একটা সময় ছিল, যখন ভারতকেও দাদাগিরি সহ্য করতে হয়েছে৷ তবে সেই সময় এখন অনেকটাই বদলেছে৷
বিজ্ঞাপন
কী বলা যাবে একে? উলটপুরাণ নাকি অবাক করা ঘটনা? না হলে যে অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে অতীতে বারবার অভিযোগ উঠত, তারা আমাদের দেশের বিষয়ে নাক গলাচ্ছে, ভোটের ফল প্রভাবিত করতে চাইছে, সিআইএ-কে দিয়ে রাজনৈতিক খেলা করছে, সেই অ্যামেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ভারতে এসেছিলেন একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে৷ উদ্দেশ্যটা হলো, অ্যমেরিকার সেই ভোটদাতাদের খুশি করা, যারা একসময় ভারত থেকে গেছিলেন, যাদের পোশাকি নাম এখন ইন্ডিয়ান অ্যামেরিকান৷ গুজরাটে 'নমস্তে ট্রাম্প' অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তো প্রায় ট্রাম্পের হয়ে ভোট দেয়ার আবেদন জানিয়ে ফেলেছিলেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন৷
সেটাই বলছিলাম উলটপুরাণ৷ ভোটের আগে ট্রাম্পের ছেলে হিন্দু মন্দিরে গেছেন, ট্রাম্প বলছেন, ভারতীয়রা তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু৷ বাইডেন এসব করছেন ভোটের পর৷ হোয়াইট হাউসে ভোটের পর কমলা হ্যারিসকে পাশে নিয়ে সবচেয়ে ধুমধাম করে দেওয়ালি পালন করেছেন জো বাইডেন৷ সবচেয়ে বেশি ইন্ডিয়ান অ্যামেরিকানদের প্রশাসনে নিয়ে এসেছেন তিনিই৷ এরপর কয়েকদিন আগে নরেন্দ্র মোদী যখন গেছেন, তখনও তাকে বিপুলভাবে স্বাগত জানিয়েছেন বাইডেন৷
এ শুধু অ্যামেরিকায় এক শতাংশ ইন্ডিয়ান-অ্যামেরিকান ভোটদাতাদের কথা মনে রেখে নয়, এটা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় বাজারের কথাও মাথায় রেখেও৷ তাই এখন ভোটের সময় দূরস্থান, সাধারণ সময়েও ভারতের সমালোচনা করা, প্রকাশ্যে চাপ দেয়ার রাস্তায় যায় না অ্যামেরিকা এবং অন্য কোনো পশ্চিমা দেশ৷ ভিতরে ভিতরে কী চেষ্টা হয়, সেটা তো আলাদা কথা, তা তো আর প্রকাশ্যে দেখা য়ায় না৷ যে কাণ্ডটা এখন বাংলাদেশে হচ্ছে, কখনো অ্যামেরিকা, কখনো ইউরোপের কোনো দেশ নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে, কখনো শাসকদের সমালোচনা করছে, সেটা এখন ভারতে অভাবনীয়৷ অথচ, কয়েকদশক আগেও মানবাধিকার নিয়ে, কাশ্মীর নিয়ে, দাঙ্গা নিয়ে সোচ্চার হত পশ্চিমা দুনিয়া৷
ইন্দিরা গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন তো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল আদায় কাঁচকলায়। নিক্সন যে শুধু ইন্দিরা সম্পর্কে অশোভন উক্তি করতেন তাই নয়, তিনি বলেছিলেন, ভারতীয় নারীরা হলেন বিশ্বের সবচেয়ে কম আকর্ষনীয়৷ নিক্সন ও কিসিঙ্গার যে ইন্দিরা ও ভারতীয় সম্পর্কে কী বলেছিলেন, তার একটি নথি কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে৷ সে সব গালাগালি লেখার মতো নয়। ফলে সেসময় ভারত সম্পর্কে, ভারতের ভোট এলে নানা ধরনের অশোভন মন্তব্য, দাদাগিরির চেষ্টা সবই হয়েছে৷
আর ছিল সিআইএ ও কেজিবি নিয়ে নানা অভিযোগ৷ সিআইএ হলো মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ ও কেজিবি ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা শাখা৷ তখন ভারতে কিছু হলেই বলা হত, হয় তা কেজিবি করেছে বা সিআইএ৷ অমিতাভ চৌধুরির একটা মজার ছড়া আছে এনিয়ে, ‘‘হাঁড়ির মধ্যে অনেক ভাত/তার একটি টিপিয়াই,/কোনটি আসল সিআইএ-র/ বলতে পারেন সিপিআই৷’’ সিপিআই মানে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া, যারা ছিল রুশপন্থি এবং সিআইএ নিয়ে সবচেয়ে সোচ্চার৷
নরসিমহা রাও যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন তিনি এবং সেসময়ের অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং ভারতের দরজা খুলে দিলেন বহুজাতিক সংস্থার কাছে৷ উদার অর্থনীতির পথে হাঁটলেন৷ ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি উঠে গেল৷ এবার ছবিটা বদলে গেল। রাষ্ট্রসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে ভারত ও অ্যামেরিকার মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৫৪২ কোটি ডলার৷ ১৯৯৬ সালে তা হয়ে গেল ৯৮৬ কোটি ডলার৷ ২০০৪ সালে দুই হাজার ২৪৬ কোটি ডলার৷ ২০১৪ সালে ছয় হাজার ৮৫৯ কোটি এবং ২০২২-২৩ এ ১২ হাজার ৮০০ কোটি৷
ভারত বোয়িং ও এয়ারবাস কিনলে ঋষি সুনাক ও বাইডেন বলেন, তাদের দেশে কর্মস্স্থান বাড়বে, অর্থনীতি জোরদার হবে৷ রাশিয়া থেকে তেল কিনলেও ভারতের সাত খুন মাফ৷ বাইডেনের দূত প্রথমে এসে বলে গিয়েছিলেন, ভারত যেন সীমার মধ্যে থেকে তেল কেনে৷ সীমা মানে ইউক্রেন যুদ্ধের আগের বছরের থেকে সামান্য বেশি৷ জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক, ইইউ প্রধান থেকে শুরু করে অনেকে বলেছিলেন, রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা উচিত নয়৷ ভারত তাদের কথা কানে নেয়নি৷ এখন আর কেউ তেল নিয়ে কেউ বিশেষ কথা বলেন না৷ বললে, জয়শঙ্কর হিসাব দিয়ে দেখিয়ে দেন, কীভাবে ইইউ ভারতের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণ তেল রাশিয়া থেকে কিনছে৷
