ছবি শুরুর আগে ভারতের সিনেমা হলগুলিতে জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক৷ সেই সময় উপস্থিত দর্শকদের উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতকে সম্মান জানাতে হবে৷ গত বুধবার এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করে সুপ্রিম কোর্ট৷
বিজ্ঞাপন
সিনেমা শুরুর আগে সিনেমা হলগুলিতে জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক করে এক নির্দেশিকা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যতক্ষণ জাতীয় সংগীত বাজবে, ততক্ষণ উপস্থিত সব দর্শককে উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের প্রতি উপযুক্ত সম্মান দেখাতে হবে৷ এমনকি সে সময় ‘এমার্জেন্সি গেট' ছাড়া বাইরে যাবার বা ঢোকার সব দরজা বন্ধ রাখতে হবে৷ অবশ্য উঠে দাঁড়ানোর এই বাধ্যবাধকতা থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে৷
এছাড়া জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় সিনেমা হলের বড় পর্দায় দেখাতে হবে জাতীয় পতাকা৷ আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে সব সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে হবে৷ শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্য সচিবদের বলা হবে৷ ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়াতেও তা প্রকাশ করা হবে৷ তবে আজেবাজে জায়গায় তা ছাপা যাবে না বা দেখানো যাবে না৷ আপত্তিকর কোনো বস্তুর ওপর জাতীয় পতাকা ছাপা যাবে না৷ অর্থাৎ জাতীয় সংগীতের পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে৷
বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা
ওরম্যাক্স মিডিয়া ২০২২ সালের ডিসেম্বরের প্রকাশ করেছে বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় পুরুষ তারকাদের তালিকা। তালিকায় স্থান পেয়েছেন ১০ তারকা৷ কারা আছেন এই তালিকায় জেনে নিন ছবিঘরে৷
‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ খ্যাত বলিউড তারকা আমির খান আছেন নবম অবস্থানে৷
ছবি: Punit Paranjpe/AFP/Getty Images
কার্তিক আরেয়ান
‘ভুলভুলাইয়া ২’ অভিনেতা কার্তিক আরেয়ান জনপ্রিয় তালিকায় ১০ নম্বরে আছেন৷
ছবি: Arno Burgi dpa/lbn
10 ছবি1 | 10
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক মিশ্র ও অভিতাভ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করেন, জাতীয় সংগীতের জন্য প্রত্যেক নাগরিকের মনে একটা গর্ববোধ থাকা উচিত এবং জানা উচিত কীভাবে গানটি গাইতে হবে৷ আসলে আজকের দিনে অনেকেই জানেন না জাতীয় সংগীতের সঠিক গায়নশৈলি৷ কিন্তু এটা তাঁদের শেখা জরুরি, কারণ জাতীয় সংগীতকে শ্রদ্ধা করা বা সম্মান জানানো এক সাংবিধানিক দেশাত্মবোধ৷ প্রত্যেক নাগরিককে বুঝতে হবে এটা তাঁর দেশ, যে দেশের সম্মান রক্ষার জন্য সীমান্তের সেনা প্রহরীরা জীবন দিচ্ছেন৷ তাঁদের জন্যই এ দেশের নাগরিকরা ভোগ করছেন স্বাধীনতা ও স্বাধিকার৷
টেলিভিশন এবং বিজ্ঞাপনী প্রচারে জাতীয় সংগীতের অবমাননা বন্ধ করতে ভোপালের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার শ্যাম নারায়ন চৌসকি শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান৷ চৌসকির আইনজীবী বলেন, ১৯৭১ সালের জাতীয় সম্মান রক্ষা আইনের সংস্থান নানাভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ যেমন জাতীয় সংগীত বেসুরোভাবে বিকৃত উচ্চারণে গাওয়া হচ্ছে৷ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে অতিনাটকীয়ভাবে তা উপস্থাপন করা হচ্ছে৷ এমনকি জাতীয় সংগীত চলাকালে অনেককে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেও দেখা গেছে৷ এইসব অবমাননাকর আচরণ বন্ধ করা দরকার৷ বিষয়টির যথার্থতা খতিয়ে দেখে এই নির্দেশিকা জারি করেন শীর্ষ আদালত৷ বিচারপতিরা বলেন, জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান জানানো বাধ্যতামূলক করা হলে দেশাত্মবোধ ও জাতীয়তাবাদের ধারণা তৈরি হবে৷
