সফলভাবে ৩১টি উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করলো ভারত, যার মধ্যে নিজের দেশের উপগ্রহ ছাড়াও আছে ৬টি অন্যদেশের উপগ্রহ৷ শুক্রবার ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে রকেটের সফল উৎক্ষেপণ হয়৷
বিজ্ঞাপন
চার মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে৷ নিরলস পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হয়েছে সফল উৎক্ষেপণের৷ শেষপর্যন্ত সাফল্য মিললো৷ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে ৩১ টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করলো ভারত৷ শুক্রবার উৎক্ষেপণের পর সাফল্যের কথা জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)-র বিজ্ঞানীরা৷ যদিও তারা জানিয়েছেন, আকাশে কিছু গ্রহের ভগ্নাংশের সঙ্গে রকেটটির ধাক্কা লাগার শঙ্কা দেখা দেয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের খানিক পর রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়৷ সে কারণেই নির্ধারিত সময়ের একটু পর উৎক্ষেপণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শেষমুহূর্তে৷
এর আগে আগস্ট মাসে আরেকটি রকেট মহাকাশে পাঠানোর চেষ্টা করেছিল ভারত৷ কিন্তু সেবার বিজ্ঞানীরা ব্যর্থ হন৷ মূলত উৎক্ষেপণ মুহূর্তে রকেটের বাইরের অংশের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণেই সেবার উৎক্ষেপণ সম্ভব হয়নি৷ তারপর থেকেই ইসরোর বিজ্ঞানীরা আরও একটি রকেট নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন৷ এদিনের উৎক্ষেপণের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশিষ্ট মানুষেরা সাধুবাদ জানান ইসরোর বিজ্ঞানীদের৷ অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷
এদিনের উৎক্ষেপণে পৃথিবীর কক্ষপথে দু’টি আবহাওয়া উপগ্রহ পাঠিয়েছে ভারত৷ বাকি ২৮টি ন্যানো উপগ্রহ অ্যামেরিকা, ক্যানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ব্রিটেনের৷ প্রতিটি উপগ্রহই ঠিক সময়ে নিজ নিজ অবস্থানে পৌঁছেছে৷
গত জুন মাসে শেষ সফল উৎক্ষেপণটি করেছিল ভারত৷ দেশের সবচেয়ে ভারী রকেটটি সেবার পাঠানো হয়েছিল মহাকাশে৷ ভারতের আশা, ভবিষ্যতে ওই রকেটে করেই মহাকাশে মহাকাশচারীও পাঠানো সম্ভব হবে৷ তা যদি হয়, তাহলে অ্যামেরিকা, চিন এবং রাশিয়ার পর ভারতই একমাত্র মহাকাশে মানুষ পাঠাতে পারবে৷
প্রস্রাব দিয়ে জ্বলবে বাতি!
হ্যাঁ, জ্বালানি তৈরির এরকম আরো অনেক বিকল্প এবং টেকসই উৎস নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ চলুন জেনে নিই, সাত বিকল্প উৎসের কথা যা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য জ্বালানি হতে পারে৷
ছবি: Wattway/COLAS/Joachim Bertrand
মলমূত্র
আমরা প্রতিদিন যা বিসর্জন করছি তা থেকে বিকল্প জ্বালানি তৈরির পথে বিজ্ঞানীরা বেশ খানিকটা এগিয়েছেন৷ তাদের চেষ্টা সফল হলে শীঘ্রই হয়ত শরণার্থী শিবিরগুলোতে মলমূত্র দিয়ে তৈরি বিদ্যুৎ দিয়ে জ্বালানো হবে বিজলি বাতি৷ আর এভাবে একসময় আমাদের দৈহিক বর্জ্য আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মিত্রে পরিণত হতে পারে৷
ছবি: Imago
শ্যাওলা খামার
শ্যাওলা দিয়ে জ্বালানি উৎপাদনের ধারণাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ বিজ্ঞানীদের চেষ্টা হচ্ছে ভবিষ্যতে এ সব জলীয় উদ্ভিদ দিয়ে বায়োফুয়েল তৈরি৷ তবে এখন পর্যন্ত গবেষণা থেকে যা জানা যাচ্ছে, তাতে এভাবে খুব বেশি জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব হবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/MAXPPP
মৃদু বাতাস থেকে জ্বালানি উৎপাদন
দক্ষিণ আফ্রিকার এক উদ্ভাবক তৈরি করেছেন এই পন্থা৷ ট্রেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের মতো জায়গায়, যেখানে ট্রেন এসে থামে কিংবা পাশ থেকে দ্রুত চলে যায়, সেখানে পাতলা এক ধরনের পাত বসিয়ে দিলেই হলো৷ এরপর ট্রেনের চলাচল থেকে পাওয়া মৃদু বাতাসকে কাজে লাগিয়ে সেগুলো তৈরি করবে জ্বালানি৷
ছবি: Charlotte Slingsby
কয়লার বদলে নারিকেল
বিশ্বের একটা বড় অংশে এখনো জ্বালানির মূল উৎস হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে৷ আর এর ফলে বন উজাড় অব্যাহত রয়েছে৷ নারিকেলের খোলস এবং শাঁস এক্ষেত্রে বিকল্প হতে পারে৷ সাধারণ কাঠকয়লার চেয়ে নারিকেলের খোলস বেশিক্ষণ জ্বলে৷ বিশেষ করে কেনিয়া এবং কম্বোডিয়ায় জ্বালানি হিসেবে নারিকেলের ভবিষ্যত উৎস৷
ছবি: Imago/fotoimedia
মাছের আঁশ এবং কাঁটা
মাছ ফ্যাক্টরির ফেলে দেয়া মাছের আঁশ এবং কাঁটা হতে পারে বিকল্প জ্বালানির উৎস৷ এটা পরিবেশের জন্যও সহায়ক, কেননা আবর্জনা হিসেবে এগুলো ফেলে দেয়া হয়৷ হন্ডুরাস, ব্রাজিল এবং ভিয়েতনামে আঁশ এবং কাঁটা দিয়ে জ্বালানি তৈরির গবেষণা কিছুটা আগালেও পর্যাপ্ত অর্থাভাবে তা গতি পাচ্ছে না৷
ছবি: AP
ডেস্কো থেকে জ্বালানি
ডান্স ফ্লোরের নীচে একটা বিশেষ সারফেস বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব৷ ইতোমধ্যে এই নিয়ে গবেষণা বেশ খানিকটা এগিয়েছে৷ শুধু ডান্স ফ্লোর নয়, ফুটবল স্টেডিয়াম, মেট্রো স্টেশনের মতো যেসব স্থানে মানুষের চলাচল অনেক বেশি, সেসব স্থানে এই সারফেস বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে, যা দিয়ে কম-ভোল্টেজের বাতি জ্বালানো যাবে৷
ছবি: Daan Roosegaarde
রাস্তায় সোলার প্যানেল
হ্যাঁ, শুধু বাড়ির ছাদেই নয়, রাস্তার উপরও এভাবে ফটোভোল্টেইক সোলার প্যানেল বসানো সম্ভব৷ নেদারল্যান্ডসে ইতোমধ্যে সত্তর মিটার সোলার বাইক পথ তৈরি করা হয়েছে৷ আর ফ্রান্স এক হাজার কিলোমিটার রাস্তায় আগামী কয়েকবছরে সোলার প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে৷