ভারতে যখন গণপিটুনিতে হত্য়ার খবর প্রায়ই খবরের কাগজে প্রথম পাতায় থাকত, দিল্লিতে অভাবনীয় দাঙ্গা হলো, নূপুর শর্মা বিতর্কিত মন্তব্য করলেন, তখনো অ্যামেরিকা বা ইউরোপের দেশ থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসেনি৷ কেন? একজন বিদেশি কূটনীতিক একবার ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বলেছিলেন, ‘‘আমরা ভারতের বাজারকে হারাতে চাই না৷ তাই দেখবেন, ইউরোপ বা অ্যামোরিকা এখন ভারতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলে না৷’’ করোনা-পরবর্তীকালে চীনের বিকল্প একটা বাজার ও বিনিয়োগের জায়গা খুলে রাখতে চাইছে পশ্চিমা দেশগুলি যেখানে কম দামে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক পাওয়া যাবে৷ তাই ভারতকে তারা চটাতে চায় না৷
কে না জানে, এখন অর্থনীতিই রাজনীতির চালিকাশক্তি৷ সেই শক্তিটা ভারতের বেড়েছে বলেই আগের অবস্থা আর নেই৷ এখন কোনো বিদেশি রাষ্ট্র দিল্লিতে এসে বা নিজের দেশে বসে একথা বলে না যে ভারতের নির্বাচনকে স্বচ্ছ্ব করতে হবে৷ বলে না যে, ভারতের নির্বাচন নিয়ে তাদের মনে প্রশ্ন আছে, তারা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে৷ এসব কথা বললে, হয় তার উপযুক্ত জবাব দেবে নয়াদিল্লি৷ অথবা এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেবে, যার প্রভাব তাদের সংস্থার উপর, তাদের বাণিজ্যের উপর পড়বে৷
বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন পোখরানে দ্বিতীয় পরমাণু বিস্ফোরণ করে ভারত৷ তারপর অ্যামেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলি ভারতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল৷ তাতে ভারতের খুব একটা ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি৷ কিন্তু ক্ষতির মুখে পড়েছিল পশ্চিমা দেশগুলি৷ তারপর তারা সেই নিষেধাজ্ঞা চুপচাপ তুলে নেয়৷ সেই জায়গা থেকেও অনেকটা আগে চলে এসেছে ভারত৷
তাই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলি যখন এরকম মন্তব্য করছে, তখন ভারতের বর্তমান প্রজন্ম অবাক হয়ে যাচ্ছে৷ কারণ, এখনকার ভারতে এই ঘটনা তো ঘটে না৷
বাংলাদেশে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের যত মন্তব্য
নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতিকদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়৷ ২০০০ সালের পর থেকে এমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা থাকছে ছবিঘরে৷
২০০০ সালের পর থেকে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলোর প্রায় প্রত্যেকটির আগে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূতদের কথা বলতে দেখা গেছে৷ বিদেশি কূটনীতিকদের এমন আচরণকে সবসময় ক্ষমতাসীন দল ‘শিষ্টাচার লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করে। আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে তা ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার’ পদক্ষেপ৷
ছবি: AP
‘স্টুপিড রাষ্ট্রদূত’
চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষের আগে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের তৎপরতা দেখা যায়৷ তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, ‘‘কিছু কিছু দালাল রাষ্ট্রদূত মহাজোটকে (আওয়ামী লীগ ও তার জোট) সংবিধান ধ্বংসের উসকানি দিচ্ছেন৷ তাদের কর্থাবার্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরুপ৷’’ বাংলাদেশে মার্কিন ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ‘স্টুপিড’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
২০ বছর পর আওয়ামী লীগের মুখেও একই সুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে ভিসা নীতি। কথা বলছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকেরাও। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বা বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন বিষয় বা অনুষ্ঠান থেকে কূটনীতিবিদেরা বিরত থাকবেন বলে আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর৷
ছবি: DW
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট
২০০১ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে আগস্টে ঢাকায় আসেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত‘ করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসেন তিনি৷ ঢাকা ত্যাগের আগে সংবাদ সম্মেলনে কার্টার জানান, ১) সংসদ বর্জন নয় ২) হরতাল নয় ৩) সন্ত্রাস নয় ৪) ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় পর্যবেক্ষক এবং ৫) কমপক্ষে ৬০জন নারী এমপি, এই পাঁচ প্রশ্নে একমত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি৷
ছবি: John Amis/REUTERS
‘বাংলাদেশ ট্রাবলসাম হয়ে উঠেছে’