ভারতের কিছু বিতর্কিত আইন
ভারতে এমন কিছু কিছু আইন আছে, যা খুবই স্পর্শকাতর৷ তাই এ সব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললেই শুরু হয়ে যায় তুমুল বিতর্ক৷ তখন শেষ পর্যন্ত আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়, দিতে হয় সমাধান৷ এই রকমই কয়েকটি আইন তুলে ধরা হলো ছবিঘরে৷
ছবি: Reuters
৩৭০ ধারা
ভারতীয় সংবিধানের এই ধারায় জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় কতগুলি ক্ষেত্রে স্বশাসনের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্য গণপরিষদ এর সংশোধনের সুপারিশ না করায়, এটা এ মুহূর্তে স্থায়ী বিধান হয়ে আছে৷ তবে জাতীয় নিরাপত্তা, অত্যাবশ্যক পণ্য, সর্বভারতীয় নিয়োগ বিধি, কর ও শুল্ক, আদালত, মানবাধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে জম্মু-কাশ্মীর অন্যান্য রাজ্য থেকে অভিন্ন৷
ছবি: Mohammadreza Davari
সোচ্চার সংঘ পরিবার
৩৭০ নম্বর ধারা রদ করার জন্য ভারতে সংঘ পরিবারের মতো কট্টর হিন্দু সংগঠনগুলি জোর আন্দোলন শুরু করেছে৷ সরকারকে তারা ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছে এ জন্য৷ তাদের মতে, এই ধারা ভারতের সংহতি ও অখণ্ডতার পরিপন্থি৷ শুধু তাই নয়, এই ধারা নাকি জম্মু-কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতির জন্য অনেকখানি দায়ী৷ সরকার অবশ্য এই বিতর্কে নিজেকে জড়াতে চাইছে না৷
ছবি: AP
এএফএসপিএ বা আফস্পা
সেনাবাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন বা এএফএসপিএ কার্যকর হয় ১৯৫৮ সালে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য এবং জম্মু-কাশ্মীরে৷ জঙ্গি তৎপরতা রুখতে এই আইনে সেনাবাহিনীকে দেয়া হয়েছে অবাধ ক্ষমতা৷ এতে করে ইচ্ছামতো গ্রেপ্তার, যখন খুশি তল্লাসি, কোনো কারণ না দেখিয়ে আটক এবং নির্যাতন করতে পারে মিলিটারি৷ তবে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, এ আইন অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবত থাকতে পারে না৷ বরং ক্ষেত্রবিশেষে তদন্ত করতে হবে৷
ছবি: AP
প্রতিবাদী নারী শর্মিলা চানু
মানবাধিকার সংগঠনগুলি আফস্পার বিরুদ্ধে সোচ্চার৷ অভিযোগ, গত দু’দশকে মনিপুরে এ আইনকে কাজে লাগিয়ে সাজানো সংঘর্ষে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনী৷ এ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার ও মনিপুর থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৬ বছর ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন লৌহমানবী ইরম শর্মিলা চানু৷ নাকে ১৬ ইঞ্চির টিউব লাগানো তাঁর এই প্রতিবাদী ছবি গোটা দুনিয়া চেনে৷ আত্মহত্যার মামলা দায়ের করেও তাঁকে থামানো যায়নি৷
ছবি: AFP/Getty Images
৩৭৭ ধারা
ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় সমকামিতা এখনও অপরাধ৷ সমলিঙ্গের দুই প্রাপ্তবয়স্ক যদি পারস্পরিক সম্মতিতে যৌনকাজে লিপ্ত হয় এবং সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলেও ৩৭৭ নং ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে ১০ বছরের জেল, এমনকি যাবজ্জীবন কারাবাসও হতে পারে৷ ভারতের সমকামী গোষ্ঠীগুলি ব্যক্তিস্বাধীনতার খেলাপ মনে করে এই আইন বাতিল করার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিীন ধরে৷ তবে বিষয়টি নিয়ে ভারতের জনমত বিভাজিত৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/R. Kakade
এলজিবিটি সম্প্রদায়ের নতুন পিটিশন
সম্প্রতি ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ৩৭৭ নম্বর অনুচ্ছেদটির বিরুদ্ধে আবারো পিটিশন দায়ের করেন এলজিবিটি সম্প্রদায়ের কয়েকজন সেলিব্রেটি৷ বের হয় মিছিলও৷ হাতের প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনে লেখা থাকে ছিল, ‘সমকামীদের ব্যক্তিগত জীবন বেছে নেবার অধিকার দিতে হবে৷’ ঋতু ডালমিয়া, আমন নাথ এবং নৃত্যশিল্পী এনএস জোহর-এর মতো তারকারা ছিলেন সেই মিছিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পণপ্রথা বিরোধী আইন
