ভারত চেয়েছে, তাই বাংলাদেশের মানুষ আবার ‘সুলভে’ পেঁয়াজ পাবে, আবার কেউ কেউ বেশি করে পেঁয়াজ খাবেন৷ শুধু ভারতীয় পেঁয়াজ খাবেন না, বাংলাদেশ চায় বলে অনেকে দেশের সিনেমা বাদ দিয়ে হয়ত হিন্দি সিনেমাও দেখবেন৷
বিজ্ঞাপন
হ্যাঁ, দুটোই সাম্প্রতিক খবর৷ একটা হয়ে গেছে, অন্যটা সম্ভবত হতে চলেছে৷
অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর হঠাৎ বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত৷ এ কাজ ভারত আগেও করেছে৷ এবং আগে যা হয়েছে এবারও ঠিক তা-ই হয়েছে৷ বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে হু হু করে৷ প্রতিদিন হতাশার , ক্ষোভের শিরোনামে নানা ধরনের খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম৷ সভায়, সিম্পোজিয়ামে শোনা গেছে পেঁয়াজের চেয়েও বেশি ঝাঁঝালো কিছু বক্তৃতা-বিবৃতি৷
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেঁয়াজ তখন মশকরার বিষয়৷ ভারতের ‘দিলে পাবি, পেলে খাবি' নীতির নিন্দা, কিংবা দেশকে পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেখার বাসনা জানানোর চেয়ে পেঁয়াজকে বউয়ের গলায় হিরার মালার বিকল্প দেখিয়ে বিস্তর ভিউ, লাইক কামানোর চেষ্টাই ছিল বেশি৷
কিন্তু ক'দিন বাদে সবাই চুপ৷
ইস্যু আসে, ইস্যু যায়, পেঁয়াজে কে বেশিদিন মাথা ঘামায়!
তবে বাংলাদেশের মানুষ মাথা না ঘামালেও পেঁয়াজের বিষয়ে ভারত ঠিকই আবার মাথা খাটিয়েছে৷ ফলে শনিবার থেকে হিলি সীমান্ত দিয়ে আবার আসতে শুরু করেছে পেঁয়াজ৷
এভাবে কতদিন আসবে? অতি সহজ উত্তর- ভারত যতদিন চাইবে ঠিক ততদিন৷
এদিকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ চায় বলে কয়েকদিন আগেও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তে খাইরুল নামের এক গরু ব্যবসায়ী গুলি খেয়ে মারা গেলেন৷ কোনো মহল থেকেই এর খুব কড়া প্রতিবাদ দেখা যায়নি৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরকার বা আওয়ামী লীগের দু-একজন দু-একটা গতানুগতিক কথা বলেছেন৷ বিরোধীদলগুলোর দু-একটির হাতে গোনা কয়েকজনও তাদের রাজনৈতিক অবস্থান অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ মৌখিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷
ফেসবুকেও দেখা গেছে প্রতিক্রিয়ার ছিঁটেফোঁটা৷
তবে কারো আলোচনা, প্রতিক্রিয়া বা স্ট্যাটাসে খাইরুলের জীবন পেঁয়াজের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে কিনা তা বাক্যের ব্যাপ্তি না মেপে বলা যাবে না৷
আজ বালিশ, কাল ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি, পরশু পদ্মা সেতুর গর্ব বা ভাষ্কর্যে ধর্ম-ভাবনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক- তাজা ইস্যুর কি শেষ আছে! তার ওপর বলতে গেলে পুরো ২০২০ ছিল করোনার দখলে৷ সারা বিশ্বে কত মানুষের প্রাণই তো গেছে৷ সেখানে সীমান্তের গরিব ঘরের দু-একজনের আলোচনায় বা স্মৃতিতে বেশিক্ষণ না থাকাটা তো অনিবার্য নিয়তি!
