1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে আফগান রোগীদের ভিড়

ওয়াসলাট হযরত-নাজিমি/আরবি২৪ ডিসেম্বর ২০১৩

আফগানিস্তান থেকে হাজার হাজার রোগী প্রতি মাসে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান৷ চিকিৎসা ব্যবস্থায় দুর্বলতা, ভুল রোগ নির্ণয় ইত্যাদি কারণে এই সংখ্যাটা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

Indien Gesundheitssystem Ausstellung von Rezepten Krankenhaus
ছবি: DW/P. Tewari

আফগানিস্তান থেকে হাজার হাজার রোগী প্রতি মাসে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান৷ চিকিৎসা ব্যবস্থায় দুর্বলতা, ভুল রোগ নির্ণয় ইত্যাদি কারণে এই সংখ্যাটা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নাবি গলায় এক বিরাট দাগ দেখিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান এইভাবে, ‘‘আফগানিস্তানের ডাক্তাররা এখানে একটি টিউমার শনাক্ত করেন এবং সাথে সাথে অপারেশন করে ফেলেন৷'' ৫৬ বছর বয়সি এই ব্যক্তি দিল্লির এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ বন্ধুদের পরামর্শে ভারতে এসে ডাক্তার দেখিয়েছেন৷ এজন্য অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাঁকে৷ ভারতের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এটা কোনো টিউমার নয়, শুধু গ্ল্যান্ড ফুলে গেছে৷ ‘‘আমি প্রতারিত হয়েছি,'' ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানান নাবি৷

চারিদিকে আফগান মুখ

ভারতের কিছু হাসপাতালে চারিদিকে শুধু আফগান মুখ দেখা যায়৷ কারো কারো সাথে দোভাষীও রয়েছেন৷ প্রায় সবাই দিল্লির কাছে লাজপত নগর নামে একটি জায়গায় চিকিৎসার জন্য যান৷ এই জন্য জায়গাটিকে ‘ছোট আফগানিস্তানও' বলা হয়৷ হাসপাতালগুলিও এই সব রোগীর ব্যাপারে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে৷

অধিকাংশ রোগীই আফগান ডাক্তারদের ব্যাপারে হতাশ হয়েই ভারতে যান চিকিত্সার জন্য৷ আফগানিস্তানের ডাক্তারদের অনেকের কাছেই রোগীর চেয়ে অর্থই প্রধান৷ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে রয়েছে বিরাট ঘাটতি৷ চিকিৎসার মানও অনেক নীচু৷ ‘‘অনেক অপারেশন দেশে করা সম্ভব নয়,'' বলেন ভারতে আফগানিস্তানের উপ-রাষ্ট্রদূত আশরাফ হাইদারি৷

আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এইভাবে প্রতিবছর ২৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাইরে চলে যায়৷

শুধু ক্লান্তিকরই নয় অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষও

আফগান রোগীদের জন্য ভারতে চিকিৎসা করানোটা শুধু ক্লান্তিকরই নয়, অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষও৷ প্লেনের টিকিট ছাড়াও রয়েছে হোটেলের খরচ, দোভাষী ও চিকিৎসার খরচ৷ সব মিলিয়ে কয়েক হাজার ডলার খরচ হয়ে যায়৷ বলা যায় বিত্তশালী আফগানরাই শুধু ‘স্বাস্থ্য পর্যটক' হতে পারেন৷ তবে কেউ কেউ তাদের সহায় সম্পদ ও জমিজমা বিক্রি করেও চিকিৎসার জন্য ভারতে যান৷

উপার্জনও বেড়ে গেছে৷ কেউ কেউ মাসে ৪১০ ইউরো পর্যন্তও পান৷ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েই কাজ সারাছবি: picture-alliance/dpa

মোহাম্মদ নাবির ভাগ্য ভাল বলতে হবে৷ দোভাষীর খরচটা বাঁচাতে পেরেছেন তিনি৷ কেননা তাঁর এক আত্মীয় হিন্দি বলতে পারেন৷ তিনিই তাঁকে সাহায্য করেছেন৷ অন্যরা দোভাষীর সাহায্য নেন৷ তাই দোভাষীদের উপার্জনও বেড়ে গেছে৷ কেউ কেউ মাসে ৪১০ ইউরো পর্যন্তও পান৷

অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েই কাজ সারা

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চল হেরাত থেকে এসেছেন হোমা তাঁর ১২ বছরের ছেলের জন্য৷ আফগানিস্তানে ছেলেটির টনসিল অপারেশন করতে চেয়েছিলেন ডাক্তাররা৷ কারণ প্রায়ই তার গলা ব্যথা করতো৷ ডাক্তাররা ছেলেটিকে একগাদা অ্যান্টিবায়োটিক খেতে দেন৷ এতে সে আরো দুর্বল হয়ে পড়ে৷ ভারতে আসার পর চিকিৎসকরা তাঁকে বুঝিয়েছেন, যে তাঁর ছেলের অ্যালার্জি হয়েছে৷ সঠিক ওষুধ দেওয়ায় সে এখন ভাল বোধ করছে৷

ভারতের ডাক্তারদের ওপর আস্থা

প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও ইরানে না গিয়ে হোমা তার দেশের অন্যান্যদের মতো ভারতের ডাক্তারদের ওপর ভরসা করেছেন৷ যদিও আফগানিস্তানের মিডিয়াতে বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়৷ বলা হয় ভারতীয় ডাক্তার ও দোভাষীরা মানুষের অসহায়তার সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছেন৷ বেশি অর্থ আদায় করছেন৷


বেশিরভাগ আফগান রোগীই সন্তুষ্ট

‘‘ভারতের চিকিৎসায় বেশিরভাগ আফগান রোগীই সন্তুষ্ট৷ কেননা ডাক্তাররা নতুন উদ্ভাবিত পদ্ধতি কাজে লাগান,'' বলেন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চল থেকে আসা গুলনাশ৷ ২৬ বয়সি এই ব্যক্তি তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন ভাইকে নিয়ে নতুন দিল্লিতে এসেছেন৷

তাঁর মতে, ‘‘আফগান ডাক্তাররা যদি ভারতে ট্রেনিং নিতেন, তাহলে আমাদের ভারতে যেতে হতো না৷ তার বদলে নিজস্ব অর্থনীতিকে জোরদার করতে পারতাম৷''

ইতোমধ্যে আফগানিস্তান ও ভারত দুটি দেশই পরিস্থিতি অনুযায়ী উদ্যোগ নিয়েছে৷ ভারতীয় হাসপাতালগুলিতে কিছুদিন ধরে আফগান ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ আফগানিস্তানে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে৷ অবশ্য সে পর্যন্ত সুচিকিৎসার জন্য ভারতই হবে আফগানদের প্রথম ঠিকানা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