ভারতে আজও পণপ্রথা বিরোধী আইনের ৪৯৮-এ ধারাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কখনও কখনও ঘটে যায় বধু হত্যার মতো ঘটনা৷ এই ধারা অনুযায়ী, বিয়ের পাঁচ বছরের মধ্যে স্ত্রী আত্মহত্যা করলে বা তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে, স্বামী বা অন্য সদস্যদের প্রমাণ করতে হবে যে তাঁরা নির্দোষ৷ তা নাহলে বধু নির্যাতনের অপরাধে তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে৷ তবে স্ত্রী যাতে এই আইনের অপব্যহার না করেন, সেদিকটাও এবার খতিয়ে দেখতে চায় আদালত৷
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
আত্মহত্যা না খুন?
এ বছরের জানুয়ারি মাসে দিল্লির ফতেপুর বেরিতে ২২ বছরের নববিবাহিতা বধু ববিতাকে শ্বশুরবাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়৷ বৌটির বাপেরবাড়ির লোকেদের অভিযোগ, পণের জন্য ববিতার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাতো তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা৷ আর সে কারণেই ববিতা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় অথবা আত্মহত্যার মোড়কে তাঁকে খুন করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই৷
ছবি: Getty Images/AFP
জাতিভেদ প্রথা অপরাধযোগ্য
জাতিভেদ বা অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ আইনের ১৭নং ধারায় এই আইন লঙ্ঘনে ছ’মাসের জেল ও জরিমানার কথা বলা হয়েছে৷ কারণ মানুষের ব্যক্তি অধিকার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ সামাজিক মেলামেশা, খাওয়া-দাওয়া, ওঠা-বসা, ধর্মীয় স্থানে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে নীচু জাত আর উঁচু জাতের মধ্যে বিভেদ করা অবৈধ৷ ১৯৭১ সালে আইনটি সংশোধন করে তার নাম দেওয়া হয় নাগরিক অধিকার সুরক্ষা আইন৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Seelam
দলিতরা কি মানুষ নয়?
মন্দির তো দূরের কথা, সম্প্রতি গুজরাট, উত্তর প্রদেশ এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু গ্রামে দলিত ও হরিজনদের কুঁয়ো থেকে জল নিতে বাধা দেওয়া হয় গ্রামের মোড়লদের নির্দেশে৷ এ নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিলে, পুলিশ পাহারা বসাতে হয়৷ শেষে দলিতরা নিজেদের জন্য আলাদা কুঁয়ো খুঁড়ে নেন৷ প্রচণ্ড খরা সত্ত্বেও গুজরাটের মেহসানা জেলার ডজন খানেক মহিলা কাকুতি-মিনতি করলেও তঁদের কুঁয়ো থেকে জল নিতে দেওয়া হয়নি৷
ছবি: Reuters/Danish Siddiqui
লিঙ্গ বৈষম্য নিরোধক আইন
দেব-দেবীর মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার না থাকায়, তার বিরুদ্ধে নারীবাদী সংগঠনগুলি সোচ্চার সর্বদাই৷ কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের মন এতে টলেনি৷ ধর্মগুরুদের মতে, প্রাচীনকাল থেকেই মাসিকের সময় মেয়েদের ‘অশুচি’ বলে গণ্য করা হয়৷ তাই তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ এ নিয়ে আন্দোলনকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হলে মুম্বই হাইকোর্ট মন্দির প্রবেশাধিকার আইন ১৯৪৭ অনুসারে রায় দেয় যে, মন্দিরে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য করা যাবে না৷
ছবি: Reuters/Anindito Mukherjee
মন্দিরে প্রবেশাধিকার নিয়ে আবারো আপিল
তৃপ্তি দেশাইয়ের নেতৃত্বেই একদল মহিলা মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে একটি শনি মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেন৷ মন্দির কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে, তাঁরা সেখানেই ধর্ণা দেন৷ মুম্বইয়ের রাস্তায় মন্দিরে মেয়েদের অবাধ প্রবেশাধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়৷ এরপর কিছু কিছু মন্দিরে নারীরা প্রবেশাধিকার পেলেও, কেরালার সবরিমালা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে৷
