কারণ সামাজিক ও ধর্মীয়৷ হিন্দু শাস্ত্রের বিধান পুত্রং দেহি৷গর্ভ থেকে নিয়ে গোটা জীবন – কন্যা সন্তান যেন সবসময়েই অন্যের সম্পত্তি, পরিবারের বোঝা৷ মেয়েরা আজ নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে চলেছে সর্বস্তরে৷ তারপরও মানসিকতাটা যায়নি৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
বিজ্ঞাপন
কারণ সামাজিক ও ধর্মীয়৷ হিন্দু শাস্ত্রের বিধান পুত্রং দেহি৷ গর্ভ থেকে নিয়ে গোটা জীবন – কন্যা সন্তান যেন সবসময়েই অন্যের সম্পত্তি৷ তাই পরিবারের বোঝা৷ মেয়েরা আজ নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করছে, করে চলেছে সর্বস্তরে৷ তারপরও মানসিকতাটা যায়নি৷
হিন্দুরা মন্দিরে যায় প্রার্থনা করতে, বলে ‘পুত্রং দেহি'৷ কারণ হিন্দু শাস্ত্রের বিধান পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা৷ পুরুষ বিয়ে করে পুত্র সন্তান লাভের জন্য৷ পুরাণকাররা যে বলে গেছেন, বংশ রক্ষা হবে পুত্র সন্তানের মাধ্যমে! আর সেই মানসিকতা প্রাচীনকাল থেকেই গেঁথে আছে সমাজের গভীরে৷ কন্যা সন্তান তাই বোধহয় তাঁর যোগ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত৷ মেয়েদের ওপর অপরাধের সংখ্যাও তাই দিনকে দিন বেড়েই চলেছে৷ প্রতি পদে মেয়ে সন্তানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পরিবারের ঘুম চলে যায়৷ ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনার ক্ষেত্রেও মেয়েদের দিকেই আঙুল তোলা হয় প্রথমে৷
হবু মায়েদের জন্য ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
‘মা’ ডাক শোনার স্বপ্ন প্রতিটি নারীর আর একজন নারী হয়ত পূর্ণতা পান মাতৃত্বেই৷ কিন্তু মা হতে যে দশ মাসের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়! এই পথকে সহজ করা এবং সুস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়ার কিছু সহজ উপায় নিয়েই এই ছবিঘরে৷
ছবি: DW
হবু মায়ের অনুভূতি
‘মা’ – এটি একটি মাত্র শব্দ, যার সাথে মিশে আছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা৷ সন্তানের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা না করেই সন্তানকে মা পরম যত্নে বড় করে তোলেন, সেই গর্ভাবস্থা থেকেই৷ পৃথিবীতে একমাত্র মা-ই জানেন সন্তানকে গর্ভে ধারণ করার কষ্ট, ধৈর্য আর আনন্দের অনুভূতিটুকু৷
ছবি: imago/CTK Photo
স্বামী ও পরিবারের অন্যান্যদের সহযোগিতা
গর্ভবতী মায়েদের শরীরে হরমন পরিবর্তনের কারণে এ সময়ে তাঁদের অনেকেই কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে থাকে৷ আর এ কথাটি স্বামীসহ পরিবারের সকলকেই মনে রাখতে হবে৷ তাঁকে খুশি রাখার চেষ্টা করতে হবে, কারণ এতে পরিবারের অনাগত সদস্যটিরই মঙ্গল৷ শারীরিক এবং মানসিকভাবে মা সুস্থ থাকলে তার প্রভাব যে পড়ে শিশুটির ওপরও৷
ছবি: fotolia/diegoa8024
হবু মায়ের দিনের শুরু
