২০১৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনে ভারতে ভোটারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ কোটি৷ এর মধ্যে ১৫ কোটি নবীন ভোটার, যাঁরা প্রথমবার ভোট দেবেন৷ পুরুষের তুলনায় নারী ভোটার সামান্য কম৷ নির্বাচন কমিশনের সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য৷
বিজ্ঞাপন
২০১৪ সালের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভোটদাতাদের সংখ্যা অতীতের সব নির্বাচনকে অনেক ছাড়িয়ে গেছে৷ ১৯৫১-৫২ সালে ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের সংখ্যা যেখানে ছিল ১৭ কোটি ৩২ লাখ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তা পাঁচগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটি ৫০ লাখ৷ অর্থাৎ, গত নির্বাচনের চেয়ে দ্বিগুণ৷ এর মধ্যে ১৫ কোটি অর্থাৎ মোট ভোটদাতাদের ২০ শতাংশ নতুন ভোটার, যাঁরা এই প্রথম জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন৷ নির্বাচন কমিশনের সংশোধিত ভোটার তালিকায় উল্লেখিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে এ কথা৷
পুরুষদের তুলনায় মহিলা ভোটারের অনুপাত অপেক্ষাকৃত কম৷ পুরুষ ভোটার ৫২ শতাংশ গতবারের তুলনায় এই অনুপাতে খুব একটা হেরফের হয়নি৷ সর্বশেষ জনগণনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালে ১৮ বছর ও তার অধিক বয়সের জনসংখ্যা ৮৩ কোটি ৩০ লাখ৷ নির্বাচন কমিশনের বিশেষ প্রচেষ্টায় ৯৮ শতাংশ ভোটদাতাদের নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ আগে এমন অনেক জায়গা ছিল যেখানকার ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল না৷
দেশের অর্ধেক ভোটার উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে৷ গত ২০ বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে ৪৩ শতাংশ, কিন্তু ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ৬৪ শতাংশ৷ কারণ পরিসংখ্যান ও অন্য তথ্যগত ত্রুটির কারণে ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম ছিল না৷ কোনো কোনো রাজ্যে ভোটার সংখ্যা বেড়েছে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি৷ গত ২০ বছরে দিল্লির ভোটদাতার সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে৷ উত্তর প্রদেশে বেড়েছে ৭০ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ৷ গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ভোটারদের সংখ্যা সব থেকে বেশি বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০ শতাংশের বেশি, বলেছে নির্বাচন কমিশন৷
ভারতের চা বিক্রেতাদের কথা
রেশম গেলাটলি এবং জ্যাক মার্কস-এর প্রকল্পের নাম ‘ভারতের চায়েওয়ালা’৷ এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ভারত চষে বেড়াচ্ছেন তাঁরা৷ তাঁদের মতে, ‘চায়ে’ বা চা ভারতের সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ এই নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
রাস্তায় ‘চায়ে’
ভারতের প্রায় প্রতিটি রাস্তার কিনারে ‘চায়ে’ বা চা বিক্রেতাদের দেখা মেলে৷ প্রত্যেক বিক্রেতার আবার রয়েছে নিজস্ব ‘রেসিপির’ চা৷ ছবিতে মুম্বই হাইকোর্টের কাছের চা বিক্রেতা বংশী তাঁর খদ্দেরের হাতে চা তুলে দিচ্ছেন৷ অনেক আইনজীবী, এমনকি বিচারকও বংশীর চায়ের বিশেষ ভক্ত৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
‘টি(ম) গেম’
এই ছবিটি রাজস্থানের ক্লক টাওয়ার মার্কেটের সামনে অবস্থিত শ্রী রাম টি স্টলের৷ মহিন্দ্র তাঁর খদ্দেরদের মাঝে চা বিতরণ করছেন৷ তিনিসহ তিনজনের একটি দল দোকানটি চালাচ্ছেন৷ রাজা চা তৈরি করেন, হরেশ কাগজের কাপে করে মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে চা পৌঁছে দেন এবং মহিন্দ্র গ্লাস কাপে খদ্দেরদের চা দেন৷ চার কাপ চা এক হাতে ধরে নিয়ে যেতে বিশেষ পারদর্শী মহিন্দ্র৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
নারীর একক চেষ্টা
কলকাতার একটি আধুনিক শপিং কমপ্লেক্সের সামনে চা বানান মীনাক্ষী৷ পুরো চায়ের দোকান প্রায়শই একা সামলান তিনি৷ তাঁর স্বামী বাড়িতে তাদের চার বছরের ছেলেকে দেখাশোনা করেন৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
তারকাদের জন্য চা
বলিউড ছবি তৈরির সেটে ‘স্পট বয়দের’ দেখা মেলে, যাদের কাজ হচ্ছে ক্যামেরার ভারি যন্ত্রপাতি সরানো এবং চা তৈরি৷ বলিউডের বড় তারকাদের চা পান করিয়ে মুম্বইয়ে বেশ নাম করেছেন ছট্টু৷ প্রিয় তারকা সম্পর্কে জানতে চাইলে কূটনৈতিক সুরে ছট্টুর জবাব, ‘‘আমি নির্দিষ্ট একজনকে প্রিয় বলতে পারিনা, কারণ আমি সবার সঙ্গেই কাজ করি৷’’
