1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে খালিস্তানপন্থি নেতা অমৃতপাল সিংয়ের আত্মসমর্পণ

২৩ এপ্রিল ২০২৩

কট্টর খালিস্তানপন্থি নেতা অমৃতপাল সিং আত্মসমর্পণ করেছেন। এক মাসেরও বেশি আগে তাকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু হয়েছিল। এর আগে একাধিকবার তিনি গ্রেপ্তারি এড়িয়েছেন।

Indien l Festnahme des Sikh-Separatistenführer Amritpal Singh l Fahndungsbild
ছবি: Narinder Nanu/AFP via Getty Images

পাঁচ সপ্তাহের অভিযান শেষে ভারতীয় পুলিশ অমৃতপাল সিংকে গ্রেপ্তার করেছে। কর্মকর্তারা রোববার বলেছেন, দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। পাঞ্জাবের মোগা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিখরা পাঞ্জাবের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ।

পাঞ্জাব রাজ্য পুলিশ একটি টুইটে জানিয়েছে, "(আমরা) নাগরিকদের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানাই। কোনও ভুয়া খবর শেয়ার করবেন না। সবসময় খবর খতিয়ে দেখে শেয়ার করুন।"

স্থানীয় গণমাধ্যম পুলিশি সূত্রের উল্লেখ করে জানিয়েছে রোববার অমৃতপাল আত্মসমর্পণ করেছেন। শিখ ধর্মীয় নেতা, যশবীর সিং রোড্ডেও বলেন, ২৯ বছরের এই তরুণ মোগায় একটি গুরুদ্বারে সকালের প্রার্থনা করার পর আত্মসমর্পণ করেন।

অমৃতপাল এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দেশে অশান্তি ছড়ানো, খুনের চেষ্টা, পুলিশ কর্মীদের আক্রমণ এবং তাদের দায়িত্বে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

খালিস্তানি আন্দোলন কি?

তরুণ এই বিচ্ছিন্নতাবাদী এই বছরের শুরুর দিকে খালিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করে উত্তেজক বক্তৃতা দিয়ে সবার নজরে আসেন। খালিস্তানপন্থিদের দাবি, ভারতীয় ভূখণ্ডে একটি প্রস্তাবিত সার্বভৌম শিখ রাষ্ট্র তৈরি করা।

খালিস্তানপন্থি আন্দোলন ১৯৮০ সাল নাগাদ প্রচার পেয়েছিল। খালিস্তানের দাবিতে রক্তঝরা আন্দোলন আগেও দেখেছে পাঞ্জাব। সেই সময় খালিস্তানি নেতা ভিন্দ্রানওয়ালের বিরুদ্ধেও সরকারের সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। গোঁড়া এবং রক্ষণশীল শিখনেতা হিসাবে পরিচিত ভিন্দ্রানওয়ালে সে সময় গোটা পাঞ্জাবের ‘আতঙ্কের কারণ' হয়ে উঠেছিলেন।

শিখ সন্ত্রাসী এই নেতা জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালেকে বন্দি করার জন্য শিখদের পবিত্রতম স্থান স্বর্ণ মন্দিরে ভারতীয় সেনারা 'অপারেশন ব্লু স্টার' অভিযান চালায়। সেনা অভিযানের পর ভিন্দ্রানওয়ালে মুক্ত হয় শিখদের পবিত্র তীর্থ স্বর্ণমন্দির।

যদিও 'সার্জিকাল অ্যাটাকের' সময়ভারতীয় সেনারা ভিন্দ্রানওয়ালের সমর্থকদের প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল।  ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন। সহিংসতা বাড়তে থাকে। সেই সময় ভারতজুড়ে শিখদের হত্যার অভিযোগ ওঠে।

এই ভিন্দ্রানওয়ালেই তার অনুপ্রেরণা, এমনটাই দাবি করেন অমৃতপাল সিং।

অমৃতপাল সিং কে?

কট্টরপন্থি শিখ প্রচারক বর্তমানে ওয়ারিশ পাঞ্জাব দে (পাঞ্জাবের উত্তরাধিকারী) সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ভারতে মোদী সরকারের আনা বিতর্কিত কৃষি সংস্কারের বিরুদ্ধে কৃষকদের একত্রিত করার জন্য একটি বিশাল প্রচারণায় অংশ নিয়েছিল এই সংগঠন।

ভিন্দ্রানওয়ালেই তার অনুপ্রেরণা, এমনটাই দাবি করেন অমৃতপাল সিংছবি: Stringer/REUTERS

ভারতে তার উসকানিমূলক বক্তৃতার পাশাপাশি ক্যানাডা, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঞ্জাব প্রবাসীদের সমর্থন বেড়ে যাওয়া আশির দশকের মতো সহিংসতার আশঙ্কা বাড়িয়েছে।

অমৃতপাল এবং তার সমর্থকরা তরবারি, ছুরি ও বন্দুক নিয়ে একটি থানায় হামলা চালানোর পর কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করে। হামলা ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সহযোগীদের মুক্তির দাবি জানায় তারা। মোটরসাইকেলে পালিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন অমৃতপাল।

৩৭ দিন ধরে তার খোঁজ চলছিল। এরপর আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তিনি কর্তৃপক্ষকে কটূক্তি করে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, "আমি আগে গ্রেপ্তারের ভয় পাইনি, এখনো ভয় নেই। আমি উদ্যমী। কেউ আমার ক্ষতি করতে পারেনি। এটা ঈশ্বরের কৃপা।"

মার্চের শেষে ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় দূতাবাসে খালিস্তানপন্থিদের তাণ্ডবের পর দিল্লিতে ক্যানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া বার্তা দেয় ভারত। ক্যানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে,বিচ্ছিন্নতাবাদী ও চরমপন্থিদের এই আচরণ ভারত মেনে নিচ্ছে না। ক্যানাডা যেন অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেয়।

আরকেসি/এডিকে (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