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ইতিবৃত্ত
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন? এক কথায় তার মূল্যায়ন কঠিন৷ বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী দেশটির সম্পর্ক মধুর যেমন বলা চলে, তেমনি আবার কিছু তিক্ততাও আছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
বিপদের বন্ধু
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অকৃত্রিম বন্ধুর ভূমিকায় ছিল ভারত৷ ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি তাঁর সরকারের পূর্ণ সমর্থন দেন৷ পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচাতে বাঙ্গালীদের জন্য খুলে দেয়া হয় দেশটির সীমান্ত৷ নভেম্বরে গঠন হয় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ কমান্ড, যার পথ ধরে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা৷
ছবি: Getty Images/AFP/
মৈত্রী চুক্তি
দুই দেশের শান্তি ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী৷ আঞ্চলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার মোট ১২ টি ধারা ছিল এতে৷ ১৯৯৭ সালের ১৯ মার্চ মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চুক্তিটি আর নবায়ন হয়নি৷
ছবি: Getty Images/G. Crouch
বন্ধনে সংস্কৃতি
ভারতের সাথে বাংলাদেশের রয়েছে অবিচ্ছেদ্য এক সাংস্কৃতিক সম্পর্ক৷ এক সময় পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশ ছিল একই অঞ্চল৷ দুই বাংলার মানুষের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতেও আছে মিল৷ আছে পারস্পরিক যোগাযোগ৷ দুই দেশের মধ্যে সরকারিভাবে সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তিও রয়েছে৷
ছবি: Getty Images
যোগাযোগে মৈত্রী
ভারতের সাথে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে বহুদিন থেকে৷ কলকাতা-ঢাকা, শিলং-ঢাকা এবং ঢাকা হয়ে আগরতলা-কলকাতা নিয়মিত বাস যাতায়াত করে৷ ৬টি রেল লাইন ছাড়াও দু’টি ব্রডগেজ রেল সংযোগ আছে দুই দেশের মধ্যে৷ কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে 'মৈত্রী এক্সপ্রেস' চলে সপ্তাহে চারদিন৷ ২০১৭ সালে চালু হয়েছে খুলনা-কলকাতা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’৷ এছাড়া বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি রেলযোগাযোগ চালুর কাজও চলছে৷
ছবি: DW/P. Mani
ভারসাম্যহীন বাণিজ্য
দুই দেশের বাণিজ্যের আকার ৯১৪ কোটি ডলার৷ ২০১৭-১৮ অথর্বছরে ভারত থেকে ৮৪৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ আর রপ্তানি করেছে মাত্র ৬৮ কোটি ডলারের পণ্য৷ রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশিরভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা পেলেও ভারতের বিরুদ্ধে অশুল্ক বা শুল্কবহির্ভূত বাধা তৈরির অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Dutta
বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ
২০১৭ সালে বাংলাদেশে ভারতের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৫১ কোটি ডলার৷ টেলিযোগাযোগ, ঔষধ, অটোমোবাইলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা আছে৷ এছাড়া ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের সময় ভারতের সঙ্গে ১০ বিলিয়ন ডলারের ১৩টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. U. Ekpei
বিদ্যুৎ আমদানি
বর্তমানে ভারতের ত্রিপুরা থেকে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ৷ ভারতের জাতীয় তাপবিদ্যুৎ কর্পোরেশন (এনটিপিসি) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)-র অংশীদারিত্বে রামপালে নির্মিত হচ্ছে বিতর্কিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র৷ এছাড়াও ২০১৭ সালের এপ্রিলে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকালে দুই দেশের মধ্যে ৩৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ ও অর্থায়ন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Malukas
জ্বালানি সহযোগিতা
বাংলাদেশে যেসব দেশের প্রতিষ্ঠান পরিশোধিত তেল সরবরাহ করে তার একটি ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড৷ সেখান থেকে ডিজেল আমদানির জন্য শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশের সরকার৷ ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সে এর উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী৷
ছবি: Reuters/E. Gaillard
সমুদ্র বিরোধের নিষ্পত্তি
বঙ্গোপসাগরে ২৫,৬০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধ ছিল৷ তার মধ্যে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে নেদারল্যান্ডসের স্থায়ী সালিশি আদালতের রায়ে ১৯,৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পেয়েছে বাংলাদেশ৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Str