‘‘সকালে উঠেই কুসুম গরম পানিতে গোসল সেরে নিন৷ তারপর পুরো শরীরে আস্তে আস্তে অলিভ অয়েল মাসাজ করে নিন৷ অন্য তেলও অবশ্য মালিশ করা যেতে পারে, তবে অলিভ অয়েলে সন্তান জন্মের পর সাধারণত পেটে আর কোনো দাগ থকে না৷’’ এমনটাই বলেন জার্মান ধাত্রী হাইকে শোয়ার্ৎস৷
ছবি: Fotolia/Subbotina Anna
সুন্দর ত্বক
গর্ভকালীন সময়ে শরীরে হরমনের পরিবর্তনের কারণে হবু মায়ের ত্বকেও দেখা দেয় নানা সমস্যা, বিশেষকরে মুখমণ্ডলে৷ তাই সপ্তাহে একবার ‘মাস্ক’ ব্যবহার করতে পারেন৷ যেমন একটি পাকা অ্যাভোকাডোর সাথে দু’চামচ ছানা মিশিয়ে চোখ ছাড়া পুরো মুখে লাগিয়ে দশ মিনিট পর গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন৷ তারপর ভালো কোনো ‘সানস্ক্রিন’ লাগিয়ে ফেলুন৷
ছবি: Fotolia/studiovespa
গর্ভকালীন হালকা ব্যায়াম
ঘরের মেঝেতে পা মুড়ে বসুন এবং হতের তালু সামনে নিয়ে বুকের কাছে রাখুন৷ খুবই মনোযোগ দিয়ে আস্তে আস্তে গভীরভাবে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিন এবং পেটে থেকে নিঃশ্বাস ছাড়ুন আর ভাবুন – ‘‘এই নিঃশ্বাসের মধ্য দিয়ে আমার সন্তানের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে৷’’ ব্যায়াম কোনো গ্রুপের সাথে করতে পারলে আরো ভালো লাগবে৷
ছবি: Fotolia/Robert Kneschke
হালকা খাবার
এই সময়টাতে অনেকেরই সকালে বেশ খারাপ লাগে বা বমিভাব হয়৷ তাই এক কাপ ভেষজ চা পান করতে পারেন সাথে একটা টোস্ট বা বিস্কুট৷ ধাত্রী হাইকে বলেন, ‘‘এ সময় অনেকেই সকালে গরম নাস্তা পছন্দ করেন৷ আসলে নিজের যা ভালো লাগে সেটাই খাবেন৷ তবে লক্ষ্য রাখবেন যে, সেই খাবার যেন ফাইবার বা আঁশযুক্ত হয়৷ এছাড়া তার সঙ্গে অবশ্যই ফল খেতে ভুলবেন না৷’’
পানি
একজন সুস্থ গর্ভবতীর দিনে কম পক্ষে দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা উচিত৷ তাই মাঝে মাঝেই অল্প অল্প পানি পান করে নেবেন৷ এতে শরীরটা সারা দিন ঝরঝরে লাগবে এবং রক্ত ঘনও হয়ে যাবে না৷
ছবি: Fotolia/photo 5000
চুলের যত্ন
সাধাণত গর্ভবতী মায়েদের মাথার চুল তেমনভাবে ঝরে না৷ তবে কারো কারো চুলের আগা শুকিয়ে যায়৷ তাই তাঁরা বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন, এতে চুল নরম থাকে৷ তাছাড়া চুলকে সুন্দর ও ঝরঝরে রাখতে সপ্তাহে একদিন রান্নাঘর থেকে দুই টেবল চামচ অলিভ অয়েল, দুই চামচ সাদা দই এবং একটি ডিমের কুসুম মিশিয়ে মাথায় দিয়ে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন৷
ছবি: Fotolia/Masson
মুক্ত বাতাস সেবন
‘‘শরীর এবং মনকে সুস্থ রাখতে এবং দুটোর মধ্যে সমতা রক্ষা করতে এই বিশেষ সময়টিতে মুক্ত বাতাস সেবন খুবই জরুরি৷ হাঁটাহাঁটি খুব ভালো, তবে গায়ে জোড় দিয়ে কোনোরকম ব্যায়াম করা উচিত নয়৷ এতে হিতে বিপরিত হতে পারে৷ অন্য ব্যায়াম, অর্থাৎ যাঁরা সাঁতার জানেন তাঁদের জন্য কিছুক্ষণ পানিতে থাকা কোমর এবং পিঠে বেশ আরাম দেয়৷’’ বলেন ধাত্রী হাইকে শোয়ার্ৎস৷
