তিনটি যুদ্ধে শিক্ষা হয়েছে, এখন ভারতের সঙ্গে আলোচনা চান শাহবাজ শরীফ। আলোচনার পথ প্রশস্থ করতে আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ।
বিজ্ঞাপন
ভারতের সঙ্গে অর্থবহ এবং প্রকৃত আলোচনা চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। আল আরাবিয়া সংবাদপত্রে শরীফ যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তাতে তিনি কোনো রাখঢাক না করেই বলেছেন, দিল্লির সঙ্গে তিনটি যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তান শিক্ষা পেয়েছে। এখন দুই দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র আছে। তাই লড়াইয়ের পথ নয়, শরীফ আলোচনার পথে যেতে চাইছেন। তিনি বলেছেন কশ্মীরের মতো জ্বলন্ত সমস্যা-সহ সব বিষয়ে আলোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আহ্বান জানাতে চান তিনি।
সংবাদপত্র দ্য ডন জানাচ্ছে, শরীফ পাকিস্তানে ফিরে বলেছেন, তিনি আমিরাতের প্রেসিডেন্ট ও তার ভাইকে অনুরোধ করেছেন, তারা যাতে এই আলোচনার পথ প্রশস্থ করেন। শরীফ বলেছেন, ''আমিরাত পাকিস্তানের ভাতৃসম দেশ। ভারতের সঙ্গেও ওদের খুব ভালো সম্পর্ক আছে। তাই তারা দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে পারে। আমি কথা দিচ্ছি, আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে অর্থবহ আলোচনা করব।''
শরীফ বলেছেন, ''আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীও ভারতীয় নেতৃত্বকে এই বার্তা দিতে চাই যে, আসুন, আলোচনার টেবিলে বসি। কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে প্রকৃত ও অর্থবহ আলোচনা করি। আমরা ঝগড়া করে একে অন্যের সময় ও সম্পদ নষ্ট করব না কি, শান্তিতে থাকব, সেই সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে।'' তবে শরীফের সাক্ষাৎকারের পর তার মুখপাত্র টুইট করে বলেছেন, ''কাশ্মীর প্রসঙ্গে শরীফের মতবদল হয়নি। তিনি চান, জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে এবং জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের আশাআকাঙ্খার কথা মাথায় রেখে সমস্যার সমাধান করতে হবে।'' তবে ভারতের এখন স্পষ্ট মনোভাব হলো, কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাব তারা মানবে না।
শরীফ বলেছেন, ''আমরা ভারতের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধ করেছি। তার ফলে মানুষের অবস্থা খারাপ হয়েছে। মানুষ আরো গরিব ও বেকার হয়েছে।''
শাহবাজ শরীফ: ব্যবসায়ী থেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হলেন পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরীফ৷ ব্যবসা সংগঠনের নেতৃত্ব, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব, বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকার পর কঠিন এক সময়ে সরকার প্রধান হলেন তিনি৷ ছবিঘরে জানুন তার বিস্তারিত৷
ছবি: picture alliance/dpaEPA/PMLN
ব্যবসায়ী পরিবার
মিয়া মোহাম্মদ শাহবাজ শরীফের জন্ম ১৯৫১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবের লাহোরে৷ তার বাবা ছিলেন শিল্পপতি মিয়া মোহাম্মদ শরীফ৷ স্নাতক শেষ করে শাহবাজ শরীফ নিজেও পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ‘ইত্তেফাক’-এর হাল ধরেন৷ ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন৷
ছবি: DW/T. Shahzad
রাজনীতির ময়দানে
১৯৮৮ সালে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ব্যবসায়ী শাহবাজ৷ ১৯৯০ সালে এমএনএ নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলের নেতা হয়ে ওঠেন তিনি৷
ছবি: Reuters/A. Soomro
লিডার অব দ্য হাউজ
পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলের নেতা হিসেবে সাফল্যের পথ ধরে ১৯৯৭ সালে তিনি লিডার অব দ্য হাউজ নির্বাচিত হন৷ তখন তিনি কঠোর প্রশাসক হিসেবেও নাম কুড়ান৷ পাঞ্জাব প্রদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন তিনি৷
ছবি: DGPR Pakistan
গ্রেপ্তার ও নির্বাসন
১৯৯৯ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ পিএমএল-এন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে৷ সেই সময় গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীতে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে পরিবারসহ নির্বাসিত হন সৌদি আরবে৷
ছবি: Anjum Naveed/AP/picture alliance
রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন
জেদ্দাহ ও লন্ডনে থাকাকালে বেশ কয়েক বছর রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন শাহবাজ৷ ২০০৭ সাালের ২৫ নভেম্বর ভাই নওয়াজ শরীফের সঙ্গে পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন৷ এরপর থেকে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় তিনি৷ ২০০৯ সালে পাঞ্জাবের ২১তম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন৷ প্রদেশের উন্নয়নে এসময় বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প নেন৷ তার সামাজিক প্রকল্প ‘সস্তা তন্দুর’ এবং ‘আশিয়ানা ঘর’ প্রশংসা কুড়ায়৷ দুর্নীতি দমনে কঠোর অবস্থানও নেন তিনি৷
ছবি: Reuters/M. Raza
বিরোধী দলীয় নেতা