ছিটমহল বিনিময়
২০১৫ সালের জুলাইতে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন হয়৷ ভারতের ১১১টি ছিটমহল যুক্ত হয় বাংলাদেশের সাথে আর সেখানকার বাসিন্দারা পায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব৷ একইভাবে ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলও লীন হয়ে যায় দেশটির সাথে৷
ছবি: AFP/Getty Images
প্রাণঘাতী সীমান্ত
দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও সীমান্তে দেশটির আচরণে তার প্রতিফলন নেই৷ গত ১০ বছরে ২৯৪ বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ৷ সীমান্ত পারাপারে অস্ত্র ব্যবহার করবে না দুই দেশ, ২০১১ সালে বিজিবি-বিএসএফ পর্যায়ে এমন চুক্তি হলেও বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা৷
ছবি: AP
ফারাক্কা বাঁধ
গঙ্গা নদীতে বাংলাদেশ সীমান্তের ১৮ মাইল উজানে ফারাক্কা বাঁধ তৈরি করে ভারত৷ ১৯৬১ সালে শুরু হয়ে কাজ শেষ হয় ১৯৭৫ সালে৷ শুস্ক মৌসুমে বাঁধের গেট বন্ধ রেখে বাংলাদেশে পানি প্রবাহে বাধা তৈরি করে ভারত৷ অন্যদিকে বর্ষায় খুলে দেয়া হয় সবগুলো গেট, যার ফলে উত্তরাঞ্চলে দেখা দেয় বন্যা৷
তিস্তা চুক্তি
১৯৮৭ সালের পর থেকে তিস্তার পানি নিয়ে ভারতের সাথে কোনো চুক্তি নেই বাংলাদেশের৷ একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে দেশটি৷ ফলে বাংলাদেশ অববাহিকায় পানিসংকট চলছে৷ ২০১১ সালের ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর ঢাকা সফরে এই বিষয়ে চুক্তি সই হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা হয়নি৷
ছবি: DW/A. Chatterjee
রোহিঙ্গায় পাশে নেই
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে নেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি৷ শুরু থেকেই এ বিষয়ে মিয়ানমারের অবস্থানকেই বরং সমর্থন জানিয়ে আসছে দিল্লি৷ এমনকি সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের (ইউএনএইচআরসি) অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এক ভোটাভুটিতেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটি৷
ছবি: Getty Images/P. Bronstein
নতুন জটিলতা এনআরসি
সম্প্রতি হালনাগাদ নাগরিকঞ্জি প্রকাশ করে ভারতের আসাম রাজ্য৷ তাতে রাতারাতি নাগরিকত্ব হারিয়েছেন ১৯ লাখেরও বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগ মুসলিম৷ বাদ পড়াদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলে আসছে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারা, যা বাংলাদেশের জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Nath
ক্রিকেটের উত্তেজনা
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটের সম্পর্কটাও রাজনীতির মতোই ঐতিহাসিক৷ টাইগাররা ঢাকায় প্রথম টেস্ট খেলেছিল ভারতের বিপক্ষেই, ২০০০ সালে৷ তবে ভারতে টেস্ট খেলার সুযোগের জন্য ১৭ বছর অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে৷ দুই দলের মধ্যে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্ট অবশ্য হয়েছে অনেক৷ সেখানে বেশ কিছু টানটান উত্তেজনার ম্যাচও হয়েছে৷ আগামী নভেম্বরে এই প্রথম দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ভারত সফরে যাবে বাংলাদেশ দল৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Singh
16 ছবি1 | 16
‘বাংলাদেশ’ চায় বিদেশি ছবি
আরেকটা খবরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের বেশির ভাগ মানুষের জন্য বড় বিপদের ইঙ্গিত দেখছি৷ গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার ধারা ঠেকাতে বিদেশি ছবি আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশক প্রদর্শক এবং পরিচালক সমিতি৷ এর পাশাপাশি যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের নীতিমালা সহজ করার দাবিও সরকারের কাছে জানিয়েছেন তিন সংগঠনের নেতারা৷
যারা চলচ্চিত্রে টাকা লগ্নি করেন, যারা নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র এবং যারা সেগুলো প্রেক্ষাগৃহে চালান, তারা সবাই মিলে বলছেন, ‘‘আমরা এখন থেকে হিন্দি ছবি, ইংরেজি ছবি, মোট কথা বিদেশি ছবিও আমদানি করে সারা দেশে দেখাতে চাই৷''
দিন কেমন বদলে গেল! এক সময় না হিন্দির কথা শুনলেই আগ্রাসনের হাত থেকে ভাষা, সংস্কৃতিকে রক্ষার দাবিতে সংস্কৃতি-সংশ্লিষ্টরা সোচ্চার হতেন? এখন সবাই নীরব কেন? চলচ্চিত্রে মহাসংকটকাল চলছে বলে? মহাসংকটে তো সরকার সবাইকে নিয়ে কোমর বেঁধে চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে নামবে৷ কই, সেরকম কোনো আভাস ইথারে নেই তো!