ছবি: imago/emil umdorf
দাঁত ব্রাশ
গর্ভবতী মাকে যেন সব সময় আকর্ষণীয় লাগে, সেজন্য দিনে অন্তত দু’বার দাঁত ব্রাশ করতে হবে, তবে নরম ব্রাশ দিয়ে৷ এ সময় অনেকের মাড়ি নরম হয়ে রক্ত ঝরতে পারে৷ তাই দাঁতের মাড়ি শক্ত রাখতে ক্যামেলিয়া চা দিয়ে কুলি করতে পারেন৷ এছাড়া প্রথম ছয় মাস নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত বলে জানান ধাত্রী শোয়ার্ৎস৷
ছবি: imago/CHROMORANGE
হোম স্পা
‘‘সন্ধ্যায় বাথটবে কুসুম কুসুম গরম পানি ভর্তি করে তাতে এক গ্লাস দুধ ঢেলে দিন, যা ত্বককে মসৃণ করবে৷ কিছুক্ষণ টবে থাকার পর উঠে গায়ে তেল মালিশও করতে পারেন৷ চাইলে বাথটবে হবু মায়ের সঙ্গী বা কোচ হতে পারেন হবু বাবা৷’’ বলেন হাইকে৷
ছবি: Fotolia/Ariwasabi
পায়ের যত্ন
গর্ভবতী মায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি ভারী বোধ হয় তাঁর পা দুটো৷ তাই সকালে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেই দুই পা খানিকটা উঁচু করে একটু একটু করে ঘোরাবেন৷ এতে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়৷ রাতে যদি পা দুটোকে ভারী মনে হয়, তাহলে একটি বাটিতে ঠান্ডা পানি দিয়ে সামান্য লেবুর রস দিন৷ এতে ছোট টাওয়েল ভিজিয়ে পানিটা চিপে উঁচু করা পায়ে দুই মিনিট পেচিয়ে রাখুন৷
ছবি: superfood - Fotolia.com
ডাক্তারি ‘চেকআপ’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পেটের সন্তানটি যেন ভালোভাবে বড় হতে পারে সেজন্য চাই যথেষ্ট সবুজ শাক-সবজি এবং আয়োডিন৷ আরো দরকার আয়রন এবং ক্যালসিয়াম৷ তাই এ সবের কোনোটারই যেন ঘাটতি না থাকে৷ সুতরাং শারীর আর মনের যত্নের পাশাপাশি প্রয়োজন নিয়মিত ডাক্তারি ‘চেকআপ’-ও৷
ছবি: DW
13 ছবি1 | 13
২০১১ সালের জনসমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি হাজার পুত্র সন্তানের মধ্যে ছয়বছর বয়সের কন্যা সন্তানের হার ধারাবাহিকভামে কমে দাঁড়িয়েছে ৯১৮তে৷ পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কন্যা সন্তানকে বোঝা মনে করা হয়৷ মাতৃগর্ভ থেকেই শুরু হয় তার প্রতি অবিচার৷
কন্যাভ্রুণ হত্যার বলি হয় তারা৷ ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণে সরকার থেকে ‘আল্ট্রাসাউন্ড' পদ্ধতি নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও৷ কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হবার পরও সে অযত্নের শিকার হয়৷ অপুষ্টিতে ভোগে, চিকিত্সা সেবাযত্ন ঠিকমত পায় না৷ স্কুলে যাবার বয়স হলে নামিদামি স্কুলে পাঠানো হয় না৷ মানসিক দৃষ্টিভঙ্গিটা এমন, যেন কন্যা মানেই তো পরের সম্পত্তি৷ তাই প্রথম থেকেই খরচের খাতায় নাম লেখা হয়৷
এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক দেবদাস ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলে বলেন, ‘‘পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুধু ভারতেই নয়, গোটা দুনিয়াতেই আছে৷ ভারতে কন্যা সন্তানের প্রতি বৈষম্যের বড় কারণ পণপ্রথা৷ মেয়ের জন্মলগ্নেই বাবা-মায়ের মাথায় হাত এখন থেকেই মেয়ের বিয়ের জন্য প্রচুর টাকার ব্যবস্থা করতে হবে৷ শহরাঞ্চলে পণপ্রথার প্রকৃতি কিছুটা বদলালেও, সর্বত্র তা বদলাচ্ছে না৷ পণপ্রথা বেআইনি হলেও তা কার্যকর করতে সরকারও তেমন গা করেনি বা করছে না৷''
সমাজবিজ্ঞানী দেবদাস ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘অদ্ভুত লাগে যখন দেখি, মেয়েরা লেখাপড়া শিখে যথেষ্ট ভালো রোজগার করছে, বাড়ির লোকেরা তার রোজগার করা টাকার দিকে হাত বাড়াচ্ছে, অথচ তাকে উপযুক্ত মর্যাদা দিতে কুণ্ঠিত তারা৷ এমনকি শিক্ষিত মহিলাদের মধ্যেও মরচে পড়া পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতাটা রয়ে গেছে৷ অর্থাৎ মেয়েরা বাড়ির কাজ করবে আবার রোজগারও করবে৷ মনে হয়েছিল শিক্ষার প্রসারে পুত্র-কন্যার আনুপাতিক ব্যবধান কমবে, মেয়েরা তার যোগ্য সম্মান পাবে৷ কিন্তু তা হচ্ছে কৈ? আপাত উন্নত রাজ্য গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লি বা পাঞ্জাবে ঐতিহাসিকভাবে পুত্র-কন্যার ব্যবধানটা স্পষ্ট৷ অথচ এই নিয়ে বড় কোনো সামাজিক আন্দোলনই বা হচ্ছে না কেন? রাজনৈতিক দলগুলিও এইসব সামাজিক ইস্যু ঘাঁটাতে চায় না, পাছে তাদের ভোটব্যাংকে টান পড়ে৷''
ছেলেদের খেলনা, মেয়েদের খেলনা
বাচ্চাদের খেলনা কেনার জন্য যে কোনো বড় দোকান বা সুপারস্টোরের ঠিক কোন অংশে ছেলেদের আর কোথায় মেয়েদের খেলনা পাওয়া যাবে – সেটা রঙ দেখলেই বোঝা যায়৷ কিন্তু এতে করে কি লিঙ্গবিষম্য করা হচ্ছে না?
ছবি: Screenshot Lego Shop
গোলাপি মানেই...
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন৷ ছবিতে একটি সুপারস্টোরের যে অংশ দেখতে পাচ্ছেন, সেখানে গেলে বাচ্চা মেয়েদের খেলনা পাওয়া যাবে৷ চারদিকে গোলাপি রঙয়ের ছড়াছড়িই সেটা বলে দিচ্ছে৷ ছেলেদের খেলনার অংশটি হলো নীল৷ খেলনার রঙে এই ভিন্নতার কারণে অনেকদিন ধরেই লিঙ্গবৈষম্যের অভিযোগ উঠছিল৷ তারই সূত্র ধরে মার্কিন সুপারস্টোর চেন ‘টার্গেট’ সম্প্রতি এই নিয়ম পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে৷
ছবি: cc-by-Josh Puetz
রঙ আর থাকবে না
গোলাপি আর নীলের এই খেলায় আর অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ‘টার্গেট’৷ টুইটারে ‘গার্লস বিল্ডিং সেট্স’ শীর্ষক প্রচারণা আর এ বিষয়ে একটি পিটিশনের পর, টার্গেট বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, তারা এখন থেকে স্টোরগুলোয় রঙ ব্যবহার করে ছেলে আর মেয়ের মধ্যে পার্থক্য করবে না৷ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে টার্গেট৷
ছবি: AP
তবে বার্বি থাকছে...