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
কখনোই বুড়ো নয়
৭৩ বছরের জীবনের অধিকাংশ সময় কলকাতার বড় বাজারে পশু পালন করেছেন শিবনাথ রাই যাদব৷ কিন্তু দশ বছর আগে তাঁকে বলা হয় পশুর খামার শহরের বাইরে সরিয়ে নিতে৷ তখন চা বিক্রির নতুন পেশা শুরু করেন তিনি৷ তিনি চা তৈরিতে কোন পানি ব্যবহার করেন না৷ শুধু দুধ দিয়ে চা বানান৷ আর এটাই শিবনাথের বৈশিষ্ট্য৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
দৈনিক আয় বারো ইউরো
গঙ্গা নদীর তীরে একটি পিঁড়িতে বসে চা, বিস্কিট এবং সিগারেট বিক্রি করেন সুনীতা দেবী৷ তাঁর চায়ের খদ্দের মূলত নদীর এ পাড় থেকে ও পাড় মানুষ পারাপারের কাঠের নৌকার মাঝিরা৷ সুনীতা দিনে গড়ে দু’শো কাপ চা বিক্রি করেন৷ ইউরোর হিসেবে তাঁর দৈনিক আয় বারো ইউরোর মতো৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
পুজার সময় সারা রাত খোলা
শোভন বরওয়ার চায়ের দোকানের অবস্থান কলকাতার আলীপুরে৷ সাধারণ রাত দশটা পর্যন্ত দোকান খেলা রাখেন তিনি৷ কিন্তু দুর্গা পুজার সময় ভোর পাঁচটা অবধি চা বেঁচেন তিনি৷ পুজা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা রাত জেগে বিভিন্ন প্যান্ডেল ঘুরতে চান৷ তাই তাদের সজাগ রাখতে সারারাত চা বেচেন শোভন৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
যাত্রীদের সহায়তা
গনেশের চায়ের দোকানের অবস্থান বিহারের পাটনা ট্রেন স্টেশনে৷ এই ছবি যখন তোলা হয়, তখন রাতের শেষ পট চা চুলায় চড়িয়েছেন তিনি৷ গনেশের দোকানের পাশেই রয়েছে আরেকটি চায়ের দোকান৷ তবে দুই দোকানি একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন না৷ বরং দু’টি দোকান হওয়ায় ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের কাছে দ্রুত চা পৌঁছানো যায়, এতেই সন্তুষ্ট গনেশ৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
‘চায়ে ওয়ালা’ প্রকল্প
মার্কিন সাংবাদিক রেশম গেলাটলি (বামে) এবং জ্যাক মার্কস (ডানে) ২০১০-২০১১ সালে ভারতে বসবাসের সময় প্রথম চাওয়ালাদের সঙ্গে পরিচিত হন৷ পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের চাওয়ালাদের কথা জানতে এবং তাদের কথা গোটা বিশ্বকে জানাতে আগ্রহী হন তারা৷ আর সেই আগ্রহ থেকেই চলছে তাদের প্রকল্প ‘ভারতের চায়ে ওয়ালা’৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
9 ছবি1 | 9
আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির জন্য ব্যাপক নির্দেশিকা জারি করে নির্বাচন কমিশন সতর্ক করে দিয়েছেন যে, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সেই দলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ যার মধ্যে পড়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে নানা রকম উপহার দেয়া, লোভ দেখানো ইত্যাদি৷ নির্বাচনি ইস্তেহার প্রকাশের অধিকার স্বীকার করে নিয়েও বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলি যেন তাদের নির্বাচনি ইস্তেহারে এমন কোনো অবাস্তব প্রতিশ্রুতি না দেয়, যা পালন করা সম্ভব নয় কিংবা তা সংবিধানের আদর্শের পরিপন্থি হয়৷ যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হবে আর্থিক দিক থেকে সেই দল বা প্রার্থীর পক্ষে তা পালন করা সম্ভব কিনা তার একটা রূপরেখা উল্লেখ করতে হবে৷ এই নির্দেশিকা সুপ্রিম কোর্টের মতানুসারে জারি করা হয়৷ সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বলেছেন, নির্বাচনি ইস্তেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি দুর্নীতির মধ্যে না পড়লেও বিনা পয়সায় উপহার বা অন্যান্য জিনিস-পত্র দেয়া দুর্নীতির মধ্যে পড়ে৷
সম্প্রতি দুটি জনমত সমীক্ষায় ভারতীয় জনতা পার্টির পাল্লা ভারি বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে৷ এক সমীক্ষার অনুমান, বিজেপি সংসদের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে পেতে পারে ১৮৮টি আসন৷ কোনো দলই ২৭২-এর ম্যাজিক সংখ্যা পাবে না৷ অর্থাৎ, ২০১৪ সালের ভোটে ত্রিশঙ্কু সংসদের সম্ভাবনা বেশি৷ সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কোয়ালিশন ছাড়া উপায় নেই৷ তবে সেই হিসেবে নবাগত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির গুরুত্ব বাড়তে পারে৷