কার লোভে, কার লাভে?
ঢাকাই চলচ্চিত্রে সংকট অনেক দিন ধরে৷ তবে নিরসনের চেষ্টা জোরালোভাবে কখনোই হয়নি৷ হলে তো দেশ ডিজিটাল হওয়ার পাশাপাশি খুব ধীরে হলেও দেশের সিনেমা হলগুলো মোটামুটি আধুনিক হতো৷ সিনেপ্লেক্স, মাল্টিপ্লেক্স হতো শহরে শহরে৷
বাংলাদেশ ডিজিটাল হতে শুরু করার আগেই অবশ্য ‘অশ্লীলতার যুগ’ এসেছিল চলচ্চিত্রে৷ মধ্যবিত্ত বাঙালি সেই যে মুখ ফেরালো আর হলমুখো হয়নি৷
এ সময়ে দর্শককে হলে টেনে নেয়ার মতো বিশেষ কিছু ঘটেওনি৷ ভালো ছবির সংখ্যা কমেছে, হলের পরিবেশ দিন দিন খারাপ হয়েছে, এর ওপর জঙ্গিদের বোমা হামলাও হয়েছে সিনেমা হলে৷ এত কিছুর পর মানুষ কষ্ট করে হলে আসবে কেন দেশের সিনেমা দেখতে ?
খুব স্মরণীয় খুব ভালো ছবিও দু-চারটাই হয়েছে গত এক দশকে৷ অথচ লম্বা একটা সময় হলে দেদার চলেছে হিন্দি, পাঞ্জাবী, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, ফ্রেঞ্চ, এমনকি হলিউডের ছবিরও বাংলা সংস্করণ৷ বিশ্বের আর কোথাও এমন হয়েছে কিনা সন্দেহ৷
জাজ মাল্টিমিডিয়া নামের এক প্রোডাকশন হাউজ দেশের অধিকাংশ সিনেমা হলে প্রোজেক্টর, সাউন্ড সিস্টেম ও সার্ভার বসিয়ে দিয়েছিল নিজেদের খরচে৷ বিনিময়ে হল মালিকদের বলেছিল টিকিটপ্রতি তিন টাকা করে দিতে৷ কেউ দেখলেন ঝকঝকে প্রিন্ট৷ তারা খুব খুশি৷ আবার হল মালিকরা দেখলেন নগদ টাকা না দেয়া সত্ত্বেও প্রোজেক্টর, সাউন্ড সিস্টেম এসে গেছে৷ ফলে তারাও খুশি৷ কিন্তু হলে চলছিল মূলত হিন্দি, পাঞ্জাবী, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, ফ্রেঞ্চ এবং হলিউডের ছবির বাংলায় গোঁজামিল৷ এতে যে চলচ্চিত্রের সর্বনাশ হচ্ছে সেকথা জোরেশোরেই উঠেছে তখন৷ কিন্তু তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে চলচ্চিত্রের সার্বিক স্বার্থ সংরক্ষণে কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি৷ ফলে সিনেমা হলগুলোর দীর্ঘস্থায়ীত্ব এবং চলচ্চিত্রের অধিকাংশ পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলীর অস্তিত্বের বিষয়টি পেয়েছে যৎসামান্য গুরুত্ব৷ জাজ মাল্টিমিডিয়ার বিরুদ্ধে যৌথ প্রযোজনার ছবির নামে ঢাকাই ছবির ক্ষতি করার অভিযোগও উঠেছে৷ তখন তারও কোনো প্রতিকার হয়নি৷
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ ও তার ভাই, ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরের বিরুদ্ধে ৯১৯ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক৷
বলে রাখা ভালো, জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রোজেক্টর, সাউন্ড সিস্টেম লাগিয়ে, হিন্দি, পাঞ্জাবী, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, ফ্রেঞ্চ ইত্যাদি ভাষার ছবি বাংলায় বানিয়েও খুব যুক্তিসঙ্গত কারণেই হল বন্ধ হওয়া রুখতে পারেনি৷
নব্বইয়ের দশকেও সারা দেশে যেখানে দেড় হাজারের মতো সিনেমা হল ছিল, এ বছর তা হয়তো ৫০-এ এসে ঠেকেছে৷ সংখ্যাটা ঠিক কত তা বলা মুশকিল, কারণ, সে হিসেব কেউ রাখে না৷ সংবাদ মাধ্যমের দেয়া তথ্যের ওপরও ভরসা রাখার জো নেই৷ ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন বলছে সারা দেশে হল সংখ্যা ৭০,ঠিক পরের দিনই সময় নিউজের প্রতিবেদন বলছে ৬০৷ ভরসা রাখবেন কীভাবে?