টার্গেটের এই ঘোষণায় অবশ্য বার্বির উল্লেখ নেই৷ এর মানে, খেলনা হিসেবে ১৯৫৯ সাল থেকে মেয়ে চরিত্রের সমার্থক হয়ে ওঠা বার্বির বিক্রি বন্ধ করবে না তারা৷ বার্বির মাধ্যমে কোমলমতি মেয়ে শিশুদের মধ্যে একটি অবাস্তব নারী দেহের চিত্র তুলে ধরার সমালোচনা আছে বহুদিন ধরেই৷ অবশ্য বার্বির কিছু ইতিবাচক দিকও আছে৷ যেমন চিকিৎসক, মহাকাশবিজ্ঞানী, শিক্ষক – এ সব পেশার বার্বির মধ্য দিয়ে মেয়েদের আত্মনির্ভরতার কথা বলা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লিঙ্গ নিরপেক্ষ বাজারজাতকরণ
এর আগে ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যের ‘টয়েস আর আস’ লিঙ্গ নির্ভর বাজারজাতকরণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল৷ তারও আগে ২০১২ সালে ব্রিটিশ এই সুপারস্টোর তাদের সুইডেনে প্রকাশিত বড়দিনের ক্যাটালগে লিঙ্গ নিরপেক্ষ ছবি ব্যবহার করেছিল, যেমন উপরের ছবিটি৷
ছবি: top-toy.com
শুধু খেলনা নয়, ক্যান্ডিতেও
ছবিটি ভালো করে খেয়াল করুন৷ হাইহিল জুতা, নেল পলিশের বোতল দেখতে পাচ্ছেন? অথচ এটি কিন্তু ‘হারিবো’-র ফ্যান্টাসি সিরিজের একটি ক্যান্ডির প্যাকেট, যেখানে ডাইনোসর, গাড়ি ইত্যাদির ছবি থাকা উচিত ছিল৷ কিন্তু শুধু মেয়েদের জন্য (ছবিতে দেখুন পিংক এডিশন) বলেই এই ব্যবস্থা!
ছবি: DW/C. Bleiker
স্লিম, সুন্দরী
‘অ্যামেরিকাস নেক্সট টপ মডেল’-এর মতো প্রতিযোগিতাগুলো মেয়েদের মনে করিয়ে দেয়, মডেল মানেই স্লিম ও সুন্দর হতে হবে৷ জার্মান খেলনা প্রস্তুতকারক ‘প্লেমোবিল’ মেয়ে বাচ্চাদের জন্য এই ধরণের প্রতিযোগিতা খেলার মতো খেলনা নিয়ে এসেছে৷ আজকাল ছেলে মডেল বাছাইয়ের জন্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও ছেলে শিশুদের জন্য এমন কোনো খেলনা এখনও বাজারে আনেনি প্রেমোবিল৷
ছবি: Screenshot playmobil.de
সাত বছরের মেয়ে বাচ্চার অভিযোগের পর
৭ বছরের শিশু শার্লটে বেনজামিন একবার ‘লেগো’-র কাছে এই বলে অভিযোগ জানিয়েছিল যে, তাদের খেলনার নারী চরিত্ররা শুধু বাসায় বসে থাকে, বিচে যায় আর শপিং করে৷ এরপর লেগো ২০১৪ সালে ‘রিসার্চ ইন্সটিটিউট’ নামে একটি খেলনা বের করে যেখানে মেয়েদের বিজ্ঞানী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়৷ বাজারের আসার কিছুদিনের মধ্যেই সেটি বিক্রি হয়ে যায়৷ এর মাধ্যমে ক্রেতাদের মনোভাবও বোঝা গেছে৷ অন্য কোম্পানিগুলো সেটি অনুসরণ করতে পারে৷
ছবি: Screenshot Lego Shop
7 ছবি1 | 7
উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান বলছে, লিঙ্গ ব্যবধান প্রতি হাজারে দিল্লিতে ৮৭১, মহারাষ্ট্রে ৮৯৪, পাঞ্জাবে ৮৪৬, গুজরাটে ৮৯০৷ এই প্রবণতা বিপরীতমুখী করতে এবং সমাজের বিবেকবোধ জাগাতে প্রধানমন্ত্রী মোদী শুরু করেছেন বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্প৷
