ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এখন বড় দল নিয়ে রাশিয়ায়। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে অস্ত্র বানানো নিয়ে কথা হলো।
বিজ্ঞাপন
রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা তাস জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ জানিয়েছেন, ''মঙ্গলবারের বৈঠকে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্র বানানো নিয়ে কথা হয়েছে। লাভরভ বলেছেন, ''আমরা বিস্তারে কথা বলেছি। সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে কথা হয়েছে। ভারতে অত্যাধুনিক অস্ত্র বানানো নিয়ে কথা হয়েছে।''
লাভরভ বলেছেন, ''দুই দেশ তাদের বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরো বাড়াতে চায়। মহাকাশ-যাত্রা ও পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'' এমনিতে রাশিয়াকে ভারত প্রচুর ওষুধ রপ্তানি করে। অন্যদিকে, রাশিয়া থেকে ভারত প্রচুর পরিমাণে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র ও অন্য জিনিস কেনে।
জয়শঙ্করের সঙ্গে
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবার বড় দল নিয়ে রাশিয়া গেছেন। তার সঙ্গে কৃষি, পেট্রোলিয়াম, বন্দর ও শিপিং, অর্থ, রসায়ন ও সার মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা গেছেন।
বিশ্বে সামরিক ব্যয়ে ভারত এখন তৃতীয়
সুইডেনের ‘স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট’ বা সিপ্রি ২০২১ সালে সামরিক খাতে বিভিন্ন দেশের খরচের তথ্য প্রকাশ করেছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভারত তৃতীয়
২০২১ সালে ভারতের সামরিক ব্যয় ছিল ৭৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন, যা বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ২০২০ সাল থেকে এই ব্যয় শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০১২ সালের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ।
ছবি: picture alliance/AP Photo/C. Anand
শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে সামরিক খাতে খরচ করেছে ৮০১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ সালের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কম। প্রতিবেদন মতে, ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সামরিক গবেষণা ও উন্নয়নে খরচ বাড়িয়েছে ২৪ শতাংশ এবং অস্ত্র কেনায় খরচ কমিয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
ছবি: picture-alliance/A. Widak
চীন দ্বিতীয়
তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ চীন ২০২১ সালে সামরিক খাতে খরচ করেছে ২৯৩ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
ছবি: Reuters
চতুর্থ যুক্তরাজ্য
তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে থাকা যুক্তরাজ্য গত বছর সামরিক খাতে খরচ করেছে ৬৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৩ শতাংশ কম।
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
পঞ্চম রাশিয়া
পঞ্চম অবস্থানে থাকা রাশিয়া ২০২১ সালে সামরিক খাতে খরচ করেছে ৬৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। সেসময় রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনের সীমান্তে সামরিক স্থাপনা তৈরি করছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ছবি: picture-alliance/TASS/A. Demianchuk
ছয় নেমে গেছে সৌদি আরব
আগের তালিকায় তিন নম্বরে ছিল সৌদি আরব৷ ২০১৯ সালে ১৬ শতাংশ ব্যয় কমিয়েছে দেশটি৷ গতবছর দেশটি ৬১.৯ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে৷ ইয়েমেনে সামরিক অভিযান ও ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সৌদি আরবের সামরিক ব্যয় কমানোতে বিস্মিত হয়েছেন বিশ্লেষকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Nureldine
শীর্ষ পাঁচেই ৬২ শতাংশ
সিপ্রি বলছে, ২০১৯ সালে সামরিক খাতে বৈশ্বিক খরচ ছিল ১৯১৭ বিলিয়ন ডলার৷ এর মধ্যে ৬২ শতাংশই করেছে শীর্ষ পাঁচটি দেশ৷
ছবি: Reuters/J. Lee
প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি
২০১৯ সালে ২০১৮ সালের তুলনায় সামরিক ব্যয় বেড়েছে ৩.৬ শতাংশ৷ এটি ২০১০ সালের পর কোনো এক বছরে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির হার৷
ছবি: Getty Images/S. Gallup
ইইউতে প্রথম ফ্রান্স, বিশ্বে সপ্তম
২০১৯ সালে ফ্রান্স ৫০.১ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যা দেশটির জিডিপির ১.৯ শতাংশ৷ ২০১৮ সালে তাদের ব্যয় ছিল ৫১.৪ বিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Reuters/G. Fuentes
অষ্টম-এ জার্মানি
২০১৯ সালে জিডিপির ১.৩৮ শতাংশ ব্যয় করেছে জার্মানি, সংখ্যার হিসেবে যা ৪৯.৩ বিলিয়ন ডলার৷ ২০১৮ সালে ছিল ৪৬.৫ বিলিয়ন৷ অর্থাৎ, জার্মানির ব্যয় বেড়েছে ১০ শতাংশ, যা সিপ্রির তালিকার শীর্ষ ১৫টি খরুচে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ রাশিয়ার কাছ থেকে হুমকি বাড়া এর একটি কারণ বলে মনে করছেন সিপ্রির বিশ্লেষকরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Skolimowska
শীর্ষ দশে এশিয়ার আরো দুই দেশ
সিপ্রির তালিকায় শীর্ষ ১০ খরুচে দেশের তালিকায় নয় ও দশ নম্বরে যথাক্রমে আছে জাপান (৪৭.৬ বলিয়ন ডলার) ও সাউথ কোরিয়া (৪৩.৯ বিলিয়ন ডলার)৷
ছবি: AP
বাংলাদেশ
২০১৯ সালে বাংলাদেশের সামরিক ব্যয় ছিল ৪,৩৫৮ মিলিয়ন ডলার, ২০১৮ সালে যা ছিল প্রায় ৩,৬৯২ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: DW/M. Mamun
12 ছবি1 | 12
জয়শঙ্কর বলেছেন, ''রাশিয়া বরাবরই ভারতের সহযোগী দেশ। গত কয়েক দশকে আমাদের বন্ধুত্বের খতিয়ান বলে দেবে, দুই দেশ একে অপরকে সবসময় সাহায্য করেছে।''
জয়শঙ্কর বলেছেন, ''এটা যুদ্ধের যুগ নয়। ভারত চায়, রাশিয়া ও ইউক্রেন আলোচনায় বসে সমস্যা মিটিয়ে নিক। গত কয়েক বছর ধরে কোভিড, আর্থিক চাপ, বাণিজ্যিক সংকটের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি।''
তেল কিনবে
জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ''ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনবে। আমরা তেলও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিন নম্বর দেশ। আমাদের আয় প্রচুর নয়। তাই আমরা যেখানে সুবিধাজনক দামে তেল পাব, সেখান থেকেই কিনবো। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক আমাদের সুবিধাজনক অবস্থায় রেখেছে।''
ভারত আগে রাশিয়া থেকে তাদের প্রয়োজনের দুই শতাংশ তেল কিনতো। সেপ্টেম্বরে তারা ২৩ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে কিনেছে।