1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ভুয়া খবর

১০ মার্চ ২০২০

ভারতে করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভুয়া খবর। ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। ঘটছে বিচিত্র সব কাণ্ড।

ছবি: Getty Images/K. Frayer

ভুয়ো খবর বা ফেক নিউজ এখন কার্যত ভারতীয়দের জীবনযাপনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজের দৌলতে করোনা আতঙ্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। হাতে হাতে মোবাইলের পর্দায় ঘুরছে ভুয়া খবর। যা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।

বস্তুত ভারতের মতো এত বড় দেশে করোনারসঙ্গে লড়াইয়ে সবচেয়ে ভোগাচ্ছে এই ভুয়া খবরই। বিভিন্ন মাধ্যমে ঝড়ের মতো সেসব খবর ছড়িয়ে পড়ছে দেশ জুড়ে। শুরু হচ্ছে তা নিয়ে আতঙ্ক এবং বিভ্রান্তি। করোনা ভারতে ঢোকার বহু আগে থেকেই এ দেশে গুজব ছড়াতে শুরু করেছিল ভাইরাসটি নিয়ে। এতটাই যে দক্ষিণ ভারতে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছিলেন। সেখানেই শেষ নয়, করোনার সংক্রমণ রোধে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তারও নানান তালিকা ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক জুড়ে। যার জেরে কী কাণ্ড ঘটেছে, গোটা পৃথিবীই এখন তা জানে। উত্তর ভারতের একটি গ্রামে জলাধারে গোবর গুলে তাতে ডুব দিয়েছেন দুই ব্যক্তি। দেখাদেখি গোটা গ্রাম। সঙ্গে সূর্য প্রণাম। কারণ তাঁদের বলা হয়েছে, গোবর জলে স্নান করলে করোনা হবে না।

কারা ছড়াচ্ছেন এসব খবর? ফেক নিউজের কারবারিরাতো বটেই, সঙ্গে রাজনীতিবিদেরাও। যাঁরা ওই গোবর জলে স্নান করেছেন, তাঁরা অশিক্ষিত হতে পারেন, কিন্তু আসামের বিজেপি নেত্রী তো অশিক্ষিত নন! সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিকবার তিনি প্রচার করেছেন গোবর জলের উপকারিতা। যা কি না করোনা প্রতিরোধ করে।

দিল্লিতে বসবাসকারী বিশিষ্ট চিকিৎসক পার্থপ্রতীম বসু ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, করোনা নিয়ে বিভ্রান্তি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে চিকিৎসা করতেও সমস্যা হচ্ছে। করোনার প্রতিরোধে লোকে এমন সমস্ত ঘটনা ঘটাচ্ছেন, যার ফলে অন্য রোগ ছড়াচ্ছে। মাস্ক নিয়ে উন্মাদনাও তেমনই এক বিভ্রান্তি বলে জানিয়েছেন পার্থপ্রতীমবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য সবচেয়ে জরুরি নিজেকে ফিট রাখা। যাতে শরীরের অ্যান্টিবডিগুলো লড়াই করতে পারে। কিন্তু লোকে বিভ্রান্ত হয়ে ঠিক তার উল্টো কাজগুলোই করছেন।’’

শুধু চিকিৎসকেরাই নন, করোনা আতঙ্ক নিয়ে উদ্বেগে সরকারও। প্রায় প্রতিদিন সরকারের তরফ থেকে নির্দেশনা প্রকাশ করা হচ্ছে। যাতে বার বার বলা হচ্ছে, কোনও রকম ভুয়া খবরে কান না দিয়ে সরকারের নির্দেশনাবলি পালন করতে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুয়া খবর ছড়ানোর জন্য সরকারেরও কিছু দায় থেকে যায়। মাসখানেক আগে এই সরকারেরই কেউ কেউ বলেছিলেন, ভারতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের ঔষধ আছে। এসেছিল ইউনানি এবং কবিরাজির প্রসঙ্গ। যার ফলে করোনার হাত থেকে বাঁচার জন্য বহু মানুষ নানা রকম আয়ুর্বেদিক এবং বিকল্প চিকিৎসার আশ্রয় নিয়েছিলেন। সুযোগ বুঝে ভুয়ো ঔষধের পসারও জমিয়ে ফেলেছেন অনেকে।

বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মী অলোক দত্তগুপ্তের কথায়, ‘‘করোনায় এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চীন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই মহামারি থেকে তারা ক্রমশ আলোয় ফিরতে পারছে একটাই কারণে, সেখানে শৃঙ্খলা আছে। চীনের সরকার দেশের ভিতর করোনা নিয়ে ভুয়ো খবর প্রচার হতে দেয়নি। আমাদের সমস্যা হল, এখানে ভুয়া খবরে রাশ টানার মতো কোনও সংস্থা নেই। সরকারের এ বিষয়ে যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তারা তা নিচ্ছে না।’’

মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫১। মঙ্গলবার দুপুরে কর্ণাটকে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ জন। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ভুয়ো খবর ছড়ানো বন্ধ না হলে, দেশ আরও দুর্বিপাকে পড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