তা সংখ্যাটা ৭০, ৬০ বা ৫০ যা-ই হোক না কেন এখন সেগুলোকেও টিকিয়ে রাখতে নাকি বিদেশি ছবি আমদানিতে রাজি হয়ে বসে আছে চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক, প্রদর্শক এবং পরিচালক সমিতি৷ পাশাপাশি তারা বলছেন, বিদেশি ছবি আমদানি করা হলেও দেশের নির্মাতা এবং দেশের ছবিকেই প্রাধান্য দেয়া হবে৷ তিনটি সংগঠনের নেতারা বলছেন, একে তো দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ খুব কমে গেছে, তার ওপর করোনা আসায় কেউ আর চলচ্চিত্রে অর্থ লগ্নির ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না৷ মূলত এই দুটো কারণেই নাকি বিদেশি ছবিকে ‘স্বাগতম' বলতে চান তারা৷
কিন্তু হিন্দি এবং অন্যান্য ভাষার বিদেশি ছবি এলে টিকে থাকা গোটা পঞ্চাশেক হলের মালিক কর্মাচারী মিলিয়ে দুশ'- তিনশ' মানুষের হয়ত একটা গতি হবে, কিন্তু বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের কী হবে সেটা কি তারা ভেবে দেখেছেন?
পেঁয়াজ আসবে, হল বাঁচবে আর শিল্পীরা মরবেন?
সরকার বিদেশি ছবি আমদানির অনুমতি দিলে হিন্দি ছবিই যে অধিকাংশ হলে চলবে তাতে সন্দেহের সুযোগ কম৷ আর মোটামুটি বাজেটের হিন্দি ছবির পাশে অতি নগন্য বাজেটের ঢাকাই বাংলা ছবি কি আদৌ দাঁড়াতে পারবে? দর্শক দেখবে সেসব ছবি? না দেখলে কত শত শিল্পী-কলাকুশলী পথে বসবেন বিদেশি ছবি আমদানি শুরুর আগে সেটাও ভেবে দেখা দরকার৷
নইলে কারো গুলি না খেয়েও হয়ত অনেক মানুষ মারা যাবেন৷
‘সব জিনিসের মূল্য আছে মানুষের দাম নাই’
৪৮ বছর আগে ‘মানুষের মন’ ছবিতে নায়করাজ রাজ্জাক ফেরিওয়ালা হয়ে গানে গানে যা বলেছিলেন বাংলাদেশে তা এখনো খুব প্রাসঙ্গিক ৷ মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর গাওয়া ‘এই শহরে আমি যে এক নতুন ফেরিওয়ালা' গানটির গীতিকার গাজী মাযহারুল আনোয়ার৷ বিবিসি বাংলার তালিকা অনুযায়ী সর্বকালের সেরা কুড়িটি বাংলা গানের তিনটির রচয়িতা ওই গানের সঞ্চারিতে লিখেছিলেন,
‘‘চার চাকাতে ভাগ্য বেঁধে বুঝে নিলাম ভাই
সব জিনিসের মূল্য আছে মানুষের দাম নাই৷’’
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং কলাকুশলীদের জীবনের দাম কি আছে কারো কাছে? বিদেশি ছবি আমদানি শুরুর আগে দেশের চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে কী কী করা হয় তা দেখলেই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে৷
গত নভেম্বরের ছবিঘর দেখুন...