কিন্তু সমস্যার ব্যাপ্তি যতটা, তার সমাধানও তত কঠিন৷ ধন্দ লাগে মুসলিম সমাজে কোরান অনুসারে মেয়ের বাড়িকে পণ দিতে হয় না, দিতে হয় ছেলের বাড়িকে যাকে বলে মেহের৷ কোরান মতে ভ্রুণ হত্যা নিষিদ্ধ৷ তাতেও তো উপমহাদেশের মুসলিম সমাজে ছেলের তুলনায় মেয়ের আনুপাতিক হার কমের দিকে যাচ্ছে কেন? তবে তুলনামূলকভাবে হিন্দু সমাজ থেকে ভালো৷ হাজার প্রতি ৯৫১৷ তবে নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেনের মতে, প্রতি বছর হাজার হাজার মেয়ে সন্তান পাচার হয়ে যায় বা নিখোঁজ হয়ে যায়৷ সংখ্যার দিক থেকে ছেলে ও মেয়ে সন্তানের ব্যবধান বেড়ে চলার এটাও একটা বড় কারণ৷
আপনার স্ত্রী, কন্যা বা পুত্রবধু গর্ভবতী হলে আপনি কি অনাগত সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করতে চাইবেন? লিখুন নীচের ঘরে৷
বলিউডের জনপ্রিয় সব মায়েরা
বলিউডের বেশ কয়েকজন নায়িকা সন্তানের মা হয়েছেন৷ এরপরও তাঁরা কাজ চালিয়ে গেছেন, যাচ্ছেন৷ হচ্ছেন জনপ্রিয়৷ ছবিঘরে থাকছে তাঁদের কথা৷
ছবি: Imago/IP3press
রানি মুখার্জি
বুধবার (৯ ডিসেম্বর, ২০১৫) মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন রানি মুখার্জি৷ আদিত্য চোপড়া ও রানি দম্পতি মেয়ের নাম রেখেছেন আদিরা৷ আদিত্যের ‘আদি’ আর রানির ‘রা’ মিলিয়ে নামটি রাখা হয়েছে৷ এক বিবৃতিতে রানি জানান, ‘‘আদিরার জন্ম বিধাতার দেয়া সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার৷’’
ছবি: DW/P. Mani Tewari
ঐশ্বরিয়া রাই
সম্ভবত বলিউডের সবচেয়ে বেশি পরিচিত মা তিনি৷ দাদা অমিতাভ, বাবা অভিষেক আর মা ঐশ্বরিয়ার মতো মেয়ে আরাধ্যের খবরও প্রায়ই খবরে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/epa/I. Langsdon
কাজল
অভিনেতা অজয় দেবগণের সঙ্গে বিয়ের পর পরিবারকেই প্রাধান্য দিয়েছেন কাজল৷ তবে এর মধ্যেও মাঝেমধ্যে ছায়াছবিতে কাজ করতে দেখা গেছে তাঁকে৷ এই দম্পতির নিসা নামের একটি মেয়ে ও যুগ নামের এক ছেলে আছে৷
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images
শিল্পা শেঠী
২০১২ সালে ছেলের জন্ম দেন শিল্পা৷ বর্তমানে মুভির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও স্বামী রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে আইপিএল-এর টিম রাজস্থান রয়েলস-এর মালিক তিনি৷
ছবি: INDRANIL MUKHERJEE/AFP/GettyImages
মাধুরী দীক্ষিত
বিয়ের পর পুরোপুরি সংসারে মনোযোগ দিয়েছিলেন মাধুরী৷ অরিন ও রায়ান তাঁর দুই ছেলে৷ তারা কিছুটা বড় হওয়ার পর মাধুরী আবারও বিনোদন জগতে ফিরে আসেন৷ বর্তমানে তাঁকে টিভিতে বেশি দেখা যায়৷
ছবি: Getty Images
কঙ্কনা সেন শর্মা
২০১১ সালে ছেলে সন্তানের মা হন অপর্ণা সেনের কন্যা কঙ্কনা৷ তাঁর সন্তানের নাম হারুন৷ এখনও অভিনয়ের সঙ্গে আছেন তিনি৷
ছবি: Getty Images
মালাইকা অরোরা খান
সালমান খানের ভাবী মালাইকা মা হন ২০০২ সালে৷ মাঝেমধ্যেই সিনেমা ও টিভির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি৷
ছবি: Getty Images
সুস্মিতা সেন
বিয়ে করেননি সুস্মিতা৷ তবে দুটি কন্যা সন্তান দত্তক নিয়েছেন৷ মনোযোগ দিয়ে তাদের লালনপালন করছেন৷