেয়ে হয়ে যায় দেবদাসী বা যোগিনী, আক্ষরিক অর্থে সেবাদাসী৷ অর্থাৎ এরপর অন্য কোনো পুরুষকে মেয়েটির বিবাহ করতে পারে না৷ বরং খাওয়া-পরার বিনিময়ে মন্দিরে থেকেই তাদের সারা জীবন কাটে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত থেকে শুরু করে অন্যান্য পুরুষদের যৌন লালসার শিকার হয়ে৷ অনেক সময় সমাজের উচ্চবর্গীয় ধনী কিংবা সামন্ত প্রভুদের রক্ষিতার ভূমিকাও পালন করতে হয় তাকে৷ করতে হয় কায়িক পরিশ্রমও৷ বলা বাহুল্য, উৎসর্গের পর দেবদাসীকে ভোগ করার প্রথম অধিকার থাকে মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের হাতে৷

আইন হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি

১৯৮৮ সালে দেবদাসী প্রথা নিষিদ্ধ করা হলেও, এখনও তা বন্ধ হয়নি৷ বিশেষ করে ভারতের দক্ষিণী রাজ্যগুলিতে এবং মহারাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলের মন্দিরগুলিতে এই প্রথা আজও চলছে৷ খুব সম্প্রতি তার প্রমাণও পাওয়া গেছে৷ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এক জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাবদিহি করতে বলার পর, ৮০-র দশকের সেই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে পালন করার জন্য রাজ্য সরকারগুলির কাছে নির্দেশিকা পাঠায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রদপ্তর৷ নির্দেশিকায় বলা হয় – কোনো অজুহাত বা ধর্মীয় ছদ্মনামে এ প্রথা যেন আর চালানো না হয়৷ আর এর জন্য বিশেষ অভিযান চালিয়ে জীবিত দেবদাসীদের খুঁজে বের করে তাদের পুনর্বাসনের কথাও বলা হয়৷ বলা হয়, এই কাজে বিভিন্ন বেসরকারি বা স্বয়ংসেবী সংস্থাগুলোরও সাহায্য নেয়া হতে পারে৷

সমাজবিদদের মতে, দেবদাসী প্রথার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে৷ যেমন ধর্মীয় বিশ্বাস ও কুসংস্কার, জাতিভেদ, পুরুষতান্ত্রিকতা, যৌন শোষণ এবং দারিদ্র্য৷ অনেকে আবার ভারতে বৌদ্ধধর্মের পতনের সঙ্গে দেবদাসী প্রথাকে যুক্ত করতে চান৷ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতীতে জমিদার বা ভূস্বামীদের সঙ্গে উচ্চবর্গীয় ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের অশুভ ষড়যন্ত্রের ফলে নীচু জাতের খুব গরিব মেয়েদের দেবদাসী বানানো হতো৷ পরে এরা যাথারীতি যৌন লালসার শিকার হতো, এমনকি শেষ পর্যন্ত অনেকের ঠিকানা হতো যৌনপল্লিতে৷ সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা যায়, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের কিছু এলাকায় আজও রয়েছে অন্ততপক্ষে ৩৫ হাজার দেবদাসী৷ এদের মধ্যে যৌবন-উত্তীর্ণ অনেকের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা শোচনীয়৷ এদের অনেকেই আজ রাস্তার ভিখারি৷ রূপ-যৌবন হারানোর পর, এদের যেন কোথাও ঠাঁই নেই – না মন্দিরে, না ধনীদের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