‘নিউ নর্মালে’ ফিরছে বিনোদন, খেলাধুলা
করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খেলাধুলা ও বিনোদন জগত একেবারে থমকে গিয়েছিল৷ এখন আবার সবকিছু শুরুর চেষ্টা চলছে, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে৷
ছবি: Privat
স্বাস্থ্যবিধি মেনে নাটক, সিনেমার শুটিং
কোরবানির ঈদ থেকেই বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে শুরু হয়েছে টিভি নাটকের শুটিং৷ ঢাকার অদূরে শুটিং স্পট পূবাইলে ২০-এর অধিক শুটিং হাউজের সবকটিই ব্যস্ত সময় পার করছে৷ ব্যস্ত উত্তরার শুটিং হাউজগুলোও৷ আর সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই একটু একটু করে জমতে শুরু করে ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রধান কেন্দ্র এফডিসি৷ ছবিতে সরকারি অনুদান পাওয়া ‘আশীর্বাদ’ চলচ্চিত্রের শুটিং দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Privat
শর্তসাপেক্ষে সিনেমা হল খুলছে
বাংলাদেশে প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকার পর ১৬ অক্টোবর থেকে সিনেমা হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ তবে শর্ত হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও আসন সংখ্যার অর্ধেক টিকিট বিক্রি করতে বলা হয়েছে৷ দর্শকদের মাস্ক পরতে হবে৷ স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে হল বন্ধ করে দেয়া হতে পারে৷
ছবি: DW/M. Mamun
নাটকের মঞ্চায়ন
আগস্টে ঢাকার বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনের মঞ্চে আয়োজন করা হয় শূন্যনের নাটক ‘লাল জমিন’৷ সেপ্টেম্বর মাসে সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার দুদিন নিজস্ব মহড়াকক্ষে স্বল্পসংখ্যক দর্শকের জন্য নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল ‘প্রাচ্যনাট’৷
ছবি: Dhaka Theater
‘ড্রাইভ ইন মুভি ফেস্ট’
করোনার কারণে বিশ্বের অনেক দেশেই এ ধরনের চল দেখা গেছে৷ এবার বাংলাদেশেও সেটা আয়োজনের চেষ্টা চলছে৷ চলতি মাসেই এমন একটি উৎসব অনুষ্ঠিত হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্টেজে গাইতে না পারার আক্ষেপ
করোনার কারণে স্টেজে গান গাইতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন৷ তবে সম্প্রতি তিনি সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন৷ কবরীর অনুদানের ছবি ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে প্রথমবারের মতো সংগীত পরিচালনা করছেন তিনি৷ সম্প্রতি তেজগাঁওয়ের এক স্টুডিওতে নিজের সুর করা গানেই কণ্ঠ দেন সাবিনা ইয়াসমিন৷
ছবি: Privat
জয়ার শর্ত
কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনুদানের ছবি ‘বিউটি সার্কাস’এর শেষ দৃশ্য ধারণে অংশ নিয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান৷ এক্ষেত্রে জয়ার প্রথম শর্তই ছিল শুটিংয়ের সময় কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে৷
ছবি: Privat
করোনার কারণে ছোট টিম
‘বিউটি সার্কাস’এর পরিচালক মাহমুদ দিদার জানান, অন্য সময় শুটিং টিমে প্রায় শতাধিক সদস্য থাকতো, এখন তা বড়জোর ২০-২৫ জনে নেমে এসেছে৷
ছবি: Privat
খুলছে শিল্পকলা একাডেমি
এ মাসেই শিল্পকলা একাডেমি খোলা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এমএ খালেদ৷ তিনি বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একাডেমিতে প্রবেশ ও মিলনায়তনগুলোতে বসার ব্যবস্থা করা হবে৷ এ নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরি হচ্ছে৷ যে নাট্যদলগুলো হল বরাদ্দ নেবে বা আবেদন করবে, তাদের এই নীতিমালা মেনে হল সরবরাহ করা হবে৷
ছবি: Privat
ভিড় বেশি, তাই আলো বন্ধ
১১ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর বার্লিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৬তম ‘ফেস্টিভ্যাল অফ লাইটস’৷ এই সময় বার্লিনের বিভিন্ন ভবন আলোকিত করা হয়েছিল৷ তবে এ বছর আলো দেখতে আসা মানুষের ভিড় বেড়ে গেলে কিছু সময়ের জন্য আলো নিভিয়ে দেয়া হয়েছিল, যেন ভিড় কমে যায়৷ করোনার কারণে এই নিয়ম৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency/S. Yuqi
অনলাইন কনসার্ট