ছবি: DW/A. Chatterjee
মুসলিম শরিয়ত বিধি ১৯৩৭
‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ নিয়ে সরকার দোটানায়৷ সংবিধানে নারী-পুরুষকে সমানাধিকার দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু মুসলমানদের জন্য সামাজিক বা পারিবারিক বিবাদে কোরান-ভিত্তিক শরিয়ত আইনই শেষ কথা৷ তবে মুসলিম নারীরা বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে পুরুষদের এক তরফা তিন তালাকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে৷ আওয়াজ তুলেছে বহুবিবাহ, তালাক ও খোরপোষের দাবিতে৷ একদিকে সংবিধান, অন্যদিকে মুসলিম পুরুষ সমাজ৷ বিযয়টি তাই আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছে সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শাহ বানুর পর সায়রা বানু
ভারতের দেরাদনের ৩৫ বছরের সায়রা বানু সম্ভবত প্রথম মুসলিম মহিলা, যিনি সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক প্রথা রদ করার আর্জি জানিয়েছেন৷ সায়রা বানু উত্তরাখণ্ডে বাপের বাড়িতে গেলে তাঁর স্বামী রিজওয়ান আহমেদ এলাহাবাদ থেকে তালাকনামা পাঠিয়ে ১৫ বছরের দাম্পত্যজীবনের ইতি টানতে চান৷ বিয়ের পরে বহবার গর্ভপাতে আজ অসুস্থ সায়রা৷ তারপরও এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মরিয়া সায়রা বানু৷
ছবি: Reuters
14 ছবি1 | 14
উল্লেখ্য, ষাটের দশকে ভারত-চীন যুদ্ধের পর থেকে সিনেমা শুরুর আগে সিনেমা হলগুলিতে জাতীয় সংগীত বাজানো শুরু হয়৷ কিন্তু জাতীয় সংগীত চলাকালীনই দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে ঢুকতেন বা বাইরে যেতেন৷ ফলে একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশে জাতীয় সংগীত বাজতো৷ এ কারণে ধীরে ধীরে জাতীয় সংগীত বাজানোর নিয়ম উঠে যায়৷ কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকার ২০০৩ সালে আবার সেই নিয়ম চালু করে৷ ওদিকে মাদ্রাজ হাইকোর্ট রায় দেয়, জাতীয় সংগীত চলাকালীন উঠে দাঁড়ানো বাধ্যতামূলক নয়৷ এতে সিনেমা দেখার আনন্দ ক্ষুণ্ণ হয়, ছবি প্রদর্শন ব্যাহত হয়৷ তাই এক মিডিয়ার তরফে এক জনমত সমীক্ষা শুরু করা হলে উঠে আসে বিতর্ক আর মতভেদ৷
কেউ কেউ মনে করেন, জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক, ঠিক আছে৷ কিন্তু উঠে দাঁড়ানোটা বাধ্যতামূলক করা ঠিক নয়৷ আবার কেউ কেউ মনে করেন, এর কোনোটাই বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেটাই বললেন প্রবীণ সাংবাদিক অমূল্য গাঙ্গুলি৷ তাঁর মতে, দেশাত্মবোধ বা দেশপ্রেম কোনোটাই বাইরে থেকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না৷ এটা আসতে হবে মনের ভেতর থেকে, সরকারের বা বিচারবিভাগের তর্জনি সংকেতে নয়৷ এ ধরনের ইস্যু নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ অভিযোগ করারও কোনো যুক্তি দেখি না৷ স্রেফ শীর্ষ আদালতের সময় নষ্ট করা৷ যার জন্য বড় বড় মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সময় দিতে পারে না৷ সবথেকে বড় কথা, জাতীয় সংগীত বিশেষ বিশেষ উপলক্ষ্যেই শুধু বাজানো উচিত, বলেন প্রবীণ সাংবাদিক অমূল্য গাঙ্গুলি৷
আপনি কী মনে করেন? সিনেমা হলে কি জাতীয় সংগীত বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত? লিখুন নীচের ঘরে৷
লাখো কণ্ঠে ‘সোনার বাংলা’
বুধবার স্বাধীনতা দিবসে ঢাকার প্যারেড ময়দানে লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘সোনার বাংলা’৷ আড়াই লাখের বেশি মানুষ সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ সম্পন্ন করেন৷ বিশাল এই আয়োজনের কিছু ছবি পাবেন এখানে৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘আমার সোনার বাংলা’
