ভারতের ৬৫তম স্বাধীনতা দিবস
১৫ আগস্ট ২০১১ভারতের ৬৪তম স্বাধীনতা বার্ষিকী বা ৬৫তম স্বাধীনতা দিবসে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চিরাচরিত প্রথায় আজ দিল্লির লাল কেল্লার প্রাকার থেকে এই নিয়ে আটবার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, মূল অনুষ্ঠানের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং৷ তারপর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলিতে সরকারের বক্তব্য ও অবস্থান তুলে ধরেন৷ যেমন, দুর্নীতি, জমি অধিগ্রহণ, সন্ত্রাস, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য সুরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি৷
গোটা দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা৷ দিল্লিতে ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয়৷ লাল কেল্লার চারপাশে ৪০টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা৷ বিশেষ কমান্ডো বাহিনী, আকাশপথে হেলিকপ্টারের টহল,গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এবং স্থাপনাগুলিতে বিশেষ নজরদারি, আন্তঃরাজ্য বাসস্ট্যান্ড ও রেল স্টেশনে সাদা পোষাকের পুলিশ, আন্তঃরাজ্য চেকপোস্ট সীলড, দিল্লির আকাশ নো-ফ্লাই জোন৷ আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে গোটা রাজধানি যেন এক দূর্গ৷ তবে জম্মু-কাশ্মীরসহ এখনো পর্যন্ত দেশের কোনো জায়গা থেকেই গোলমালের খবর আসেনি৷
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রধান বিষয় ছিল দুর্নীতি৷ এর মোকাবিলা করতে হবে সর্বস্তরে৷ কোনো একটি ব্যবস্থায় তা রোধ করা সম্ভব নয়৷ লোকপাল বিল প্রসঙ্গে ড. সিং বলেন, সংসদে পেশ করা সরকারের লোকপাল বিল সম্পর্কে যাঁরা একমত নন, তাঁরা তাঁদের সুপারিশ সংসদে রাজনৈতিক দলগুলিকে, এমন কী মিডিয়াকে জানাতে পারেন৷ তার জন্য অনশন বা আমরণ অনশনের পথে যাওয়া ঠিক নয়৷ সরকার দুর্নীতি রোধে কৃতসংকল্প৷ সেই লক্ষ্যে, বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে বিচার বিভাগের দায়বদ্ধতা বিল আনা হয়েছে সংসদে৷ আর কী ধরণের লোকপাল আইন হবে - তা ঠিক করবে সংসদ৷
শিল্প, অবকাঠামো ও নগরায়ণের জন্য জমি অধিগ্রহণ ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে৷ জনস্বার্থে জমি অধিগ্রহণ জরুরি৷ কিন্তু তা হবে স্বচ্ছ ও ন্যায্য৷ সেজন্য সরকার ১১৭ বছরের পুরোনো আইন বদল করে নতুন জমি অধিগ্রহণ আইন আনছে - ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী৷
মুদ্রাস্ফীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য - বিশ্ব বাজারে পেট্রোপণ্য, খাদ্যসামগ্রী, ভোজ্যতেল ইত্যাদির দাম বাড়ায় তার প্রভাব পড়েছে ভারতের বাজারে৷ তবে সরকার বসে নেই৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্যের অধিকারের পর তপশিলি জাতি/উপজাতি, সংখ্যালঘু ও গরিবদের জন্য আনতে চলেছে খাদ্য সুরক্ষা আইন৷
দেশে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার যৌথ দায়িত্ব কেন্দ্র, রাজ্য ও সাধারণ মানুষের৷ সেইসঙ্গে উন্নত করতে হবে নজরদারি ও গোয়েন্দা ব্যবস্থাপনা৷
প্রসঙ্গত, পতাকা উত্তোলনের আগে প্রধানমন্ত্রী ড. সিং রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