পরিসংখ্যান তাই বলছে৷ গোটা বিশ্বে বছরে গড় আত্মহত্যার সংখ্যা যেখানে প্রায় ৮ লাখের মতো, সেখানে শুধু ভারতেই প্রায় ১লাখ ৩৫ হাজার৷ তবে সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকে সবথেকে বেশি হলেও, জনসংখ্যার মাথাপিছু হিসেবে অবশ্য সবথেকে বেশি নয়৷
বিজ্ঞাপন
আত্মহত্যা সব দেশে সবকালেই ছিল, আছে এবং থাকবে৷ সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান বলছে, বছরে গোটা দুনিয়ায় যত মানুষ আত্মহত্যা করে, তাদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতীয়৷ সংখ্যার বিচারে বিশ্বে বছরে গড়ে আট লাখের মতো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ঘটে ভারতে৷ এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা দেখা যায় ভারতের দক্ষিণী রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রে৷
জাতীয় ক্রাইম ব্যুরো রেকর্ডের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে ভারতে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় আত্মহত্যা করেছে ১৫ জন৷ অবাক করার মতো বিষয় হলো, এই আত্মঘাতীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মোটামুটি শিক্ষিত৷ আর গড়ে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি, প্রায় দ্বিগুণ৷ তবে আঞ্চলিক ভিত্তিতে অনুপাতটা সমান নয়৷ মহিলাদের মধ্যে সবথেকে বেশি আত্মহত্যার ঘটে ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে৷ উল্লেখ্য বছরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার৷ এছাড়া মোট আত্মঘাতীদের বেশির ভাগের বয়স ১৫ থেকে ২৯ এবং ৩০ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে৷ জানা যায় আত্মহত্যা সাধারণত হয়ে থাকে বিষ খেয়ে, গলায় দড়ি দিয়ে অথবা গায়ে আগুন লাগিয়ে৷ দেখা গেছে, এ সমস্ত আত্মহত্যার প্রধান কারণ দুরারোগ্য অসুখ, দাম্পত্য তথা পারিবারিক বিবাদ এবং আর্থিক সমস্যা৷ তাছাড়াও আছে পরীক্ষায় ফেল, প্রেমে ব্যর্থতা বা বেকারত্ব৷
প্রাণীরা যখন মনোচিকিৎসক
হতাশা, বিষাদ, মনোযোগের অভাব এগুলো আপনাকে ভাবাচ্ছে? একদম চিন্তা নেই৷ প্রাণীরা আছে আপনার জন্য৷ যদিও অনেক বিজ্ঞানী এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি৷ কিন্তু তারপরও বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে প্রাণী থেরাপি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Landov Mike Cardew
ডলফিনের সাথে সাঁতরানো
প্রাণী থেরাপির একটি দৃষ্টান্ত হলো ডলফিন বা শুশুকের সাথে পানিতে সাঁতার দেয়া৷ শিশুদের কাছে এটা বেশ আনন্দদায়ক৷ তবে প্রাণী অধিকার কর্মীরা এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Alexandra Mudrats
যে থেরাপিস্ট আপনাকে আনন্দ দেবে
অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে মনোচিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিয়েছেন, কিন্তু সেখানে সাহায্য করেছে কুকুররা৷ বিশেষ করে প্রবীণদের হাসাতে এবং আস্থা অর্জন করতে এদের তুলনা নেই৷ বৃদ্ধাশ্রমে প্রবীণদের আনন্দে রাখেন তাঁদের পোষা কুকুরটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Landov Mike Cardew
পোষা প্রাণী: আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