২০১৩ সালে তৃতীয় দফা পাঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান শাহবাজ৷ ২০১৮ সালে পিএমএল-এন পরাজিত হলে এই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে৷ এসময় তিনি জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন৷ ২০১৯ সালে অর্থ পাচারের অভিযোগে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো তার ও তার সন্তানের নামে থাকা ২৩ সম্পত্তি জব্দ করলে বিপাকে পড়েন শাহবাজ৷ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে জামিন পান শাহবাজ৷
ছবি: Anjum Naveed/AP/picture alliance
প্রধানমন্ত্রীর দুয়ার
চলতি বছরের মার্চে জাতীয় পরিষদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো৷ নানা নাটকীয়তার পর ইমরান খান সেই অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন৷ প্রধানমন্ত্রীত্বের দুয়ার খোলে শাহবাজের জন্য৷ বিদেশ নীতির ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক সংকটসহ যেসব কারণে ইমরান ক্ষমতা হারিয়েছেন, সেগুলো সামাল দেয়াই এখন পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷
ছবি: picture alliance/dpaEPA/PMLN
এক পরিবারের দুই প্রধানমন্ত্রী
দ্বিতীয়বারের মতো এক পরিবার থেকে দুই প্রধানমন্ত্রী পেলো পাকিস্তান৷ ১৯৯০ সালে এবং ১৯৯৭ সালে দুই দফা প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলেন শাহবাজ শরীফের ভাই নওয়াজ শরীফ৷ এর আগে ১৯৭৩ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং তারপর ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তার মেয়ে বেনজির ভুট্টো৷ ১৯৯৩ সালে দ্বিতীয়বারের জন্যেও নির্বাচিত হয়েছিলেন আতাতায়ীর হামলায় নিহত বেনজির৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
8 ছবি1 | 8
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ''ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। এমন নয় যে, আমরা নিজেদের পছন্দমতো প্রতিবেশী হয়েছি। কিন্তু ঘটনা হলো, আমাদের প্রতিবেশী থাকতে হবে। এটাও ঘটনা, আমরা শান্তিতে থাকব না ঝগড়া করব, তা আমাদেরই হাতে।''
শাহবাজ শরীফ যখন এই কথাগুলো বলছেন, তখন পাকিস্তানেআর্থিক সংকট চরমে। জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে না। আটা-ময়দার মতো জিনিসও বাজার থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। তেহরিক-ই-তালেবান বারবার আক্রমণ করে যাচ্ছে।
দিন কয়েক আগেই বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক শাহবাজ চৌধুরী নিউ এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারতের হাতে এখন ছয়শ বিলিয়ানের বেশি বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার আছে, পাকিস্তানের হাতে আছে চার দশমিক পাঁচ বিলিয়ান ডলারের। ভারত এখন বিশ্বের কাছে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক একটি দেশ। অ্যামেরিকা ও রাশিয়া দুজনেই তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চাইছে। কৃষি উৎপাদনে তারা বিশ্বের সেরা।
কাশ্মীরে বহুদিনের সংঘাত, বহুদিনের ক্ষত
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে যেন গলার ফাঁস হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ তাই কাশ্মীর সংক্রান্ত ঘটনাবলী আজ নিজেরাই ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bhat
১৯৪৭
বলা হয় দেশবিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত উপজাতিক যোদ্ধারা কাশ্মীর আক্রমণ করে৷ তখন কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সাথে সংযোজনের চুক্তি করেন, যা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: dapd
১৯৪৮
ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে পর, ৪৭ ক্রমিক সংখ্যক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ ঐ প্রস্তাব অনুযায়ী গোটা কাশ্মীরে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Keystone/Getty Images
১৯৪৮
কিন্তু পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সৈন্যাপসারণ করতে অস্বীকার করে৷ অতঃপর কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়৷
ছবি: Getty Images
১৯৫১
ভারতীয় কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে সমর্থন করা হয়৷ অতঃপর ভারত বলে, আর গণভোট অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই৷ জাতিসংঘ ও পাকিস্তানের মতে, গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৫৩
কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ আব্দুল্লাহ গণভোটের সমর্থক ছিলেন ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন৷ ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ জম্মু-কাশ্মীরের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযোজনকে পাকা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৬২-৬৩
১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন আকসাই দখল করে৷ তার আগের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট এলাকাটি চীনকে প্রদান করে৷
ছবি: Getty Images
১৯৬৫
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়৷ কিন্তু যুদ্ধশেষে উভয় দেশের সেনা তাদের পুরোনো অবস্থানে ফিরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