স্বাধীনতা দিবসে প্যারেড ময়দানে আড়াই লাখের বেশি মানুষ একত্রে গেয়ে ওঠেন ‘‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি৷’’ জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, ২৫৪,৬৮১ জন সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়েছেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ
‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ভোর থেকেই প্যারেড ময়দানে হাজির হতে থাকেন অগুনতি মানুষ৷ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন এই আয়োজনে৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘বাঙালি ইতিহাস সৃষ্টি করে’
জাতীয় সংগীতের রেকর্ড গড়ার আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘বাঙালি সবসময় ইতিহাস সৃষ্টি করে৷ বাঙালি আবার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে৷’’ (ফাইল ফটো)
ছবি: dapd
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সহায়তা
‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ কর্মসূচি নিয়ে কর্মতৎপরতা শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাস থেকে৷ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ৷ ছবিতে প্যারেড ময়দানে জাতীয় সংগীত গাইছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘খুব ভালো লাগছে’
জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী রাজীব রুদ্র ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা ক্লাসের বন্ধুরা একসঙ্গে এখানে এসেছি৷ খুব ভালো লাগছে, আমরাও সবার সঙ্গে জাতীয় সংগীত গেয়েছি৷ বিশ্ব রেকর্ডের অংশ হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে৷’’
ছবি: Reuters
‘স্কুলের ছাত্র মনে হচ্ছে’
অনুষ্ঠান শেষে ফেরার সময় উত্তরার ব্যবসায়ী ষাটোর্ধ্ব হাজী মতিন বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আজ জাতীয় সংগীত গাইলাম৷ নিজেকে আজ স্কুলের ছাত্র মনে হচ্ছে৷ ভালো লাগছে এত বড় আয়োজনে অংশ নিতে পেরে৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
অনলাইন আয়োজন
শুধু ঢাকার প্যারেড ময়দান নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজনে অংশ নেন৷ আলাদা ওয়েবসাইট, ফেসবুকে ইভেন্ট এবং অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়৷
ছবি: facebook.com
দ্বিতীয় উদ্যোগ
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ডিসেম্বরে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে সেটা ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়নি৷ এবার সরকারই উদ্যোগ নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর আয়োজন করে৷
ছবি: DW/M. Mamun
রেকর্ড গড়ার জন্য যথেষ্ট
সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে ২০১৩ সালে রেকর্ড গড়ে ভারতের সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার৷ গিনেস বুকে স্থান করে নেয়া সেই আয়োজনে অংশ নিয়েছিল সোয়া লাখের মতো মানুষ৷ সেই তুলনায় ঢাকায় বুধবারের আয়োজনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা দ্বিগুনের বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamun
সিদ্ধান্ত জানাবে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ
লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা গাওয়ার এই আয়োজন রেকর্ড গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলো পূরণে সক্ষম হয়েছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করেছে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ৷ তাদের স্বীকৃতির পর এই আয়োজন আন্তর্জাতিক রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হবে৷