1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের চোখে শরিফ-কারজাই বৈঠক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৭ আগস্ট ২০১৩

আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন৷

ছবি: AFP/Getty Images

বৈঠকের প্রথম ও প্রধান ইস্যু কাবুলের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় তালেবান জঙ্গিদের রাজি করানো এবং তার জন্য পাকিস্তানের সাহায্য আদায়৷

গত দেড় বছরে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই-এর এটাই প্রথম ইসলামাবাদ সফর৷ ২০১৪ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সরে যাবার পর, তালেবানের সহিংসতা যাতে দেশের শান্তি ও সুস্থিতি বানচাল করে দিতে না পারে, তার জন্য তালেবান জঙ্গিদের সঙ্গে ১২ বছরের লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে এবার সরাসরি শান্তি আলোচনায় বসতে চায় কাবুল৷ এ জন্য তালেবান জঙ্গিদের রাজি করাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সাহায্য চাইতেই কার্যত কারজাই-এর ইসলামাবাদ সফর৷

মনে করা হয়, পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের নানাভাবে মদৎ দিয়ে থাকে৷ আশ্রয় দিয়ে, অর্থ সাহায্য দিয়ে, অস্ত্র সাহায্য দিয়ে৷ পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আফগানিস্তানে সংঘর্ষ বন্ধ করতে সব কিছু করতে রাজি পাকিস্তান৷ এমনকি, পাকিস্তানের জেলে আটক তালেবান উপ-প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বারাদরসহ তালেবান জঙ্গিদের মুক্তি দিতেও রাজি তারা৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, তালেবান জঙ্গিরা কাবুলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় রাজি নয়, যেহেতু, তাদের মতে, কাবুল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুলমাত্র৷ সেক্ষেত্রে তালেবান পাকিস্তানের কথা কতটা শুনবে সে বিষয়ে সংশয় আছে৷ পাকিস্তান অনুরোধ করতে পারে মাত্র, জোর খাটাবার ক্ষমতা তাদের নেই, এমনটাই ধারণা বিশ্লেষকদের৷

আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইছবি: Shah Marai/AFP/Getty Images

কারজাই-নওয়াজ শরিফ আলোচনাকে কী চোখে দেখছে ভারত? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমন কল্যাণ লাহিড়ি কথা প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে জানালেন, ভারত এটাকে ভালো চোখে দেখবে না৷ ভারত কখনই চাইবে না, জঙ্গি সংগঠনগুলি জোরদার হোক৷ তালেবানের শক্তি বাড়লে ভারতের পক্ষে সেটা শুভ হবে না৷ পাশাপাশি ২০১৪ সালে সব বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাবার বিষয়েও সংশয়ও প্রকাশ করেন তিনি৷

আসলে আফগান সমস্যাটা বেশ জটিল ও স্বার্থের দ্বন্দ্বে দীর্ণ৷ ভুললে চলবে না আফগানিস্তানে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী৷ ভারতের সঙ্গে কাবুলের স্ট্র্যাটিজিক সম্পর্ক সেটা আরো বাড়িয়ে তুলেছে৷ ডুরান্ড লাইনকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বলে মানতে রাজি নয় কাবুল৷ বালুচিস্তানে পাক-বিরোধী জঙ্গি তৎপরতার পেছনে ভারতের ছায়া আছে বলে সন্দেহ পাকিস্তানের৷ দিল্লির প্রতি কাবুলের ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা নিরাপত্তার দিক থেকে ইসলামাবাদ ভালোভাবে নেয়নি৷ সন্দেহ ভারত ও আফগানিস্তান মিলে পাকিস্তানকে ঘিরে ফেলতে চায় – ডয়চে ভেলেকে এমনটাই বললেন অধ্যাপক লাহিড়ি৷

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে দিল্লি ঘুরে গেলেন আফগান ভাইস-প্রেসিডেন্ট করিম খালিলি৷ বোঝার চেষ্টা করনলে কারজাই-শরিফ বৈঠক ভারত কীভাবে নেবে৷ ভারতের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে তালেবান সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেছে, আফগানিস্তানের শান্তি, সুস্থিতি ও সমৃদ্ধি সর্বদাই ভারতের কাম্য৷ আন্তর্জাতিক বাহিনী সরে যাবার পর একক আফগান নেতৃত্ব, একক আফগান নিয়ন্ত্রিত সালিশি প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে যাবে ভারত৷ তবে জঙ্গি নেতৃত্বকে যেন হাল ধরতে দেয়া না হয়৷

একমাত্র অস্ত্রশস্ত্র ছাড়া আফগানিস্তানকে আর্থিক ও অবকাঠামো এবং বিনিয়োগসহ সব রকম সাহায্য দিয়ে যাবে ভারত৷ আফগানিস্তান যাতে নিজের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজে সামলাতে পারে, তার জন্য কিছু আফগান সামরিক অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং দিচ্ছে ভারত৷

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ার বড় বাধা ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা৷ তাই দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর কার্যভার নিয়ে নওয়াজ শরিফ ভারতের দিকে শান্তির হাত বাড়িয়ে দেয়ায়, সকলেই একটা ইতিবাচক পরিণাম আশা করছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