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, জঙ্গিবাদের উথ্থানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় আসে বাংলাদেশ৷ এমন প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পরররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের এক বক্তব্য বেশ আলোড়ন তোলে৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বেশ ট্রাবলসাম বা সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে এবং এ ব্যাপারে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) কিছু করতে হবে।’’
ছবি: DW/O. Sawizky
বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠি
সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে৷ এমন ঘটনা নতুন নয়৷ ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ১৬ বা ১৮ জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান-সিনেটর পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বুশের কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংস জঙ্গিবাদের ব্যাপারটি উথ্থাপন করার অনুরোধ জানান৷
ছবি: Anna Moneymaker/Getty Images
এক-এগারো সরকার ও কূটনীতিকেরা
চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগেই বাংলাদেশে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইত্যাদি বিষয়ে সম্পূর্ণ দুই মেরুতে অবস্থান নেয় সেসময় ক্ষমতায় থাকা বিএনপি ও প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করে কূটনীতিকেরা।
ছবি: DW
সরব পশ্চিমারা
চারদলীয় জোটের সময়কালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপরতা দেখা যায় পশ্চিমা কূটনীতিকদের৷ ২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে ফোন করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নিকোলাস বার্নসে৷ সব দল যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন৷
ছবি: Jakub Porzycki/NurPhot/picture alliance
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের 'কফি গ্রুপ’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকাস্থ পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করতেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘কফি গ্রুপ’। এর সাথে সম্পৃক্ত ছিল অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও জাতিসংঘের প্রতিনিধি। এই গ্রুপে জাপানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উইকিলিকসে প্রকাশিত তথ্য এমন ইঙ্গিত দেয়।
ছবি: DW
চাকরির নিশ্চয়তা চান সেনাপ্রধান
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ সেসময়ের ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কাছে চাকরির নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত প্রণব মুখার্জি ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স’ এ জানান, মইন উ আহমেদের আশঙ্কা ছিল, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হবে। তার চাকরির দায়িত্ব প্রণব মুখার্জি ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
ছবি: DW / Samir Kumar Dey
সুজাতা সিংয়ের বিতর্কিত সফর
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এমন অবস্থানে অনড়৷ সেবছরের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নির্বাচন৷ ঠিক এক মাস আগে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। অনকের দাবি, সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির প্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে নির্বাচনে আসতে অনুরোধ জানান৷ এর ফলে বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন আয়োজন সহজ হয়৷
ছবি: DW
পুলিশ রাতে ব্যালট ভর্তি করেছে: জাপানের রাষ্ট্রদূত
দ্বাদশ নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই একাদশ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গত নির্বাচনে (২০১৮ নির্বাচনে) পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার যে অভিযোগ উঠেছে, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে কখনোই এমনটা শুনিনি। আশা করি আগামী নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। জাপান আশা করে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।’’
ছবি: U.S. Embassy Dhaka
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি
সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ ৷ ২৪ মে ঘোষিত ওই ভিসানীতিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে৷ এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি চ্যানেল 24-কে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইউরোপের বাজারে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধার দুয়ার খুলতে পারে।
সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি সমুন্নত রাখার প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রতি চীনের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। অবশ্য এক সপ্তাগ আগে গত শুত্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছে ঢাকার চীনা দূতাবাস।