সম্প্রতি ইতিহাসের প্রথম কোরিয়ান পপ ব্যান্ড হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিলবোর্ড হট হান্ড্রেড’ সিঙ্গেলসের শীর্ষে উঠেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস-এর প্রথম ইংলিশ সিঙ্গেলস ‘ডায়নামাইট’৷ তবে করোনার কারণে কনসার্ট করতে পারছে না বিটিএস৷ তাই হতাশ সমর্থকদের আনন্দ দিতে অনলাইনে কনসার্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা৷ সৌলে অনুষ্ঠিত কনসার্টটি ১০ ও ১১ অক্টোবর অনলাইনে লাইভস্ট্রিম করা হবে৷
ছবি: picture-alliance/Yonhap
অনলাইনে মিউজিয়াম
করোনার কারণে মিউজিয়াম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হওয়ার পর অনেক মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ অনলাইনে তাদের সংগ্রহ দেখার ব্যবস্থা করেছিল৷ বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিউজিয়াম খুললেও অনলাইনের সুযোগ এখনো রেখে দিয়েছে অনেকে৷
ছবি: TU Darmstadt/Architectura Virtualis
দর্শকহীন মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
জুলাইয়ে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠে ফিরেছিল৷ করোনার কারণে খেলা হয়েছে দর্শকশূন্য মাঠে৷ এছাড়া বল চকচকে দেখাতে থুথু মেশানোর উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল৷ এরপর পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়াও ইংল্যান্ড সফর করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Dennis
আইপিএল-ও ব্যতিক্রম নয়
নিজ দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএল আয়োজন করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড৷ খেলা হচ্ছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়াম৷ তবে টিভিতে আইপিএল দেখে রোমাঞ্চিত হচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা৷ উপরের ছবিটি গতবছরের৷
ছবি: IANS
বাংলাদেশের ক্রিকেট
শ্রীলঙ্কায় কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত টাস্কফোর্সের নিয়মের কারণে সে দেশে এখনই সফরে যেতে পারছেন না টাইগাররা৷ অথচ সেই সফর দিয়েই মাঠে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন তারা৷ অপেক্ষায় ছিলেন দুই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও৷ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করতে না পারায় এখন ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করতে চাইছে বিসিবি৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Ali
বিশ্ব ফুটবলেও দর্শকহীন ম্যাচ
করোনার কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া ইউরোপীয় ফুটবল ফিরেছিল মে মাসে৷ পথ দেখিয়েছিল জার্মানির বুন্ডেসলিগা৷ এরপর একে একে ইংল্যান্ড, ইটালি ও স্পেনের লিগও শুরু হয়৷ অবশ্যই দর্শকহীন স্টেডিয়ামে৷ স্থগিত থাকা গত মৌসুমের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগও শেষ হয়েছে৷ এখন চলছে ২০২০-২১ মৌসুমের খেলা৷ ছবিতে এক সমর্থককে টিভিতে ২১ জুন অনুষ্ঠিত লিভারপুল-এভারটনের ম্যাচটি দেখতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/M. Childs
আছে ব্যতিক্রমও
২৪ সেপ্টেম্বর হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত উয়েফা সুপার কাপ ফাইনালের সময় স্টেডিয়ামে ১৫ হাজারের বেশি দর্শক উপস্থিত ছিলেন৷ ইউরোপা লিগের সেরা সেভিয়াকে ২-১ গোলে হারায় চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা বায়ার্ন মিউনিখ৷ করোনার পর এই প্রথম দর্শকদের সামনে ফুটবল খেলেছে বায়ার্ন ও সেভিয়া৷ এছাড়া বুন্ডেসলিগার কিছু ম্যাচে অল্প সংখ্যক দর্শককে স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকতে দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: Bernadett Szabo/AP Images/picture-alliance
বাংলাদেশের ফুটবল
ফুটবলপাড়া এখন ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে৷ করোনায় গিলে খেয়েছে পেশাদার ফুটবল লিগের একটি মৌসুম৷ বাতিল হয়েছে আন্তর্জাতিক ম্যাচও৷ আগামী ডিসেম্বর থেকে ফেডারেশন কাপ দিয়ে ঘরোয়া ফুটবল চালু হবার কথা৷
ছবি: Mir Farid
টেনিস
সম্প্রতি হয়ে গেল ইউএস ওপেন৷ তবে তাতে অংশ নেননি পুরুষ ও মহিলা এককের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদাল ও বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু৷ করোনা মহামারির স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে প্রথমজন এবং পরেরজন সে কারণেই যথাযথ প্রস্তুতি না নিতে পারায় অংশ নেননি৷ ডমিনিক থিয়েম ও নাওমি ওসাকা হয়েছেন ইউএস ওপেনের নতুন রাজা-রানি৷