গবেষণায় দেখা গেছে বাড়িতে পোষা কুকুর বা বিড়াল থাকলে তা মানসিক চাপ মোকাবিলায় মানুষকে সাহায্য করে৷
ছবি: Sanam Razavi
প্রকৃত বন্ধু
মনোচিকিৎসকরা বলেন, প্রাণীরা তাদের মালিকদের প্রতি ‘ননজাজমেন্টাল’, যা মানব বন্ধুদের ক্ষেত্রে প্রায় বিরল৷ তাই পোষা প্রাণীরা শিশুদের আত্মগ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করে৷
ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভারতের একজন প্রতিবন্ধী শিশু ঘোড়ার পিঠে বসে আছে৷ ঘোড়ার শরীরে যে নড়াচড়া হয়, সেটাই এই শিশুটির থেরাপি হিসেবে কাজ করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আলপাকা
পোল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশুদের থেরাপি দেয়ার জন্য চিলি থেকে ৩৮টি আলপাকা আমদানী করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Darek Demanowicz
জিরাফ
জার্মানির হানোফার শহরের কাছে লুনেবুর্গ হিথ-এর সেরেঙ্গেটি পার্কের ছবি এটি৷ এখানে মনোচিকিৎসকরা তাদের রোগীদের নিয়ে পার্কে গেছেন, যেখানে রোগীরা জিরাফদের থাওয়াচ্ছে৷ এটা নাকি রোগীদের অনেকটা উপকার করে৷
ছবি: Medizinische Hochschule Hannover
অন্য প্রাণীদের খাওয়ানো
জিরাফ ছাড়াও মাদাগাস্কারের লেমুর-দেরও খাবার খাওয়ান মানসিক সমস্যাক্রান্তরা৷ গবেষকরা পাঁচ বছর ধরে চালানো এই গবেষণায় দেখার চেষ্টা করছেন, আদৌ এটা তাদের রোগ উপশমে সাহায্য করে, নাকি এটা সাময়িক একটা প্রশান্তি দেয়৷
ছবি: Medizinische Hochschule Hannover
তিমি
বেলুগা তিমির সাথে সাঁতরানো যে কোনো ব্যক্তির জন্যই একটা বিশেষ অভিজ্ঞতা৷ তবে প্রাণী অধিকার কর্মীদের মতে এটার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত৷ কেননা থেরাপির সময় পানি হতে হয় উষ্ণ৷ আর সুমেরুর এই প্রাণীরা গরম পানিতে অভ্যস্ত নয়৷ তাই সময়ের আগেই তাদের মৃত্যু হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবচেয়ে সহজ পন্থা
যেখানে কুকুর আর বিড়াল সহজলভ্য সেখানে শুশুক আর তিমি থেরাপির কি দরকার!
তিনি বলেন, ‘‘পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতাজনিত মানসিক চাপ ও হতাশার মোকাবিলা করার শক্তি মানুষ যখন হারিয়ে ফেলে তখনই আত্মহত্যার মতো অন্তিম পদক্ষেপ বেছে নেয় মানুষ৷ এটা কমাতে হলে মনোরোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়ে তার প্রতিকারের কথা চিন্তা করতে হবে৷ এখনও ভারতের মতো দেশে মনোরোগ একটা লোকলজ্জার বিষয়৷ তাই তা গোপন রাখার প্রবণতা প্রবল৷ তাই সেটা বিপরীতমুখী করতে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে৷''
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা যা করেন না
যাঁরা মানসিকভাবে শক্ত, তাঁদের অভ্যাসও স্বাস্থ্যকর হয়৷ তাঁরা নিজেদের আবেগ-অনুভূতি, চিন্তা ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন৷ আবার এমন অনেক জিনিস আছে, মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা যা করেন না৷
ছবি: Fotolia/Chlorophylle
নিজেদের জন্য দুঃখ করে সময় নষ্ট করেন না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা বসে বসে ভাবেন না, আমার পরিস্থিতি কতটা খারাপ অথবা অন্যান্যরা আমার সঙ্গে কী রকম ব্যবহার করেছে৷ তাঁরা নিজেদের জীবনের দায়িত্ব নিজেরাই নেন৷ তাঁরা বোঝেন যে, জীবন সব সময় সহজ কিংবা ন্যায্য হয় না৷
