ভারতে করোনায় মৃত ৩৮২ চিকিৎসক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ হাজার ৮৯৪ জন। মারা গেছেন এক হাজার ১৩২ জন। সব মিলিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৫১ লাখ ১৮ হাজার ২৫৩ জন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত এক নম্বরে। অ্যামেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ বেশি। দেশে করোনা আক্রান্তের নিরিখে প্রথম পাঁচ রাজ্য হলো, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ ও দিল্লি। মোট ৩৮২ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক সংগঠনের প্রশ্ন, মৃতদের পরিবার কোনো সরকারি সাহায্য পায়নি। তাঁদের প্রশ্ন, প্রায় এক লাখ মানুষ প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন চিকিৎসকদের অবদানের কথা কী করে ভুলে যেতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার?
করোনা শুরু হওয়ার পর চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের জন্য থালা বাজানো হয়েছে। জ্বালানো হয়েছে মোবাইলের টর্চ বা প্রদীপ। এ ভাবেই বার বার তাঁদের সেলাম জানাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কিন্তু দেশে যখন করোনায় আক্রান্তের হার সব চেয়ে বেশি, যখন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে তাঁদের সেবা করছেন, তখন আর সরকারের মুখে এই করোনা-যোদ্ধাদের কথা নেই কেন? মৃত চিকিৎসক পরিবারের পাশে কেন সরকার দাঁড়ায়নি? অন্যদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে করোনার কথাই এখন সরকার যতটা পারে এড়িয়ে যেতে চায়।
খুব কড়া বিবৃতি জারি করে আইএমএ বলেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮২ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। সব চেয়ে কম বয়সী হলেন ২৭ বছরের চিকিৎসক এবং বেশি বয়সী হলেন ৮৫ বছরের ডাক্তার। তাঁরা সকলেই করোনা রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়েই মারা গেছেন। হাজার হাজার চিকিৎসক করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামিল। অথচ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন সংসদে একবারের জন্যও চিকিৎসকদের অবদানের কথা বলেননি। সরকার কী করে করোনা-যোদ্ধা চিকিৎসকদের এ ভাবে উপেক্ষা করতে পারে, তাঁদের ভুলে যেতে পারে, তাঁদের অবদান অস্বীকার করতে পারে?
আইএমএ-র বক্তব্য, অন্য কোনো দেশে এতজন চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীর মৃত্যু হয়নি। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে, সরকারের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। কিছুদিন আগে যাঁদের জাতীয় নায়ক বলা হচ্ছিল, তাঁরা এখন ব্রাত্য। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। মৃত চিকিৎসকদের আগে শহিদ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাঁদের পরিবারের জন্য কিছুই করা হয়নি।
সরকার অবশ্য বলছে, প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধরলে ভারত এখন এক নম্বরে। কিন্তু যদি জনসংখ্যার নিরিখে দেখা যায়, তা হলে ভারতে করোনা আক্রান্তের হার অন্য দেশের তুলনায় কম। সুস্থতার হারও বেশি। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, যখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল খুবই কম, তখন সরকার দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন করে রাখল। এখন করোনার প্রকোপ তুঙ্গে, সে সময় সরকার কিছুই করছে না। এমন একটা ভাব দেখাচ্ছে যে, সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
জিএইচ/এসজি(এএনআই, আইএমএ বিবৃতি)