১৯৭১-৭২
আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ৷ যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালে৷ যুদ্ধবিরতি রেখাকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিণত করা হয় ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ সমাধান সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জিত হয়৷
ছবি: AP
১৯৮৪
ভারত সিয়াচেন হিমবাহ নিজ নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাকিস্তান তা একাধিকবার দখল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷
ছবি: AP
১৯৮৭
জম্মু-কাশ্মীরে বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়৷ ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উগ্রপন্থাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে, কিন্তু পাকিস্তান সে দোষারোপ চিরকাল অস্বীকার করে এসেছে৷
ছবি: AP
১৯৯০
গওকাদল সেতুর কাছে ভারতীয় সিআরপি রক্ষীবাহিনী কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে পর শতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হন৷ প্রায় সমস্ত হিন্দু কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যান৷ জম্মু-কাশ্মীরে সেনাবাহিনীকে আফসা বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Tauseef Mustafa
১৯৯৯
কাশ্মীর ভ্যালিতে গোটা নব্বই-এর দশক ধরে অশান্তি চলে৷ ১৯৯৯ সালে আবার ভারত-পাকিস্তানের লড়াই হয়, এবার কারগিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০১-২০০৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলাপ-আলোচনার যাবতীয় প্রচেষ্টা প্রথমে নতুন দিল্লির সংসদ ভবন ও পরে মুম্বই হামলার ফলে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/F. Khan
২০১০
ভারতীয় সেনার গুলি লেগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর কাশ্মীর ভ্যালি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে৷ বিক্ষোভ চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রাণ হারান অন্তত ১০০ জন৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/U. Asif
২০১৩
সংসদ ভবনের উপর হামলার মুখ্য অপরাধী আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ এর পর যে বিক্ষোভ চলে, তা-তে দু’জন প্রাণ হারায়৷ এই বছরই ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় মিলিত হয়ে উত্তেজনা উপশমের কথা বলেন৷
ছবি: Reuters
২০১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উপস্থিত থাকেন৷ কিন্তু এর পর নতুন দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনার কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ভারত আলাপ-আলোচনা স্থগিত রাখে৷
ছবি: Reuters
২০১৬
আজাদ কাশ্মীর ভিত্তিক হিজবুল মুজাহিদীন-এর অধিনায়ক বুরহান ওয়ানি-র মৃত্যুর পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা সমর্থকরা আবার পথে নেমেছেন৷ এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.S.Hussain
২০১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর গাড়িবহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে ৪২ জওয়ান নিহত হন৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/P. Kumar Verma
২০১৯
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের কাছে কিছু বিশেষ অধিকার ছিল। ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৭০ ধারাটি অবসানের দাবি তোলেন৷ বিল পাস হয়। একই দিনে তাতে সই করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিল হয়। তাছাড়া মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ছবি: Reuters
19 ছবি1 | 19
এই পরিস্থিতিতে শরীফ বলেছেন, ''আমরা আর বোমা, গোলাবারুদের উপর খরচ করতে চাই না। আমাদের হাতে পরমাণু বোমা আছে। আর যুদ্ধ হলে আমরা কেউই বেঁচে থাকব না।''
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ভারতের বক্তব্য হলো, পাকিস্তান একদিকে জঙ্গিদের সাহায্য করে, প্রশিক্ষণ দেয়, অন্যদিকে আলোচনা চালানোর কথা বলে, এর কোনো অর্থ হয় না।
শরীফের এই মন্তব্য নিয়ে ভারত সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ প্রফুল্ল বক্সি এএনআই-কে বলেছেন, ''এর আগে ইমরান খানও এরকম কথা বলেছিলেন। কিন্তু তারপর কিছু হয়নি। শরীফ একটা কথা ঠিক বলেছেন, তিনটি যুদ্ধ করে পাকিস্তানের শুধু ক্ষতি হয়েছে এবং বদনাম হয়েছে।''
প্রফুল্ল মনে করেন, ''শরীফের আইডিয়া খুব ভালো। কিন্তু পাকিস্তানে একটা কট্টর প্রভাবশালী অংশ আছে। তারা কিছুতেই তাকে এই কাজ করতে দেবে না।''
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অলোক বনশল এএনআইকে বলেছেন, ''পাকিস্তানে এখন ভয়ংকর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট চলছে। পাকিস্তানের রাজনীতিকেরা বুঝতে পারছেন, ভারতের সঙ্গে অযথা লড়াই করে কোনো লাভ নেই। কিন্তু পাকিস্তানে এই সব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেয় না। সেনা ও আইএসআই নেয়। তাই কী হবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সেনার সম্পর্ক আগের প্রধানমন্ত্রীদের থেকে ভালো।''