ছবি: hikrcn/Fotolia
অপরের হাতের পুতুল হয়ে পড়েন না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা বলেন না, ‘বস’ আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে বলে আমার মন খারাপ৷ তাঁরা নিজেদের আবেগ-অনুভূতি নিজের বশে রাখতে পারেন৷ কাজেই তাঁরা নিজেদের প্রতিক্রিয়া নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারেন৷
ছবি: Colourbox
পরিবর্তনে ভয় পান না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা সবরকম পরিবর্তন এড়ানোর চেষ্টা করেন না৷ বরং তাঁরা ইতিবাচক পরিবর্তনকে স্বাগত জানান৷ তাঁরা নিজেরাও নমনীয় হতে প্রস্তুত৷ তারা জানেন যে, পরিবর্তন আসবেই এবং সেই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের আছে৷
ছবি: Mike Windle/Getty Images for TWC
যা নিয়ন্ত্রণে নেই, তা নিয়ে মাথা ঘামান না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা বিমানযাত্রায় লাগেজ হারানো কিংবা রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়ে অনুযোগ করেন না৷ বরং তাঁরা জানেন যে, যে বস্তুটি তাঁরা সত্যিই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, সেটা হলো তাঁদের নিজেদের মনোভাব৷
ছবি: Fotolia/xavier gallego morel
অন্যদের খুশি রাখা নিয়ে চিন্তিত নন
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা জানেন যে, সকলকে খুশি করা সম্ভব নয়৷ কাজেই তাঁরা ‘না’ বলতে কিংবা নিজের মত প্রকাশ করতে ভয় পান না৷ তাঁরা সদয় থাকার এবং ন্যায়বিচার করার চেষ্টা করেন, কিন্তু অন্য লোকেরা অখুশি হলে সে পরিস্থিতিও সামাল দিতে জানেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
পরিকল্পিতভাবে ঝুঁকি নিতে ভয় পান না
তবে তাঁরা না-ভেবে-চিন্তে নির্বোধের মতো ঝুঁকি নেন না৷ মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব দিক তলিয়ে দেখেন৷ কোনো কিছু করার আগেই তাঁরা জানেন, তার ফলশ্রুতি কী হতে পারে৷
ছবি: picture alliance/dpa/H. Wiedl
অতীত নিয়ে পড়ে থাকেন না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা শুধু এই ভেবে সময় নষ্ট করেন না, অতীতে কী হয়েছে, বা অন্যরকম হলে কেমন হতো৷ তাঁরা অতীতকে মেনে নিয়ে দেখেন, অতীত থেকে কী শেখা যায়৷ কিন্তু তাঁরা অতীতের জয়পরাজয় নিয়ে দিবাস্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখেন না৷ বরং তাঁরা বর্তমানে বেঁচে থাকেন আর ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করেন৷
ছবি: Colourbox/ChristianChan
একই ভুল বার বার করেন না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা নিজেদের কৃতকর্মের পূর্ণ দায়িত্ব নেন৷ ফলে তাঁরা বার বার একই ভুল করেন না৷ বরং তাঁরা এগিয়ে যান, ভবিষ্যতের জন্য আরো ভালো সিদ্ধান্ত নেন৷
ছবি: Fotolia/jeff Metzger
অন্যের সাফল্যে ঈর্ষা বোধ করেন না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা পরের সাফল্যেও খুশি হতে জানেন৷ অন্যের ভালো হলে তাঁদের হিংসে হয় না৷ বরং তাঁরা জানেন, সাফল্য পেতে হলে পরিশ্রম করতে হয়৷ তাঁরা নিজেরাও সেভাবে পরিশ্রম করতে রাজি৷
ছবি: Fotolia/Shmel
একবারের চেষ্টাতেই হাল ছাড়েন না
একবার পারলেন না বলেই যে আর কোনোদিন পারবেন না, এমনটা ভাবেন না তাঁরা৷ মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা অসাফল্যকে ব্যবহার করেন ভবিষ্যৎ সাফল্যের সোপান হিসেবে৷ যতদিন না পারছেন, চেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা৷
ছবি: Fotolia/Elnur
একা থাকতে ভয় পান না
মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা একা থাকতে ভয় পান না৷ নিঃশব্দতাতেও তাঁদের কোনো শঙ্কা নেই৷ তাঁরা নিজেদের ভাবনাচিন্তা নিয়ে একলা থাকতে পারেন, এমনকি সেই সময়টুকুর সদ্ব্যবহার করতে পারেন৷ তাঁরা নিজেদের সঙ্গ নিয়েই খুশি, সবসময় অপরাপর সঙ্গী কিংবা মনোরঞ্জনের কোনো প্রয়োজন নেই তাঁদের৷ একা থেকেও হাসি-খুশি থাকেন তাঁরা৷
ছবি: imago/Frank Sorge
দুনিয়া কি দিল না দিল, তা নিয়ে দুঃখী নন
তাঁদের যে দুনিয়ার কাছ থেকে কিছু পাওনা আছে, এমনটা ভাবেন না মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা৷ অন্যেরা যে তাঁদের জন্য কিছু করবে, সে প্রত্যাশাও নেই তাঁদের৷ বরং তাঁরা নিজেদের ক্ষমতা ও সুযোগ অনুযায়ী কাজ করে যান৷
ছবি: Colourbox
হাতে হাতে সাফল্য আশা করেন না
ফিটনেস কিংবা বিজনেস, কোনোক্ষেত্রেই চটজলদি সাফল্য প্রত্যাশা করেন না মানসিকভাবে শক্ত মানুষেরা৷ বরং তাঁরা তাঁদের সময় ও কর্মক্ষমতা সঠিকভাবে প্রয়োগ করেন৷ তাঁরা জানেন যে, বাস্তবিক পরিবর্তন আসতে সময় লাগে৷
ছবি: picture-alliance/landov/D. Grunfeld
13 ছবি1 | 13
‘‘মনে রাখতে হবে, ক্যানসার, হৃদরোগ বা অন্য আর পাঁচটা রোগের মতো মানসিক হতাশা, বিষাদ ও জীবনবিমুখতা একটা বড় রোগ৷ দেহের অন্য অঙ্গের মতো মস্তিষ্কের রোগও হতে পারে৷ তাই তাকে লোকলজ্জা মনে করে চেপে রাখলে চলবে না৷ এখন তো মানসিক রোগের উন্নত ওষুধপত্র ও চিকিত্সা বেরিয়েছে৷ সেটাকে তুলে ধরতে হবে সামাজিক প্রচার অভিযানের মাধ্যমে৷ আমার মতে, অন্য রোগের চিকিত্সার মতো মানসিক রোগ চেপে না রেখে তার চিকিত্সা করা জরুরি৷''
মনস্তাত্ত্বিক অয়নাংশু নায়কের মতে, ‘‘কৃষকদের আত্মহত্যার পেছনেও রয়েছে কৃষি সংকটজনিত আর্থিক হতাশা৷'' আসলে ভারতে মানুষ সবথেকে বেশি আত্মহত্যা করে কীটনাশক খেয়ে৷ তাই এই মনোবিজ্ঞানীর মতে, ‘‘আত্মহত্যার পেছনে জীনঘটিত বা বংশগত কারণ না থাকলেও হতাশাবোধটা কিছুটা হলেও আছে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘নিঃসঙ্গতাও আত্মহত্যার একটা বড় কারণ, বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে৷ তাঁরা চিকিত্সকের কাছে আসেন না, চুপচাপ আত্মহত্যা করে বসেন৷ এর প্রতিকারের জন্য দরকার সামাজিক যোগাযোগ ও ‘সাপোর্ট'৷''
ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে ড. নায়ক তাঁর চিকিত্সাধীন এক রোগীর কথা উল্লেখ করেন, যিনি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন৷ বলেন, ‘‘কেন গিয়েছিলেন জানেন? নিজের ক্লাস টেনে পড়া ছেলে যাতে পরীক্ষায় সর্বাধিক নম্বর পায়, সেজন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২২-২৩ ঘণ্টা পড়ার জন্য তিনি চাপ দিতেন ছেলেকে৷ তার ওপর বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে মিশতেও দিতেন না৷ কিন্তু একাদশ শ্রেণিতে ছেলেটি ফেল করে৷ ছেলের ভবিষ্যত অন্ধকার ভেবে ভয়ংকর উদ্বেগে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন মা৷ এখনও তিনি আমার চিকিত্সাধীন৷''
ছবি রং করলে মানসিক চাপ কমে?
শিশুদের শান্ত রাখার জন্য রং পেনসিল আর ছবির বই দিয়ে ছবি আঁকতে বসিয়ে দেয় বড়রা৷ ছবি রং করে মনকে শান্ত করার এই পদ্ধতি কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷ কীভাবে? জেনে নিন ছবিঘর থেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
রঙিন অবসর
আজকাল কিন্তু অনেক বড়রাও বিভিন্ন রঙের পেন্সিল দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছবির চারিদিকে রং করেন মূলত মানসিক চাপ কমানোর জন্য৷ অন্তত গত কয়েক বছরে বড়দের ছবি রং করার বই বিক্রি সেই কথাই বলে৷ কারণ এত বেশি ছবির বই বিক্রি হয়েছে যে এখন আর সেসব বই ‘বেস্টসেলার লিস্ট’ থেকে বাদ যাওয়ার কথা ভাবাই যায় না৷
ছবি: picture-alliance/ZB/P. Pleul
পড়ার চেয়ে ভালো
যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে বই অর্ডার দেওয়ার লিস্টে প্রায়ই দেখা যায় এক নম্বরেই রয়েছে বড়দের ছবি রং করার বই৷ আর এই ট্রেন্ড কিন্তু এখন জার্মানিতেও এসেছে৷ এমনকি অনলাইনে কেনাকাটার ওয়েবসাইট অ্যামাজন-এর অর্ডারের শীর্ষেও দশটি বইয়ের তালিকায় রয়েছে দু’টি ছবির বইয়ের নাম৷
ছবি: Getty Images/B. Pruchnie
প্রতিটি ছবির বইয়ের সাথেই রং পেন্সিল
অ্যামাজন থেকে ছবি রং করার বইয়ের অর্ডার দিলে তার সাথে রং পেন্সিলও থাকে৷ বলা বাহুল্য, বিষয়টি পেন্সিল উৎপাদনকারী কোম্পানির জন্য অত্যন্ত আনন্দের৷ আর রং পেন্সিলের চাহিদা এখন এত বেড়ে গেছে যে কোনো কোনো পেন্সিল কোম্পানি কর্মীদের কাজের শিফট বাড়িয়ে দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T.Koene
মেডিটেশনের নতুন রূপ
আপনার কি দীর্ঘদিন ধরে ঘাড়, পিঠ ও মাথায় ব্যথা হচ্ছে? তাহলে ছবির বই কিনে রং করতে শুরু করে দিন৷ দেখবেন আস্তে আস্তে স্ট্রেসের কারণে হওয়া এ সব ব্যথা থেকে আপনি মুক্তি পাচ্ছেন৷ ছবি রং করে মানসিক চাপ কমার এই সাফল্য দেখে থেরাপিস্টরাো নাকি বিস্মিত!
ছবি: APTN
সামাজিক ছবি পেইন্টিং
যাঁরা একাকী, নিঃসঙ্গ তাঁরা সাধারণত নিজেদের ভাবনা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অন্যদের সাথে শেয়ার করেন৷ তাই টুইটারে #AdultColouring লিখলেই পাবেন অনেক গুণী শিল্পীর রং করা ভালো কিছু ছবি৷ শুধু তাই নয়, মাঝে মধ্যে তাঁরা রং করার জন্য ছবির বইও নাকি বিনামূল্যে দিয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T.Koene
5 ছবি1 | 5
মনোরোগ চিকিত্সক ড. নায়ক আরও যা বললেন, তার সারমর্ম হলো: এক, কৃষকদের আত্মহত্যা নিবারণে চাই সরকারি ও সামাজিক সমর্থন৷ এবং তাঁদের দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো৷ দুই, কমবয়সি ছেলে-মেয়েদের মানসিক সমস্যা বা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিসঙ্গতার সমস্যা অনুধাবন করে তার প্রতিকারে মানসিক তথা সামাজিক সমর্থন দেওয়া৷ আর তিন, প্রাক-স্নাতক স্তরে মেডিক্যাল পঠন-পাঠনে ডাক্তার ও নার্সদের জন্য মানসিক চিকিত্সাকে পাঠ্যক্রমে আবশ্যক হিসেবে চিহ্নিত করা৷
বলা বাহুল্য, এ জন্য ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলকে এগিয়ে আসতে হবে৷ তবে এটা করতে পারলে ভারতে মাথাপিছু মনোরোগ চিকিত্সকের অনুপাত বাড়বে, যা কিনা ভারতের জনসংখ্যার তুলনায় নেহাতই কম৷
ভারতে এত বেশি আত্মহত্যার কারণ কি বলে আপনার মনে হয়? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